ভাবনার বনসাই: আট

১. রাত হলেই কেন বাতি জ্বেলে দাও, বলো তো?
তোমরা কি কখনো অন্ধকারে নিজের আসল চেহারাটা দেখবে না?


২. আমার চিঠির উত্তরে নাহয় এক টুকরো সাদা কাগজই পাঠিয়ে দিয়ো,
তোমার ছোঁয়া কাগজই আমার ভালোবাসার অভিধান।


৩. মিশ্র লাশের গন্ধে আগরবাতির শোক,
আমাদের নাহয় গোরস্থানেই দেখা হোক!


৪. জেনে রাখো, মদ খেলেই মাতাল হওয়া যায় না,
মাতাল হওয়ার মানে, সে হয়তো মদটাই খায় না!


৫. ক্ষতস্থানে ক্ষতের সংখ্যা এতই বেশি যে, গুনে শেষ করতে পারছি না। তুমি কি আমায় একটু গুনে দিতে পারো না?


৬. আমি যত বেশি শক্তি দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরতে গিয়েছি, সে তার দ্বিগুণ শক্তি দিয়ে প্রতি বারই আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে।
অথচ বৃদ্ধ বয়সে এসে সে মানুষকে বলে বেড়িয়েছে, আমি নাকি ধরে রাখতে শিখিনি!


৭. আমি যেই ফুলগুলো তোমার জন্য কিনে নিয়ে গেলাম,
গিয়ে দেখি, ঠিক সেই ফুলগুলোই তোমার বাসায় আগেই যেন কে পাঠিয়ে দিয়েছে।
মানুষ এতটাও দুর্ভাগা হতে পারে!


৮. তোমায় পেয়ে কতটাই-না আঁকড়ে রেখেছিলাম,
কেউ জানে না, তোমায় পেতে কতই-না সাধনা করেছিলাম!


৯. পুরনো অভিমানগুলো চাপা পড়ল নতুন অভিমানের তলে,
একেই বোধ হয় ভালোবাসার শেষ পরিণতি বলে!


১০. লিখতে লিখতে পুড়ে ছারখার,
লিখতে গেলে পোড়া দরকার।
লিখতে লিখতে কেটে দিই,
কাটতে কাটতে ফেলে দিই।
লিখে লিখে বাড়িয়েই যাচ্ছি যন্ত্রণা,
আমার লেখা অক্ষরগুলো তো আসলে ছদ্মবেশী সান্ত্বনা!


১১. এ জন্মে জমিয়ে রাখলাম এ বুকে একসমুদ্র ঢেউ,
পরের জন্মে ঠিক হয়ে দেখাব তোমার বিশেষ কেউ!


১২. সারাটা রাত হৃদয় আমার ভীষণ জ্বরে পোড়ে,
তুমিই তো সে, যার সুগন্ধি শরীর-মন’টা জুড়ে!


১৩ - হে শায়ের, এমন কোনো এক নেশার নাম বলে দিন, যেন তাকে ভুলে যাই!
- ওহে প্রেমিক, শায়েরির চেয়ে বড়ো কোনো নেশা আছে বলে তো আমার জানা নাই!


১৪. শরীর মরে গেলেও, তোমরা আত্মা বাঁচিয়ে রেখো; আত্মা মরে গেলে ভুল করেও শরীর বাঁচাতে যেয়ো না!


১৫. দরবারে তুমি বার বার এসেছ করতে আমায় জব্দ,
অথচ আমার ঢাল-তলোয়ার বলতে আছে শুধুই গোটা কয়েক শব্দ!


১৬. তোমাদের কান্না পেলে সবাই মিলে চলে এসো আমার বাড়ি,
আমি নিশ্চিত, সবাই মিলেও আমার সমান কাঁদতে পারবে না!


১৭. - ওহে আগন্তুক, বড্ড ক্লান্ত দেখাচ্ছে আপনাকে, এক গ্লাস পানি খেয়ে নিন।
- শায়ের, সবার আগে শায়েরি পড়েই আমি আমার তৃষ্ণা মেটাব।


১৮. তোমরা যারা ভালোবাসি ভালোবাসি করেই গেছ এতকাল ধরে,
কই, ভালোবাসার নথিপত্রে তো কোথাও তোমাদের নাম দেখতে পাচ্ছি না!


১৯. যেদিন থেকে আমি শায়েরি লিখতে শিখে গেছি, সেদিন থেকে, আমার সুখ দুঃখের সমান আর দুঃখ সুখের সমান।


২০. শায়েরি লিখতে শিখে গেলে আর বেড়াতে যাবার প্রয়োজন পড়ে না পাহাড়-সমুদ্রের কাছে,
তখন তো পাহাড়-সমুদ্ররাই শায়েরের কাছে পরিশ্রান্তি পেতে আসে!