ভাবনার বনসাই: পাঁচ

৭৬. তোমার ভারী ভারী দুঃখগুলোকে আমি পয়সা দিয়ে কিনে নেব,
আমার জীবনে পাওয়া একচিলতে সুখ তুমি ঠোঙায় মুড়িয়ে নিয়ে যেয়ো।


৭৭. বাসায় ভুলেও বোলো না যেন তোমার প্রেমিক কবিতা লেখে,
অত অপমান তুমি সইতে পারবে না!


৭৮. আমার সাথে ঘর বাঁধতে চেয়ো না, প্রিয়!
কাগজে-কলমে ঘষাঘষি বাদে আমার আর কোনও বর্তমান নেই, ভবিষ্যতও নেই।


৭৯. তুমি গাইতে জানো, আমি সুর ছুঁতে জানি,
তুমি কাঁদতে পারো, আমি অশ্রু হতে জানি।
হায়, তোমাতে আমাতে কত যে তফাৎ!


৮০. তুমি যেন এক হলুদ রঙের প্রজাপতি;
দেখতে পারি, অনুভবটাও করতে পারি;
কেবল ধরতে পারি না।


৮১. কবি কবিতা লিখতে শুরু করে তোমার চুলের ঘ্রাণটা পেয়ে;
যদি আলগা না করতে তুমি ওই চুলের বাঁধন, তবে কবি নিজেকে আবিষ্কারই করতে পারত না!


৮২. অপেক্ষায় কাটানো আমার প্রতিটি রাতের কসম করে বলছি,
আজ থেকে আমার অপেক্ষার পালা শেষ হলো।


৮৩. এলোচুল দিয়ে তুমি মেঘ বেঁধে ফেলেছ, মোহিনী;
আর জিজ্ঞেস করছ, আকাশ কেন অমন নারাজ?


৮৪. আমাকে ছেড়ে চলে যাও, এক্ষুনি যাও!
তোমাকে দেখলে অতটা লিখতে পারি না, না দেখলে যতটা পারি।


৮৫. বলো, আমায় আর কতটা পোড়ালে আখেরে তুমি সুখ পাবে?
গভীর রাতে অভিশাপ লিখো না, প্রিয়; রাত জাগলে অসুখ হবে।


৮৬. আড্ডা দিতে বন্ধুমহলে আমি কীভাবে আর যাই?
ওদের দেখলেই মনে পড়ে শুধু আমার কী কী নাই!


৮৭. চাইলে পরেও কাঁদতে পারি না আমি ভীষণ দিলের চোটে,
ভিখিরির কপালেও কিন্তু মাঝে মাঝে পয়সাওয়ালার মায়া জোটে!


৮৮. তোমার চোখের কাজলে কান্নার দাগ;
বলো, ওতে কতটা আমার ভাগ?


৮৯. তোমার হাসি দেখতে চেয়ে প্রাণটাও দিতে পারি!
মাথায় রেখো, তোমার অশ্রুর দাম দেবে যে, তুমি শুধু তারই।


৯০. পেটভর্তি ক্ষুধা কত, খেতে আমি পাই না;
খাওয়ার কথা ভুলে গেলেও লিখতে ভুলে যাই না।


৯১. আজ থেকে শুরু আমার প্রিয়ার নতুন প্রেমের সূচনা,
যাকে ভেবে করে গিয়েছি শত ব্যর্থ কাব্য রচনা।


৯২. অন্তরে মিললে কেবল তকদিরে মেলে না,
তকদিরে মিললেই বরং অন্তরে মেলে।


৯৩. নির্জনতাই ঘর আমার আর নীরবতাটাই বাড়ি,
লোকালয়-ভীতি চলেছে বেড়েই, মানুষ দেখলেই মরি!


৯৪. কবি আজকাল কবিতায় নেই, আছে প্রিয়ার চোখে,
বাকিরা সবাই পুড়ছ কেমন, বলো দেখি…দোজখে?


৯৫. মরে গেলেও আর বলতে যাব না, দেখতে যাব না তোমারে;
অহংকারীরা জেনে নিক আজ, মানুষ তো একাই বাঁচতে পারে!


৯৬. কলম ফুরোলে লোকে কাগজ কেনে আর কাগজ ফুরোলে কলম;
শায়ের কিন্তু মলম ফুরিয়ে গেলে ব্যথা কিনতে যায়, ওই ব্যথাই যে শায়েরির মলম!


৯৭. কোনও প্রশ্ন নয় আর, মিছেমিছি কেন উত্তর পাবে?
নীরবতাই বোঝে না যে, তাকে কেন কেউ ভালোবাসতে যাবে?


৯৮. আমাদের অতীত তোমার মুখে শুনতে লাগে সুন্দর;
আমি বললে ভয় পেয়ে যাবে, আমার স্মৃতিরা বড়ো ভয়ংকর!


৯৯. বহুকাল ধরে তার অপেক্ষায় আছি, হৃদয় দেবো যারে,
সে আমার হাত ধরে কইল, তার হৃদয়টাই নাকি জমা অন্য কারও ঘরে!


১০০. আজীবনের সঞ্চয় আর অর্থকড়ি ঢেলে,
বাঁচব কেন বলতে পারো, তোমায় না পেলে!