ভাবনার বনসাই: এক-শো সাতচল্লিশ

১. দিনের কাজ শেষ।
বিষণ্ণ কৃষক তবু ফেরে না ঘরে;
নদীর ধারে বসে বসে
সদ্যপ্রয়াতা স্ত্রীর কথা ভাবে।




২. তোমায় সামনে রেখে
কৌমার্য ধরে রাখতে না বলে
আমাকে বরং মরতে বলো!




৩. কেন হাজার বার জিজ্ঞেস করলে,
আমি কী চাই!
হাজার বারই তো উত্তর দিয়েছি,
শুধু তোমাকেই চাই!




৪. তুমি কি জানো,
তোমার প্রেমিক আমাকেও কথা দিয়েছে,
কখনোই ছেড়ে যাবে না!




৫. : তুমি কি কখনোই আমার দুঃখ বুঝবে না?
: প্রতিবিম্ব কি কখনও পারে আয়নাকে ভেদ করতে?




৬. মেয়েটির হাতে চুড়ি দেখে
ওগুলিকে ফাঁদ ভেবে
কাকটা ভয়েও ঘেঁষে না
মেয়েটির ছিটানো ভাত খেতে।




৭. কাঁপা কাঁপা চোখে
বন্দি পাখির হৃদয়ে
সদ্যবিবাহিতা মেয়েটি দেখল,
বর তাকে ফেলে বিদেশে ফিরছে।




৮. দেয়ালে শক্ত করে বুক ঠেকিয়ে
পায়ের দশটি আঙুলের উপর দাঁড়িয়ে
পুরো পা ব্যথা করে ফেলার পরও বলছ,
সে কিছুই করেনি তোমার জন্য!?




৯. যার ঘর পুড়ে ছাই,
পরিবারের সবাই মৃত,
তারও...
জলের তেষ্টা পায়।




১০. বৃষ্টির রাত।
আলাদা দুইটি ঘরে
অচেনা দু-জন
কামার্ত পুরুষ, কামার্তা নারী!




১১. বন্ধুরা হারিয়ে গেছে।
গাছগুলি আজ পত্রশূন্য।
বয়স বেড়েছে আমাদেরও...
তবু তৃষ্ণা কমেনি ভালোবাসার।




১২. কিছু স্তন ঊরু নিতম্ব
আজও সাক্ষ্য বহন করে চলেছে
যার নখের আঁচড়ের,
সে-ও কিনা করে আমার চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ!




১৩. চেয়েছিলে তো আমাকে!
অথচ আমার দেহ পেয়েই ফিরে যাচ্ছ?!




১৪. অন্ধ ভিখিরির থালা হতেও
পয়সা চুরি করে যারা,
তাদের কাছেও তুমি আমাকে ভিক্ষে চাইছ!
তুমি বরং আমাকে ভুলে যাও!




১৫. পাছে ধরা পড়ে যাও...
যদি এ ভয়ে থাকো,
তবে আমার দু-চোখ বেঁধে দাও
আমায় গ্রহণ করার আগে!
তোমায় পেলে বাকিটা জীবন
অন্ধ হয়ে কাটাতেও রাজি!




১৬. চুলের খোঁপার বাঁধনটাই
এখনও আলগা হলো না,
আর তুমি কিনা
এখনই ফিরে যেতে চাইছ!




১৭. এই চুম্বন শিখলে কোথায়?
বই পড়ে নাকি?
তা এই চুম্বনেই তৃপ্ত হবার রাস্তা-লেখা বইটা
মনে করে পাঠিয়ে দিয়ো তো এই ঠিকানায়!




১৮. হাওয়ার ঘায়ে
বটের বয়েসি পাতারা ঝরে,
তার সঙ্গে ঝরে
হৃদয়ের ব্যর্থ স্বপ্নরা।




১৯. ঠিক সুরে বাঁশি বাজলেই তবে
বাঁশরিয়া পায় মানসীর দেখা!




২০. আরও কিছুক্ষণ
চোখের পাতা ফেলো না, প্রিয়!
নাহয় আরও কিছুক্ষণ
প্রেমের অশ্রু আটকে থাকুক!