নিজের একটা ‘তুই’

 আমি জানি, তুই খুবই পেইন টাইপের, তবু আমার তোকেই ভালো লাগে।
  
 আমি জানি, পরামর্শের দরকার হলে তুই আমার কাছেই দৌড়ে আসবি। সমস্যা নাই, আমি আছি তোর জন্য, যা মন চায় কর। তুই যখন উলটাপালটা কাজ করিস, তখন আমার তোকে ধরে লাত্থি মারতে ইচ্ছা করে, কিন্তু তবু আমি তোকে সেইভ করব, অসুবিধা নাই। পুরা দুনিয়া তোর কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখলেও, আমি আছি তোর জন্য, চলে আসিস আমার কাছে!
  
 তুই যখন শপিং করিস, তখন আমার দেখলেই বিরক্ত লাগে, তবু আমি তোকে সময় দিই, কেননা তোর সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগে। তুই কী পরিমাণ যে ঘুরে ঘুরে শপিং করিস সস্তায় জিনিস কেনার জন্য, উফফ্‌... দেখলেই তোকে থাপ্পড় মারতে ইচ্ছা করে! তা-ও ভাবি, থাক তোর খুশিই আমার খুশি! খুব বিরক্ত লাগলেও তোকে মুখে কিছুই বলি না!
  
 তুই তো লাল মরিচের চাটনি দিয়ে মোমো খেতে পারিসই না, তবু আমি তোকে বুঝিয়ে-টুঝিয়ে ওটাই খাওয়াই। তোর যখন খুব ঝাল লাগে, কান লাল হয়ে যায় ঝালে, তখন আমি তোকে জলের বোতলটা এগিয়ে দিই। তোর এই কাণ্ডকারখানা আমার মোবাইলে রেকর্ড করতে ভালো লাগে। পরে তোকে এসব নিয়ে খেপাই।
  
 তুই মাঝে মাঝে তোর মনের সমস্ত রাগ আমার উপর ঝাড়িস। কে তোকে কী বলল, তুই কাকে কাকে সহ্যই করতে পারিস না, কার সম্পর্কে তোর উলটাপালটা কথা বলতে মন চায়, তোর কোন ক্রাশের সঙ্গে তোর কী করতে ইচ্ছে করে, এর সবই আমি জানি। তোর লজ্জাও করে না আমাকে অত কিছু বলে ফেলতে! লজ্জা করে না বলেই আমার শুনতে ভালো লাগে। তোর সবই শুনতে শুনতে আমার মুখস্থ হয়ে গেছে। তোর সিক্রেটগুলি আমাকে বলবি না তো আর কাকে বলবি তুই?
  
 তোর সব কিছুই তুই আমার সঙ্গে শেয়ার করিস। তুই একটা গাধা, মাঝে মাঝে তুই যেসমস্ত কাণ্ড ঘটাস, তা দেখলেই আমার মেজাজ খারাপ হয়। মনে হয়, তোকে ধরে ইচ্ছামতো পিটাই। তবু কী জানিস তো, তোর এইসব উদ্ভট কাজের পিছনেও আমি যুক্তি দাঁড় করিয়ে ফেলি। তোর সঙ্গে চলতে চলতে আমিও গাধা হয়ে গেছি রে!
  
 তোকে দেখলে আমার মাথায় শুধু দুইটা কথাই আসে:
 তোর মতন হারামিকে গুলি করে মেরে ফেলা উচিত!
 তোকে ছাড়া আমার পুরা দুনিয়াটাই অর্ধেক হয়ে যাবে!