ভাবনার বনসাই: আটাত্তর

১. প্রাসাদের ছায়ার ভেতরে
ফুলেদের আর্তনাদ,
ঝিঁঝিঁদের সন্ধে।


২. একের পর এক
ভারী বর্ষণ।


একটার পর আরেকটা
রাতের আকাশ।


চাঁদের তন্দ্রায়
আয়না ভাঙে।


৩. পাহাড়ি ঝর্নায়
ঘরের চিঠিরা
হেসে গড়াগড়ি
গাছেদের আদরে।


৪. শিশুরা পিঁপড়ে দেখেও কাঁদে;
বৃদ্ধরা হাতি দেখেও হাসে।


৫. শ্বেতপাথরের কোনায় কোনায়
লুপ্ত আদিম কৃষ্ণপাথর-কণা।


৬. অন্ধকার সকাল।


ঝড়?


হ্যাঁ,
না-এর পর।


৭. কেউ জয়ী হতে ঘোড়া ছোটায়;
কেউবা জয়ী হলে ঘোড়া ছোটায়।


৮. বাঁশঝাড়
হাওয়াকে আসতে দেয়
হাওয়াকে যেতে দিতেই!


৯. দু-জন দু-জনের
কাছে আসতেই
ওদের রংধনুটা
হারিয়ে গেল।


১০. সে চুল সরায়,
ধবধবে ফরসা ঘাড়
উন্মুক্ত হয়।


সেদিকে তাকিয়ে...
চুলটা উঠল কেন,
আর মনে পড়ে না।


১১. সারি সারি ছায়ায়
সুরের নৃত্যে
ছায়ারা হারায়।


১২. ভরসন্ধেয় শিলাবৃষ্টি।
বুনোহাঁসেরা দলবেঁধে
কাঁদে, কাদায় কাদায়।


১৩. পাখিদের সঙ্গে
গাছেদের আলাপ।
নদীর কিনারে
দুঃখীর প্রলাপ।


১৪. শুষ্ক, গ্রীষ্মদিন;
ঝর্নাদের অবসর,
নারীর দুঃখ।


১৫. মানুষের ভিড়ে
একজন উনমানুষ
মানুষের দিকে
তাকায়, হাসে।


১৬. বিনা হাওয়াতেও
গাছের কিছু পাতা
কাঁপে।


১৭. ঝুঁকে-পড়া প্রহরে
ক্রুদ্ধ বর্ষায়
ফুটন্ত নদীতে।


১৮. মরুর চিত্রকর
মানুষের কঙ্কালে
গোস্ত বসায়
তুলির আঁচড়ে।


১৯. বিনা গর্জনের বজ্রপাতটি...
সমুদ্রের ভীষণ গভীরে
শব্দহীনতায় ছড়িয়ে পড়ে।


২০. গোধূলিকে নামতে দেখে
নিরীহ মৎস্যসন্তান
সাঁতরে লাফিয়ে
ডাঙায় ওঠে।