আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর গাইড বই কিনে ফেলুন ৪-৫ সেট। আগের বছরের প্রশ্নগুলো খুব ভালভাবে স্টাডি করে বোঝার চেষ্টা করুন কোন কোন ধরনের প্রশ্ন বেশি আসে। কিছু কিছু প্রশ্ন সময়ের সাথে সাথে প্রাসঙ্গিকতা হারায়। সেগুলো বাদ দিন। প্রতিদিন অনলাইনে ৪-৫টি পেপার পড়ার সময় খেয়াল করুন কোন কোন বিষয়সমূহ বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেগুলোকে আলাদা করে ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করে রাখতে পারেন। গাইড বইয়ের সাজেশনস আর পেপারের বিভিন্ন আর্টিকেল অনুযায়ী নিজের সাজেশনস নিজেই রেডি করুন। সাজেশনসে বিভিন্ন সময়ে কিছু প্রশ্ন অ্যাড কিংবা রিমুভ করে ৪-৫ সেট সাজেশনস রেডি করবেন। এরপর সাজেশনস ধরে ধরে প্রশ্নগুলো গাইড থেকে, রেফারেন্স বই থেকে, পেপার থেকে পড়ে ফেলুন। সবচাইতে ভাল হয় যদি টপিকগুলো গুগলে সার্চ করে করে পড়েন। প্রয়োজনে টপিকের নাম বাংলায় টাইপ করে সার্চ করুন। গুগলে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর মোটামুটি সব প্রশ্নের উত্তরই পাবেন। উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, বিভিন্ন সংস্থার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রশ্নের উত্তর পড়লে সময় বেঁচে যাবে, মার্কসও ভাল আসবে। পেপারে দৈনিক এবং সাপ্তাহিক আন্তর্জাতিক পাতাটি, দ্য হিন্দু, দি ইকনোমিস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রিকা থেকে প্রয়োজনীয় আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে যাঁরা লেখেন, এরকম ১৫-২০টি নাম ডায়রিতে লিখে রাখুন। পাশে ছোট করে লিখে ফেলুন কে কোন ধরনের বিষয় নিয়ে লেখেন। উদ্ধৃতি দেয়ার সময় কাজে লাগবে। ইন্টারনেট ঘেঁটে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য, সমালোচনা পড়ে নিন। প্রয়োজনমত প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করলে উপস্থাপনা সুন্দর হবে। বিভিন্ন ম্যাপ, ডাটা, চার্ট, টেবিল, পর্যালোচনা, নিজস্ব বিশ্লেষণ, সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে সেটির প্রাসঙ্গিকতা ইত্যাদির সাহায্যে লিখলে আপনার খাতাটি আলাদা করে পরীক্ষকের চোখে পড়বে। প্রশ্ন অতো কমন পড়বে না। তাই রিডিং হ্যাবিট বাড়ানো ছাড়া এ অংশে ভাল করা কঠিন। কিছু মুখস্থ করার দরকার নেই। বারবার দাগিয়ে দাগিয়ে পড়বেন। পরীক্ষার হলে নিজের মত করে বানিয়ে লিখে দেবেন। চেষ্টা করবেন, প্রতি পেজে অন্তত একটা উদ্ধৃতি, ডাটা, টেবিল, চার্ট কিংবা রেফারেন্স, কিছু না কিছু দিতে। এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার করতে পারেন। লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই, পড়া গেলেই চলবে৷ লিখিত পরীক্ষায় অনেক বেশি দ্রুত লিখতে হয়৷ তাই প্রতি ৩-৫ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা লেখার প্র্যাকটিস্ করুন৷
এখন সিলেবাস অনুযায়ী আলোচনা করছি।
শর্ট কনসেপচুয়াল নোটস: আগের বছরের প্রশ্ন, রেফারেন্স বই, গাইড বই, পেপার ঘেঁটে ঘেঁটে কী কী টীকা আসতে পারে লিস্ট করুন। এরপর সেগুলো গুগল করে ইন্টারনেট থেকে পড়ে ফেলুন। সাথে পেপার-কাটিং, ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করা পেপারের আর্টিকেল, গাইড বই আর রেফারেন্স বই তো আছেই। এ অংশে উত্তরের শেষে আপনার নিজের বিশ্লেষণ দিলে মার্কস বাড়বে।
অ্যানালাইটিক্যাল কোয়েশ্চেনস: যত বেশি সম্ভব তত পয়েন্ট দিয়ে প্যারা করে করে লিখবেন। এ অংশে ১টি ১৫ মার্কসের প্রশ্ন উত্তর করার চাইতে ৪+৬+৫=১৫ মার্কসের প্রশ্ন উত্তর করাটা ভাল। প্রশ্নের প্রথম আর শেষ প্যারাটি সবচাইতে আকর্ষণীয় হওয়া চাই। নীল কালি দিয়ে প্রচুর কোটেশন দিন। বিভিন্ন কলামিস্টের দৃষ্টিকোণ থেকে কোন ইস্যুকে ব্যাখ্যা করে উত্তরের শেষের দিকে নিজের মত করে উপসংহার টানুন। কোন মন্তব্য কিংবা নিজস্ব মতামত থাকলে সেটিও লিখুন।
প্রবলেম সলভিং কোয়েশ্চেন: আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন, নিরাপত্তা ইস্যু, বাণিজ্য, চুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন, বিদেশি সাহায্য সহ সাম্প্রতিক নানান গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে কিছু কথা লেখা থাকবে কিংবা কোন একটা সমস্যার কথা দেয়া থাকবে। সেটিকে বিশ্লেষণ করে নানা দিক বিবেচনায় সেটার সমাধান কী হতে পারে, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক এবং আপনার নিজের মতামত ইত্যাদি পয়েন্ট আকারে লিখুন। এটিতে ভাল করার জন্য নিয়মিত পেপার পড়ার কোন বিকল্প নেই।
লেখাটি প্রথম আলো’তে ছাপা হয়েছিল।
লিংক: