মেয়েরা বেড়ালেরই মতন!

 যখন তুমি কোনও মেয়ের পেছনে সময় দেওয়া বন্ধ করে দেবে, কিংবা তাকে ধরে রাখার চেষ্টাটা আর করবে না, তখন সে ভাবতে শুরু করবে, তুমি তাকে আর পছন্দ করো না। সে তখন বুঝে নেবে, তার দিকে তোমার মনটা আর নেই। সে তখন বিশ্বাস করে ফেলবে, তুমি তাকে আর ভালোবাসো না, আর কেয়ার করো না।
  
 একটা মেয়ে দেখতে চায়, তুমি তার পেছনে সময় দিচ্ছ, তাকে পাবার কিংবা ধরে রাখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছ। এই ব্যাপারটাকেই সে ভালোবাসা ভাবে। চারপাশে তাকিয়ে দেখো, একটা মেয়ের পেছনে সময় ও চেষ্টা খরচ করেও তাকে পায়নি, এমন ছেলে খুব কমই আছে। মেয়েদের ভালোবাসা মুঠোফোনে এবং ছেলেদের কৌশলী ঠোঁটে বন্দি।
  
 তুমি তার সঙ্গে দুই মাস কি দুই বছর ধরে আছ, সেটা বড়ো কথা নয়। যদি তুমি তাকে তোমার চেষ্টাটা না দেখাও, তবে সে একসময় নিরাপত্তাহীনতায় ও দ্বিধায় ভুগবে, এবং সে নিজে নিজেই ধরে নেবে, এমন কাউকে ধরে রাখার জন্য সে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিংবা এমন কারও পেছনে সে ক্রমাগত সময় দিয়ে চলেছে, যে তাকে আর চায় না। সে একাই চাইছে, সম্পর্কটা টিকে থাকুক, এ নিয়ে তোমার কোনও মাথাব্যথাই নেই।
  
 একটা মেয়ে যত্ন চায়, সময় চায়, তার জন্য তোমার চেষ্টাটা দেখতে চায়। সে মনে মনে চায়, তুমি তার পেছনে পড়ে থাকো, সে যেন তোমার চোখে তার জন্য আকুতিটা দেখতে পায়। সে চায়, তুমি যেন তাকে এটা বিশ্বাস করিয়ে দাও যে, সে-ই তোমার সব কিছু। এর মানে এ নয় যে, তার জন্য তোমাকে বিশাল কিছু করে ফেলতে হবে। তার মনটা জয় করতে খুব ছোটো ছোটো সুখ এবং যত্নই যথেষ্ট।
  
 এইটুকু চেষ্টাও যদি না করো, তবে সে একদিন ধরে নেবে, তার উপর থেকে তোমার মন উঠে গেছে, তাকে ধরে রাখতে তুমি আর চাইছ না, সে তোমাকে আর সুখী করতে পারছে না। তার মনে আসবে, তুমি হয়তো তাকে তোমার জীবনে রাখতেই আর চাইছ না, এবং এই ব্যাপারটাই তার মধ্যে ধীরে ধীরে এই বিশ্বাসটা তৈরি করে দেবে যে, তোমার জন্য এত চেষ্টা করে সত্যিই আর লাভ নেই।
  
 এমন‌ও হতে পারে, সে ধরে নেবে, তোমার জীবনে এখন নিশ্চয়ই অন্য কেউ এসে গেছে, যার কারণে তুমি তাকে আগের মতো আর কেয়ার করছ না। ভালোবাসার মানুষটির মৃত্যু‌ও মেয়েরা মেনে নিতে পারে, কিন্তু সেই মানুষের জীবনে অন্য একটি মেয়ের অস্তিত্ব ওরা সহ্য‌ই করতে পারে না।
  
 কেন এমন হয়? হয়তো সে তোমার সঙ্গে থেকে যাবার জন্য যতটা চেষ্টা করে যাচ্ছে, তুমি তার কিছুমাত্রও করছ না, কিংবা করলেও তাকে সেটা দেখাচ্ছ না; হয়তো সে তোমার জন্য যতটা করে, তুমি তার জন্য তার অর্ধেকটাও করছ না।
  
 মেয়েরা কীরকম জানি বেড়ালের মতন, সারাক্ষণই আদরযত্ন চায়, সময় পেতে চায়। ওরা বুঝে ফেলে, কে তার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে আর কে করছে না। এটা দিয়েই ওরা কাউকে জাজ করে এবং যদি তার মনের মতন কিছু খুঁজে না পায়, তবে তাকে ছেড়ে চলে যাবার কথা ভেবে ফেলে।
  
 তাই দেখবেন, বেকার ছেলেরা চাকরি জোগাড় করতে না পারলেও প্রেমিকা ঠিকই জোগাড় করে ফেলে। পুরোটা সময় প্রেমিকাকেই দিয়ে বসে থাকে, চাকরির জন্য ঠিকভাবে পড়ে না; স্বাভাবিকভাবেই, পরবর্তীতে প্রেমিকাকেও পায় না, চাকরিও পায় না। মেয়েদের কাছে ভালোবাসার মানেই অখণ্ড মনোযোগ, ছেলেটা অপদার্থ হলেও তেমন অসুবিধে নেই।
  
 সবসময়ই, কাউকে ধরে রাখার জন্য যে চেষ্টাটা করতে হয়, সে একবার চলে গেলে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য তার চাইতে অনেক অনেক বেশি চেষ্টা করতে হয়।
  
 একটা গল্প দিয়ে শেষ করি। এক ছেলে বাইক-অ্যাক্সিডেন্ট করে হাসপাতালে ভর্তি হলো। সেখান থেকে সে তার স্ত্রীকে ফোন করে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে ঘটনাটা জানাচ্ছে...
  
 - প্রীতি, আমি শেষ! আমার পা-দুটো ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেছে। মাথায় আটটা সেলাই পড়েছে, সারাশরীরে ব্যথা---নড়তে পারছি না, বাম-হাতের দুইটা আঙুল ভেঙে গেছে। আমি শেষ...আমি শেষ! তুমি তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসো! এখানে ফোন দিয়ো, এটা শিলার নম্বর; আমার মোবাইলটা হারিয়ে গেছে।
 - ঠিক আছে...কিন্তু শিলা কে?