ফিরে-আসা স্মৃতি

ভোরের ট্রেনটা ধরতে গিয়ে তাড়াহুড়োয় ভুল করে ছেঁড়া জুতোটাই পরে রওনা হলাম। আমাকে গরিব এবং ভদ্রলোক ভেবে পাশের সিটে-বসা আনুমানিক অষ্টাদশী  মেয়েটি তার সমস্ত সুখ-অসুখের গল্প উগরে দিতে লাগল।




গল্প শুনতে শুনতে আমি যে ভুল প্ল্যাটফরমে পৌঁছে গেলাম, সেটা নিয়েও তাকে তেমন মাথা ঘামাতে দেখলাম না। যাবার বেলায় সামান্য সরিটুকুও বলে গেল না। শুধু বলল, 'আবার দেখা হবে।'




সাড়ে এগারো বছর আগে আমার প্রেমিকাও চোখের জল মুছতে মুছতে বলেছিল, 'যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের আবার দেখা হবে।'




আমার মনে হলো, প্রেমিকা মাত্রই অষ্টাদশী, কিন্তু অষ্টাদশী মাত্রই প্রেমিকা না-ও হতে পারে!




আমার বর্তমান প্রেমিকা আবার অমন ছিঁচকাদুনে টাইপের নয়। তাকে আসলে আমি কখনও কাঁদতেই দেখিনি। তার বয়স সাতাশ। সাতাশে এলে প্রেমিকারা আর হুট করে কেঁদে ফেলতে পারে না। তারা খুব দ্রুত পরিস্থিতি সামলাতে জানে, তাদের হাতে কান্না করার মতন অত সময় কই?




কিন্তু এই এগারো বছর পরে এসেও কেমন যেন হাহাকার জাগে, সব পেয়েও কী যেন পাইনি পাইনি করে মন উতলা হয়। আমি সম্ভবত আমার প্রাক্তন প্রেমিকাকে মিস করছি, ওর ন্যাকা ন্যাকা কান্নার শব্দ শুনতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে ওর অভিমানে হারিয়ে যেতে, ওর আবেগে তলিয়ে যেতে। আচ্ছা, ও কি কাঁদে না আর অমন করে? এখন ওর বয়স কত হবে আনুমানিক?




...না, মনে করতে পারছি না। আর এসব কেন ভাবছি, তা-ও ঠিক বুঝতে পারছি না।
শুধু এটুকু অনুধাবন করতে পারছি, প্রেমিকা ভালোবাসার মানুষ হলেও ভালোবাসার মানুষটি সবসময় প্রেমিকা না-ও হতে পারে!