শব্দহীনতার মাঝে

  
 উঠোনের এককোণে জঞ্জালের মতন পড়ে থাকুক মায়া,
 ব্যথা তাড়াবার ছলেও ওসব আলগা আমি আর করব না।
 আমিও রোজ মহাকালসম শূন্যতা নিয়ে
 একরাত্রি হাহাকার বুকে ঘুমুতে যাব।
  
 সারাবেলার ক্লান্তি ঝেড়ে হৃদয়ের খাঁচা খুলে ধুলো ঝাড়বার ছলে
 ভুল করে ছুঁয়ে ফেলব তোমাকে না-পাওয়ার বেদনাদের।
 এলোপাথাড়ি হাত-পা ছুড়ব হারিয়ে ফেলবার অসহ্য যন্ত্রণায়।
 এসবের মাঝে নিজেকে খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়ে
 হয়তো চোখে ভর করবে রাজ্যের যত ঘুম।
  
 পরদিন সেই হাহাকার নিয়ে শুরু করব আরও একটি দিন।
 রোজ এভাবে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখে তোমাকে দেখিয়ে দেবো,
 তোমাকে ছাড়াও ঠিকই বাঁচা যায়!
 আর নিজেকে বোঝাব, আমি জিতেছি!
 বেঁচে থাকবার লড়াইয়ে রোজই…
 অজস্র ভাঙা মানুষের মতো আমিও জিতে গেছি!
  
 তুমি এসো না,
 তুমি বোলো না কখনও আর ‘শুভ হোক সকাল!’,
 কিংবা রাতের গভীরে কখনও মনের ভুলেও
 নেড়ো না কড়া এই হৃদয়ের দরজায়;
 কেননা আমি টের পাই, 
 তোমার নৈঃশব্দ্য আমাকে ঘিরে ধরে আর তোমার ডাক শোনায়,
 আমি তোমার প্রতীক্ষায় রাতভর জোনাকির মতো জ্বলতে জ্বলতে
 একসময় শেষ হয়ে যাই।
  
 এসেছিলে আমার আঁধারঘরের প্রদীপ হয়ে,
 অথচ থেকে গেলে এ জীবনের দু-ফোঁটা অশ্রু হয়ে!
 কিচ্ছু দিয়ো না ওসব আর,
 জানতেও চেয়ো না কখনও, এখন আছি কেমন।
 আমি তোমাকে মিথ্যে করে ‘ভালো আছি!’ বলতে পারি না,
 ভেতর থেকে কে যেন গলা চেপে ধরে,
 আমি বলতে চেয়েও কিছুই পারি না,
 শুধুই চেয়ে থাকি তোমার চলে-যাওয়া পথ ধরে।
  
 জানো, আমাকে সঙ্গ দেবার মানুষের অভাব হবে না কক্ষনো,
 অথচ সেইসবে নিজেকে ডুবিয়েও রোজ প্রতি মুহূর্তে
 আমি তোমাকে ভুলে থাকবার অভিনয় করে যাব!
  
 তুমি খুব ভুলভাল বলো,
 তুমি ভালোবাসা অস্বীকার করো,
 অথচ কে বোঝাবে তোমাকে যে ভালোবাসা আছে!
 চারপাশে শব্দহীনতার মাঝে গাঢ় আঁধার হয়ে ভালোবাসা মিশে আছে,
 শুধু তুমি বোঝো না।