ভাবনার বনসাই: একত্রিশ

১. দূরত্ব বাড়ল,
তার সাথে বাড়ল ভুল বোঝাবুঝি।
তারপর থেকে
দু-জনই দু-জনকে
শোনাতে আরম্ভ করলাম
এমন সব অভিযোগ,
যা কখনও ঘটেইনি!


২. তার চোখ স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছিল,
ক্ষুধায় সে মারা যাচ্ছে!
তারই কানের কাছে এসে কিনা জ্ঞান ঝাড়ছিলে…
মানুষ মরে অতি-আহারে!


তোমাদের লজ্জাও কি লজ্জায় পালিয়ে গেছে!


৩. লোকে বেঁচে থাকে বলেই তো মরে!
মৃত্যু তো শুধুই আয়ুর আমলনামা!


৪. ভেবেছিলাম, শায়েরি লিখে লিখে
পৃথিবীর সব সুন্দরীকে প্রেমে ফেলে দেবো!
আজ দেখি, শায়েরি লিখতে লিখতে
নিজেই পৃথিবীর সব সুন্দরীর প্রেমে পড়ে বসে আছি!


৫. মাঝে মাঝে আমি নিজের দিকে তাকালে অবাক হই!
এতটা মজা করার অধিকার তো আমার ছিল না!


৬. সামনের মানুষটিকে তা-ই বোলো,
যা শুনলে সে খুশি হয়ে যাবে!
পেছনের মানুষটিকে তা-ই বোলো,
যা শুনলে সামনের মানুষটি
খুশিতে তোমাকে জড়িয়ে ধরবে!


৭. অপেক্ষায় আছি,
একদিন এমন কারও সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে,
যার না-বলা কথাগুলি
বুঝতে আমার মন চাইবে।


৮. তোমরা ভাবো,
আমি চেষ্টাই করিনি!
আমি জানি,
আমি চেষ্টা করেছি,
যার দামটা তোমরা কেউই দাওনি!


৯. পুরোপুরিই অচেনা কারও সামনেই
নিজেকে মেলে ধরা সহজ।
চেনা মানুষ তো শুধু দুঃখই দিতে জানে!


১০. আমার ভেতরে,
আমার চাইতে অনেক ভালো একজন মানুষের কঙ্কাল রয়েছে।


১১. একদিন
আমার মস্তিষ্ক হৃদয়কে ডেকে বলেছিল,
তুই কি আর কোনোদিনই বড়ো হবি না রে!


১২. আমার শায়েরির দিকে তাকিয়েও বলছ,
তোমাকে আমি ভালোবাসি না!
আর কোন প্রেমিক তোমাকে ভেবে এমন শায়েরি লিখছে!?


১৩. আমার শায়েরির কসম,
আমায় খেপিয়ো না!
জানোই তো,
শায়েরের অগোচরেও
শায়েরি ঠিকই প্রতিশোধ নিয়ে বসে!


১৪. তুমি এ কী করলে!
আমার ঘরে আগুন দিলে,
আর পুরো পৃথিবীতেই আগুন ধরে গেল!
বাকিদেরও এমন পোড়াচ্ছ কেন?
ওরাও কি তোমায় ভালোবাসে!?


১৫. আমার শায়েরি দেখেই তো প্রেমে পড়লে!
আর এখন শায়েরকেই সহ্য হচ্ছে না!?


১৬. শায়েরিকে ছুঁলাম,
শায়ের যেন বেঁচে উঠল!
শায়েরকে ছুঁলাম,
অমনিই শায়েরি মারা গেল!


১৭. যাদের ভালো লাগে,
ওদের আমি রাখতে চাই না।
যাদের ভালো লাগে না,
ওরাই আমায় রাখতে চায়!


১৮. মরেই তো যাবেন,
এবার একটু বাঁচুন!
বুড়ো তো হচ্ছেনই,
এবার একটু বাড়ুন!


১৯. জলভরা চোখে সে প্রায়ই এদিকে তাকায়।
বুঝতে পারি, সে কেবল কাঁদাতেই এসেছিল!


২০. হে জীবন,
অতিথিদের সঙ্গে এতটা দুর্ব্যবহার কোরো না!
তোমার ঘরে ওরা যে কেবল এক বারই আসে!