ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা (৮৪তি অংশ)

ভাবনা: পাঁচশো বিরাশি

……………………………………………………

1 August 2014

আজকে সন্ধ্যে ৬টায় বাতিঘরে Hillol দার পৌরোহিত্যে Dipankar দার বন্দোবস্তিতে বইপড়ুয়াদের একটা আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে। নানা ভ্যাকেশনে হিল্লোলদা এটা করেই থাকেন, কিছু মানুষকে জড়ো করা। দাদা, তুসি গ্রেট হো! বইপড়ুয়া মানে কিন্তু বইপড়ুয়া নয়, ফেসবুকের বইপড়ুয়া গ্রুপের সদস্যরা। সেই নির্ভরতায় আমিও যাবো ভাবছি। এই আড্ডায় যারা থাকেন, মানে গতবার যারা ছিলেন, তারা বেশিরভাগই সত্যি সত্যি পড়ুয়া; আমি যাবো শুনতে, জানতে, শিখতে। কেউ কেউ আবার এতোটাই, যারা পড়ুয়া নয়, তাদের বই কেনাও বারণ, চটজলদি এমন ফতোয়াটতোয়া…

4 August 2014

: ভাইয়া, আপনি কালকে বন্ধুদিবসে কিছু লেখেন নাই কেন?

: আমি ঠিক করেছি আপনি আমাকে ভাইয়া বলা বন্ধ না করলে আপনার অনুরোধে কখনো আর কিছু লিখবো না।

দুনিয়াসুদ্ধ মেয়েকে কেনো আমাকেই বড় ভাই বানাতে হবে?! বড় ভাইয়ের আকাল পড়সে নাকি? কতো বড় ভাই পাড়ায় পাড়ায়! আমি কেনো?? অসহ্য! অপরিচিত কোনো মেয়ের মুখে বড় ভাই ডাকটা শুনলেই আমার অঞ্জন দত্তের রঞ্জনা গানটার কথা মনে পড়ে যায়। এই জীবনে কাউকে কখনো একটা টোকাও দেই নাই। ঠ্যাং ভাঙবো কীভাবে!!

এ জগতে, হায়, যাহাকেই চাই, আছে তাহার বয়ফ্রেন্ড-হাজব্যান্ড–

প্রেম না করিয়াও ছ্যাঁকা খাইবার যন্ত্রণা প্রেম করিয়া ছ্যাঁকা খাইবার যন্ত্রণা অপেক্ষা তীব্রতর৷

: এই যে লেখক সাহেব, আজকে কিছু লিখবেন না?

: গালি দ্যান কেনো? আমি কি ঈদের প্যাকেজ নাটক প্রসব করার দায়িত্ব নিসি যে ঈদ আসবে, আর আমাকে লোকজনকে ধরেধরে জোর করে কাতুকুতু দিয়ে হাসাতে হবে? আর, আপনি আমাকে লেখক বলে গালি দিচ্ছেন কেনো? আমি আপনার কী উপকার করসি যে আমাকে গালি দিতেই হবে?

কিছুকিছু বন্ধুত্বের চাওয়ায় থাকে প্রেমের প্রচ্ছন্ন আভাস। আমি ওদের বলি, লক্ষ্মী বোন আমার, এই বেলা পালা। তুই পালাতে না পারলে আমাকে বল, আমিই পালাই! কমিটমেন্ট, এক্সপেকটেশন….. মাফ চাই, সাথে দোয়াও চাই। পুতুপুতু লাভস্টোরি বানাবো শুধু একজনের সাথেই। প্রেম করতেই হবে, কেউ তো আর এমন দিব্যি দেয়নি! আমি প্রয়োজনে স্কাউন্ড্রেল হতে রাজি আছি, তবুও হিপোক্রিসি? নৈব চ নৈব চ! আমার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে বিশ্রী গালিঃ হিপোক্রিট! (অবশ্য, মেয়েরা হিপোক্রিসি পছন্দ করে।)

বন্ধু দিবসে ফেসবুকে কিছু লিখতে হয়, না লিখলে আপনিও যে প্রসব করতে সক্ষম, সেটা জানানো হয় না। দুনিয়ার মেয়েরা ইনবক্সে শুভ বন্ধু দিবস পাঠায়। অ্যাতো বন্ধু লইয়া আমি কী করিবো!! এবার কিছু বান্ধবীও দরকার। ওরা ইনবক্সে দাঁত বের করা হাসির ইমো পাঠিয়ে লিখবে, হ্যাপি গার্লফ্রেন্ডশিপ ডে!…….. বন্ধু বেশি হয়ে গেছে। আর না। অবশ্য, গুগলে সার্চ দিলে ওরকম লেখা কোনো ইমেজ ফাইল আসে না। ছাগলের বাচ্চারা আউট অব দ্য বক্স ভাবতেই পারে না। রেডিমেড খাওয়ার দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ্‌ না করুক, কোনদিন এমন জামানা হাজির হয়, গুগল দিয়ে আর পরীক্ষায় পাস করা যাবে না! বড়ই চিন্তার বিষয়!

যন্ত্রণা আরো আছে। ইদানীং দেখছি, পরিচিতরা বন্ধু হতে চাইছে। গায়ে-পড়া বন্ধু। পুরোনো বন্ধুরা সব পরিচিত হয়ে যাচ্ছে। ওদেরকে মাঝে মাঝে ধরে পাছায় লাত্থি মারতে ইচ্ছা করে। কথা হলে, দেখা হলে ফর্মাল আচরণ করে। ইচ্ছা করে নিজ দায়িত্বে ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে ধাক্কা মেরে ওদেরকে ফেলে দিই। শালারা সব কর্পোরেট হইসে!!

বন্ধুদের কেউকেউ কথা বলার সময় বস বলে ডাকে। এই সম্বোধনটা আমার কাছে দুনিয়ার যেকোনো অশ্রাব্য গালির চাইতেও অশ্রাব্য মনে হয়। বন্ধু কথা শুরুই করবে সবচেয়ে অভদ্র-অশ্লীল, ভদ্র সমাজে বলা যায় না, এমন গালি দিয়ে। নাহলে আবার কীসের বন্ধু! বন্ধুবান্ধবকে দিতে না পারলে এতো কষ্ট করে বিশ্রী বিশ্রী গালিগালাজ শিখেই বা কী লাভ! বন্ধুরা আস্তেআস্তে বস হয়ে যাচ্ছে, বসরা কেউ বন্ধু হচ্ছে না। বড়ই পরিতাপের বিষয়! আমরা চাই, পৃথিবীর সকল বস পারিবারিকভাবে সুখে থাকুক, শান্তিতে থাকুক। বসের পারিবারিক অশান্তির ঝাল হজম করা বড়ই বেদনাদায়ক!

আমরা চাই, পৃথিবীর কোনো প্রেমিকাই তার প্রেমিককে হুট করে বলে না বসুক, আমি তো তোমাকে শুধুই বন্ধু ভাবতাম। আর কিছু না।

প্রেমিকদের প্রতি আমার সুপরামর্শ, প্রেমিকা এরকম কিছু বললে দেরি না করে ইমিডিয়েটলি জোরেশোরে এক থাপ্পড় মেরে ওর দাঁত সবগুলা ফেলে দেবেন। প্লিজ, ১টাও অবশিষ্ট রাখবেন না। দেখি, মাড়িওয়ালা মেয়ের সাথে কোন মহান প্রেমিক প্রেম করে! প্রেমিকারাও একই কাজ করবেন। ডিয়ার আপুরা, ভুলেও অভ্যাসবশত ওর মাথার চুল ছিঁড়বেন না; টাকমাথা ছেলেদের কখনোই প্রেমিকার অভাব হয় না। (ভাবছি, ‘মাথার’ উল্লেখ করার দরকার ছিলো কি! কেমন রিডানডেন্ট হয়ে গেলো না?)

এবারের বন্ধুদিবসে আমার ২টা চাওয়াঃ শুধুই বন্ধুত্ব নয়, কিছু বান্ধবীত্বও হোক। পুরোনো বন্ধুরা হারিয়ে না যাক।

কোনো এক বন্ধুদিবসে একটা অণুকাব্য প্রসব করেছিলাম। ফেসবুক বন্ধুদের জন্যে সেটা আবারও পোস্ট করলামঃ

স্বপ্ন দ্যাখো স্বপ্নবাজের মতো,

ভুলে যাও পুরোনো ব্যথা যতো।

চলতে পথে যদি কেউ হাতটা এসে ধরে,

ভালোবেসো তাকে তোমার মতো ক’রে।

……….স্ট্যাটাস কা সাইড-ইফেক্টঃ পিচ্চি পিচ্চি মাইয়ারাও ইনবক্সে জিগাইতাসেঃ Hi Sushanta! What’s up?

মেয়েদের হিউমার সেন্স কি কোনোদিনও হবে না?

6 August 2014

আমার এক প্রেমিকা সেকেন্ডহ্যান্ড ছিলো না, তাই সম্পর্কটা বেশিদিন টেকেনি। ফার্স্টহ্যান্ড মেয়ে আমার কখনোই পছন্দ না। আর ১০টা বাঙালি ছেলের মতো আমিও চাই, ওর প্রথম প্রেমটা হোক রবীন্দ্রনাথের সাথে। আমার প্রেমিকাকে বলেছিলাম, ওই বুড়োটার সাথে প্রেম করো। ও শোনেনি। আমি চেয়েছিলাম, আমার প্রেমিকার প্রথম প্রেমিক হোক রবীন্দ্রনাথ। শুধু এক পুরুষের চোখেই বিশ্ব দেখবে, এমন মানসীর চোখে আমি বিশ্ব দেখতে চাই না। বাঙালি প্রেমিকারা প্রথমেই হবে রবীন্দ্রনাথের, এরপর ওর নিজের প্রেমিকের। কেনো? কেননা, এই বাঙালি জাতটার বেসিক নিড ৫টা নয়, ৬টা। শেষেরটা রবীন্দ্রনাথ। এছাড়া বাঙালি বাঁচে না। এক মৃত প্রেমিকার সাথে প্রেম করুক আরেক মৃত প্রেমিক। যে বেঁচে আছে, সে বেঁচে অন্তত থাকুক। জীবনে বেঁচে থাকাটাই তো সব! তাই, যেভাবেই হোক, মৃত্যুর আগেই ফাঁকিটাকি মেরে ফাঁকফোকর দিয়ে বেঁচে বাঁচতে হবে। প্রেম না করলে কেউ মরে যায় না; কিন্তু বেঁচে থাকতে না পারলে মরে যায়। বেঁচে থাকতে না পারার অনেক যন্ত্রণা!

একটা মিথ্যে দিন কেটে গেলো আজ। ওরা সবাই বলছে, আজকে নাকি রবীন্দ্রনাথ মারা গেছেন। মারা গেছেন? সত্যিসত্যি? কখন? কবে? এতোটা বাঁচতে তো আর কোনো বাঙালিকেই দেখলাম না! উনি ২৫শে বৈশাখে জন্মেছিলেন। এরপর আর মরেননি। দিব্যি বেঁচে আছেন। আমি আপনি ও সে’র চাইতে ঢের ঢের বেশি। পারলে একটু বেঁচে দেখান না ওঁর মতো! আমি চাই না, কেউ বলুক, রবীন্দ্রনাথ নেই। ২২শে শ্রাবণ দিনটা তাই আসেনা, কোনোদিন আসবেও না। ২২শে শ্রাবণ একটা মিথ্যে দিন। রবীন্দ্রনাথরা কখনো মরেন না।

বইয়ের দোকানে দেখি, রবীন্দ্রনাথ আছেন একেবারে কয়েক শেলফ জুড়ে। অন্যদের লেখায়। রবীন্দ্রনাথ নিজেই একটা বিশ্ববিদ্যালয় যেন! ওঁকে পড়ে, গেয়ে, বলে, জেনে, শুনে, বুঝে, শিখে, লিখে কতো কতো মানুষ বেঁচে থাকে! ভাবা যায়! রবীন্দ্র-জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় কিংবা প্রশান্তকুমার পাল এখনো বেঁচে আছেন রবীন্দ্রনাথের হাত ধরে। হ্যাঁ, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ও আছেন। আছেন মানে, রবীন্দ্র-ব্যবসায়ী হয়ে বেঁচে আছেন। এই এক রবীন্দ্রনাথেই বেঁচে থাকা যায়। আমীর হয়ে, কিংবা ভিখিরি হয়ে। কারোর কারোর অল্প বয়সের অবোধ ফ্যাশন রবীন্দ্র-বিরোধিতা। ওরা বড়ো হয়ে সুনীল-শক্তি-সন্দীপন হয় কিংবা সুনীল-শক্তি-সন্দীপন হয়ে বড়ো হয়। কারোর কারোর বেশি বয়সের নির্বোধ অবলম্বন রবীন্দ্র-ব্যবসা। ওদের শুধু বয়স বাড়ে, হায়! ওরা আর বড়ো হয় না। হাত পাতলে ওই বুড়ো কাউকেই খালি হাতে ফেরায় না!

আমরা যারা বেঁচে আছি এখনো মরে যাইনি বলে, তারা তিনটা কাজ করি। জন্মি। জীবনযাপন করি। মরি। আর কিছু না। কেউকেউ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে জন্মে, বাঁচে, মরে। এর সুবিধে হলো, রবীন্দ্রনাথকে খুঁজলে অরবীন্দ্রনাথদের সাথেও দেখা হয়ে যায়। এ দেখা বড়ো সুখের দেখা। আমরা অমর হতেও পারি না, ঠিকভাবে বাঁচতেও পারি না। আমরা পয়সা কামাই এমনভাবে যেন পয়সাটা খরচ করার সময় না পাই, যাতে আমাদের মৃত্যুর পর অন্যকেউ আমাদের পয়সাটা খরচ করার সময়ে আমাদের আত্মার শান্তিকামনা করে। আমরা ছুটি, ছোটা বন্ধ না করার জন্যে। আমরা ইঁদুরদৌড়ে ইঁদুর হয়ে জিতি মানুষের জীবন কাটানোর মোহে। ছাগল প্রজনন কেন্দ্রের ছাগলগুলোও আমাদের চেয়ে সুখে আছে, ভালো আছে। খায়, দায়, মনের সুখে গান গায়। সবচেয়ে বড়ো কথা, ওদের জব স্যাটিসফেকশন হানড্রেড পারসেন্ট! (এই কথাটা কেউ বুঝতে না পারলে ভুলেও বোঝার চেষ্টা করবেন না।) আমাদের তো তা-ও নেই। আমাদের জন্যে জীবনানন্দকে লিখতে হয়, পৃথিবীতে নেই কোনো বিশুদ্ধ চাকরি। আমরা মরি, এবং মরেই যাই। আমাদের জন্যে কোনো ২২শে শ্রাবণ আসে না, মিথ্যে দিন আসে না। আমাদের জন্ম সত্য; মৃত্যু আরোবেশি সত্য, মৃত্যুর পর, প্রায়-ই আগেই।

প্রিয় রবীন্দ্রনাথ, এইসব ২২শে শ্রাবণকে এভাবে করে সবসময়ই তোমার ওই বুড়ো হাতের বুড়ো আঙুলটা দেখিয়ে আজীবন আমাদের প্রাণে বেঁচে থেকো।

ভাবনা: পাঁচশো তিরাশি

……………………………………………………

11August 2014

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আগুনের মতো সুন্দরী বিউটি কুইনদের ফেসবুক ব্যবহারের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত। একটা মেয়ে এতো সুন্দর হওয়ার দরকার কী? আজব!! মানুষের কাজ আছে না??:'(

ডিএসএলআর’এর গুষ্টি কিলাই!! God Himself surrenders to DSLR!!

…….. সবসময় না। কিছু কিছু মেয়ে অদ্ভুত রকমের সুন্দরী! সমস্যা সেটা না…….

ওরা ওদের হাজব্যান্ড-বয়ফ্রেন্ড-য়ের চেয়ে লক্ষকোটি গুণ বেশি সুন্দর!! সমস্যা এটাও না……………

সমস্যা হচ্ছে, এটা দেখে আমার কোন দুঃখে মেজাজ খারাপ হচ্ছে, সেটা বুঝতেসি না।

………..তাদেরকে দেখে, যাদেরকে দেখে শত চেষ্টাতেও আমার নিজের মধ্যে কোনধরনের ভ্রাতৃভাব জাগ্রত করতে পারতেসি না।

11August 2014

স্যার, আমাকে কার্টুন ডাকবেন না। আমার একটা মেয়ে আছে।

কার্টুনদের মেয়ে থাকতে সমস্যা কী? আপনার মেয়ে কার্টুন হবে না ইনশাল্লাহ! ভাবি তো আর নিশ্চয়ই কার্টুন না।

আমার অফিসের স্টাফরা তিনটা কারণে আমাকে অপছন্দ করে না। বসকে পছন্দ করতে হয় না। বসকে অপছন্দ না করাই বিশাল ব্যাপার!

এক। আমি কখনোই এদের সাথে দুর্ব্যবহার করি না। এবং, কখনোই আজাইরা পেইন দেই না। কোনো বিশেষ দরকার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৮টা পর্যন্ত অফিস করা আমার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে লোকদেখানো কাজগুলোর একটা মনে হয়। সহজ কাজকে ইচ্ছামতো না প্যাঁচালে অফিসে এতক্ষণ লাগার কথা না। কিছু লোককে দেখলে আমার দুইটা নাটকের কথা মনে পড়ে যায়। ওয়েটিং ফর গোডো। মাচ অ্যাডু অ্যাবাউট নাথিং। যতোটা না করে, ব্যস্ততা দেখায় এর ঢের বেশি। ওদেরকে দেখলেই পেইন লাগে। পুরাই ডেসটিনি ডেসটিনি অ্যাটিচিউড!……… যে ব্যাগটা আমি নিজেই ক্যারি করতে পারি, সেটা কারোর দিয়ে ক্যারি করাতে আমার লজ্জা লাগে। মাঝেমধ্যে ওদের বাসার খোঁজখবরও নেই। চেষ্টা করি, যতোটুকু সম্ভব হেল্প করার।

দুই। আমার কাছ থেকে ছুটি নেয়া দুনিয়ার সবচেয়ে সহজ ব্যাপার। মাথা ব্যথা, চুল ব্যথা, হৃদয়ব্যথা, পেটব্যথা সহ যেকোনো ব্যথায় আমি ছুটি দিয়ে দেই। (এর আগে দেখে নিই, অফিসের কাজের ব্যাঘাত যাতে না ঘটে।) কারোর ছুটির দরকার হলে অন্য কারোর কাছে না গিয়ে দৌড়ে আমার কাছে আসে। জেরা কম করি, এবং এমন ভাব দেখাই যে, ওদের প্রত্যেকটা অজুহাত আমি বিশ্বাস করছি।

তিন। ওদের পড়াশোনার ব্যাপারে উৎসাহ দেই। বিসিএস দিতে বলি। ফার্স্ট ক্লাস জবের জন্যে অ্যাপ্লাই করতে বলি। চাকরির পড়াশোনা কীভাবে করবে বুদ্ধি দেই। কাউকে হাসিমুখে, ও পারবে, এই কথাটা বললেও সেটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। স্টাফ শ্রেণীর লোকেরা সাধারণত খুব একটা ভালো স্টুডেন্ট হয় না। তাই, ওরা পারবে না পারবে না, এরকম শুনতে অভ্যস্ত। কারোর কাছ থেকে একটু গাইডলাইন পেলেও অনেক খুশি হয়। আমি এরকমও দেখেছি, যখন জিজ্ঞেস করেছি, আপনার পড়াশোনার কী অবস্থা? তখন খুব অপরাধীর মতো করে বলেছে, স্যার সরি, ভুল হয়ে গেছে। আজকে রাত থেকেই শুরু করবো।

এতে সুবিধা আছে। ফ্রিতে অনেক দোয়া পাওয়া যায়। ওদের দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নেয়া যায়। অফিসে আমার নামে কে কী বলে, আমি খুব সহজে জেনে যাই। যেকোনো প্রকারের ঝাড়ি হজম করার ক্ষমতা ওদের আগের চাইতে অনেক বেড়ে গেছে। সংকোচবোধ থেকেও কাজে ভুল কম করে।

এদের মধ্যে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ক্যারেকটার হচ্ছে কার্টুন সাহেব। ও ছোটে কার্টুনের মতো, চোখ নাচায় কার্টুনের মতো, শরীর দোলায় কার্টুনের মতো। ওর চেহারায় কিছুটা খরগোশ খরগোশ ভাবও আছে। হাসে খরগোশের মতো। কানচুল খাড়া, দাঁতগুলো ধবধবে সাদা আর বড়োবড়ো। ওর কথা শুরুই হয়, এটা দিয়ে…… স্যার, একটা প্রবলেম হইসে……

ওকে আমার রুমে দেখলেই আমি ভাবতে থাকি, ও হয় কোনো প্রবলেম নিয়ে এসেছে, অথবা কোনো প্রবলেম তৈরি করে নিয়ে এসেছে। সহজ ব্যাপারগুলোকে কঠিন করে উপস্থাপন করতে ও ওস্তাদ! ও যদি কাউকে দুইয়ের নামতাও শেখায়, তাহলে ও নির্ঘাত বলবে, আল্লাহ্‌! দুইয়ের নামতা কী কঠিন!

ও সেদিন আমাদের অফিসের জন্যে মাউসপ্যাড নিয়ে এসেছে। প্রত্যেকটা প্যাডের ওপরে কার্টুন আঁকা। টম অ্যান্ড জেরি, ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট, ভূতের ছবি, কঙ্কাল এইজাতীয়। আমার টেবিলের উপর যে প্যাডটা আছে সেটাতে হিম্যান বিশাল এক তলোয়ার দিয়ে একটা পাহাড়কে কেটে দুই ভাগ করে ফেলেছে। ভয়ংকর অবস্থা!

ওর মোবাইলে রিংটোন, টুইংকেল টুইংকেল লিটল স্টার……….

কিছুক্ষণ আগে সে আমার রুমে এসে হাজির। আমি ভাবতে লাগলাম, কী যন্ত্রণা করে আল্লাহ্‌ই জানে! দেখলাম, সে সাথে করে এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রিকে নিয়ে এসেছে। আমার রুমের কলিংবেলটা বদলাবে। কেনো? আমার বেলটা মাঝে মাঝে এমনিএমনি বেজে ওঠে। তাই, আমার সিপাহি প্রায়ই দৌড়ে এসে দেখে, আমি আসলে ডাকিনি, বেলটা এমনিতেই বেজে উঠেছে। এতে যে সমস্যাটা হয় তা হলো, মাঝে মাঝে আমি বেল দিলেও সিপাহি আসে না। ও ভাবে, আমি ডাকিনি। নিজেকে মিথ্যেবাদি রাখাল রাখাল মনে হয়।

স্যার, আপনার জন্যে অনেক ঘুরে ৩টা সুন্দর বেল নিয়ে আসছি। আমি বুঝলাম, ঘটনা খারাপ। কী কী বেল, দেখি? দেখলাম একটা বাজালে, পাখি ডাকবে। পাখির ন্যাচারাল ডাক না; পাখির গলা চেপে ধরলে যে ডাকটা দিবে, সেই ডাক। আরেকটা বেড়ালের ডাক। বেল চাপলেই বলে, ম্যাও! ম্যাও!! আমি ওকে বললাম, সহকারী কমিশনার বেড়ালের মতো করে সিপাহিকে ডাকবে, এটা কেমন কথা? আপনার মাথায় বুদ্ধি নাই? আর কী আনসেন, দেখান!স্যার বাদ দ্যান, থাক, আমি কালকে নর্মাল একটা নিয়ে আসবো।

ওইটা কী? দেখি!

না না স্যার, থাক। সরি।

আমার সিপাহি পরে আমাকে জানালো, ওটা ছিলো সাপের বাঁশি!

ভয়ঙ্কর কাণ্ড! মনে হলো, কার্টুনের গলায় জ্যান্ত পাইথন পেঁচিয়ে দিতে পারলে শান্তি লাগতো।

14August 2014

হ্যাপিনেস ইজ……. ঘরে ফেরা

18August 2014

বাসায় গেলে দুটো জিনিস বাড়ে : মায়া আর ওজন ।

দুটোই খারাপ । দুটোই ভোগাচ্ছে!

গত তিন দিনের সেরা কাজ ছোটোবেলায় পড়া দুটো বই আবারো পড়া। মাক্সিম গোরকির আমার ছেলেবেলা । হুমায়ূন আজাদের ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না ।

এই বইদুটো একেবারে মায়ের হাতের মতোই নরোম, কোমল।

বইদুটো পড়েছি আর ভেবেছি, ইসসস! বইমেলা এলেই নিজেকে লেখক দাবি করা কতোকতো উটকো লোকজন পাঠকদের বিরক্ত করতে লেখেন, বই ছাপেন । সবাই তো লিখতে পারে; তার মানে এই নয়, সবাইকেই লিখতে হবে । পড়তে কষ্ট হয়; খুউব! পড়ার কষ্ট, সময় নষ্ট হওয়ার কষ্ট! জীবন ছোটো তো! কতো ভালোকিছু দেখার আছে, ভালোকিছু পড়ার আছে, ভালোকিছু শোনার আছে!

ভাবনা: পাঁচশো চুরাশি

……………………………………………………

19August 2014

: It’d be injustice if God made you a computer engineer as you’d done no justice to your Hons life as a student of computer science. You’ve saved the face of your varsity as people can’t take you as an example of its product! Hahaha…….. You’re anything but an engineer, sorry to say!

: Life’s not about good grades; thanks God, neither is career. Good for me!! Still, I must say, a good grade matters in some way or other. How? Well, one of our friends didn’t have a so-called good grade. So, the job he desired couldn’t accommodate him. Later, he decided to accommodate job others desired and he did it.

Thanks, Mr Good Grade, you helped him fail so successfully! To fail successfully is an art! Sometimes, we just can’t expect failures to be any better!!

20August 2014

I’ll be on a RILO AP official tour in Seoul, South Korea from 16 to 18 September 2014 as a delegate from Customs Intelligence, Bangladesh. Any friends there to pay my coffee bill,please?

Dear Sushanta, Nice to hear that you are coming to Korea. You are finding any of your friends to pay your coffee bills. I am one of your CUET seniors (’95 EE), a Senior Research Engineer here at Samsung Electronics Semiconductor R&D, in Korea. Please call me after coming to Korea at your convenient time to 010-5140-1911. Wish you a memorable trip to Korea.

……… Good to hear that! I’m planning to stay in Seoul form 15 to 18 September and come back on the 19th. Korean Customs made arrangements for our accommodation at Hotel Samjung. Bhaiya, do you live nearby? I’ll be really happy to meet you in Seoul.

Dear Sushanta, I guess your hotel is around Gangnam area (south part of Seoul). If it is, then I can go there either by driving in 40 mins (due to traffic) or by public transportation (bus or subway) in an hour. 15~18, 19 working days. So, hope to see you in the evening in any of your convenient day. Let’s see. After coming, please let me know if you have any contact number or your host…..If you could stay in the weekend, it could be better for me to travel around with you….Anyway, hope to see you in Seoul soon.

We can meet every evening. My session will end early before evening everyday

if you’ve time, bhaiya

This is the address.

604-11Yeoksam-dong, Gangnam-gu, Seoul, South Korea

Dear Sushanta, is it your hotel address? or RILO AP venue?

Hotel Address

20August 2014

আমার সাউথ কোরিয়া যাওয়ার খবর শুনে একটা মেয়ের ইনবক্স মেসেজঃ ভাইয়া, আপনি কি কাইন্ডলি আমার জন্যে এক প্যাকেট জিনসেং চকোলেট নিয়ে আসতে পারবেন? আমার খুব দরকার। দাম যা আসে, আমি পরে দিয়ে দিবো।

ফিলিং…… মজা পাইসি!

………..কিভাবে দাম পরিশোধ করবে জানতে মন চায়!

আমারও চায়!!!

21August 2014

সিঙ্গেল কারোর জন্যে খুবই বিরক্তিকর একটা বিষয় হলো, অন্য কারোর প্রেমসংক্রান্ত জটিলতার সমাধান দেয়া। অনেকেরই ধারণা, আমি হৃদয়ের খোঁজখবর বেশি রাখি, তাই হৃদয়ভাঙা কিংবা হৃদয়গড়া জাতীয় সকল বিষয় আমাকে হৃদয় খুলে বলা যায়। ২টা রিসেন্ট ঘটনা শেয়ার করি।

এক।

ভাইয়া, আমাকে একটা বুদ্ধি দেন না!

কী বুদ্ধি, বল।

আমার বয়ফ্রেন্ড আমার সাথে কোনো কারণ ছাড়াই ঝামেলা করতেসে। আমার ফোন রিসিভ করতেসে না। কী করা যায়?

ফোন করে ফোন রিসিভ করতে বল।

কিন্তু ভাইয়া, রিসিভ করে নাতো!

তাইলে, মুড়ি চাবাইতে থাকো। মুড়ি ভালো জিনিস।

ভাইয়া এমন করেন ক্যান? আমি অনেক টেনশনে আছি আর আপনি আমার সাথে নিষ্ঠুরতা করতেসেন।

উফফ! তোমার বয়ফ্রেন্ড তোমার সাথে ঝামেলা করবে নাতো কি অন্য মেয়ের সাথে করবে? বিরক্ত করবা না। এখান থেকে ভাগো।

ভাইয়া, প্লিজ একটু বুঝার চেষ্টা করেন। ও আপনার অনেক ফ্যান। আপনি ওকে একটু বলে দেন না, প্লিজ! আমার ফোন একবার রিসিভ করলেই আমি ম্যানেজ করে ফেলবো। প্লিজ ভাইয়া, প্লিজ!

আমি কাউকে বুঝাতেটুঝাতে পারবো না। দরকার হলে, তোমাদের দুইজনকেই ব্লক মারবো। তোমরা দুইটাই সমান প্যারাদায়ক! তবে একটা বুদ্ধি দিতে পারি।

ভাইয়া, কী কী? বলেন বলেন!

তুমি এক কাজ করো, ওকে ছেড়ে আমার কাছে চলে আসো। আমি কখনোই কোনো ছেলের সাথে পর্যন্ত ঝামেলা করি না, মেয়েদের সাথে করার তো প্রশ্নই আসে না। চলে আসো, সুখে থাকবা শিওর।

ভাইয়া, আপনার সাথে কথা নাই। আপনার সাথে কথা বলার চাইতে রবীন্দ্রসংগীত শুনাও ভালো। আপনি মহাফাজিল! অসহ্য!!

সমস্যা নাই, আস্তেআস্তে সহ্য হয়ে যাবে। চলে আইসো, কেমন?

জীবনেও না। শুধু আমি না, কেউই আসবে না। আপনি মুড়ি খান!

দুই।

ভাইয়া, আমাকে কাইন্ডলি একটা ফেভার করবেন?

কী, বল।

এখানে বলা যাবে না, একটা ফোন করি, প্লিজ?

না, এখন বিজি। সন্ধ্যার পর একটা টেক্সট পাঠাবা। ফ্রি থাকলে জানাবো।

(সন্ধ্যায় একটা ফোন এলো। বেড়ালের বাচ্চার মতো কিউটকিউট ম্যাওম্যাও টাইপের একটা কণ্ঠ।)

ভাইয়া, স্লামালিকুম। আমি …….। ভালো আছেন? দুপুরে আপনাকে মেসেজ করসিলাম। চিনতে পারসেন? হিহি…..

হিহি করার কিসু নাই। বলো, কী বলবে।

ভাইয়া, আপনি এরকম কঠিন করে কথা বলতেসেন কেনো? আমি কি পরে ফোন দিবো? আপনি বিজি?

আচ্ছা, বলো।

আমার একটা গিফটের ব্যাপারে আইডিয়া লাগবে। ছেলেদের গিফট। আপনার তো একসময় গিফটশপ ছিলো। ভাইয়া, একটু হেল্প করেন না প্লিজ!

ঢং কম করো। কী আইডিয়া?

কালকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের বার্থডে। ভাইয়া, বয়ফ্রেন্ড না কিন্তু, একদম প্রমিজ! বাট, ওকে আমি খুব পছন্দ করি। কী দেয়া যায়? আমার মাথায় আসতেসে না। আপনার ফ্রেন্ড হলে আপনি কী দিতেন?

আমার ফ্রেন্ড হলে আমি কিসুই দিতাম না। তবে ওর কাছ থেকে একটা পার্টি খসাতাম। জাস্ট এইটুকুই! তবে, তুমি ভালো বই দিতে পারো। কিসু বইয়ের নাম বলবো?

ভাইয়া, ও বই পড়ে নাতো! বই দিলে ভাববে, পয়সা সেভ করার জন্য দিসি। আমি তো আর কিপটা না।

ওও! বই পড়ে না? ওকে, ফাইন। লুঙ্গি তো পরে। লুঙ্গি দাও। সাথে একটা গেঞ্জিও দিয়ো। বগলকাটা সাদা গেঞ্জি। মনে থাকবে তো? লুঙ্গি আর গেঞ্জি।

ভাইয়া, আপনি এমন করেন ক্যান? একটু সিরিয়াস হন না প্লিজ! আচ্ছা যান, আমি আপনাকে চিপস খাওয়াবো। প্রমিজ ভাইয়া। এবার বলেন। আমি তো আর ফ্রি কাউন্সেলিং চাচ্ছি না। আপনি বিসিএস নিয়ে দুনিয়ার মানুষকে কাউন্সেলিং দেন না? আমাকে একটু বলেন না ভাইয়া। প্লিজ প্লিজ প্লিজ!!

শুনো, ছেলেদের জন্যে এটাই বেস্ট গিফট। আর এটা কিন্তু আনকমনও। আর কেউ দিবে না। দিয়ে দেখতে পারো। আর ভালো কথা, একটা গামছাও দিয়ে দাও। লুঙ্গি কিনবা ভালো ব্র্যান্ড দেখে, গেঞ্জি কিনবা সুতি গেঞ্জি, আর গামছা ভালো দেখে একটা নিয়ে নিয়ো। গামছা একটু বড় দেখে কিনবা, তাহলে বাথরুম থেকে গোসল করে ওইটা পরে বের হতে পারবে। বুঝসো?

ভাইয়া, আপনি যে অনেক খারাপ, এটা কি আপনি জানেন? আমার ছেলেদের গিফট সম্পর্কে কোনো আইডিয়া নাই, তাই ফোন দিলাম। আর আপনি কিনা…… একটু হেল্প করলে কী হয়?

আরে বেকুব বিলাইবালিকা! তুমি দিয়েই দ্যাখো না! কেক কাটার সময় ওইগুলা পরে পোজ দিতে বলবা। গামছাটা গলায় প্যাঁচায়ে নিলে দেখতে খুবই কুল লাগবে। ফেসবুকে আপলোড দিতে বলবা। দেখবা, সবাই কতো লাইক দেয়। তুমিও একটা দিয়ো। কমেন্টে লিখবা, লুকিং ড্যাম কুল, ড্যুড! ও তোমার বেস্টফ্রেন্ড থেকে বয়ফ্রেন্ড হয়ে যাবে। একদম শিওর!

থাক বুঝসি, আপনার আইডিয়া আমার লাগবে না। ও আপনার মতো না, ও ওইগুলা পরে না। আপনি ওইগুলা পরে বসে থাকেন। সেলফি তুলেন, আপলোড দেন; অনেক মানাবে! ও অনেক কিউট, আপনার মতো মহিষ না! আমি মন থেকে আপনার জন্যে বদদোয়া করতেসি। আপনার জীবনেও কিসু হবে না।…………. বলেই গরগর করতে করতে ফোন কেটে দিলো।

আমি মনেমনে প্রার্থনা করতে লাগলাম ……… হে ঈশ্বর! তোমার পিলিজ লাগে, আমায় দীর্ঘজীবী কর। নাহলে, কতো সুখের সংসার গড়ার আগেই ধ্বংস হয়ে যাবে! ওদের কে দিবে আশা? কে দিবে ভরসা?

ভাবনা: পাঁচশো পঁচাশি

……………………………………………………

23August 2014

feeling Oops! I did it again!!

………………………………………

………………………………………

Wanna get introduced with me? But, why? Do you always get introduced with whomever you help?

No no, not all, with beautiful girls only. I feel like getting introduced with beautiful girls, honestly speaking! Oh I mustn’t forget to mention…… Thank you for being pretty!!

I’ve a boyfriend.

Did I tell you I’ve no girlfriends? Anyway, if you think you’re not beautiful it’s OK.

Shut up! Do you think that you’re always smarter than all the ladies you meet?

Not all, pretty ones only!! Beauty and brain mustn’t have friendship!

This means, you do! Poor thinking!!!

Not always I do, some stupid ladies do. By the way, you don’t wanna get introduced? OK fine, thank you for your honesty!

You mean, I’m stupid, huh? And, I’m not beautiful? You’re too pathetic!!

A stupid lady mustn’t know she’s stupid! You know, so you’re not! As you’re not, I’m now a little bit confused about your second confusion!

Enough!! Mr Impossible, it’s enough! You deserve to be only with yourself! Goodbye! One request…… Please don’t share it on Facebook.

I’m so commercial in two cases….. My academic studies & my writings!

But, you don’t write as it is!

Because not always it’s that much fictional!

Still, please don’t!! Goodbye!!!

( I couldn’t continue more…….)

.

.

.

.

.

.

.

I still like that girl’s honesty as, to her, a goodbye meant a goodbye! God bless her boyfriend!

PS, I love lovely ladies even when they block!

………..Yes, now it’s 69!

I meant the number of likes!!!! God bless your dirty mind!!!!

23August 2014

প্রিয় বই মরণের আগে ও পরে এমন একজনকে ছবির দেশে কবিতার দেশে উপহার দেয়ার পর আমাদের এক বন্ধুকে মেয়েটা একটা আরামদায়ক লুংগি উপহার দিয়েছে। মেয়েটার রুচি ভালো । বইটা সস্তা; আনন্দের নয়, বিভাসের। লুংগিটা কিন্তু দামি, শাহ ব্র্যান্ডের।

প্রিয় বন্ধু, এই ঘটনার সাথে আমার কোনো ভাবনার মিল থাকলে, সেটা নিতান্তই বকতালীয়।

ভালো কথা, এই স্ট্যাটাসটাকে নিছক গুজব হিসেবে নিলেই ভালো হয়।

………বন্ধু এইমাত্র ফোনে জানালো, লুংগির সাথে ফ্রিতে পাওয়া রুমালটা মেয়েটা দেয় নাই, কারণ রুমাল দিলে নাকি সম্পর্ক নষ্ট হয়।

24August 2014

কলেজ-ভার্সিটির হলগুলোতে এক শ্রেণীর চিড়িয়া থাকে যারা বাথরুম দখলে সিদ্ধহস্ত! বাথরুমের বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে শেভ করবে, আর লুঙ্গি, তোয়ালে, সোপকেস রেখে আসবে বাথরুমে যাতে অন্য কেউ এসে হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকে, কখন নবাবজাদার শেভ করা শেষ হবে, এরপর উনি গোসল করবেন! আরেক শ্রেণীর বেআক্কেলের দেখা মেলে যারা টয়লেটে হাগু করতে যাওয়ার সময় বাথরুমে লুঙ্গি, তোয়ালে, সোপকেস রেখে আসে। স্যাররা হাগবেন, বাকিরা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবে, কখন উনি দয়া করে হাগাহাগি থামাবেন, গোসল সারবেন। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, আর বেআক্কেলের দৌড় বাথরুম পর্যন্ত। হল দখলের স্টাইলে বাথরুম দখল! অতি বিরক্তিকর!!

আগে আমি সংকোচবোধ থেকে অপেক্ষা করে থাকতাম, কখন মহোদয়দের রাজকর্ম সমাপ্ত হবে। এরপর ২টা বুদ্ধি বের করলাম। বুদ্ধি ২টা বেশ কাজের। এক। বাথরুম থেকে ওদের জিনিসগুলো বাইরে সরিয়ে রেখে বাথরুমে ঢুকে গোসল করা শুরু করে দেই (মাঝেমাঝে ইচ্ছা করে, বাথরুমের জানালা দিয়ে লুঙ্গি-তোয়ালে ছুঁড়ে ফেলে দেই। একদিন সত্যিসত্যি ফেলে দিবো।) দুই। যে বাথরুমটাতে ওগুলো রাখা আছে, অন্যগুলো খালি থাকলেও বেছে বেছে সেই বাথরুমটাতে ঢুকে আমি আমার মতো করে গোসল করা শুরু করে দেই এবং চেষ্টা করি যত বেশিক্ষণ সম্ভব গোসল করতে, যাতে ওর কাজে যেতে দেরি হয়ে যায়।

হায়! আরেক শ্রেণীর সৃষ্টিশীল চরম বেআক্কেল তাদের সৃষ্টিশীলতার নিদর্শন ফেলে আসে কমোডে!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হলের টয়লেটের দরোজায় একবার লেখা দেখেছিলামঃ ওহে জ্ঞানী! হাগিয়া ঢালো পানি!!

কিছু মানুষের লজ্জাও নাই!!

26August 2014

অনেক জিনিস অন্যের ভাগে পড়ে যা আমার ভাগে পড়ে না। তাই নিয়ে দুঃখ করে লাভ নেই। কেননা আমার ভাগে যা পড়েছে তা অন্যের ভাগে হয়তো পড়েনি।

~ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

তোমায় কতক ফাঁকি দেবে, তুমিও কতক দেবে ফাঁকি,

তোমার ভোগে কতক পড়বে, পরের ভোগে থাকবে বাকি।

~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

যা হয়েছে ভালোর জন্য হয়েছে, যা হচ্ছে ভালোর জন্য হচ্ছে, যা হবে ভালোর জন্যই হবে।

~ গীতা

The best life philosophy I’ve ever learnt………..

Que sera, sera: Whatever was, was; whatever is, is; whatever will be, will be.

And, let me conclude by Robert Frost……

In three words I can sum up everything I’ve learned about life: it goes on.

………I do mind plagiarizing, but I don’t mind sharing.

……….Life’s not about deserving, it’s about earning.

5 September 2014

ঝুম রোদ। কড়া বৃষ্টি। বাইক ছুটছে নাইনটিতে। লালন শাহ্ সেতুর ওপরে। পাশেই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। রেল যাচ্ছে। মোবাইলে গান বাজচ্ছে……. তু শায়র হ্যায়……

Thank you, God, for my last birthday! Life’s so beautiful! No regrets if I die right now! (more later when I’m home……)

5 September 2014

হার্ডিঞ্জ ব্রিজের রেললাইনের পাশে টিলার উপরে বসে আছি, পোজটোজ দিয়ে ছবিটবি তুলছি, কোত্থেকে এক গরু এসে লেজের বাড়ি দিয়ে সেইরকম ভাব মেরে চলে গেলো।

এইডা কিসু হইলো? ওরে বলদা! হাউ ডেয়ার ইউ?! তুমি মোরে চেনো? মুই কাস্টমসের অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার না?! দুনিয়াদারি কিসু বোঝো?

ব্যাচেলরদের ব্যাপক সুখ কেউই দেক্তারে নারে পাগলা! গরুও না!

ভাবনা: পাঁচশো ছিয়াশি

……………………………………………………

5 September 2014

চলনবিলে। এখানে ঢেউয়ের গা পিছলে পিছলে শেষ বিকেলের রোদ খেলা করে। বিলের ঢেউ এমন, না দেখলে ভেবে নেয়াটা সহজ নয়। আকাশের নীলের সাথে জলের রঙ মিশে একাকার। নৌকার মানুষগুলো নীলমানুষ হয়ে ভাসতে ভাসতে দূরের সবুজধূসরিত গাছগুলোর কাছাকাছি হারিয়ে যাচ্ছে। এর জলে পা ভিজিয়ে নেয়ার শান্তি পৃথিবীর সব অসুখ সারিয়ে দেয় যেন! এখানে কিছুদূর পর পর মেঘের বুকে জমেথাকা বেদনা বৃষ্টি হয়ে ঝরে। ঈশ্বরের লেন্সেও এই অপার্থিব সুন্দরের সামান্যটুকু ধরা পড়ছে না হয়তো! তবুও ক্যামেরার শিশুতোষ চেষ্টা থেমে নেই। ক্লিক! ক্লিক!!

এলাকাটা সন্ধ্যায় নিরাপদ নয়। তাই ফিরতে হবে। ইচ্ছে ছিলো, আজকের ভাদ্রপূর্ণিমারাতে চন্দ্রাহত হবো। জলের বিশাল কায়া কীভাবে রুপোলি থালা হয়ে পাশে সবুজের উড়োউড়ো মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে ধীরে ধীরে, দেখবো। হলো না! এই গোধূলিবেলায় সময়টুকু থেমে যাক, শুধু এইটুকুই চেয়েছিলাম। হায়! পৃথিবীর সব রূপসীর মতো সেও ফিরিয়ে দিলো। তাকে দেখাচ্ছে সেই উদ্ভিন্না আলোআঁধারি নারীর মতো, যে মিলনের সবটুকু কামনা জাগিয়ে তুলে হঠাত্‍ করেই মুখ ফিরিয়ে নেয়। অদ্ভুত অকারণ রহস্যপ্রিয়তা!

5 September 2014

মাঝেমাঝে ছোটোবেলা ফিরেফিরে আসে। ছোটোবেলায় বাবা ছাদে নিয়ে যেতেন তারা চেনাতে। সেইসব তারা আমি সেই কবে চিনেটিনে কখন যে আবার ভুলে গেছি সেটাও এখন আর মনে পড়ে না। কতোকিছুই তো হারিয়ে যাওয়া দিনের মতো ফাঁকিটাকি মেরে হারিয়ে যায়!

বুকের ওপরে রাখা এক্সপেরিয়াতে পরপর চারটা ট্র্যাক চললো।

কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে…….

সে তারাভরা রাতে…….

দিনের শেষে ঘুমের দেশে…….

কাটে না সময় যখন আর কিছুতেই…….

শুয়ে আছি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের বিশাল মাঠের মাঝখানটাতে। নিচে ভেজাভেজা ঘাস। ওপরে মেঘের সাথে চাঁদের মিষ্টি লুকোচুরি। হিম হাওয়ায় ভেসে যায় হাজার বছরের পুরোনো বিশ্বস্ত নিঃসঙ্গতা। মিটিমিটি জ্বলতে থাকা তারাগুলো আমাকে ছুঁয়ে যাবে কথা দিয়ে নেমেনেমে আসছে। এই এতোটাই কাছে, যতোটা কাছে এলে ওদের ভুলে যাওয়াটা কষ্ট দেয়। হাত ছেড়ে দেয়া কিংবা যাওয়া প্রেমিকার সাথে ভালো থাকার দিনগুলোতে ভুলে যাওয়া গানের অন্তরাগুলো আরো একবার আমাকে এলোমেলো করে দেয়, আজকের এই বিষণ্নতামাখা স্বর্ণালি সন্ধ্যায় মন খারাপ করে দিয়ে বকে যায়…… বাবার শেখানো কথাগুলো আর কেউ কখনো অতোটা সহজ করে শেখায়নি। ভুলে গিয়ে কী হলো?

এইসবকিছু লিখতে লিখতেই ফুরিয়ে গেলো…… ও চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে…… এখন বাজছে…… চাঁদ কেনো আসে না আমার ঘরে……

উফফফ!! আমি চেয়েছিলাম, একটা সুন্দর জীবন, আজকের সন্ধ্যার এই অসহ্যরকমের সুন্দর জীবন নয়! আমি সুন্দরে অভ্যস্ত হতে দিনদিন ভুলে যাচ্ছি! অসহ্য! সবকিছু অসহ্য!

6 September 2014

বাইকে চেপে নাটোরের পথে……. বনলতার খোঁজে

ভাবছেন বাইকে চেপে বনলতার খোঁজে? হুহ! জীবনানন্দও ৭০ কিমি পৃথিবীর পথে পথ হেঁটে বনলতার কাছে শান্তির আশায় আসতেন না। এই রোদে প্রেমের কর্পূর উড়ে যায়!

……….কাঁচাগোল্লা আসবেন, স্যার………..ইহা বড়ই সৌন্দর্য……

………..খাইলাম, আমি উহাকে খাইলাম!

…………খালি হাতে যেও না…..বনলতার সুন্দরী নাতনীটা আজকে বাসায়ই আছে! একটা iphone 6 গিফট হিসেবে নিয়ে যাও!……. ভগবান এই ভাদ্র মাসে কাওকে নিরাশ করেন না!!

…………….নাম রেখেছি বনমানবী যখন দেখেছি…..

6 September 2014

নাটোর রাজবাড়ীতে ব্যাপক রঙঢঙ কইরা খিঁইচ্যা ফুডু তুইলা উত্তরা গণভবনের পথে……

সিরাম ওয়েদার! জেবনে আর কী আছে! একটু রঙঢঙ কইরা বাঁইচ্যা থাকন ছাড়া!

যাহারা অ্যানটিক ফ্লেভারের রঙঢঙ মার্কা ফটোশুট করিতে চাহেন, তাহারা এই রাজবাড়ীতে আসিয়া নর্তনকুর্দন করিয়া যাইতে পারেন।

6 September 2014

অনিন্দিতা মুভিতে হেমন্তের কণ্ঠে দিনের শেষে ঘুমের দেশে গানটিতে মৌসুমীর নদীতীর ধরে সেই মায়াভরা চাহনিতে হেঁটে যাওয়াটা মনে পড়ে? শুধু এক অদ্ভুতরকমের ভালো লাগায় আচ্ছন্ন হতে হলেও অমন স্নিগ্ধ অবয়বের নায়িকার ট্রেনে ওঠার পরের ছেলেমানুষি দেখতেই ব্যালাড অব অ্যা সোলজার মুভিটা বারবার দেখা যায়। ওরকম মিষ্টি চেহারা মেয়ের কথা ভাবলেও মন আপনিই হাসতে থাকে, হাসতেই থাকে। মৌসুমীকে দেখতেই অনিন্দিতা’র গানটা দুএকবার ইউটিউবে শোনার পর বুঝলাম, এই গানের যাদু হেমন্তের গায়কিতে। নদীপাড়ে সন্ধ্যায় নৌকার ঘাটে ভেড়া, জেলেদের ঘরে ফেরা, বাছুরের সারল্যচাপল্যমাখা মায়ের অনুগমন এইসবকিছুই গানটাকে এমনই মায়াবী করে দিয়েছে যা শুনলে কিছু একটা যেন মন থেকে সমস্ত চাঞ্চল্য উত্‍কণ্ঠা বের করে দিয়ে একেবারেই শান্তস্নিগ্ধ একটা স্তরে নামিয়ে নিয়ে আসে।

আমার বন্ধু শোয়েবের কভার ফটোতে ওরকম একটা দৃশ্য দেখেছিলাম। সাঁঝের বেলা পদ্মাপাড়ের ঘরে-ফেরার দৃশ্য। ওইমুহূর্তেই আমি ওকে ফোন করে জানতে পারি, ওই পাড়টা ওর বাড়ির কাছেই। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, শুধু পদ্মাপাড়ের সান্নিধ্যে একটা সন্ধ্যা কাটাতে হলেও পাবনা আসবো।

উত্তরা গণভবনের রহস্যঘেরা গাছগাছালি আর ‘নাটোরের বন-লতা’, মোলায়েম নারীভাস্কর্য, অপূর্ব স্থাপত্য, ছোটোভাই কেফায়েতের আন্তরিকতা এইসবকিছুকে ছেড়ে আমার স্বপ্নদৃশ্যকে ছুঁয়ে দেখতে বাইকে চেপে প্রবল অথচ হিমহাওয়া কেটেকেটে পদ্মাপাড়ের পথে ছুটছি। রাস্তার দুপাশে আমগাছের ছায়ায় বিকেলের নরোম রোদ আরো নরোম হয়ে সমস্ত শরীরমনে আলতোছোঁয়ায় এমনভাবে শিহরণ জাগিয়ে দিচ্ছে, যেন…….

জীবনে-কতকিছু-দেখার-বাকি-এখনো’র তালিকা থেকে একটাকিছু বাদ পড়ার ভাবি আনন্দে বিভোর হয়ে হাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে গলা ফাটিয়ে গান গাইতে গাইতে ছুটছিই তো ছুটছি……

10September 2014

বাংলাদেশি সিনেমার অনেক গান আছে যেগুলো অনেকদিন পর পর শুনলে অনেক ভালো লাগে….. একটু আগে শুনলাম, পাথরের পৃথিবীতে কাঁচের হৃদয়, ভেঙে যায় যাক তার করি না ভয়……. গানের মধ্য দিয়ে পুরোনো ভালোলাগা ফিরেফিরে এলে দারুণ লাগে!

আপনাদের পছন্দের দুএকটা বাংলাদেশি সিনেমার গানের কথা বলুন তো?

আমি কিছু দিলাম:

অনেক বৃষ্টি ঝরে তুমি এলে

অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন

অনেক সাধের ময়না আমার বাঁধন কেটে যায়

আকাশের ঐ মিটিমিটি তারার সাথে কইবো কথা

আগুনের দিন শেষ হবে একদিন

আজ সারারাত জেগে থাকবো

আবার এলো যে সন্ধ্যা

আবার দুজনে দেখা হল

আমার গরুর গাড়িতে

আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান

আমার বুকের মধ্যেখানে, মন যেখানে, হৃদয় যেখানে

আমার মত এত সুখী নয়তো কারো জীবন

আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা

আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি

আমি আছি থাকব

আমি একদিন তোমায় না দেখিলে

আমি কার জন্য পথ চেয়ে রবো

আমি তোমারই প্রেম ভিখারি

আমি যে আঁধারে বন্দিনী

আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো

আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন

ইশারায় শিষ দিয়ে

এ খাঁচা ভাংবো আমি কেমন করে

এ জীবন কেন এত রঙ বদলায়

এই পৃথিবীর ‘পরে কত ফুল ফোটে আর ঝরে

এই মন তোমাকে দিলাম

এক যে ছিল সোনার কন্যা

একদিন ছুটি হবে, অনেক দূরে যাবো

একদিন স্বপ্নের দিন

একি সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে

এখন তো সময় ভালোবাসার

এখানে দুজনে নির্জনে

ওই দূর দূর দূরান্তে

ও আমার জীবনসাথী, এ জীবন নাও নিয়ে যাও

ও আমার বন্ধুগো

ও পাখি, তোর যন্ত্রণা

ওই ঝিনুক ফোটা সাগরবেলায়

ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে…..রে দে ছাড়িয়া

কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো

কথা বলো না বলো

কী ছিলে আমার বলো না তুমি

গানের এ খাতায় স্বরলিপি লিখে

চাঁদের সাথে আমি দেবো না তোমার তুলনা

চিঠি দিয়ো প্রতিদিন

চুমকি চলেছে একা পথে

জীবনের গল্প, আছে বাকি অল্প

তুমি আজ কথা দিয়েছ

তুমি আমার এমনই একজন

তুমি আমার কত চেনা, সেকি জানো না

তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন

তুমি আমার জীবনসাথী জনমজনম ধরে

তুমি আমার মনের মানুষ মনেরই ভিতর

তুমি আসবে বলে, ভালোবাসবে বলে

তুমি এসেছিলে পর’শু, কাল কেন আসোনি

তুমি কখন এসে দাঁড়িয়ে আছো আমার অজান্তে

তুমি কি দেখেছো কভু, জীবনের পরাজয়

তুমি মোর জীবনের ভাবনা, হৃদয়ে সুখের দোলা

তুমি যে আমার কবিতা, আমার বাঁশির রাগিণী

তোমাদের সুখের এ নীড়ে আমাকে খুঁজো না বন্ধু

তোমার আমার মন ছিলো এক সাথে তো জোড়া

তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে

নাচ আমার ময়না তুই পয়সা পাবি রে

নীল আকাশের নিচে আমি রাস্তায় চলেছি একা

পড়ে না চোখের পলক

পাখিরে তুই, দূরে থাকলে আমার কিছু ভাল লাগে না

পাথরের পৃথিবীতে কাঁচের হৃদয়

পিচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি

পৃথিবী তো দুদিনেরই বাসা

পৃথিবীতে সুখ বলে যদি কিছু থেকে থাকে

প্রেমে জীবন প্রেমে মরণ প্রেমে বাঁচা মরা

প্রেমের নাম বেদনা, সে কথা বুঝিনি আগে

ফুলের কানে ভ্রমর এসে চুপিচুপি বলে যায়

বাজারে যাচাই করে দেখিনি তো দাম

বাবা বলে গেল, আর কোনদিন গান কোরো না

মাস্টারসাব, আমি দস্তখৎ

বিমূর্ত এই রাত্রি আমার

আছেন আমার মোক্তার

বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে

ভাল আছি, ভাল থেকো

ভালোবাসা যতো বড়ো, জীবন ততো বড়ো নয়

ভেঙেছে পিঞ্জর

মনে প্রেমের বাত্তি জ্বলে

যদি বউ সাজো গো,আরও সুন্দর লাগবে গো

যে জন প্রেমের ভাব জানে না তার সাথে

যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে জীবনে অমর হয়ে রয়

যেও না সাথী

শত জনমের স্বপ্ন

শোনো গো রুপসী ললনা

সব সখিরে পার করিতে নেব আনা আনা

সাগরের তীর থেকে মিষ্টি কিছু হাওয়া

সাগরের সৈকতে কে যেন দূর হতে

সাথী তুমি আমার জীবনে, সাথী তুমি আমার মরণে

সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী

সে যে কেন এলো না

সোনালী প্রান্তরে, ভ্রমরার গুঞ্জরে

হয় যদি বদনাম হোক আরও, আমিতো এখন আর নই কারো

ভাবনা: পাঁচশো সাতাশি

……………………………………………………

10September 2014

চিটাগাংয়ে বদলি হলাম।

প্রায় প্রতিদিনই সকালে ব্রাশ করার সময় কিংবা তার একটু আগেপরে একটা করে গান মাথায় ঢোকে আর বাজতেই থাকে বাজতেই থাকে। ওইসময়ে না ঢুকলে দিনের অন্যসময়ে ঢোকে। কেন ঢোকে, কীভাবে ঢোকে, ওই গান আসেই বা কোত্থেকে, এটার কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। গানের মতো আর কী-ই বা এতোটা নিবিড়ভাবে আচ্ছন্ন করে রাখতে পারে?

আজকে সকালে অফিসের গাড়িতে ওঠার সময় মাথায় ঢুকলো শাপমোচন মুভির “শোনো বন্ধু শোনো, প্রাণহীন এই শহরের ইতিকথা……ইটের পাঁজরে, লোহার খাঁচায় দারুণ মর্মব্যথা।। এখানে আকাশ নেই, এখানে বাতাস নেই, এখানে অন্ধ গলির নরকে মুক্তির আকুলতা।।”

সে ঢুকেই রাজত্ব করতে শুরু করলো। ব্যস্ত শহরের চির প্রতিদ্বন্দ্বী এইরকম কিছু গান। গানের মতন অতোটা রাজত্ব আর কোনোকিছু করতে পারে না। একেকদিন একেকটা গান আমাকে ছেয়ে রাখে।

আমি ভাবছিলাম, এই ঢাকা শহরের কথাই হেমন্ত গাইছেন। ভাবছিলাম, এই জীবনটাকে যেভাবে কাটাতে চেয়েছিলাম, সেভাবে আমি কিংবা আমার জীবন, এর কোনোটাই নেই। আফসোসহীনভাবে জীবন কাটানো এখনো হয়ে উঠলো না। বারবারই মনে হচ্ছিলো, জীবিকার কাছে জীবনের এই নির্মম পরাজয় আমাকে একটু একটু করে ক্লান্ত করে দিচ্ছে। আমি এই ব্যস্ত শহর থেকে দূরে চলে যাবো। কোলাহল কবে কী দিতে পেরেছে?

এইসবকিছু ভাবতে ভাবতে অফিসে এলাম। এসে দেখলাম, আমার ঢাকার পোস্টিং বদলে গেছে। আমাকে বদলি করা হয়েছে চিটাগাংয়ে। শুল্ক গোয়েন্দার চট্টগ্রামের আঞ্চলিক অফিসে।

আমি অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস করি না। গানটা মাথায় হাওয়া থেকেই এসেছিলো। হাওয়ায় মেলায়নি কেনো, এটা জানেন মিসির আলি।

শিকাগো বিশ্ব ধর্ম মহাসম্মেলনের দিনটা ১১ সেপ্টেম্বর। বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ প্রতি বছর এই দিনটা পালন করে। কালকেও করবে। এছাড়াও কালকে ওদের বিবেকানন্দ বিদ্যার্থী ভবনের আবাসিক ছাত্রদের একটা ব্যাচের সমাবর্তন এবং নতুন ছাত্রদের সংবর্ধনা আছে। পুরো অনুষ্ঠানের কিনোট স্পিকার হিসেবে আমাকে অফিসিয়ালি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উনারা মনে করেন, আমার কিছু কথায় ওদের স্টুডেন্টদের ক্যারিয়ার গঠন করতে সুবিধে হবে, ওরা এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা পাবে। আমাকে অফিস থেকে চিঠির যে কপিটা দেয়া হয়েছে, ওতে ওরকমই লেখা আছে। ভাবছিলাম, এক জীবনে মানুষ আর কতোটুকুই বা পায়? “আমি অকৃতী অধম বলেও তো কিছু কম করে মোরে দাও নি। যা দিয়েছো তারই অযোগ্য ভাবিয়া কেড়েও তো কিছু লও নি।।” এই কথাটাই ঘুরেফিরে মাথায় আসছিলো। আমার ডিজি স্যারের নির্দেশে সেখানে যাচ্ছি। যাচ্ছি, আরেকটা কারণ হলো, বার্ধক্যকে যেমনি বয়সের ফ্রেমে বাঁধা যায় না, তেমনি বিবেকানন্দকে ধর্মের ফ্রেমে বাঁধা যায় না। আমার দর্শনের প্রাথমিক পাঠ বিবেকানন্দের কাছেই। মা, ছোটোবেলায় এই মহান দার্শনিকের খোঁজ দেয়ার জন্যে তোমায় ধন্যবাদ।

রাতের বাসে চিটাগাং যাচ্ছি। না, ভুল হলো। রাতের বাসে চিটাগাং আসছি। কেনো এভাবে বললাম? আসছে রোববার কোরিয়া যাবো। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শুক্রবার ফেরার কথা। এরপর রোববার চিটাগাংয়ে জয়েন করার কথা। এরপরের বদলির আগ পর্যন্ত আমাকে আমার শহরের বাইরে কোথাও যাওয়াটাকে আর ‘ফেরা’ বলতে হবে না।

11September 2014

গাড়ি ছাড়ল। মায়া বাড়ল।

আমি আগেও ঢাকা ছেড়েছি; দুবছর ঢাকায় থাকার পর। এরকম হয়নি তখন। এখন হচ্ছে। অথচ এখন ছাড়ছি ৫-৬ মাস থাকার পর। এই খারাপ লাগাটা ধরনটা অদ্ভুত। হয়তো সেই প্রথমবারের দুবছরে বই পড়েছি। তখন চাকরি করতাম না, শুধু এমবিএ করতাম। গত কয়েক মাসে মানুষ পড়েছি। মানুষ পড়ার কষ্ট বই পড়ার কষ্টের চাইতে বেশি। ঢাকার জন্যে কেমন যেন মায়ামায়া লাগছে। আমি সত্যিসত্যি অবাক হয়েছি এই দেখে, আজকে সন্ধ্যায় আমার ঢাকা ছাড়ার খবরটা ফেসবুকে দেখে আমার ভালো চান এমন অনেকে আমাকে ফোন করে তাঁদের মন খারাপের কথাটা জানিয়েছেন। আমার ইনবক্স ভরে গেছে কিছু বিষণ্ন খুদেবার্তায়। আমার হোস্টেলে সন্ধ্যার পর থেকে দেখা করতে এসেছেন ৩জন। আমার সাথে যে সিপাহি ডিউটি করতো আজ বিকেলে আমার অফিসের গাড়ি ছাড়ার পর পেছন ফিরে দেখেছি সে রুমাল বের করে চোখ মুছছে। ভালোবাসার যন্ত্রণা সহ্য করার দায় বড় দায়!

এই ভালোবাসার কণামাত্রেরও যোগ্যতা আমার নেই। মানুষের ভালোবাসা আমাকে বড়ো বেশি অপরাধী করে দেয়। এই অপরাধবোধ মৃত্যুর চেয়েও বড়ো। আমার যতদূর মনে পড়ে, আমি কখনো কারোর তেমন কোনো উপকার করিনি যে আমার এতো বড়ো ক্ষতি করতেই হবে। এমনিতে পরিচিতজনেরা অনেকেই আমাকে ‘ইমোশনাল ফুল’ বলে। ভালোবাসা মানুষকে বড়ো নির্দয়ভাবে ভালোবাসতে শেখায়। এই ভালোবাসার বাড়াবাড়ির ভয়ে ইদানীং কাউতে একটুখানি ভালোবাসা দিতেও বড্ডো ভয় হয়।

বিভূতির আরণ্যক পড়ার পর ওই উপন্যাসের মানুষগুলোর জন্যে যে মায়াটা হয়েছিল ঠিক সেইরকমের মায়া হচ্ছে। জীবনানন্দের কবিতায় যেমনি থাকে তেমনিভাবে একেবারে কাছ থেকে ছোঁয়া ছোটোছোটো থোকাথোকা সুখ এই শহরে যেন এতোদিন ধরে পরম মমতায় আমাকে ঘিরে জড়িয়ে ছিলো। মনে হচ্ছে, কী যেন ছেড়ে যাচ্ছি, কী যেন ছেড়ে যাচ্ছি…….

11September 2014

শপিংয়ে গিয়েছিলাম। স্যুট পছন্দ করছি, এইসময় একটা পিচ্চির দিকে চোখমন আটকে গেল। নীলনীল চোখের ফুটফুটে একটা দেবশিশু। ঝুঁটিবাঁধা রেশমি চুল। হাসিখুশি টোলপড়া গাল। টুকটুকে লাল জামায় নাদুসনুদুস ছোট্টো শরীরটা ঢাকা। গুটিগুটি পায়ে পুতুলের মতো হাঁটে। একটু পরপর খুব খুশি হয়ে ওঠে, মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে তালি দিতে থাকে। আমি বরাবরই বাচ্চাদের সাথে খুব সহজেই ভাব জমিয়ে ফেলতে পারি। ওরা আমাকে কাছের বলে ভাবে। ওরা ভাবে, আমি ওদের মতো। ওরা ঘুরিয়ে ভাবার কষ্টটা একেবারেই নেয় না। একমাত্র শিশুরাই পারে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিটিকে মুখের উপর “তুমি পচা” বলে দিতে। আমি হাঁটু গেড়ে বসে অল্প সময়ে ওর সাথে ভাব জমিয়ে ফেললাম। ওর মতো করে আধোআধো বোলে কথা বলতে লাগলাম। গাল দুটো টেনে আদর করছি আর ভাবছি, এর মা কোথায়? কত জন্ম সাধনা করলে পরে এইরকম একটা শিশুর মায়ের হাজবেন্ড হওয়া যায়! অমন ফুটফুটে ফুলের মতো শিশুর মাকে দেখা অবশ্যকর্তব্য। না জানি কোন অপ্সরার হাত ধরে এখানে এসেছে সে! সুন্দরীর মুখদর্শনও পরম সুখের। ওর মাকে মনেমনে খুঁজছিই তো খুঁজছি ওয়েসটেক্সের সারাটা ফ্লোরে। ওর সাথে খেলছি আর ও কখনোকখনো ছোট্টো হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুখ ঢেকে ফিক করে হেসে উঠছে আবার কখনোকখনো কুটকুট করে হাসছে। বড়ো ভালোলাগার সেই দৃশ্য।

ওইসময়ে ওর বাবা এলেন। ভদ্রলোক আমারই বয়েসি। হাসিখুশি মুখে সোনালি ফ্রেমের ভেতরের চোখজোড়া নাচিয়ে নাচিয়ে বললেন, আম্মু! আঙ্কেলকে টুইঙ্কেল টুইঙ্কেল শুনিয়েছো?

কথায় কথায় জানলাম, উনি একটা ব্যাংকে আছেন। মেয়েটার নাম পিউ। জন্মের আগেই ওর মা এই নামটা ঠিক করে রেখেছিলেন। ভদ্রমহিলা কীভাবে হয়তো জেনে গিয়েছিলেন, এই দেবশিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর ওর নাম রাখার সুযোগ ঈশ্বর আর তাঁকে দেবেন না।

ভদ্রলোকের সাথে আরো কিছুক্ষণ গল্প করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। অতোটা মানসিক শক্তি এই ইমোশনাল ফুলটার নেই। লিফটে নামতে নামতে ওর ছবিগুলো সব মুছে দিলাম। কখনোই মা ডাকার সুযোগ হয়নি যার, তার ছবি রাখার মতো অতোটা জায়গা আমি কিংবা আমার হ্যান্ডসেট, কারোরই নেই।

কাল আবার যাবো। ইমোশন দিয়ে তো আর জীবন চলে না। পছন্দ-করা স্যুটটা কিনতে হবে।

ভাবনা: পাঁচশো আটাশি

……………………………………………………

14September 2014

feeling ফোনযন্ত্রণা থেকে মুক্তির আনন্দে বিভোর

আজ রাত ১১:৫৫ টায় কোরিয়া যাচ্ছি। শুক্রবার ফিরবো। এইসময়ে কেউ চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা স্কাইপ’য়ে।

It’s really cool to be out of mobile network and be just with yourself! ফোন রিসিভ না করতে পারার চমৎকার সৌভাগ্য সবসময় আসে না।

………কোরিয়া গিয়ে কোরিয়ান ভাষায় কয়েকটা স্ট্যাটাস দিয়েন।

খালি ইশটেটাশ দিলেই চলবে?? আমি তো আরো কোরিয়ান ভাষায় সংগীত রচনার মহাপরিকল্পনা করসিলাম।

It’s a training program. I just hate receiving calls, you’ve no idea.

15September 2014

দেশের বাইরের দেশের এয়ারপোর্টে বাঙালিবাঙালি চেহারার কাউকে দেখলে বড়ো আশা জাগে, এই বুঝি বাংলা বলার কাউকে পাওয়া গেলো। ইসশ! ‘কতোদিন’ বাংলা বলি না! গেল কয়েক ঘণ্টা বাংলা বলার কাউকেই দেখলাম না। এই বুঝি পেলাম! আহা আহা! পরে দেখা যায়, ও আসলে বাঙালি চেহারার অবাঙ্গালি ইন্ডিয়ান। মায়ের কোল ছেড়ে শিশু পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থানেও শঙ্কিতবোধ করে। বাংলাদেশের বাইরে উন্নত দেশগুলোতে কতো কী সুবিধা! নিরাপত্তা, বেশি আয়, উন্নত লাইফস্টাইল। কিন্তু, তবুও অনেককিছুই নেই। এই যেমন, বাংলা বলার কাউকে পাওয়া যায় না, ভুলভাল ইংরেজিতে যাদের সাথে কথা চালিয়ে নেয়া যায়, তাদেরকে আর যাই হোক, কিছুতেই আপন বলে মনে হয় না। সবচেয়ে হেলদি খাবারগুলো আমার দেশের আনহেলদি খাবারগুলোর কাছে পাস নাম্বারও তো পায় না। এখানে কেউ আমাকে চেনে না। বিদেশের মাটিতে পা রাখার আগ পর্যন্ত আমার মনে হতো, কেউ আমাকে চেনে না, এটা একটা দারুণ ব্যাপার! আমি ইচ্ছে হলেই যেকোনো সুন্দরী মেয়ের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে পারি। আসলে তা না। চারপাশে ভালো মানুষের চেয়ে আপন আপন লাগে এরকম মানুষ বেশি থাকলে বরং বেশি খুশিখুশি লাগে। দেখলাম, বাংলা বলতে চাওয়ার ছটফটানিটা কী ভীষণ রকমের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। ’৫২র আন্দোলন এমনি এমনি হয়নি। সিঙ্গাপুর চাঙ্গি এয়ারপোর্টে ৩ ঘণ্টার ট্রানজিটে পুরো এয়ারপোর্টে জীবনের যে জোয়ার দেখলাম, সেটা আমার নিজের মনে একটুও রেখাপাত করেনি। আমি সেই ৩ ঘণ্টায় বাঙালি খুঁজে বেড়িয়েছি। ফুট ম্যাসাজারে পায়ের ক্লান্তি দূর করতে বসে বড় বড় কাঁচের দেয়াল দিয়ে পুরো এয়ারপোর্টটাকে দেখতে দেখতে বারবারই মনে হচ্ছিলো, ঢাকা এয়ারপোর্ট ঢাকা এয়ারপোর্ট। এয়ারপোর্টের রানওয়ের ওদিকটায় দেখলে মনেই হয় না, দেশের বাইরে আছি কিংবা, ওরকম মনে করে নিতে বড় আরাম লাগে। দেশের বাইরে গেলে ‘আমার শহর’ বলে কিছু থাকে না। ঢাকাকেও তাই অনায়াসে ভালো লেগে মনে পড়ে গেছে।

বাংলাদেশের বাইরের লোকজনের ভদ্রতা চোখে পড়ার মতো। সরি, থ্যাংক য়্যু, এক্সকিউজ মি এইসব ওরা কতো কতোবার যে বলে! সাথে বডি এক্সপ্রেশনটাও বেশ ধাক্কা দেয়ার মতোই। নিজের কাছেই মনে হয়, ওদের সাথে কথা না বলি। এতোটা কায়দা করে ভদ্রতা কখনোই শিখিনি তো! ওরা বেশ গোছানো। সিওলে পৌঁছে আমি সারা এয়ারপোর্টে কোথাও এতটুকুও এলোমেলো কিছু দেখিনি। ওরা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে জানে। আপনি পরে এসে যদি কারোর আগে দাঁড়িয়েই যান, তবে ও আপনাকে কিছুই বলবে না। এটা আরো অস্বস্তি দেয় বলেই হয়তো কেউ অমন করে দাঁড়িয়ে পড়ে না। আমাদের মধ্যে ভদ্রতা না দেখানোর অস্বস্তি ওদের চাইতে কম। ইনচেন এয়ারপোর্টে কেউ আমাকে রিসিভ করতে আসেনি। এতে লাভই হয়েছে। নিজে বুদ্ধি বের করে কাজ করাটা সবচেয়ে আনন্দের। আমি ভাবতাম, আমি ইংরেজি ভালোই তো বলি! আজকে বুঝলাম, ওটা যে কী ভুল কথা! বোমা মারলেও পেট থেকে ইংরেজি বেরুতে চায় না। তার উপরে যখন দেখি, ভুলভাল ইংরেজি বললেও ওরা হাসিমুখে জবাব দেয়, যেন কিছুই মনে করে না, এরকমভাবে কথা বলতে থাকে, তখন মনে হতে থাকে, কী যন্ত্রণা! আচ্ছা ভালো দয়ালু মানুষের পাল্লায় পড়া গেলো তো! তবে, বিদেশে গেলে একটা ব্যাপারে ওদের সাথে আমাদের চিন্তার ভিন্নতা কম ইংরেজি পারার বিপদ থেকে বাঁচিয়ে দেয়। সেটা হলো, আমরা ইংরেজি শিখি চাকরি পাওয়ার জন্য, আর ওরা ইংরেজি শেখে কমিনিউকেশনটা ঠিকঠাকভাবে করার জন্য। আমাদের কাছে ইংরেজিটা যেহেতু শেলফে সাজিয়ে রাখার জিনিস, তাই ওটা কে কীভাবে কতোটুকু ভুল বললো, সেটা মাথায় খুব বাজে। ওদের নজর থাকে বেশি কাজ চালানোর দিকে। বেড়াল শাদা কী কালো, সেটা নিয়ে ওরা ভাবে না। ওরা ভাবে, বেড়াল ইঁদুর ধরতে পারলো কিনা সেটা নিয়ে।

ওদের আরেকটা জিনিস ভালো লেগেছে। ওরা সহজ জিনিসটাকে কখনোই কঠিন করে না, যেটা আমরা করি। একটা উদাহরণ দেই। আজকে আমি ইনচেন এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশনের সময় ভুল করে ডিপ্লোম্যাটদের লাইনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের দেশে হলে, হয়তো ইমিগ্রেশন অফিসার আমাকে ফেরত পাঠাতো যে লাইনে দাঁড়ানোর কথা সে লাইনে। কিন্তু, উনি তা করেননি, হেল্প করেছেন। হ্যাঁ, ওরা হেল্প করে, যেটা আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ বেশি করে। ওদের দেশে অন্যকাউকে হেল্প করতে হলে সাধারণ মানুষ হতে হয় না। এখানে কেউ কাঁচের চুড়ির মতো টুংটাং করে ট্রাফিক আইন ভাঙে না। যে রাস্তায় যে স্পিডে যাওয়ার কথা, সে রাস্তায় সেই স্পিডে গাড়ি চলে। আমরা যারা কাস্টমসে চাকরি করি, তারা এয়ারপোর্টে যে প্যাসেঞ্জারকে চেক করে কিছু না পেলে হৈচৈ শুরু করে, ও-ই হয়তো বিদেশের এয়ারপোর্টে এর চেয়ে অনেকবেশি কাস্টমস চেকিংযের পাল্লায় পরলে টুঁশব্দটিও করে না। আমাদের দেশে কাস্টমস অফিসার প্যাসেঞ্জারকে চেক করে কিছু না পেলে সরি বলে, আর ওদের দেশে প্যাসেঞ্জার চেকিং শেষে অফিসারকে থ্যাংক য়্যু বলে বেরিয়ে আসে। এয়ারপোর্ট একটা দেশকে এভাবে করে চেনায়।

আজকে হোটেলের রুমে ঢুকেই দেখলাম, রুমের ফোনটা বাজছে। অদ্ভুত না? রিসিভ করে দেখলাম, রাকিব ভাইয়ের ফোন। এই কতোসময় পর বাংলায় কারোর কণ্ঠ শুনতে পেয়ে যতোটা বিস্মিত হয়েছি, তার চেয়েও অনেকবেশি খুশি হয়েছি। আমি আসবো, ভাইয়া এটা জানতেন। উনি আগেই আমার হোটেলের রিসিপশনিস্ট হাসিখুশি চেহারার মেয়েটাকে বলে রেখেছিলেন, যাতে আমি এলে ভাইয়াকে উনি ফোন করে জানান। এইধরনের অনুরোধ বিদেশিরা বড় আগ্রহ নিয়ে রাখে। এরকম ভালোলাগার মজা ওরা করেই থাকে। কাউকে অবাক করে দেয়ার জন্য ওরা অনেককিছুই করতে ভালোবাসে। ভাইয়ার সাথে কথা বলে বুঝলাম, এই বিদেশবিভূঁইয়ে ৩ ধরনের মানুষ সবচেয়ে আপন। বাংলাদেশের কেউ। বাংলায় কথা বলে এমন কেউ। একই ভার্সিটির যে কেউ। রাকিব ভাইও চুয়েটে পড়েছেন। আমার সিনিয়র। এখন স্যামসাংয়ে আছেন। আমি কী কিনবো, কোথায় ঘুরবো, চুয়েটের কার কার সাথে দেখা করিয়ে দেয়া যায়, এইসব নিয়ে কথা হলো। ক্ষণিকের এই দূর পরবাসে উনার স্নেহভরা কণ্ঠে এই শহরে আমার খোঁজ নেয়ার কেউ আছে, আমি কেউ-না’দের দলে পড়ি না, এইসবকিছু মনে-হওয়াটা অনেক সাহস দিলো।

আরো লেখার ইচ্ছে ছিলো। আর পারছি না। ঘুমঘুম চোখে আর কতো লেখা যায়! এখানে এখন রাত ০১:২৫টা। সারাদিনের ক্লান্তিতে সমস্ত শরীর ভেঙে প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে। কালকে থেকে সেমিনার শুরু। ঘুমুতে যাচ্ছি। শুভরাত্রি।

পুনশ্চ। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের সুন্দরী কেবিন ক্রুদের আন্তরিকতা ভালো লেগেছে। ওরা কোনোকিছুতেই বিরক্ত হয় না। এই একটা জায়গাতেই পুরুষমানুষ সুন্দরীদের পেইন দিতে এতোটুকুও অস্বস্তিবোধ করে না। এতো হাসিমুখে এতো পেইন মানুষ ক্যামনে নেয়! আমি কঠিন চাকরির তালিকায় এই চাকরিটাকে প্রথমের দিকে রাখবো।