ভাবনার বনসাই: এগারো

১. আমি আমার পরিচয় আজ ভুলে গিয়েছি। ‘মানুষ’ বলে পরিচয় দিলে আমাকে আশ্রয় দেবে না?


২. আমি আবার জন্ম নিলে নারী হয়ে জন্মাতে চাই। দেখতে চাই, ছলনাময়ী হতে ঠিক কেমন লাগে!


৩. আমাকে ফেরানোর সময় চলে গিয়েছে, প্রিয়।
তুমি কিন্তু বাড়ি পৌঁছে আমায় একটা খবর দিয়ো!


৪. গাছের মতন একটা মানবজন্ম আমার! পাতা ছিঁড়লে ব্যথা পাই, কিন্তু বলতে পারি না।


৫. আমার মা খুব ভালো, কিন্তু মায়ের পেটে আমি নিরাপদে ছিলাম!


৬. যে বলে, স্বপ্ন দেখতে টাকা লাগে,
তাকে, স্বপ্ন কী জিনিস, সেটা শেখাও আগে।


৭. আমার নিজেকে এতটাই সুখী মনে হচ্ছে যে, ইচ্ছে করছে, কাউকে কিচ্ছু জানতে না দিয়ে, কবর খুঁড়ে নিজে নিজেই শুয়ে পড়ি!


৮. অশ্রু নিলামে তুললে খবর দিয়ো, শায়েরি বিকিয়ে অশ্রু কিনে নেব।


৯. - শায়ের, আপনি কেন লেখেন?
- সেটা জানি না। তবে লেখা শেষ হলে ভাবি, এতক্ষণ আমাকে দিয়ে এসব কে লিখিয়ে নিল!?


১০. আমাকে বড়ো বড়ো কথা শোনাস; পতিতা, বেশ্যা, মাগি বলে কোন মুখে দিয়ে যাস গালি?
তোরা যে স্বামীর ভালোবাসা ছাড়াই সংসার করে যাচ্ছিস; কেন রে?...পেতে সমাজের হাততালি!?


১১. তোমার চোখ দেখলেই বোঝা যায়, কত বছর ধরে বুকে ভালোবাসা পুষে চলেছ!


১২. বলেছিলে, বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে; কিন্তু বেঁচে না থাকলে কীভাবে দেখা হবে, সেটা তো বলে গেলে না!


১৩. - কেমন আছেন, শায়ের?
- যেমন রেখেছেন আপনি।
- আমি তো রাখিনি আপনাকে!


১৪. – শায়ের, জলদি করে একটি শায়েরি লিখে দিন তো!
- তুমি আগে জলদি করে সন্তান জন্মিয়ে দেখাও তো!


১৫. তুমি এক বার দেখা দিলে হয়তো আমাকে বাঁচানো যেত!


১৬. - আচ্ছা, আপনার বাড়ি কোথায়?
- হা হা হা! শায়েরকে কেউ এই প্রশ্ন করে?


১৭. - আপনি বাবা-মা’কে ছেড়ে এলেন কেন?
- তারাই আমাকে ছেড়েছে।
- কেন!?
- শায়েরি লেখার মতন পাপ করেছে যে সন্তান, তাকে কেউ কেন ধরে রাখবে?


১৮. - শায়ের, আপনার হাতটা একটু ছুঁয়ে দিই?
- কোনও কাজ হবে না; আমার বাস শরীরে নয়, অন্তরে!


১৯. - শায়ের, এই আনন্দের মুহূর্তে আপনি কাঁদছেন কেন!
- সারারাত জেগে, দু-লাইন শায়েরির একটা শব্দ জন্মাতে পেরেছি; আমি কাঁদছি তো সুখে! আহা, আমার একটা শব্দ! আহা, আমার চারটে অক্ষর!


২০. - শায়ের, আপনি প্রায়ই ইচ্ছে করে ক্ষুধার্ত থাকেন কেন?
- ক্ষুধার জ্বালা থেকে যে নিজেকে লুকিয়ে রাখে, তার তো না জন্মানোই ভালো ছিল!