ভাবনার বনসাই: তিন

২৬. আমি চাইলেই তো আর বলতে পারি না, আমারও একটা মন আছে!
বিপদ হচ্ছে, তোমার মনটা আমার আর আমারটা রয়েছে তোমার কাছে!


২৭. অপেক্ষা করে থাকা আজকাল তো ছেড়েই দিয়েছি!
দ্যাখো, আমিটাও ঠিকই, বড়ো শেষমেশ হয়ে গিয়েছি!


২৮. আমার পুরোটা অন্তরজুড়ে এক তোমাকে দেখারই বাসনা প্রবল,
আমার ভালোবাসার চেয়েও বুঝি তোমার অবহেলারা অধিক সবল!


২৯. কী এক ভ্রূকুটিতে আমার কান্নারা হলো হেসে কুটি কুটি;
যা, আর পাঠাবই না ডেকে, দিলেম তোকে এই জন্মের ছুটি!


৩০. কটু কথা দু-চারখানা যাকে শুনিয়ে দিলে লাগে ভীষণ আরাম, কাছের মানুষ সে কিছুতেই নয়!
যাকে কথা শোনানোর পর আমারই অন্তর পোড়ে তার চেয়ে বেশি, সে-ই যে মনের মানুষটা হয়!


৩১. একই কথা বারে বারে লিখি: আর একটা বার আয় না!
আমার এই চিঠিগুলো কি তবে তোর ঠিকানায় যায় না!


৩২. আমি যাকে ভালোবাসি এত, তার কিছুই যায় আসে না!
যাকে সে ভালোবাসে, সেই মানুষও নাকি তাকে ভালোবাসে না!


৩৩. যাকে পেয়েছ তুমি, জানি না, সে তোমায় ঠিক কতটা পায়!
কেবল ওটুক চুমু খেলেই কি আর পুরনো যা ক্ষত, সেরে উড়ে যায়?


৩৪. তুমি আমার একটাই মানুষ, এই একটাই আমার ঘর।
তুমিই সবচেয়ে কাছের মানুষ, আবার তুমিই কেবল পর!


৩৫. ভাবিস, বুঝি মুখভরা হাসি আমার, অন্তরভরা বিষ!
মরলে আমি রুহটা আমার নাহয় তোর কাছেই রেখে দিস!


৩৬. তুমি আমায় ঘৃণা করো যতই কিংবা দূরে সরে থাকো,
আমি শায়ের হয়েই ছাড়ব তবু, এই কথাটা লিখে রাখো!


৩৭. এক-একটা কবিতার চেয়েও প্রেমিকার ঠোঁটের তিলটা দামি,
না তো কবি সেই দাম দিতে পারে, আর না দিতে পারি আমি!


৩৮. আকাশকে অত কবিতা লিখতে কে শেখাল?
সেই আকাশের অশ্রুকেই তোমরা কিনা বৃষ্টি বলো!


৩৯. আমাকে আমি পারিনি ছুঁতে পেরেছ তুমি যতটা,
ভেঙেচুরে কে শেখাল তোমায় অনুভব করতে এতটা!


৪০. চোখে অত প্রশ্ন কেন? আমি তো আর অপরাধী নই!
উত্তর সবই দেবো একে একে; প্রেমিক, তোমার প্রশ্নপত্র কই?


৪১. চোখের জলে নৌকো ভাসে, লাগল পালে হাওয়া;
দুটো মনের মধ্যে কেবলই ধাওয়া পালটা-ধাওয়া!


৪২. তোমার দেখা পাইনি আমি, খোঁজও তোমার আর রাখি না;
ঘুমোতে গেলাম এবার নাহয়, অনেক রাতই তো ঘুমোই-ই না!


৪৩. নিজের থেকে পালিয়ে তুমি এবার বলো কোথায় যাবে?
মনভর্তি কেবল কামনাই যার, ঈশ্বরকে সে কোথায় পাবে!


৪৪. আমাদের যা স্মৃতি, তার সবটাই নাকি রেখেছ জমা তোমার কাছে?
অবহেলার খাতাটা খোলো তবে, শুরুতেই দ্যাখো, আমার নামটা আছে!


৪৫. ভালোবেসে ফতুর হলেই ভালোবাসাটা কেউ পেয়ে যায় না,
অবহেলাটা না পেলে ঠিক ভালোবাসার মানুষ হওয়াই যায় না!


৪৬. গুনগুনিয়ে কেঁদেছিলাম সেই রক্তরাঙা ক্ষত নিয়ে,
তুমি হনহনিয়ে পালিয়ে গেলে আমায় এমন কষ্ট দিয়ে!


৪৭. আমি আমার বুকের মাঝে সুখ রেখেছি অল্প,
দুঃখের জীবন বয়ে বেড়িয়েও করি সুখের গল্প!


৪৮. তোমার আমার দু-জনেরই তো পুরো আত্মাই খালি,
প্রেমের নিপুণ কবিতায় দু-জন তবু দিয়ে যাচ্ছি হাততালি!


৪৯. আজকে লুকোই কান্না আমার গভীর রাতের শীৎকারে,
শুনতে পেলে ঠিকই বধির হবে বিরহের এই চিৎকারে!


৫০. নিজের চোখকেও ফাঁকি দেবো অশ্রুটুকু লুকোতে,
আসবই আমি তোমার কাছে মনের ঘা-টা শুকোতে!