ভাবনার বনসাই: সাইত্রিশ

১. এ জীবনে যারা দুঃখ দিয়েছে,
সেই বন্ধুদের ভুলি কী করে?
আমি যে দুঃখে-গড়া সুখী মানুষ!


২. আমি যে দুর্ভাগ্যে বিশ্বাস করি,
তা আমার নয়।
যার ভাগ্যই নেই, তার আবার দুর্ভাগ্য কীসের?


৩. পুরো জীবনের কথা ভাবলে,
কত মানুষকেই তো কাছে রাখতে ইচ্ছে করে,
যারা এই মুহূর্তে বাঁচতেই দিচ্ছে না!


৪. যা আমার ছিলই না কখনও, নেই আজও,
আমি কিনা আজ তা-ই ভেঙে ফেললাম!
ভেঙে ফেললাম যা, পয়সা ছুড়েই যদি তার দামটা মেটানো যেত,
তবে কি তা ভাঙতাম ভুলেও!


৫. মানুষ যখন প্রেমে পড়ে,
তখন দু-জনের মধ্যে
একজন পুড়তে থাকে,
আরেক জন নিজেকে নেভায়ই না!


৬. জনে জনে দুঃখের সওদা করে কী হয়?
লোকে দুঃখীকেও তখন সওদাগর ভাবে!


৭. আমায় যদি কখনও না হারাও,
কিংবা তোমায় যদি কখনও না হারাই,
তবে অনুশোচনা করার মতো কীই-বা থাকে!
যে প্রেমে অনুশোচনা নেই,
তা প্রেম যতটা, ভান ততোধিক।


৮. ঈশ্বরকে কখনও ভুলে যেয়ো না;
কখনও যদি যাও, সেদিন সুখী হতেও বেমালুম ভুলে যাবে।


৯. চোখের সমস্ত জল শুকিয়ে ফেলো,
নইলে দেখবে, তার সামনেই তা ঝরিয়ে বসে আছ,
যার কাছে তোমার অশ্রু মূল্যহীন।


১০. অন্যের জামায় ফুটো দেখলেও যে চোখটা জ্বালা করে,
নিজের নগ্ন শরীরও সে চোখের নজর এড়ায়!


১১. নীরবতা সব কিছুই নিরাপদ রাখে---
সেই গুণটা, যা সবার মনে ঈর্ষা জাগাবে;
সেই দোষটা, যা সবার মনে ক্রোধ জাগাবে!


ঠোঁট খুলে…শান্তি যতটা মেলে, ততোধিক পালায়।


১২. আজ কাকে দেখে কুর্নিশ করে স্মৃতিতে ডুব মারলে?
আজ কার দাম মেটাতে জীবনকে বন্ধকি বানিয়ে সুখ হারালে?


১৩. তোমার সঙ্গে দেখা হবার পর থেকে প্রতিদিনই এক পেয়ালা বিষপান করি।
বুকে বিষ জমিয়ে রাখি যাতে তোমাকে সহনীয় লাগে!


১৪. ঠোঁট যা লুকিয়ে রাখল,
চোখ তা-ই প্রকাশ করল!


১৫. যে আলোটা নিভে গেলে প্রার্থনায় ওঠে হাজারো হাত,
সে আলোকে জ্বালিয়ে রাখতে এতটুকুও চেষ্টা কারও ছিল না।


১৬. সমুদ্রকে আটকানোর শক্তিই যদি গায়ে না থাকে,
তবে বালিতে আমার নাম লিখেছিলে কেন?


১৭. সব শায়েরিই যন্ত্রণাকে গিলে ফেলতে পারে না।
কিছু যন্ত্রণা খোদ শায়েরকেই গিলে খেয়ে ফেলে!


১৮. এ দু-চোখে মেঘ জমে আছে।
আর কতদিন এভাবে বৃষ্টি আটকে আটকে বাঁচতে হবে?


১৯. যে মানুষটা নিজেই বৃষ্টি নামায়,
তাকে বৃষ্টি চেনাতে এসো না।


২০. একদিন তোমাকে আমার লাগবেই,
যেদিন বিষ খেয়েও কোনও কাজ হবে না!