ভাবনার বনসাই: এক-শো একুশ

১.
: আমি যে তোমার মন বুঝি, সেটা তুমি বিশ্বাস করো না?
: করি। বোঝো বলেই তো জানো, ঠিক কোথায় আঘাত দিলে আমার বেশি কষ্ট হবে!

২.
: কেন আঘাত দেবো?
: একসময় তুমি যে আঘাত পেয়ে এত বড়ো জায়গায় এসেছ, তুমি ঠিক করেছ, সেই আঘাত আমাকে দিয়ে দিয়ে অভ্যাস করিয়ে তোমার যোগ্য উত্তরসূরি করে রেখে যাবে।

৩.
: আমি যদি বলি, তুমি নিজেই নিজেকে আঘাত দাও, তখন?
: ওমা, তুমি এতগুলো অক্ষর একসঙ্গে আমার দিকে ছুড়ে দেবার সময় কোথায় পাবে!?

৪.
: আমি সময় দিই না?
: যতটুকুন দাও, সেটুকুন দিতে যে চাও না, সেটা আমি স্পষ্ট করেই বুঝতে পারি!

৫.
: জানো, আমি সবসময় চাইতাম, আমার জীবনে এমন কেউ থাকুক, যাকে আমি মন চাইলেই ফোন করে বলতে পারব, আমার মন খারাপ।
: আমাকেও বলা যায় না?
: তোমার নম্বর তো আমি সেইভই করিনি!

৬.
: আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি।
: প্রিয়, এসব কথা বন্ধুদের গিয়ে বোলো, কিংবা প্রেমের গল্পে লিখে দিয়ো। আমার প্রচণ্ড হাসি পায় এসব শুনলে।

৭.
: জানো, তোমাকে ভালোবাসি, এটা যেমন আমাকে আনন্দে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি এই বায়বীয় দুনিয়ার বাইরে তোমার আর কোনও অস্তিত্ব‌ই নেই, এটা ভাবলে ঘেন্নায় নিজেকে থুতু দিতে ইচ্ছে করে!

৮.
: আমি দূরে চলে গেলে আমাকে তুমি আর ভালোবাসবে না?
: তুমি কি কোনোদিনও আমার কাছে ছিলে!?

৯. একটা কুকুরই যেখানে ভালোবাসা আর অবহেলার পার্থক্য বোঝে, সেখানে আমি তো একটা মানুষ...

১০.
: যখন যা বলতে ইচ্ছে হয়, আমাকে বলবে, মন খুলে বলবে।
: মন বন্ধ করার সময় এসে গেলে পরেই তবে কি মন খুলে কথা বলার মানুষ জোটে?!

১১.
: তুমি নিজেকে অনেক উঁচুদরের মানুষ ভাবো, তাই না?
: তোমার কি আমাকে উঁচুদরের মনে হয় না?
: তোমাকেও যে আমার একদিন দরদামের মধ্যে ফেলতে হবে, আমি তো তা-ই জানতাম না!

১২.
: শায়ের, আমি ঈশ্বরকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারব কীভাবে?
: মনভর্তি কামনা যার,
ঈশ্বরকে সে কোথায় পাবে?

১৩.
: তুমি সত্যিই চলে যাবে? এই আমার কাছেই থাকতে কিনা একসময় কত মিনতি করতে!
: তুমি তো অসাধারণ...এমন মানুষের সঙ্গে স্বর্গে থাকা যায়, পৃথিবী তো সাধারণদের সংসার, খুনসুটির জায়গা!

১৪. তুমি আমাকে অনেক কষ্ট দাও, চেয়ে নিচ্ছি! তোমার দেওয়া হলে সয়ে নিতে পারি, অন্যেরটা অত পারি না।

১৫.
: ভালোবাসাই কি পৃথিবীতে বাঁচার একমাত্র শর্ত?
: না, ওটা ছাড়াও বাঁচা যায়; কিন্তু সে বাঁচা কেমন বাঁচা, দোহাই লাগে, তুমি জানতে চেয়ো না!

১৬.
: অবসরে একটু ভালোবেসো, কেমন?
: সে ভয়েই তো আমি অবসরযাপন ছেড়ে দিয়েছি!

১৭.
: রাতগুলি কেন জেগে থেকেই পার করো?
: আমার স্বপ্ন দেখতে ভয় করে, তাই...

১৮.
: আমাদের স্মৃতি তোমার মনে পড়ে?
: যেগুলি আমার জীবনেরই অংশ, সেগুলিকেও তুমি স্মৃতি বলো!?

১৯.
: তুমি চাইছ না যখন, ঠিক আছে, আমিও ফিরব না আর।
: হা হা...এই সিদ্ধান্ত তো তুমি কবেই নিয়েছিলে, এতদিনে বলছ! ...তা-ও আবার আমার ঘাড়েই দোষ চাপিয়ে?

২০.
: রোজ রোজ তোমার মরে যাবার ইচ্ছে শুনতে শুনতে আমারও মরতে ইচ্ছে করে।
: অত সাহসী মানুষ তুমি ন‌ও, হতেও পারবে না কোনোদিনই!