ভাবনার বনসাই: দশ

১. ‘আমি তোমাকে ভুলে যেতে পারব না।’ এই কথায় আমি বিশ্বাস করি না, জানো?
ভুলে যেতে পারলেও, আমি ভুলে যাব কেন?


২. দিনের হিসেবে দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে ঠিকই নিয়মিত,
আমি রয়ে গেলাম আগের আমিতেই, খুব গুছিয়ে, অনিয়মিত।


৩. সম্পদ আছে যার, সম্পদের ভারে হয় সে কুঁজো,
ঐশ্বর্য আছে যার, বিনয়ের ভারে হয় সে নিচু।


৪. মানুষ অপেক্ষা করে ভোর হবার, আর আমি অপেক্ষা করি রাত্রি নামবার।
এর কারণটা তুমিও বুঝবে, আর কিছু দিন অপেক্ষা করো!


৫. চুপচাপ আমার বুকের ভেতর থেকে কথার বান ডেকে যায়,
আমার কথাগুলো উপযুক্ত মানুষ খুঁজে পায় না।


৬. একটা সাদামাটা পবিত্র জীবন কাটিয়ে তোমরা কী পাচ্ছ, বাপু?
তোমাদের পুরো জীবনের চেয়ে তো আমার একটা কলঙ্কের দামও বেশি!


৭. কথার ছোবলে মেরে ফেলো যাকে, তারই জ্বরে ডাক্তার ডেকে আনো?
এসব ভণ্ডামি কি তবে তোমরা পানির দামেই কেনো!?


৮. আমি তুমি মিলে আমাদের দু-জন হবার কথা ছিল,
অথচ আমি তুমি মিলে আজ আমি একাই বাঁচি!


৯. আমার হাসির সুরটাই বোঝো,
কিন্তু অশ্রুর শব্দ বোঝো না!
অথচ সংসার মানেই তো অশ্রুর কথোপকথন!


১০. - শায়ের, আমি তো কখনও কারুর ভালোবাসা পাই না!
- তুমি শুধুই পাওয়ার আশা করতে থাকো, তাই না?


১১. তুমি মনে করছ, আমি হারিয়ে যাব?
ভালো করে তাকিয়ে দেখো তো আমার চোখে!
হা হা...কী বুঝলে, মশাই?


১২. আমি ছবি আঁকতেই থাকব,
যতক্ষণ না তোমার চেহারা ভুলে যেতে পারি!


১৩. ভয় দেখাতে দেখাতে আমাকে এতটাই সাহসী বানিয়ে ফেলেছ যে, আমার সাহস দেখে এবার তুমি ভয় পেতে শুরু করবে!


১৪. তোমরা কি স্বেচ্ছামৃত্যুকে একটু সহজ করে দিতে পারো না?
সবার জন্যই তো আর বেঁচে থাকা জরুরি নয়!


১৫. কেবল মদ খাবার জন্যই আমি বেঁচে আছি, জানো তো?
উপরে যিনি আছেন, তিনি সবই দেখেন, সেটা তুমি মানো তো?


১৬. যারা মদ খায় না, তারা কী করে জানবে মদের তেষ্টা কী জিনিস?
যারা মদ খায়, তারা কী করে জানবে, ভালোবাসা কী জিনিস!?


১৭. আমি দেখতে পাচ্ছি, আমার মৃত্যু এগিয়ে আসছে। ওই যে, ওই তো এল দোরগোড়ায়!
আমার প্রাণ নেবার আগে আমাকে কি এই একটি মাত্র শায়েরি লিখে শেষ করবার সুযোগ দেওয়া হবে না?


১৮. আমাকে আর একটা বার তোমার কাছে যেতে বলবে?
তুমি যেটা খুঁজে চলেছ, সেটার খবর যে একমাত্র আমিই জানি!


১৯. আমায় আর নতুন করে রক্তাক্ত করার প্রয়োজন নেই,
নিজেকে এবার খাবলে-খুবলে রক্তাক্ত করব আমি নিজেই!


২০. আমার প্রাণ নিতে এসে প্রাণঘাতক আমার শায়েরি পড়ে অনেকক্ষণ কী কী যেন ভাবলেন।
তারপর বললেন, ‘যে লিখতে পারে, তার তো স্বর্গে যাবার কোনও প্রয়োজন নেই!’