মিলি রাত জেগে থাকে; চোখভর্তি স্বপ্ন তাকে ঘুমোতে দেয় না। গত কয়েকদিন ধরে সে খুব ছটফট করছে; নতুন উপন্যাস লেখায় হাত দিয়েছে, তাই। অনেকগুলো ক্যারেক্টারকে ঠিকঠাক নিজের কল্পনামাফিক রূপ দিতে পারলেও সাদমান নামের উনত্রিশ ছুঁইছুঁই ছেলেটাকে কিছুতেই সে ধরতে পারছে না। কীভাবে সাদমানকে লেখায় আটকে ফেলবে, ওর মধ্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবে মিলি বুঝতে পারছে না।
ফারাজ নামের এক ছেলেবন্ধু আছে মিলির। প্রায় আড়াই-তিন বছর ধরে ছেলেটা তার ফেইসবুকে আছে। ওদের মধ্যে রোজরোজ কথা হয় না, কিন্তু প্রায়ই দীর্ঘসময়ের আড্ডা হয়। ফারাজকে মিলির বেশ ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার মনে হয়; মনে হয়, আরে কোথাও-না-কোথাও তো ও-ই সাদমান! এমনি করেই তো ধীরে হাঁটে সে, চুপচাপ থাকে, শ্যামলামতন আর গভীর একজোড়া চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু কথা বলার সময় তার ইন্টারেস্টের ব্যাপারটা মিলি বুঝতে দেয় না ফারাজকে।
ওদিকে ফারাজ মনে মনে হাসে। মিলি যে তার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহী, সেটা সে ধরে ফেলেছে। এই বুদ্ধিমত্তার কারণে নিজেই নিজেকে সাবাসি দেয় সে। দু-দিন কফি খেয়েছে মিলির সাথে একসাথে বসে। ফারাজ নিজেও মিলির সাথে ইন্টিমেট হতে চাইলেও মুখে কিছু বলছে না; অ্যাপ্রোচটা মিলির কাছ থেকেই আসুক, ফারাজ সেই অপেক্ষায় আছে।
এমন একটা মাথা-বিগড়ে-দেওয়া সুন্দরী মেয়ে নিজে থেকে সব দিয়ে দিতে চায়, এটা বন্ধুদের কাছে কবে যে পাবলিক করতে পারবে, ফারাজ সেই এক্সাইটমেন্টে কাঁপতে থাকে। কবে যে মিলির শরীরের সব তিল আর ভাঁজকেও আবিষ্কার করে ফেলবে! এবং ইমোশনে ফেলে দিয়ে ওকে বিয়েও…
উফফ্! আর ভাবতে পারছে না ফারাজ। এত বড়ো একটা অ্যাচিভমেন্ট! ফ্রেন্ডদের কাছেই না শুধু, বাবা-মা’র কাছেও রাতারাতি হিরো হয়ে যাবে সে… মিলিকে জাস্ট একটু আবেগে ফেলে দিতে পারলেই!
ওদিকে মিলিও কাঁপছে। তবে এক্সাইটমেন্টে না, জ্বরে। সাদমান ক্যারেক্টারটা জন্ম দেবার চেষ্টায় ব্যাকুল সে।
সে নিজেই ভাবছে কী করে ফারাজ ওরফে সাদমানের কাছে যাওয়া যায়। ছেলেরা নিজেকে সবচেয়ে বেশি মেলে ধরে বিছানায়। এত কাছে না গেলে সত্যিকারের সাদমানকে সে ফারাজ থেকে বের করতে পারবে না।
ঠিক আছে! মিলি ভাবে, সে নিজে থেকেই অ্যাপ্রোচ করবে। চরিত্র জন্ম দেবার শর্তে তো মিলি খুনও করতে রাজি! আর এ তো সামান্য…
আর মিলির জন্ম-দেওয়া অন্যান্য পুরুষ ক্যারেক্টারের মতন ফারাজও তো ওই শরীরটাই ছোঁবে, মনটা তো আর না! হা হা হা...