সুখের নয়, আত্মার মানুষ

যে মানুষটার সাথে থাকার সময় তোমাকে কিছুই লুকোতে বা বদলাতে হয় না, তাকে কখনোই যেতে দিয়ো না। তুমি যেমন, অবিকল তেমন করেই নিজেকে মেলে ধরতে পারো যার সামনে, সে-ই তোমার জন্য সঠিক মানুষ। যার কাছে থাকলে বিব্রত হতে হয় না কোনও কিছু নিয়েই, হোক তা তোমার অতীত কিংবা বর্তমান, একমাত্র সে-ই তোমাকে ভালো রাখার ক্ষমতা রাখে। তোমার সবচাইতে দুর্বল দিকগুলো যার কাছে নিরাপদ, যে তোমার একদমই বাজে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েও ঠাট্টা করে না, তার চেয়ে ভালো কাউকে খুঁজতে যেয়ো না কখনোই।

সবচাইতে এলোমেলো অবস্থায় তুমি যেমন থাকো কিংবা তোমার লুকোনো ক্ষতগুলো বাইরে বেরিয়ে এলে দেখতে যেমন লাগে, ওসবকে সহজে মেনে নিয়ে তোমার সাথে বাঁচতে চায় যে মানুষ, তাকে বন্ধু বলে। তার সামনে নিজেকে পরিপাটি করে উপস্থাপন করতে হয় না, তার চোখের দিকে তাকালেও অনেক শান্তি পাওয়া যায়। তোমার ছেলেমানুষিগুলো যে সহ্য করে, তোমার অদ্ভুত গল্পগুলো যে মন দিয়ে শোনে, তোমার বিরক্তিকর আচরণেও যে কখনও ক্লান্ত হয় না, তাকে বন্ধু বলে। তুমি চাইলেই খুব সহজে একজন পার্টনার পেয়ে যাবে, কিন্তু বন্ধু সহজে পাবে না। সংসারে এত দুঃখ কেন, জানো? কেননা লোকে খুব সহজেই স্বামী বা স্ত্রী হয়ে ওঠে, কিন্তু সারাজীবনেও বন্ধু হয়ে উঠতে আর পারে না। কেবল বন্ধুকেই সব বলা যায়, সব দেখানো যায়। একমাত্র বন্ধুর কাছেই নিজের সব দুর্বলতা আর অন্ধকার মেলে ধরা যায়। যার এমন একজন বন্ধু আছে, তাকে পৃথিবীর আর কেউ ভালো না বাসলেও সে ভালো থাকতে পারে।

কে তোমাকে শুধুই শারীরিক চাহিদা পূরণ করার জন্য চায়, তা তুমি ঠিকই বুঝতে পারো। যদি তোমার দিক থেকেও ব্যাপারটা ওরকম হয়, তাহলে ঠিক আছে। আর যদি ওরকম না হয়, তাহলে তার কাছে বার বার যাবার মানে, নিজেকে আরও কিছু কষ্টের দিকে ঠেলে দেওয়া। মানুষ মরার পর তার কবর খোঁড়ে অন্যরা, আর মরার আগে তার কবর খোঁড়ে সে নিজেই। নিজেকে প্রতিনিয়তই খুন করে করে বাঁচে যে মানুষ, তাকে সহজে কেউ বাঁচাতে পারে না।

সুখের মানুষ নয়, আত্মার মানুষ খোঁজো। এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া পৃথিবীর সবচাইতে কঠিন কাজ। অমন কাউকে তুমি যদি পেয়ে যাও কখনও, তবে তাকে জীবন দিয়ে আঁকড়ে ধরে রাখো। ফেইক কার‌ও স্বামী/স্ত্রী কিংবা প্রেমিক/প্রেমিকা হ‌ওয়ার চাইতে রিয়েল কাউকে ভালোবেসে যাওয়া অনেক বেশি শান্তির। দিনশেষে, মানুষ প্রেমে নয়, ভালোবাসায়‌ও নয়, শুধুই শান্তিতে বাঁচতে চায়।