২৪৬. পাথরের মধ্য থেকে যে ফুলগুলি বেরিয়ে আসতে পারে, আমরা কেবল ওদেরকেই ফুল ভাবি।
পাথরের চাপে যে ফুলগুলি বেরিয়ে আসতে পারে না, ওদের কথা আমরা কেউ জানিই না! অথচ ওরাও...ফুলই ছিল!
২৪৭. চলে গেছে যে, সে চলে গেল কেন, আজও বুঝতে পারিনি।
থেকে গেছে যে, সে থেকে গেল কেন, আজও বুঝতে পারিনি।
২৪৮. বেঁচে থাকার একটাও কারণ ছিল না। তবু ঈশ্বরের সঙ্গে গোঁয়ার্তুমি করে সেদিন বেঁচে ছিলাম।
ভালো থাকার একটাও কারণ ছিল না। তবু বেঁচে ছিলাম বলেই আজ ভালো আছি।
২৪৯. বেঁচে আছি আজও, তুমি হাসো বলে।
বেঁচে আছি আজও, তুমি অভিশাপ দিয়েছিলে বলে।
২৫০. আলোর সাঁতার দেখেছ তো, বন্ধু?
আঁধার এলে সাঁতরায় যে আগুনে-পোকা, তার আলোই দেখেছ, দুঃখ দেখোনি।
পাছে নিজেকে হারিয়ে ফেলে, সে ভয়েই সে আলো মেলে!
২৫১. সদ্যোজাতরাই সবচেয়ে বড়ো কবি!
যা আসে মনে, ওরাই শুধু মুখে এনে ফেলে!
কবির যা ভাষা, তা যদি হয় দুর্বোধ্যও, তাতে কবির দায়ই-বা কীসের!
২৫২. বন্ধু, আমায় তুমি ঝড়ের ভয় দেখাচ্ছ?
আমি তো দেখেছি, ঝড় এলেই বরং ঘাসগুলি উড়ে গিয়ে পথের সৃষ্টি হয়!
২৫৩. আপনি যা চান, তা যেখান থেকে পান, সেখান থেকে মাঝে মাঝে এমন কিছুও পাবেন, যা আপনি চান না। তখন তা মেনে নিয়ে চুপ থাকতে হয়।
যদি মেনে নিতে না পারেন, তবে বেশি কথা কম বলে সেখান থেকে দ্রুত বিদেয় হোন।
২৫৪. নিজেকে আমি কথার চাদরেই মুড়িয়ে রাখি, যাতে কেউ ভুল করেও সেই নীরবতাটুকুর খোঁজ না পায়, যেখানে আমি থাকি।
২৫৫. 'আমার এবং স্বর্গের মধ্যে তফাতটা কোথায়?'
এর উত্তরে সেদিন ভালোবাসাকে বলেছি, 'যখন তুমি হাসো, স্বর্গের কথা তখন আমার মাথায় আর আসে না।'
২৫৬. যখন তুমি পাশে থাকো না, আমি তখন নিঃশ্বাস বন্ধ করে রাখি। যে জীবনটাতে তুমি নেই, সে জীবন কাটিয়েই-বা কী হবে!
২৫৭. ওরা বলে, জীবন নাকি কেটেই যায়!
সত্যিই কি কাটে? সবসময়ই? না, বোধ হয়!
মাঝে মাঝে জীবন আর কাটে না, কেবল দিনগুলিই কাটে।
২৫৮. নিজেকে খুব হালকা করে ফেলো। তখন জীবনের আঘাতে ব্যথা পাবে অল্প।
নিঃশ্বাস নাও ধীরে, যাতে হাওয়ার গায়েও ব্যথা না লাগে। ভালোবাসা কাছে আসতে তখন আর ভয় পাবে না।
২৫৯. তুমি নেই, তাই ফেলে-আসা জীবনটাকে আজ মনে হয় গল্প!
তুমি ছিলে, তাই সত্যিই তখন মানুষ ছিলাম, এখন আছি অল্প।
২৬০. তুমি বেরিয়ে গেলে, দরোজাটা বন্ধ করে দিলে, এক বারও ভাবলে না।
এরপর... পেছন ফিরে তাকালে; ফিরতে চাইলে।
ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। জীবন থেমে থাকে না।
২৬১. এ জীবনে আপাতত এইটুকু হলেই আমার চলবে:
কোনও এক হাওয়ামুখর সন্ধেয় আমাদের দেখা হবে। তুমি আমার সেই পাশটায় বসবে, যেদিকে ধীরে ধীরে সন্ধের আলো নামবে। চাঁদ আর নদী মিলে পুরো পৃথিবীকে দুই ভাগ করে দেবে: এক ভাগে আমরা থাকব, আরেক ভাগে বাকিরা থাকবে।
২৬২. তুমি আমাকে মাত্র দুটো কাজ দিয়েছিলে। এক। তোমাকে ফোন করা যাবে না। দুই। তোমার ছবির দিকে তাকানো যাবে না। তোমার দেওয়া কাজ নিয়ে আমি ভালো আছি, ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি।
আরেকটা কাজ তুমি আমাকে দিতে পারতে, কিন্তু দাওনি। কাজটা হচ্ছে, তোমার কথা ভাবা যাবে না।
কেন দাওনি? ভুলে? না কি অতটা বিশ্বাস তুমি আমাকে আজও করো না?
২৬৩. ফোন কোরো না, সে ব্যস্ত। তার চেয়ে বরং কবিতা পাঠাও।
হোক এবার নতুন কিছু, ফোন তো সবাই করে! ফোন ধরে না যে, সে-ও কবিতা ধরে!
২৬৪. এ কী জ্বালা!
প্রতি বারই, ঠকঠক শুনলেই, আমার হৃদয়টা একছুটে দরোজা খুলে দেয়!
২৬৫. ওরা ভাবে, আমরা অদ্ভুত।
আমরা ভাবি, ওরা অদ্ভুত।
ওরা আর আমরা, আমরা আর ওরা, ---এইটুকুতেই তো পুরো পৃথিবী!
২৬৬. তার একটা কথায় সব কথারই মৃত্যু হলো!
সেই এক মৃত্যুতে সব জীবনেরই জন্ম হলো!
মৃত্যু আনলেই জীবন আসে!
২৬৭. ওরা বলে, ভালো করে ধুলে নাকি সব চলে যায়!
কই, এতগুলি বছর ধরে কত লক্ষ বার এ দু-হাত ধুলাম, তবু তোমার ঘ্রাণটা তো আজও টের পাই!
২৬৮. সুন্দর যা, অসুন্দরও তা!
কারও চোখে কান্না সুন্দর, কারওবা চোখে হাসি।
আমার চোখে তা-ই সুন্দর, যা-ই ভালোবাসি।
২৬৯. বারে বারে জানতে চাইছ তো, আমার জন্মের তারিখটা কত!
বলছি তবে, লিখে নাও।
জন্ম আমার ঠিক সেদিনই, যেদিন তুমি ভালোবাসলে!
২৭০. সেদিন তুমি যা যা বলেছিলে, সেখানেই তোমাকে খুঁজতে গিয়ে এই জন্মের মতো হারিয়ে ফেললাম!
বুঝিনি আমি... তুমি তোমার ঠোঁটে ছিলে না, চোখে ছিলে।
২৭১. হে ঈশ্বর! এত ছোটো হৃদয় দিয়ে আমি কী করব?
আমি ভালোবেসেছি যাকে, সে যে এ পৃথিবীর সমান বড়ো!
আমার এ হৃদয় নিয়ে তার বদলে পৃথিবীর সমান একটা হৃদয় দাও!
২৭২. তোমায় চুমু খেতে চাই---
যখন-তখন যেখানে-সেখানে যে-কোনও অবস্থায় জায়গা বুঝে, জায়গা না বুঝে জনারণ্যে, জনান্তিকে কোলাহলের আগে ও পরে সবার সামনে, সবার আড়ালে সময়ে, অসময়ে
---তোমায় পাবার আগ অবধি।
২৭৩. একাকিত্ব সরাতে তোমার হাত ধরেছিলাম।
বুঝিনি তখন, তুমিই ছিলে একাকিত্ব!
তুমি ছিলে না, আমি ছিলাম, একাকিত্ব ছিল।
তুমি এলে, আমি নেই, একাকিত্ব আছে।
আমি নেই। আজ একাকিত্ব সরানোর কেউ নেই।
২৭৪. পরশু ঠোঁটে ছিল ঠোঁট, সময়ে ছিল সময়।
গতকাল ঠোঁটে ছিল সময়, সময়ে ছিল ঠোঁট।
আজ ঠোঁটে জমল কান্না, সময়ে নিভল অশ্রু।
২৭৫. ভেবেছিলাম, পাপ করে যাই যদি আমৃত্যুও; শাস্তি কোনোদিনই পাবো না!
ঈশ্বর কী বুঝলেন, জানি না। তবে ঠিক তখনই আমি প্রেমে পড়লাম!
২৭৬. তুই ছিলি বলেই আমিও ছিলাম।
সেই তখন থেকেই তুই আছিস, আমি আছি, আমরা আছি।
যদি আমি থাকি, তুই থাকবি, আমরা যদি না-ও থাকি।
২৭৭. ভালোবাসা আসে না যখন, শুকনো পাতাকেও প্রজাপতি ভাবি, সরিয়ে সরিয়ে পা ফেলি।
ভালোবাসা আসে যখন, প্রজাপতিকেই শুকনো পাতা মানি, মাড়িয়ে মাড়িয়ে পা মেলি।
না পেলে রাখা যায়! পেয়ে গেলে রাখা দায়!
২৭৮. চেয়েছিলাম ভালোবাসা, পেলাম সংসার!
২৭৯. একদিন নিঃশ্বাসের দূরত্বে থেকেও বলতে পারিনি কিছুই!
আজ দৃষ্টিসীমানার বাইরে থেকেই গল্প করি সারাক্ষণই!
ভালোবাসা... শুধুই দেরি হয়ে যাবার অপেক্ষায় থাকে!
২৮০. যেই বললাম, ‘ভালোবাসি!’, অমনিই সে বিছানার দিকে তাকায়!