পাবো না ভেবেও পেয়েছি যা-কিছু

আপনি যাতে দিনের শেষে আপনার বিবেকের কাছে ক্লিয়ার থাকেন, যাতে আপনার বিবেক যখন আপনার কাছে প্রশ্ন করে, 'অ্যাই ব্যাটা, তুই কি পড়াশোনা করেছিস ঠিকমতো?!', তখন যাতে আপনি বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন, 'আমি চেষ্টা করেছি। আমি পারিনি, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। সেটা আমার নসিবে ছিল না, আমার তকদিরে ছিলো না, আমার নিয়তিতে ছিলো না, আমার অদৃষ্টে ছিল না। কিন্তু, আই ট্রাইড মাই লেভেল বেস্ট! আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করেছি।' নিজের শক্তির প্রতি সুবিচার করার মধ্যে অসীম স্বস্তি আছে, শান্তি আছে। সেই অপ্রাপ্তিই মানুষকে সবচাইতে বেশি কষ্ট দেয়, যা পাবার জন্য সে যথাযথভাবে চেষ্টা করেনি।




আপনারা আজকের তারিখে যে ভুলগুলো করছেন, কোনও একটা দিন দেখবেন, সেই ভুলগুলো না করলে আপনার জীবনটা এত সুন্দর হতো না। সো ট্রাই টু রেসপেক্ট ইয়োর মিসটেকস। আমি রিপিট করছি কথাটা, ট্রাই টু রেসপেক্ট ইয়োর মিসটেকস। আপনার ভুলগুলোকে সম্মান করার চেষ্টা করুন। কেননা আপনার ভুলগুলো যদি ভুল হয়, আপনি তো ভাই সে ভুলে-ভরা মানুষটাই। এর বাইরের কেউ তো নন আপনি! কারণ ভুলগুলোকে বাদ দিয়ে তো আর আপনি নন। আপনি যদি সঠিক কাজ করেন, তবে সেই সঠিক মানুষটাই আপনি। ভুলের সৌন্দর্য অসীম। ভুল‌ই মানুষকে সঠিক পথে নিয়ে যায়।




কিছু মানুষ দেখবেন, যারা আপনাকে ভুলগুলো দিয়ে বিচার করে। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করুন অতিদ্রুত। সুন্দরভাবে বাঁচতে গেলে পৃথিবীতে সবাইকে দরকার নেই। যারা আপনার ভালো দেখে না, আপনাকে ভালো ভাবে না, তাদের ধারেকাছেও কখনও থাকবেন না। মানে হলো, একটা ভুল থেকে যদি আপনি শিখতে চান, তাহলে আপনাকে সেই মানুষগুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে, যারা ওই ভুলগুলোকে খুব বাজেভাবে দেখে। অত‌এব, তাদের এড়িয়ে চলুন। যারা আপনাকে শেষ করে দেয়, যারা আপনাকে ধ্বংস করে দেয়, যারা আপনাকে আপনার মতো থাকতে দেয় না, তাদের আপনি অ্যাভয়েড করুন যে-কোন‌ও মূল্যে।




চুয়েটে পড়ার সময় আমি যে ভুলগুলো করেছিলাম, সেই ভুলগুলোই পরবর্তীতে ফুল হয়ে আমার লাইফে এসেছে। আপনার ভুলগুলো কিন্তু ফুল হতে পারে। আপনার ভুলগুলো ফুল হবে কি কাঁটা হবে, সেটা আপনার উপর ডিপেন্ড করে। সবাই কিন্তু ভুলগুলোকে ফুল করতে পারে না। ওটার যে মানসিক শক্তি, ওটার যে প্ল্যান, ওটার যে একটা চিন্তাভাবনার শক্তি, এটা সবার থাকে না। এখন, অ্যাকাডেমিক লাইফে, আমি তো বলেছি, আমি টিউশনি করেছি এবং টিউশনিটা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে করেছি। আমার মাথায় সবসময়ই থাকত, পড়ালে আমি এমনভাবে পড়াব যাতে আমার চাইতে ভালো আর কেউই পড়াতে না পারে। এর জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, আমি নিয়েছি সবসময়ই---রাতের পর রাত জেগে থেকে, না ঘুমিয়ে। নিজেকে ফাঁকি না দিলে এ পৃথিবীর কার‌ও কাছেই মাথানত করে বাঁচতে হয় না।




আমি যখন যেটা করেছি, সেটা ভালোভাবেই করেছি। এমনকী আমি ফাঁকি দিলেও খুব মন দিয়ে ফাঁকি দিয়েছি। আমি পড়াশোনা করলেও মন দিয়ে পড়াশোনা করেছি। যখন আমি স্টুডেন্ট পড়াতাম, তখন আমার টার্গেট ছিল পারফেকশনের দিকে। আমি চট্টগ্রামে পড়াতাম এবং আমার মাথায় সেট হয়ে গিয়েছিল, আমি যে বিষয়গুলো পড়াই, সে বিষয়গুলো আমার চাইতে ভালো করে আর কেউই যেন না পড়ায় বা পড়াতে না পারে। তো সেটা করার জন্য আমার যা যা করতে হতো, তা-ই তা-ই আমি করতাম। নিজেকে সর্বোচ্চ মাত্রায় পরিশ্রম করাতাম।




আমি যখন ফিজিক্সের ক্লাস নিতে যেতাম, তখন সিলেবাসে কী আছে কী নেই, তার খুঁটিনাটি জানতে ও বুঝতে ইন্টারমেডিয়েটে যে আট/নয়/দশ'টা বই আছে, সেগুলোর সবগুলোই আমি পড়ে ক্লাসে যেতাম। আমি যখন ইংলিশ পড়াতে যেতাম, তখন আমি ল্যাঙ্গুয়েজের উপর হয়তোবা ত্রিশ/পঁয়ত্রিশটা বই পড়ে যেতাম। কেমিস্ট্রি, ম্যাথ, স্ট্যাট, বাংলা পড়াতে যাবার আগেও হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে প্রস্তুত হয়ে ক্লাসে যেতাম। কোনও বিনয় না করেই বলছি, নিজের প্রতি ওরকম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে দিতে আমার বেসিকটা অনেক বেশিই ভালো হয়ে গিয়েছিল। মুখে মুখে আমাকে হারিয়ে দেওয়া সহজ হলেও কাজের মাধ্যমে আমাকে হারিয়ে দেওয়াটা সত্যিই খুব কঠিন ছিল। চ্যালেঞ্জটা ছুড়তে হয় নিজের প্রতি, তাহলে পৃথিবীর সব চ্যালেঞ্জ আপনাআপনিই জয় করে ফেলা যায়।




আমি আপনাদের বলছি, আপনারা যদি ভুল করেন, তবে ভুলটাও মন দিয়ে করুন। যে যত মন দিয়ে ভুল করে, সে তত আন্তরিকভাবে আফসোস করে; এই আফসোসটাই পরবর্তীতে মনের শক্তি অনেক বাড়িয়ে দেয়। আপনারা যদি ঠিক কাজটা করেন, তবে ঠিক কাজটাই মন দিয়ে করুন---এটাই আপনাকে পরবর্তীতে পে করবে। ওয়েট ফর দ্যাট! হ্যাঁ, সেই সুন্দর সময়টার জন্য ওয়েট করুন।




আমি আমার অনার্সলাইফটা খুব ফাঁকিবাজি করেই কাটিয়েছি। লোকে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে, আর আমি টিউশনির পাশাপাশি পড়াশোনা করেছি---অবশ্য সেটাও তেমন একটা নয়। আমি বিসিএস-এর কথা যদি বলি, তাহলে শুরুতে যেটা হয়েছে...একদম সরাসরি বলি, আমি প্রথমে ভেবেছি, বিসিএস'টা অনেক কঠিন এবং বিসিএস-এর জন্য প্রচুর প্রচুর পড়তে হয়। সবাই বলছিল, বিসিএস'টা খুবই টাফ। তা ছাড়া আমার পুরো ফ্যামিলিতে এর আগে আর কেউ কখনও বিসিএস ক্যাডার হয়নি। এই চাকরিতে আমিই প্রথম। ফলে আমি কখনও কাউকে পাইনি, যার মুখে বিসিএস নিয়ে কিছু শুনেছি। সেই আমি যদি এক বার পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পাই, তবে আপনি পাবেন না কেন? বিসিএস-এর সঙ্গে আমার কখনোই পরিচয় ছিল না, প্রেম তো দূরের কথা! সেই অর্থে চাকরিটা পাবার আগ পর্যন্ত আমি ছিলাম বিসিএস-ভার্জিন! হা হা হা!




আমি তো চুয়েটে পড়তাম। ২০০২ সালের ব্যাচে আমি চুয়েটে ভর্তি হয়েছি। আমাদের সময়ে চুয়েটে বিসিএস-এর দৃশ্যমান কোনও ট্রেন্ড ছিল না। আমাদের আশেপাশে কেউ বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে বলে আমরা কখনও শুনিনি। আমাদের একজন অসাধারণ শিক্ষক ছিলেন, নাম হচ্ছে‌ উত্তম কুমার দেবনাথ। উনি ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে রেকর্ড মার্কস পাওয়া গোল্ড মেডালিস্ট। তো উনি বিসিএস ক্যাডার হয়ে চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এবং আমরা দেখেছি, আমাদের প্রত্যেকটা শিক্ষকের দায়িত্ব ছিল ক্লাসে এসে উত্তম কুমার দেবনাথ সম্পর্কে বাজে কথা বলা। বাজে কথা বলতেন কেন? কারণ তিনি তো শিক্ষকতা করতেন। শিক্ষকতা ছেড়ে বিসিএস-এ গিয়েছেন, তিনি একজন খারাপ লোক, তিনি একজন খারাপ চিন্তাভাবনার মানুষ। যাকে আমরা খারাপ ভাবি, সে শত ভালো হলেও তার সম্পর্কে আজেবাজে কথা ছড়াই।




তখন আমরা যেহেতু ছোটো ছিলাম, সেহেতু আমরাও ভাবতাম না যে উত্তম কুমার দেবনাথ ভালো মানুষ। কিন্তু আমাদের মাথায় আসলে ওই বুদ্ধিটা ছিল না যে, একটা মানুষ তার জীবনটা কীভাবে কাটাবে, এটা নিতান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কারও ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে কোনও কিছু বলতে হয় না। কারও ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে হয় না। একমাত্র অপদার্থরাই অন্য কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলে, গবেষণা করে। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই যদি এমন মাথামোটা অপদার্থ হয়, তখন স্টুডেন্টরাই-বা আর কী করবে!




উত্তম কুমার দেবনাথ স্যারকে যখন দেখলাম, স্যার একটা ভুল (!) করেছেন, তখন আমাদের সবার মাথাতেই একদম সেট হয়ে গেছে, জীবনে আর যা-ই করি, বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। তা ছাড়া বিসিএস নিয়ে আমরা কেউ কখনও ভাবিওনি, চিন্তাও করিনি। তাই বিসিএস নিয়ে আমার সত্যিই কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। এমনকী বিসিএস কথাটির ইলাবোরেশনটাও তখন জানতাম না। আপনাদের একদম সত্য কথা বলি, বিসিএস মানে "বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস", এটাই তো চুয়েটে পড়ার সময় কখনও শুনিনি, প্রিপারেশন নেওয়া তো অনেক পরের কথা! কী বলব আর!




যখন বিসিএস পরীক্ষার জন্য পড়া শুরু করলাম, তখন আমার মনে হয়েছিল, এটা খুবই কঠিন একটা পরীক্ষা। আশেপাশের সবাই-ই এটাকে খুব কঠিন বলত। এখন তো দেখি, এটা একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে। মানে বিসিএস পরীক্ষাকে কঠিন বলাটা সবাই একধরনের ফ্যাশন মনে করে। আমরা যেমন নতুন নতুন পোশাক পরাটাকে ফ্যাশন মনে করি, ঠিক তেমনি 'বিসিএস পরীক্ষা কঠিন!'---এটা বলাটা একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে!




আমি বলি, আরে গাধারা, তোরা এই সহজ সত্যটা বুঝিস না কেন, বিসিএস পরীক্ষা তাদের জন্য কঠিন নয়, যারা এটার জন্য ঠিকভাবে পড়াশোনা করে। আর যারা পারে না, তাদের জন্য তো সবকিছুই কঠিন। এটাই তো স্বাভাবিক। যখন বিসিএস পরীক্ষা দেবো মনস্থির করলাম, তখন...বিসিএস পরীক্ষাটা ভীষণ কঠিন, ভীষণ কঠিন---এরকমটাই শুনছি।




সেইসময় আমার এতটাই বাজে অবস্থা ছিল যে আমি তো তখন আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম। যে মানুষটা আত্মহত্যা করতে যায়, সে মানুষটার আসলে তার জীবনের কাছ থেকে কোনও কিছু পাবার আশা আর থাকে না। কোনও কিছু পাবার আশা সে আর করে না। কেবল তখনই সে জীবনটাকে শেষ করতে চায়।




তখন আমি মৃত্যুর সেই আয়োজন থেকে ফিরে এসেছি। আই অ্যাম থ্যাংকফুল ফর দ্যাট! সেখান থেকে ফিরে-আসা একটা মানুষ, তার তো লাইফে কোনও কিছুই আর হারানোর নেই। যে মানুষটার লাইফে কোনও কিছু হারানোর নেই, তাকে পরাজিত করাটা কিন্তু খুব কঠিন। কাউকে হারাতে চাইলে তার জেতার কিছু রাস্তা খোলা রেখে দিতে হয়।




তো তখন আমি ভাবতে লাগলাম যে, বিসিএস ক্যাডার হওয়াটাকে সবাই খুব কঠিন বলছে, ঠিক আছে, কিন্তু আমি যদি বেঁচে থাকি এবং ভালো কিছু করতে না পারি, তবে তো আমার সেই বেঁচে-থাকা'টার কোনও দাম নেই। তার থেকে মরে যাওয়াটাও অনেক সোজা। কেননা ধরুন, আমি যদি বেঁচেও থাকি, তাহলেও আমি মানুষের কাছ থেকে ওইসব কথাবার্তা শুনব, যে কথাগুলো শুনে আমি মরতে গিয়েছিলাম কিংবা মানুষ আমাকে তাচ্ছিল্য করবে। তখন লাইফটাকে আমার কাছে অর্থহীন মনে হবে। তার চাইতে যদি আমি এমনভাবেও পড়াশোনা করি যে, সর্বোচ্চ যতটুকু পড়াশোনা করলে মানুষ সবচাইতে বেশি কষ্টের মুখোমুখি হয়...




সহজ করে বলি। আমাদের আসলে কী হয়! আমরা যদি বেশি পরিশ্রম করি, তাহলে আমরা সর্বোচ্চ কতটুকু লুজার হতে পারি? আমরা মরে যেতে পারি! কারণ মৃত্যুর চাইতে বড়ো লস তো আর কিছু নেই। আপনি পৃথিবীতে নেই, এর থেকে বড়ো ক্ষতি তো আপনার হতে পারে না। তখন আমি ভেবেছি, আমি যদি কিছু করতে না পারি লাইফে, তাহলে বেঁচে থেকেও তো আমার কোনও লাভ নেই। যা না পেলে বেঁচে থাকাটা মৃত্যুর সমান, তা পাবার জন্য মরে যেতেও আপত্তি কীসের! তাই একজন সুস্থ মানুষের পক্ষে সর্বোচ্চ যতটুকু পরিশ্রম করা সম্ভব, আমি ততটুকুই পরিশ্রম করছি। আমি এর জন্য কণাপরিমাণও আফসোস রাখতে চাইনি। ভূতের মতন পরিশ্রম করেও কিছু-একটা না পেলে তখন আর আফসোস হয় না, হাসিমুখে ওটাকেই নিয়তি বলে মেনে নেওয়া যায়।




সত্যি বলতে কী, বিসিএস'টাকে আমি ভীষণ ভীষণ কঠিন মনে করেছি। রেজাল্ট বের হবার পর ভাবলাম, হায় হায়! এ আমি কী গাধামি করেছি!!! এত পড়াশোনা না করলেও তো চলত। আমি তো প্রথম হয়ে বসে আছি! আমার তো প্রথম হবার ইচ্ছে ছিল না। আমার শুধু একটা চাকরি পাবার দরকার ছিল। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি বুঝেছি, লোকজন আসলে ভুয়া কথা বলে। বিসিএস পরীক্ষা অতটা কঠিন কিছু নয়। মানে ততটা কঠিন নয়, যতটা আমি ভেবেছি আর কি! শরীরের উপর অত্যাচার করে করে ডেইলি ১৫-১৬ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছি প্রায় ৫-৬ মাস। এর তো কোনও মানে ছিল না! হা হা হা!




তো আমি আপনাদের বলি, আপনারা খাটুন, পরিশ্রম করুন। সত্যি সত্যি মন দিয়ে পড়াশোনা করুন অমানুষিক পরিশ্রম করে। পড়াশোনা ফাজলামো করার জিনিস নয়। সব মজা একসঙ্গে পাবেন না। পড়াশোনা না করেও পড়াশোনা করার মজা ভোগ করতে চায় যারা, ওদের জন্য সত্যিই করুণা হয়। যারা বলে, 'বিসিএস হয় না! বিসিএস হয় না!', তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে আপনার কী লাভ হবে, বলুন তো! আপনি তো চাকরিটা পেতে চান, তাই না? তো যারা বলে, চাকরিটা পাওয়া যায় না, তাদের সঙ্গে কথা বলে আপনার কী লাভ হবে? এর উত্তরটা আমি আসলে জানি না। আপনি পড়াশোনা করুন কঠোর পরিশ্রম করে যাতে দিনের শেষে বিবেকের কাছে আপনি স্বচ্ছ থাকতে পারেন।




ধরুন, চেষ্টার কোনও ত্রুটি না করেও আপনি ফেইল করলেন! অসুবিধে কোথায়? আমাদের বিবেকটা কিন্তু একটা আয়নার মতো! আমরা সেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যা কথা বলতে পারি না। সেই আয়নার কাছে সাহস নিয়ে যেতে পারাটাই বড়ো কথা। আপনাদের আমি বলি, আমি যদি চাকরিটা না-ও পেতাম, তবুও আমি কিন্তু কখনোই নিজেকে ব্লেইম করতে পারতাম না। কারণ আই ট্রাইড মাই বেস্ট! এর চাইতে বেশি চেষ্টা করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আমি মেনে নিতাম, বিসিএস ক্যাডার হ‌ওয়াটা আমার অদৃষ্টে লেখা নেই।




আপনি আপনার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করুন। আপনার পুরনো যে ভুলগুলো, সে ভুলগুলোকে আপনি শক্তি হিসেবে চিন্তা করুন। সেগুলোকে আপনি আপনার মনের শক্তিতে রূপান্তর করুন। বাকিটা আপনাআপনিই হয়ে যাবে! আপনার জন্য খুব সুন্দর একটা জীবন অপেক্ষা করছে। ওটা এতটাই সুন্দর যে আপনি তা ইম্যাজিনও করতে পারছেন না! যারা আজ বলছে, আপনি শেষ হয়ে গেছেন, তারা আসলে আপনার শুরুটাই এখনও দেখেনি! ছাগলের দল বরাবরই না বুঝেই লাফায়। তবে এই বাক্যটিকে সত্য করতে চাইলে আপনাকে এমন একটা জায়গায় নিজেকে নিয়ে যেতে হবে যেন আপনার সামনে ওদের লাফালাফি দেখলে তা ছাগলের লম্ফঝম্পই মনে হয়। আপনি নিজের জার্নির শুরুটা করে দিন। একদিন ঠিকই তারা তাদের উত্তরটা পেয়ে যাবে। উত্তর মুখে দিতে হয় না, কাজের মাধ্যমে বোঝাতে হয়। মুখে মুখে চেঁচায় তো নেড়িকুত্তা!