ভাবনার বনসাই: চার

৫১. আজ আকাশে আলো নেই, বোধ হয় চাঁদেরই মন খারাপ।
তোমায় চাঁদ ভেবে ছন্দ মেলালে কবির কতখানি হবে পাপ?


৫২. কেন আজকাল আর দেখতে পাও না আমার বুকের ব্যথা?
তবে কি ধরে নেব, অবহেলাটাই তোমার শেষকথা?


৫৩. তুমি উড়ে যাও, প্রিয়, হয়ে প্রজাপতি;
ভালোবাসায় কোনও লাভ নেই, জেনো, পুরোটাই শুধু ক্ষতি।


৫৪. মন আমার শরীরের মাঝে সেই কতকাল ধরে বন্দি,
তোমায় একটুও ছুঁয়ে দেখতে পারলাম না, ভালোই এঁটেছ ফন্দি!


৫৫. হোঁচট খেয়েছে মন প্রেমের খোসায়,
ভালোবাসাটাই চাই এবার, প্রেমে আর কতটাই-বা পোষায়!?


৫৬. আমার এত ভালোবাসা, তোমার নাকি সয় না;
আমি তো কেবল পিছিয়েই থাকি, এগিয়ে যাওয়া হয় না!


৫৭. আমি এসেছিলাম ধীরপায়ে, সুসজ্জিত বেশে;
বিশ্রাম নিতে নিতে বরং ক্লান্তিটাই বাড়ল দিনের শেষে!


৫৮. তুমি ছিলে একদিন আমার হৃদয়ের সামনে অবনত;
ভালোবাসাটাও প্রয়োজন নেই আজকাল! তুমি এতটাই পরিণত!?


৫৯. নতুন করে অবহেলা শুরু করো এবার, পুরনো অবহেলায় ঘুণ ধরেছে;
মরতে তো চাইনি আমি, কেউ একজন আমার হৃদয়কে টুকরো করেছে!


৬০. আক্ষেপের সকালগুলো রৌদ্রের আলোয় পোড়ে,
কীসের যেন এক উচাটন, শরীর মনটা জুড়ে।


৬১. প্রেম বলে হয় না কিছু, সব মায়াই মিছে,
প্রেমের গল্প লুকিয়ে ফেলেছি আমি রূপকথারই নিচে।


৬২. আগে মন বোঝাতো আমায়, এখন আমি মনকে বোঝাই,
অভিনয় করে বেঁচে থাকাটা আসলে কিন্তু সোজাই!


৬৩. এ জন্মে না হোক, পরের জন্মে হব তোমার বিশেষ কেউ,
যাকে সঙ্গে নিয়ে সাগরপাড়ে যাবে তুমি আর ছুঁয়ে দেখবে ঢেউ।


৬৪. পালিয়ে গেলে আমি কোথাও, ঠিকই আমায় খুঁজবে,
অভিমানে হারিয়ে গেলে সেদিন তুমি বুঝবে!


৬৫. আমার আর কিচ্ছুটি নেই বাকি, ধরেছে স্মৃতিতেও ঘুণ;
শুধু মনে আছে, ভালোবাসি বলেও ভালো না বেসে তিলে তিলে করেছ খুন।


৬৬. কষ্ট গিলে গিলে যে মানুষ হচ্ছে রোজ,
দু-চার দিন ভাত না গিললেও তার কেউ নেবে না খোঁজ।


৬৭. মন খারাপের রাতে গান শুনি, ওই তারা নাকি ভিনদেশি,
কিন্তু তুমি যে আমার হাত ধরে থেকে তবুও এমন পরদেশি!


৬৮. মুখোশের তলে ঢাকা-পড়া নিজেকেই আমি চিনতে পারি না, আর তুমি নাকি আমায় চিনে ফেলেছ!
বাহ্, তোমার দুঃসাহসের তারিফ না করে পারলাম না!


৬৯. আমার জীবনের সব রং দিয়ে আমি আঁকলাম তোমায়,
আর তুমি কিনা আমার দিকে কেবল সাদা রংটাই ছুড়ে দিলে!


৭০. দুঃখ এটা নয় যে আমি তোমায় যেতে দিয়েছি।
আফসোস এটুকুই, তুমি আমায় কী করে যেতে দিলে!?


৭১. প্রয়োজনে আমার মৃত্যুকামনা কোরো,
তবুও অবহেলার নিচে পুঁতে ফেলো না।


৭২. যে বাতাসে তুমি নিঃশ্বাস নাও, সেই বাতাসই ঘুরে-ফিরে আমার কাছে আসে।
বেঁচে থাকার জন্য আমার এই অজুহাতটুকুই যথেষ্ট!


৭৩. প্রিয়, তুমি কি অন্ধকারকে হাত দিয়ে ছুঁতে পারো?
তা না হলে আমার হৃদয় তুমি ছোঁবে কী করে?


৭৪. প্রেমিকা দুঃখ পেলে প্রেমিক কাঁদে,
আর প্রেমিক কাঁদলে অশ্রু ঝরায় কবিতা।


৭৫. আমার গজল বুঝতে চাইলে তোমাকে আমার হাত ছাড়তে হবে;
জানো তো, গজল আর প্রেমিকা কখনও হাত ধরাধরি করে হাঁটতে পারে না?