যে-দোষে নেই দোষ

জ্বলি পুড়ি, ছুটি তবু পতঙ্গের মতো,
নিজদোষে—বুঝেশুনে হতে নিহত।




রূপসী হে, নয়…এ নয় গো তোমার দোষ!
পূর্ণিমায় নদী যদি ফুলে উঠে করে ফোঁস,
হয় ঢেউয়েরা মাতাল,
চাঁদ কি তবে খায় গালাগাল?




হৃদয় আমার করে রচনা নানান মোহজাল,
বসে নিভৃতেই চিরকাল।




ওই দূরে বসে একা সে কোন জাদুকর,
বাঁশিতে যায় তুলে আহা কী মায়াময় স্বর;
তা না পেরে বুঝতে,
পুরুষের দোষ, চায় পুরুষই…নারীর আঁচলে গুঁজতে!




তার দোষ কীসে, যার হৃদয় কাঁপে ক্ষুধায়?
যে-মায়া জড়ানো সুরে, তা যে ক্ষুধিত মাত্রকেই কাঁদায়!
নিরুদ্ধ যে-ঝর্না—
কলস্বরে ছুটতে গিয়ে হৃদয়েই দেয় ধর্না।




যে-বুকে জ্বলছে আগুন, আর সাথে অতৃপ্ত কামনা,
সে তো হবেই হবে…সুযোগ পেলেই…উন্মনা।
সুযোগের নেই কি দোষ?
কেবল নারীকেই করো ফোঁস!




নেভে কীসে মনের আগুন—কোন নদীর জলে?
এই প্রশ্ন চিরন্তন, তবু কেই-বা উত্তর‌ বলে!




যত শুকনো নীতিকথা—
পেরেছে নেভাতে কবে পিপাসা-ব্যাকুলতা?




শোনো, নারী! আমারও তৃষ্ণা প্রবল;
এতে দোষ কি সত্যিই সবল?
একে করিনি তো আমি তৈরি;
স্বভাবের বশে কোন পুরুষ হয় না বৈরী?




ভাবি প্রায়ই তাই—
মানুষ যে করে ঘৃণা মানুষে, তা করে মানুষ বৃথাই!




পতঙ্গের ব্রত নিয়ে চলি—পুরুষ হিসেবে এ-ই আমার গুণ;
নারী, তুমি যে চিরকালই গনগনে আগুন!




ঈশ্বরের এমনই খেলা—সব মানুষের বেলায়;
জোর করে দোষ চাপিয়ে কেবল সময়ই কাটে হেলায়।




কে আসে ধেয়ে,
তা আগেভাগে চেয়ে,
হও ছেলে, হও মেয়ে—
দিয়ো তাড়িয়ে;
না যদি পারো, যেয়ো পালিয়ে।