১০৬। ভালোবেসেছি যারে আমার ভেবে, সে আমার ছিল না কখনও। ভালো সে বেসেছে যারে তার ভেবে, সে দিল কষ্ট, সাথে মরণও।
১০৭। এ কেমন তোমার প্রেম, বন্ধু? ভালোবেসে তোমায় কেঁদেছি শুধু! ভালো আমায় বেসেছ যখন, নিয়েছ বিদায়, পিছে ফেলে ধু-ধু!
১০৮। সবাই কি আর যশের দেখা পায়? কত গুণীজন নিভৃতেই মরে যায়! সবাই কি আর প্রচার করে বাঁচে? সূর্য বুকে, তবু থাকে অল্প আঁচে! ঘরকে ভুলে যে পরকে নিয়ে ব্যস্ত, জীবনটা তার নরকেই সুবিন্যস্ত।
১০৯। তোমরা ভাবো, কেবল মৃত্যুর পরেই স্বর্গে যাওয়া ভালো। এদিকে মৃত্যুর আগে নরকযাপন নেভায় সকল আলো।
১১০। যে আগে যায়, তার বেলায় হিসেব কেন করো? ঘটে যা গেল, রীতি কি তবে তার চেয়েও বড়ো? সন্তানের চেয়ে বড়ো শৃঙ্খল আর আছে বলো কোথায়? তার বিদায়েতে তবুও কেন কেবল অশ্রুতেই মেলে ঠাঁই?
১১১। দেরিতে হলেও শিখেছি যখন বাসতে তারে ভালো, শুরু করেছি যখন ভাবতে তারে হৃদয়ের আপনার, ঠিক তখনই বলে বিধি, কীসের এত সুখ? স্বর্গে তবে এসো, এখানেই যে সুখ অপার!
১১২। সম্বল অতি সামান্যই, তবু দিয়ে গেল সবই তার, যদিও তাকে দেবার মতো ছিল না কিছুই আমার! যাকে দিইনি কখনও কিছুই, সে-ই কিনা করল এমন ঋণী! সে ঘরে গেল যাঁর, সেই ঘরেতে আমায় নেবেন কখন তিনি?
১১৩। সারাজীবন যাদের জন্য করেই গেলাম না শুনে মনের বাধা, আমায় কবরে শোয়াতে ওদের কেউই গায়ে লাগাল না কাদা!
১১৪। করেছি যেটুক দান, সেটুকই আজও আছে। করেছি যেটুক ব্যয়, একদিন সেটুক ছিল। গিয়েছি যেটুক ফেলে, তার সবটাই হারিয়েছি।
১১৫। মরার আগে শান্তি দেবে যত, মরার পরে শান্তি পাবে তত। মরার আগে অন্যকে বাঁচতে না দিলে, মরার পরে তীব্র ঘৃণাই কেবল মেলে।
১১৬। দু-হাতে দিয়েছি যাকে নিজের অর্জিত ভাগ্যের সর্বস্ব, তার কারণেই হারিয়েছি আজ ছিল যা-কিছু নিজস্ব।
১১৭। সময়ের ওপারে চলে যে গেছে, তাকে এমন ডেকো না পিছু আর, সময় হলেই আর কারও দেহে ফিরে ঠিকই আসবে সে আবার।
১১৮। এ হৃদয়খানি জগতের সাথে কঠিন বাঁধনে বাঁধা, ছেড়ে গেলেও যায় না ছাড়া, কী এক যেন বাধা!
১১৯। আমার মৃত্যুর পর থাকবে তোমার এটুকই অনুশোচনা: আমি মরার আগে জেদে-ক্রোধে জিততে তুমি পারলে না!
প্রিয়জন মরলে মরুক, জিততে তবু হবে! এ যে ইগোর লড়াই, জিতুক ইগোই তবে!
১২০। বাঁচতে যদি চাও, যে যা ভাবে, তা ভেবেই জিততে দাও! কীসের লড়াই? জেতোও যদি, মরমে মরবে ঠিকই তা-ও!
Post Views: 173