নিজেকে ভালো রাখতে চাইলে

খুব সহজ কিছু বুদ্ধি শিখিয়ে দিই। ভালো থাকতে চাইলে পোস্টটি খুব ভালো করে পড়ুন। বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন, ওদের উপকার হবে।


যার-তার কাছে নিজের অবস্থানটা ব্যাখ্যা করবেন না। যার কাছে কৈফিয়ত দেওয়ার দরকার নেই, তার কাছে কখনওই কৈফিয়ত দেবেন না। বান্দরকে লাই দিলে মাথায় ওঠে, আর মানুষকে লাই দিলে মাথায় উঠে হিসু করে দেয়! মানুষ বান্দরেরও অধম!


কেউ আপনাকে ভুল বুঝছে? বুঝতে দিন।
কেউ আপনার সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা করছে? করতে দিন।
কেউ শোনাকথার উপর ভিত্তি করে আপনাকে জাজ করছে? করতে দিন।
কেউ আপনাকে অপমান করার জন্য বানোয়াট কথা ছড়াচ্ছে? ছড়াতে দিন।
কেউ আপনাকে না চিনেই আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মন্তব্য করছে? করতে দিন।


কেউ গায়ে পড়ে পরামর্শ দিতে বা ঝগড়া বাধাতে চাইছে? কেউ আপনাকে ছোটো করার চেষ্টা করছে? কেউ আপনাকে খোঁচা মেরে কথা বলছে? কেউ আপনাকে বিরক্ত করার জন্য মুখিয়ে আছে? কেউ আপনাকে বুলিইং করতে চাইছে?


এসব তো আমাদের সাথে হয়েই থাকে, তাই না? ফেইসবুকে এলেই এসব সহ্য করতে হয়।


...আমার লেখায় একটু ভুল হলো; 'সহ্য করতে হয়' নয়, 'সহ্য করি'। কেন করি? লাভ-লাইকের আশায়? কমেন্টের আশায়? শেয়ারের আশায়? রিঅ্যাক্টের আশায়? এগুলি দিয়ে কী হয়? এগুলি পেলে আমরা স্বর্গে যাব? না কি আমাদের ইনকাম বাড়বে? না কি সম্পদ বাড়বে? না কি আমরা বিশেষ কোনও সুখ বা স্বস্তি পাবো? না কি আমাদের রতিক্ষমতা বাড়বে? সবার চিন্তাভাবনা ও মতামতকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, সেটা পারার কোনও দরকারও নেই। চক্ষুলজ্জার কারণে কাউকে সহ্য করেই যাচ্ছেন? চক্ষুলজ্জায় কী হয়? টাকা পান? না কি শান্তি?


যে গরু দুধ দেয়, তার লাথিও সহ্য করা যায়।
যে গরু লাইক-কমেন্ট দেয়, সে আসলে গরু না, সে একটা বলদ; তার দুধ দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই।
দশ হাজার লাইক দিয়ে তো দশ টাকার একটা চাম্পাকলাও পাওয়া যায় না! কী হয় ওসব ঘোড়ার ডিমে?


মাত্র এক সপ্তাহ একটা কাজ করে দেখতে পারেন। যে আপনাকে বোঝে না কিংবা ভুল বোঝে, তার কাছে নিজেকে বোঝানোর একটুও চেষ্টা করবেন না। সে যা ইচ্ছা ভাবুক! আপনাকে ভুল বুঝতে দিন, আপনাকে না বুঝতে দিন। যদি দেখেন, সে থামছে না, তবে একসেকেন্ডও না ভেবে তাকে ব্লক করে দিন, একদম সাথে সাথেই। ভয় পাবেন না, এসব বেকার আজাইরা কুত্তারা কেবল ফেইসবুকেই চিল্লায়, সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলারও সাহস ওদের নেই। যদি মাথায় আসে, ‘সে কী ভাববে!’, তবে আমি বলব, ‘তার ভাবনাকে কেয়ার করার আদৌ কি কিছু আছে?’


যার আচরণে মনের শান্তি নষ্ট হয়, যার কারণে মনের মধ্যে বিরক্তির উদ্রেক হয়, দ্বিতীয় বার চিন্তা না করেই তাকে ব্লক করে দিন। যার কাছে নিজেকে ব্যাখ্যা করার দরকার নেই, সে ব্যাখ্যা চাইলে তাকে ব্লক করে দিন। এত ফালতু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় নেই, দরকারও নেই। নিতান্ত বাধ্য না হলে এই দুনিয়ার কারও কাছেই নিজেকে ব্যাখ্যা করবেন না। মনে রাখবেন, সবকিছুর উপরে নিজের আত্মসম্মানবোধ ও শান্তি।


আপনার ফেইসবুক আইডি'র ব্লকলিস্ট পাগল, ছাগল, মূর্খ, বেআক্কেল, বেয়াদব, বেহায়া, ক্ষতিকর ও বিরক্তিকর লোকজন দিয়ে ভর্তি করে ফেলুন। সময় বাঁচান, শান্তি বাড়ান। এই দুনিয়ায় মনের শান্তির উপর আর কিছু নেই। যদি দু-একজন সেই লিস্টে ভুলে ঢুকে যায়, তাতেও কোনও সমস্যা নেই। আগাছা পরিষ্কার করার সময় দু-একটা ভালো গাছ কাটা পড়তেই পারে। ব্যাপার নাহ্‌! অভিজ্ঞতা থেকে একটা কথা বলি। মাত্র এক-শো ফালতু লোক যে পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে, এক লক্ষ ভালো লোক মিলেও তার দশ ভাগের এক ভাগও উপকার করতে পারে না বা করে না। তারা তো আপনার জন্য মিলিতই হবে না, করবে আর কী করে! তাদের সেই ইচ্ছে কিংবা ক্ষমতা নেই। বিপদে পড়লে দেখবেন, যাদের আপনি ভালো মানুষ বলে জানেন, তাদের কেউই কোনও কথা বলছে না, সব দেখেও চুপচাপ আছে। ভালো মানুষের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা খুব বেশি। মার খাওয়ার কিংবা ঝামেলায় পড়ার ভয়ে ভালো মানুষ বরাবরই চুপ করে থাকে। আপনি বিপদে পড়বেন গুটিকয়েক খারাপ লোকের সরবতার কারণে নয়, অগণিত ভালো লোকের নীরবতার কারণে। ভালো লোক সংখ্যায় বেশি, কিন্তু ওরা কোনও কাজের না। পুরো ক্লাসকে মাথায় তোলার জন্য এক-শো ছাত্রের মধ্যে মাত্র দু-চারটা দুষ্ট ছেলেই যথেষ্ট!


আমাকে দেখুন! শতভাগ জিরো টলারেন্স নীতিতে ফেইসবুকিং করি। একটু এদিক থেকে ওদিক কমেন্ট করলেই ব্লক! কারও পেছনে লাগলেই ব্লক! আমার ব্যক্তিগত জীবন টেনে কমেন্ট করলেই ব্লক! অহেতুক হা-হা রিঅ্যাক্ট দিলেই ব্লক! আমাকে বিরক্ত বা বিব্রত করার বিন্দুমাত্রও চেষ্টা করলেই ব্লক! কোনও কিছু নিয়ে বিজ্ঞাপন করার চেষ্টা করলেই ব্লক! কোনও প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করলেই ব্লক! কমেন্টে ন্যূনতমও বেয়াদবি প্রকাশ পেলেই ব্লক! ফালতু কমেন্ট করলেই ব্লক! কাউকে ছোটো করে কথা বললেই ব্লক! পণ্ডিতি করতে এলে কিংবা গায়ে পড়ে আজাইরা পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করলেই ব্লক! না জেনে বা অনুমান করে কথাবার্তা বললেই ব্লক! ধর্ম, দেশ, রাজনীতি নিয়ে উসকানিমূলক কমেন্ট করলেই ব্লক! আমার চাকরি বা অফিস নিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে একটাও কথা বললেই ব্লক! অহেতুকই বিসিএস কিংবা ক্যাডার শব্দটি উল্লেখ করে কমেন্ট করলেই ব্লক! অনর্থক আমার পরিবারের কারও কথা লিখলেই ব্লক! আরও অনেক আছে! বলে শেষ করা কঠিন!

আমি কখনওই প্রোফাইল দেখে ব্লক করি না, শুধু আচরণ দেখে ব্লক করি। ছাগল, দিনশেষে, ছাগলই---কাঁঠাল পাতা খেলেও ছাগল, নোবেল প্রাইজ খেলেও ছাগল! ফলোয়ারদের এরকম গণহারে ব্লক করার কাজটি অন্য একটিও পেইজে হয় বলে আমার জানা নেই। আমার ব্লকলিস্টে এখন লক্ষাধিক সদস্য। সেই লিস্ট প্রতিদিনই আরও দীর্ঘ হচ্ছে। ওদের অনেকেই আবার ফেইক আইডি খুলে আমাকে ফলো করে। কেউ কেউ মেসেজে ও মেইলে আনব্লক করে দিতে রিকোয়েস্ট করে। করলে করুক গিয়ে! Blocked once, blocked forever! ব্লকলিস্ট থেকে আপনাকে খুঁজে বের করে আনব্লক করব? মাথা খারাপ আপনার! আপনার মতো একটা লোককে মূল্যবান সময় খরচ করে ব্লক করেছি, এটাই তো আপনার সাতজন্মের ভাগ্য! আপনাকে আমার দরকার নেই, আমাকেও আপনার দরকার নেই---আমি এই নীতিতে ফেইসবুকিং করি।


আবারও বলছি। অপ্রয়োজনীয় লোকজনের জন্য নিজের শান্তি, সুখ, স্বস্তি, সময় নষ্ট করবেন না। যার সামনে নিজেকে ব্যাখ্যা করার দরকার নেই, তার সামনে কণামাত্রও কৈফিয়ত দেবেন না। যত কম মানুষকে জীবনে জায়গা দেবেন, তত ভালো থাকবেন। ফেইসবুকের তেমন কাউকেই আপনার দরকার নেই, আপনাকেও তেমন কারও দরকার নেই। জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় মানুষ পাওয়ার ক্ষেত্রে ফেইসবুক 'মোটামুটি' ভুয়া একটা জায়গা! এক শান্তি বাদে আর তেমন কিছুই আসলে আমাদের দরকার নেই। যাকে ব্লক করতে পারেন না কোনও-না-কোনও কারণে, তার মেসেজ স্প্যামে ফেলে রাখুন। শরীরে তেল বেশি হলে সে মেসেজ পাঠাক আর পাঠাতেই থাকুক। ঘরের দরজার সামনে এসে কুত্তারা চিল্লায় তো চিল্লাক না! আপনি দরজা না খুললেই তো হলো!


এই পোস্ট পড়ে আপনাদের অনেকেরই মাথায় আসবে, 'হুহ্‌! অহংকার পতনের মূল!' সো সুইট! সাকিব-তামিমের মতো অহংকারী প্লেয়ারের অহংকারের শাস্তিস্বরূপ জিম্বাবুয়ের সাথে বাংলাদেশের পতন তো নিজের চোখেই দেখলেন! আমি আর কী বলব!


আসল কথা হচ্ছে, এই ব্যাপারটাকে অহংকার বলে না, আত্মসচেতনতা বলে। পতনের মূল যদি হয়ও, তবে পতিত হলে তো আমি পতিত হব! আপনার কী সমস্যা? কথা সেটাও না! সত্য কথা হচ্ছে, আশেপাশে যাদের দেখেন, তাদের প্রায় সবাই-ই আপনার ভালো থাকার জন্য পুরোপুরিই অপ্রয়োজনীয়। যে লোককে আপনার ভালো থাকতে লাগে না, আপনাকে খারাপ রাখার সুযোগটা তাকে দিয়ে আপনার কী লাভ? টাকাপয়সা, পেশা, সম্পর্ক, আনন্দ, দায়িত্ব---আপনার জীবনে এই পাঁচটি বিষয়ের বাইরে যারা, তাদের তেমন কেউই আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নন।