ভাবনা: আটশো পঞ্চান্ন ……………………………………………………… এক। আমার প্রতিটি লেখাই আজ তুমিময় হয়ে উঠেছে! আমার কষ্টের সঙ্গে, আমার যন্ত্রণার সঙ্গে এতটা একত্রিত হয়েছ কী করে!? আমার মধ্যে বসে থেকে তুমি আমার চেয়ে বেশি অনুধাবন করছ আমার জীবনকে, আমার না-বলা কথাগুলিকে। তোমাকে অনুভব করেই লিখছি সবকিছু, এ যেন তুমিই লিখছ! কীভাবে সম্ভব? তোমাকে যতই জানছি, শুধু মুগ্ধ হচ্ছি...আমি তো শুধু তোমাকে ভালোবাসার জন্য হলেও বেঁচে থাকব। আসলেই কি তোমার কখনও মনে হয়েছে, আমার এই জার্নিটা অন্য কারও জন্য উদাহরণ হতে পারে? আসলেই কি আমি আমার জীবনে সেভাবে এগোচ্ছি? তুমি আমার লেখা নিয়ে ভাবো, সময় দাও, তাই প্রশ্নটা মাথায় এল। এর কারণ, আমি কখনওই ব্যাপারগুলো গভীরভাবে চিন্তা করি না, আমি লিখে রাখি আমার কষ্টগুলো থেকে বাঁচার জন্য; আর শুধু ছুটেছি, এখনও ছুটছি। আমার লেখার প্রতি তোমার মনোযোগ আমার মধ্যে কিছু ভাবনার জন্ম দিয়েছে। এ জীবনের যেসব ঘটনা দমিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি, এখন থেকে তার সমস্ত কিছু লেখার চেষ্টা করব। আচ্ছা, মনে করো, কখনও কখনও তোমাকে ভীষণ কাছে পেতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ওই মুহূর্তে কোনোভাবেই তা সম্ভব হচ্ছে না। আমি তখন কী করব? তোমাকে তখন আমি চিঠি লিখি। আমার চিঠিই আমার একাকিত্বের সঙ্গী। আজকাল না…আমি তোমাকে খুব জ্বালাচ্ছি! তোমাকে জ্বালাতন করতে গিয়ে নিজের প্রতি যত্ন কমে গিয়েছে। ভাবছি, তোমাকে খুব একটা জ্বালাব না আর। এখন থেকে তোমাকে মনে পড়লে শুধু লিখব, লিখে লিখে নিজের কাছে রেখে দেবো। তুমি আমার বিধ্বস্ত ভঙ্গুর জীবনের অদ্ভুত এক সুখমুখ! আমি নিজেও তোমার, আমার যা-কিছু সবকিছুই তোমার। বিধ্বস্ত ভঙ্গুর জীবনের অদ্ভুত সুখমুখ, ক্ষুধা ও আনন্দের ধ্রুপদী সঙ্গম, তোমাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে গেলেও, জানি---তুমি স্পর্শের অতীত। তবুও কিছু মুহূর্তের পিছু পিছু ঘোরে নির্ঘুম রাত, আর মাঝে মাঝে তুমি ভীষণ গোপন কান্না হয়ে ওঠো। সেই কান্নাগুলো স্মৃতি আর সুখ, দুটোকেই রক্তাক্ত করে। আমি ‘ভালোবাসি’ বলতে বলতে কোথাও জানি থেমে যাই, জড়তা ভাঙার আগেই তুমি মরীচিকা হয়ে যাও! আমি বুঝি, কোথাও মেঘ জমে আছে। ‘ভালোবাসি’ আর বলা হয় না! জানো, তুমি স্পর্শ করলে আমি পুরো পৃথিবী ভুলে যাই! বুকের মধ্যে যাকে সারাক্ষণই পুষে রাখছি, তার গন্তব্য কখনও আমি হয়ে উঠব না, দিনশেষে সে-ই ফিরে যায় তার আপনজনদের কাছে! সমাজের নিয়মগুলো প্রচণ্ড নিষ্ঠুর! তোমাদের সমাজ জানে না হয়তো, দরজায় তালা ঝুলিয়ে রাখলেও কপাট খুলে যায় ঠিকই, আর অমনিই, মনের আকুলতা সব পথ চিনিয়ে দেয়! কোনও একদিন মন খুলে ভালোবাসার জন্য তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসব। এর নাম ‘ইচ্ছে’। আমি ভুল করলে তা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে আমাকে কিছু আর বোলো না। এভাবে বললে আমি নিজেই সংশয়ে পড়ে যাই। তোমাকে খুশি করার কোনও তাগিদ নেই আমার, তোমারও যেমন নেই। তাই এই জায়গায় আমি জেনুইন, অথেনটিক মতামত চাইব। এটাই কি স্বাভাবিক নয়? আমি যা বলি ও অনুভব করি, তার সবই আসে পরিস্থিতির শিকার হয়ে। এই কারণেই তোমার চোখে আমি জীবনটাকে বুঝতে চাইছি। তার অনেক কিছু আমার ভাবনার সাথে মিলে যাবে, কিছু মিলবে না। সেগুলি নিয়ে ভাবব, ভাবাব। তোমার সঙ্গে থেকে যাওয়াটা আমার জন্য আনন্দের। এই থেকে যাওয়ার নাম, নিজের জীবনের দিকে ফিরে ফিরে তাকানো। বেঁচে থাকার জন্য এটা একটা সুযোগও বটে! তোমার সঙ্গে দেখা হবার আগে আমি কখনও নির্জনতায় ডুবে যেতে শিখিনি। তুমি আমাকে মাঝেমধ্যে বকে দিয়ো, আমি সারাক্ষণই তোমাকে ভাবতে থাকি। আমার অনেক কাজ, তবু সব ভুলে তোমাকেই দেখি। তুমিই বলো, আমার মতন এমন ভালো লক্ষ্মী মেয়ের ক্ষতি করে তোমার কী লাভ? মনে করে বোকো কিন্তু! যা মানুষের কাজে লাগে, কারও বিন্দুমাত্রও কোনও ক্ষতি হয় না, ওরকম কিছুতে দোষ নেই। তার পরেও তুমি আমাকে ‘ভালোবাসি’ বলো না নিজে থেকে, আমিই বলাই! আমি হাসব, না কাঁদব? আমি যাকে ভালোবাসি, তাকেই বলতে থাকি, ‘আই লাভ ইউ’ বলো! সে আমায় ভালো না বাসলেও আমি তাকে ভালোবাসি। আমি ‘আই লাভ ইউ’ বলার পর তুমি না বললেও চলবে। তুমি আমাকে ভালোবাসো, এটা আমি অনুভব করে বুঝতে পারি। যদি তুমিও ওরকম কিছু অনুভব না করো, তবে বুঝব, আমার ভালোবাসায় ঘাটতি আছে। তোমাকে ঘিরে আমার একান্ত কিছু হাহাকার আছে, গভীর মায়া থেকে কিছু শূন্যতা আছে। তোমাকে ছুঁয়ে থাকার, তোমাকে স্পর্শ করার প্রবণতা আমার অনেক, তাই অহেতুক এইসব অভিযোগ! দু-জনের ভালোবাসার অবস্থান দু-রকম। আমরা পরস্পরকে সম্মান করি, এর চেয়ে বড়ো কথা আর কিছুই হতে পারে না। এসো, বাঁচার আগে দু-জন মিলে মরি! দুই। কষ্ট এলে আমি তা থেকে পালিয়ে যাই না, অনুভব করি। কষ্ট আমাকে কখনওই ভাঙে না, বরং গড়তে থাকে। আমাকে শেষ করতে হলে সরাসরি মেরে ফেলতে হবে, অন্য কোনোভাবে আমাকে শেষ করা অসম্ভব। যখন আমি খুব একাকী বোধ করি, তখন আমার মনে যা ঘটছে, তা লিখে না ফেললে আমার শুধুই আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হয়। লিখে ফেলতে পারাটা আনন্দের। আমার যেমনই লাগুক না কেন, আমার সমস্ত আয়ু তোমার হয়ে যাক। তুমি বেঁচে থাকো পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। কারও কাছে এমন কোনও শক্তি নেই যা আমার মানুষটাকে ভেঙে দিতে পারবে। এটা আমি বুঝতে পারি অনেকভাবেই। তুমি সবসময়ই নিরাপদ থেকো সমস্ত খারাপ কিছু থেকে। তুমি আমাকে কখনও মৃত্যুর কথা বোলো না। সব প্রাণই জরুরি---যে প্রাণগুলি কারও ক্ষতি না করে বেঁচে আছে। তুমি নিজেই জানো না কতটা শক্তি নিয়ে বেঁচে আছ তুমি! ওরকম বাজে ভাবনা মাথায় এনো না। বরং আমার আয়ু কিছু তোমার হয়ে যাক। আমরা দু-জন দু-জনের জন্যই প্রার্থনা করব আমরা যেন সুস্থ থাকি, ভালো থাকি। তোমার সঙ্গে মনে মনে আমার অসংখ্য বিষয় আছে, যা পৃথিবীর আর কেউ জানে না। আমরা পরস্পরের সঙ্গে কেমন সময় কাটিয়েছি, এসব একমাত্র সৃষ্টিকর্তা জানে। মানুষকে একটুও বিশ্বাস হয় না আমার, তবু কেন জানি, তোমাকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে। এ জীবনে তো কখনও কারও ক্ষতি করিনি আজ পর্যন্ত। আর কয়দিনই-বা বাঁচব! বাকি জীবনটাও এভাবে কাটাতে চাই। জানি না কতটুকু তোমাকে জানাতে পারব, তুমি কতটুকুই-বা বুঝবে আমাকে। যখন ইচ্ছে হবে তোমার সাথে আমার জীবনের গল্প শেয়ার করব। মানুষ আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে, অনেক আঘাত করেছে, খুব জ্বালিয়েছে। আমি সমস্ত পরিস্থিতিতেও স্বাভাবিক থেকেছি, এখনও থাকি। আমি শুধু দেখতে চাই, মানুষ আমার সাথে কী কী করে, আর আমি সেসব ডিঙিয়ে কতদূর যেতে পারি। আমি শুধু চেষ্টা করি, মানুষ আমাকে দেখে যেন আমার ভেতরটা বুঝতে না পারে। যদি একবার কেউ আমার ভেতরটা বুঝে ফেলতে পারে, তবে সেদিন থেকে আমাকে পরাজিত করার চেষ্টা করাটা তার জন্য সহজ হয়ে যাবে। মজার বিষয় হলো, যারা আমাকে দুর্বল মনে করে, একলা মানুষ মনে করে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে, হয়রানি করেছে, বিরক্ত করেছে দিনের পর দিন, তারা এখন, আমি যে-দিক দিয়ে হাঁটি, আমাকে দেখার পর, তার উলটো দিক দিয়ে হাঁটে। এরকম চুপচাপ তাদের নতিস্বীকার করা, নত হয়ে যাওয়া, এসব আমাকে মানসিক প্রশান্তি দেয়। আমার জীবন স্বাভাবিক নয়, তবে আমার কোনও অস্বাভাবিকতা আজ পর্যন্ত কারও কোনও ক্ষতি করেনি। আমি কোনোদিন কাউকে ভালোবাসিনি, কারও সঙ্গে জড়াইনি। শুধু ভেবেছি, যদি আমার কারণে তার কোনও সমস্যা হয়? আমার চলার পথ, আমার যাপিত জীবন, সবকিছু অনেক কঠিন এবং অনেক জটিল। আমার মন চাইলেও আমি সহজভাবে কারও সাথে মিশতে পারি না, কারও সাথে চলতে পারি না। আমার জীবনে কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা আমাকে কোনও স্বার্থ ছাড়াই স্নেহ করেন, ভালোবাসেন, সম্মান করেন। আমিও চেষ্টা করি তাঁদের সম্মান করতে। পুরুষ বলতে তোমাকে বুঝতে শুরু করেছি, বিশ্বাস বলতেও তোমাকেই। আর যদি ভালোবাসা বলে কিছু থাকে, তাহলে তা-ও তোমাকে...তোমাকে হারিয়ে ফেলতে হবে ভাবলেই ভীষণ বিষণ্ণ লাগে, মনে হয়, তোমাকে পাবার আগেই হারিয়ে ফেলব বোধ হয়। প্রায়ই মনে হয়, সহজ যা-কিছু ছিল, তার সবকিছুই জটিল হয়ে গিয়েছে এখন! আমার হয়তো কাউকে ভালোবাসারও অধিকার নেই! ফালতু একটা লাইফ! আমাকে কাঁদতে হবে। আমি অনেকক্ষণ ধরে কাঁদব। কাঁদতে না পারলে সারাক্ষণই অস্থিরতা কাজ করবে আমার মধ্যে। জীবন শিখিয়েছে, যে-কোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখার এটা একমাত্র উপায়। একান্ত নিজস্ব কষ্ট নিয়ে কোনোদিনই আমি কারও কাছে ফিরিনি। আমার নিজের কষ্ট মানুষকে দিয়ে দিলে আমি আর নিজেকে তৈরি করতে পারব না। সমস্ত না-পাওয়া, কষ্ট, অপমান নিয়েই আমি। এইসব আমার শক্তি। তবে এখন মন খারাপ হলে তোমার কথা মনে পড়ে। একে ভালোবাসা বলে না? ভাবনা: আটশো ছাপান্ন ……………………………………………………… আমি যা অনুভব করি, তার উপর ভর করেই আমি তোমাকে ভালোবাসি। এর বাইরে আমি কিছু করতে পারি না, কেননা এর বাইরে আমি কখনও হাঁটিনি। পড়াশোনা বাদে আর তেমন কোনও কিছুর মধ্য দিয়েই আমি নিজেকে আজ অবধি নিইনি। অন্য দিকে আমার মন নেই, ধারণাও নেই। আমি তোমাকে যতটুকু অনুভব করতে পারি, তুমি ঠিক ততটুকুই দেখতে পাও। তাই যদি আমার কোথাও কখনও ভুল হয়, তবে আমাকে তুমি শুধরে নিয়ো। এটা তোমার দায়িত্ব। আমার যে দু-একটা ভুল নিয়ে তুমি আমাকে বলেছ, সেগুলির প্রত্যেকটিই আমার মনে থাকবে, কখনওই ভুলে যাব না। তুমি কোনও কিছু একবার বলেছ মানে আমার মনে থাকবে, তোমার বলতে হবে না আর। তোমার ছোট্ট একটা কথাও আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি যা পারব, হ্যাঁ বলব, না পারলে না বলব। আমার মধ্যে ভণিতা নেই। তাই জোর করেও অভিনয় জিনিসটা আমাকে দিয়ে ঠিক হয় না। আচ্ছা, একটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে। তুমি তো এতদিনে মোটামুটি বুঝতে পারছ, আমি একটা গাধি, আমার মাথায় মগজ বলতে কিছুই নেই। আমি নিজেও বলেছি, আমি এক পড়াশোনা ও একটু ছবিআঁকা ছাড়া আর কিছুই পারি না। তবুও তুমি কেন আমাকে মাঝেমধ্যে লিখতে বলেছ? এটা বলে তুমি আমাকে বই পড়ানোর কাজে অভ্যস্ত করতে চাইছ না তো? আমাকে লিখতে ভুলে যেয়ো না। তোমার কাছ থেকে টেক্সট না পেলে আমার অস্থির লাগে ভীষণ। একটা কথা জানাতে চাই, তা হলো, আমাকে দিয়ে গোছানো কিছুই হয় না, আর তোমার সাথে যদি নিজেকে গুছিয়ে কিছু করতে হয়, একসময় হয়তো ভালোবাসতেই আর সাহস করব না। আমি যা নই, তা করে কোথাও টিকে থাকা সম্ভব নয় আমার পক্ষে। আমি তোমার ভাবনা ভালোবাসি। তুমি এভাবে ভাবতে পারো বলেই তো তোমাকে ভালোবাসি, নইলে কি ছেলের অভাব আছে? আমরা যাপন করি এমন কিছু বাস্তবতার সঙ্গে, সাহসের অভাবে যেগুলি স্বীকার করি না কেউই, বরং কাল্পনিক এটা-সেটা উপস্থাপন করে ঢেকে রাখি যাপিত অনেক কিছুই। তুমি যখন ভাবতে পারো খুব কাছ থেকে বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে দেখে, তখন সেই জায়গায় এসে তোমার ভাবনা আমাকে টানে। ফেইসবুকে আমি শুধু কালচারাল ভিডিয়ো আর পেইন্টিং দেখি, তোমার লেখা ছাড়া অন্য কারও লেখা তেমন পড়ি না। পড়াশোনা আর আঁকাআঁকি নিয়ে যদি আমাকে ছুটতে না হতো, তবে অনেক বই, অনেক লেখকের লেখা পড়ার চেষ্টা করতাম, এবং তোমার প্রতিটি লেখার ফিডব্যাক আমি খুব যত্ন নিয়ে দিতাম। আমার কাছ থেকে ফিডব্যাক চাইতে হতো না তোমাকে। তোমার সঙ্গে দেখা হবার পর থেকে মাঝে মাঝে আমি নিজেকেই বুঝতে পারি না। আমার জীবন থেকে একটু একটু করে পরিচিত সব মুখ পেছনে ছুটে যাচ্ছে! এক তুমিই সমস্ত জায়গায় থেকে যাচ্ছ খুব স্পষ্টভাবে। এটা কি আমার দোষ? এতটা ভালোবাসতে চাই না কাউকে, তাই এখন ভয় হচ্ছে---এই পাগলামি, এই আবেগ কখনও কষ্ট হয়ে ফিরলে, আমি জানি না তখন কী করব। এখানে তোমার কোনও দোষ নেই, সারাজীবনই অনেক ভিড়ের মাঝেও কেমন জানি নিজেকে ভীষণ একা মনে হয়েছে। তুমি এলে, এরপর সবই কীরকম জানি হয়ে গেল! আমি তেমন নই, যেমন তুমি আমাকে দেখছ। আমি কেমন, তা তোমাকে কিছুতেই দেখাতে পারছি না, খুব চেষ্টা করেও! আমার একধরনের কষ্ট হচ্ছে। তোমাকে কখনও কষ্ট পেতে দেখলে সহ্য করতে পারি না। ভাবতে থাকি, আমি একা কষ্ট পাচ্ছি, এটা কি যথেষ্ট নয়? আবার তোমার কেন কষ্ট হচ্ছে? তখন নিজেকে অপরাধী অপরাধী লাগে। তোমার কষ্টের জন্য নিজেকে দায়ী মনে হয়। আমি চাই না, আমাদের মধ্যে কোনও দেয়াল থাক। হঠাৎ হঠাৎ মাথায় আসে, আচ্ছা, তুমি আমাকে প্রশ্রয় দিচ্ছ কেন? আমি তোমাকে ভালোবাসছি, তোমাকে আমার ভালো লাগে, এ বিষয়টা আমি বুঝলাম। কিন্তু তুমি কেন আমার এসবের সাথে চলছ, সেটা আমি জানতে চাইছি। এ বিষয়টা অনেক বার মাথায় এসেছে, কিন্তু এর কোনও উত্তর থাকে না। আমি তোমাকে মিস করি আর করতেই থাকি। আমার ভীষণ কান্না পায়। তোমাকে যখন অনেক মিস করি, তখন তোমাকে ইচ্ছেমতো বকি। তুমিই বলো, আমি আর কাকে বকব? অন্য কারও জন্য তো মন আমার পোড়ে না, তোমার জন্য পোড়ে, তাই তোমাকেই বকি। এসবের কিছুই আমি ইচ্ছে করে করছি না, আপনাআপনিই হয়ে যাচ্ছে এমন! আমি কী করব, বলো? এত মানুষের ভিড়ে তুমি এসে আমাকে একা করে দিচ্ছ। আবার চাইলেও যে তুমি যখন-তখন কাছে আসতে পারবে, তা-ও নয়; তবে এসে পড়ো যখন, তখন আমি চাইলেও তুমি আর ফিরে যেতে পারো না। এইসব উলটাপালটা ভাবতে ভাবতে মন খারাপ হয়ে যায়, তাই তোমার সাথে অভিমান হয়। যা মনে আসে, তা-ই যদি তোমাকে লিখে না পাঠাই, তবে মনটা আরও খারাপ হয়ে যায় আর খারাপ হতেই থাকে। ঠিক আছে, যাও, আমি আর ওরকম দুর্ব্যবহার করব না। সরি।...এই যে বললাম, ‘করব না’, এই বলাটার উপর আমার সত্যিই নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে আমি খুব চেষ্টা করব। আবারও সরি আমি। তোমার একটা ব্যাপার হচ্ছে, তুমি কোনও কিছু সহজ করে বলো না, এত ঘুরিয়ে কথা বললে আমি সত্যিই বুঝি না। আমি যদি কিছু জানতে চাই, তুমি তার ঠিকঠাক উত্তর কখনও দাও না। আমার রাগ হয়। রাগ করে যা মনে আসে, তা-ই তোমাকে লিখে পাঠাই। তখন তুমিও রাগ করো। এরপর আমি আমার নিজের উপরেই রাগ করি। এ ব্যাপারটা আসলে কী? এর কারণই-বা কী? আচ্ছা, এখন কি আমি বসে বসে কারণ বানাব যদি এর আদৌ কোনও কারণ না থাকে? তুমি কিছুই তো বলো না আমাকে। রাগও খুব একটা করো না। এটা নিয়েও আমার রাগ হয়। তুমি রাগ করছ না, সেটা নিয়েও ঝগড়া করছি আমি! কী আশ্চর্য! আমি আসলেই পাগল হয়ে যাব! দূর ছাই! পাগল তো আমি অনেক আগে থেকেই, নতুন করে কী আর হব! অবশ্য, তুমি রাগ না করলেই ভালো। যেহেতু এখনও তোমাকে ঠিক করে বুঝতে পারি না, সেহেতু তুমি রেগে গেলে তোমাকে মানানো কঠিন মনে হবে, পরে টেনশন করতে করতে নিজের খাওয়া-দাওয়া কাজ সব বন্ধ হয়ে যাবে। আমি স্বপ্ন দেখি, তুমি অনেকদূর হাঁটবে। আমি তোমাকে দেখিয়ে বলব, ওঁকে আমার কথা বললে উনি আমাকে চিনতে পারবেন। খুব মজা হবে না তখন, বলো? আমি আছি তোমার পাশে, থাকব। আমি তোমাকে স্পর্শ করতে পারি, এই প্রাপ্তিতেই আমি অনেক হাঁটব। আমি তো কোনোদিন ভাবিনি যে, আমি কাউকে ভালোবাসব, বিশ্বাস করব। কিন্তু দেখো, একটা অন্ধবিশ্বাসে তোমার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তোমাকে দেখতে দেখতে, খুব গুরুত্ব বহন করে, এমন অনেক মানুষকে ভীষণ তুচ্ছ মনে হচ্ছে এখন। তোমার সাথে আমার কষ্টগুলো থাকুক। অনেক কিছুকে উপেক্ষা করে তোমাকে ধারণ করতে চাই। আমি থাকব। তুমিও থাকবে। সাথে থাকবে আমাদের সৃষ্টিগুলি। সেই সৃষ্টির তীর ধরে দু-জন একসাথে হাঁটব। ভাবনা: আটশো সাতান্ন ……………………………………………………… যেখানে আমি আমার গর্ভধারিণী মায়ের সবকিছু পছন্দ করতে পারি না, সেখানে আমি কী করে আশা করি যে, একজন মানুষ, যে আমাকে চেনেই না, তার সবকিছু আমার পছন্দ হবে? আমাকে ভালো লাগানোর দায়িত্ব সে কীভাবে নেবে? কেন নেবে? সে কি আমার অধীনে চাকরি করে? না কি আমাদের মধ্যে ওই লেভেলের বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক আছে? আমি যদি সেই মানুষটাকে খুব পছন্দও করি, তবে আমাকে মাথায় রাখতে হবে, তার কোন কোন দিকের জন্য আমি তাকে পছন্দ করি। সেগুলি যদি না থাকত তার মধ্যে, তবে তাকে পছন্দ করা দূরে থাক, তাকে তো চিনতামই না! তার মধ্যে এমন অনেক দিক থাকতে পারে, যেগুলি আমার পছন্দ হবে না। সেগুলিসহই তো সে! হয়তো ওসবকে বাদ দিলে মানুষটা সেগুলিও হারিয়ে ফেলবে, যা যা আমার পছন্দের। আমার পছন্দের মানুষ যিনি, তাঁর সঙ্গে যদি আমার ব্যক্তিগত পরিচয় না থাকে, তবে আমি যেন এটা মাথায় রাখি, তিনি আদৌ আমার পছন্দের মানুষ না-ও হতে পারেন, তিনি শুধুই আমার পছন্দের কাজের মানুষ। পছন্দের মানুষ আর পছন্দের কাজের মানুষ এক জিনিস নয়। আমি আমার পছন্দের মানুষের সবকিছু ঘাঁটতে ও ভাবতে যাই না। কখনওই না! যার কাছ থেকে যা ভালো কিছু নেওয়ার আছে, ততটুকুই নিই। এর বাইরে কে কেমন, তা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। আমার সবকিছু কি আমার মায়ের পছন্দ হয়? মায়ের চাইতে আপন আর কে আছে? আমার সবকিছু আপনাকে পছন্দ করাতে হবে কেন? আপনি কি আমার মায়ের চেয়েও আপন নাকি? না কি আপনাকে পছন্দ করালে আমার কোনও লাভ আছে? যদি আমার কোনও দিক অপছন্দ করার কারণে আপনি আমার সবকিছুই অপছন্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, তবে সেটা নিয়ে অত ঘ্যানঘ্যান করতে আসবেন না। আপনাকে কি আমি ডেকে ডেকে এনেছি নাকি? যে দরজা দিয়ে এসেছেন, সে দরজাটা তো খোলাই আছে! ফেইসবুক হচ্ছে অভিনয়ের জায়গা। এখানে যে যেমন, সে আদতে তেমন নয়। আমি অনেক সাক্ষাৎ শয়তানকে চিনি, যারা ফেইসবুকে একেক পিস দেবদূত। অনেক চমৎকার মানুষকে চিনি, ফেইসবুকে যাদের আচরণ খুবই খারাপ। মিশেও যেখানে মানুষকে চেনা যায় না, সেখানে না মিশেই কারও সম্পর্কে ধারণা করি কী করে? ফেইসবুক হচ্ছে আধুনিক মানুষের মুখোশ পরার জায়গা। এর বাইরে আর কিছুই নয়। এখানে মানুষ নিজেকে যেমন দেখায়, সে আদতে তেমনই নয়। নানান কারণে অকারণে মানুষ নিজেকে নানানভাবে প্রকাশ করে। সরাসরি না মিশে কারও সম্পর্কে কোনও কিছুই বলা যায় না। যাকে আমি পছন্দ করি, আমি সাধারণত তার কাছাকাছিই যাই না। কারণ সে আমাকে পছন্দ না-ও করতে পারে। কাছে যাওয়ার পর সে আমাকে দূরে সরিয়ে দিলে কিংবা তার কোনও আচরণে আমি কষ্ট পেলে তখন তো আমার খারাপ লাগতেও পারে, তাই ভয়ে যাই না। ব্যক্তি ও ব্যক্তির সৃষ্টি সম্পূর্ণই ভিন্ন জিনিস। একদমই ভিন্ন জিনিস। ব্যক্তি কেমন, তা দিয়ে আমি কী করব? আমি কি তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছি যে ওটা নিয়ে ভাবাটা আমার খুব দরকার? না কি তার খারাপ কাজের জন্য আমাকে নরকে যেতে হবে? না কি আমি তার স্কুলের মাস্টার? না কি আমি তার বস? কাউকে পছন্দ করার শর্ত যদি হয়, সে সবসময় আমার পছন্দমতোই চলবে, তবে আমার তাকে পছন্দ করার কোনও দরকার নেই। পছন্দ করা, ভালোবাসা, প্রেম এগুলি হচ্ছে মানসিক সমস্যা। আমার সমস্যার দায়িত্ব কেন আরেকজন নেবে? ফেইসবুকের প্রকৃত নাম হচ্ছে ফেইকবুক! এখানে কে কী করে, তা দেখে কাউকে জাজ করা একদমই অসম্ভব। মানুষ নানা প্রয়োজনে মুখোশ পরে; কখনও কখনও, মনের খুশির জন্য অপ্রয়োজনেও মুখোশ পরে। মুখোশ ও মুখ, এই দুইকে আলাদা করে দেখার দৃষ্টি না থাকলে তো বিপদ! ধরুন, কেউ সাহিত্যের বই কিনে ছবি তুলে ফেইসবুকে আপলোড করল। এরপর যদি আমি জানতে চাই, ‘আপনি কি পিএইচডি করার প্ল্যান করছেন নাকি?’, তবে সে বিরক্ত হতে পারে এ ভেবে যে, বই কিনতে তো পয়সা লাগে, ইচ্ছে লাগে। এর সাথে বইপড়ারই তো সম্পর্ক নেই, পিএইচডি তো অনেক পরের কথা! এ-ও ভাবতে পারে, আমি তাচ্ছিল্য করে কথাটা বলেছি। সে আমাকে কীভাবে নেবে, এটা তো তার ব্যাপার। তবে যার বাসায় ঢোকার অনুমতিই আমার নেই, তার হাঁড়ির খোঁজ জানতে চাওয়াটা কোনও ভদ্রতার মধ্যেই পড়ে না। আমার মতন একজন সম্পূর্ণ অপরিচিত ব্যক্তি, যে তাকে বইগুলি কিনেও দেয়নি, সে তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে জানতে চায় কোন আক্কেলে? সে যখন আত্মহত্যার দর্শন ও মনস্তত্ত্ব নিয়ে বই কেনার পর সেগুলির ছবি আপলোড করে, তখনও কি আমি জানতে চাইব, ‘ভাই, আপনি কবে আত্মহত্যা করছেন, একটু জানান! জানতে পারলে আমি ফার্স্ট-ক্লাসে চেপে স্বর্গে চলে যাব!’ বলতে পারেন, জানতে চাইলে অসুবিধে কী? জানালে অসুবিধে কী? হ্যাঁ, আপনার কথা ঠিক। অসুবিধে আপনার নেই, কিন্তু তার তো থাকতে পারে, তাই না? নাকি আপনাকে খুশি করে হলেও তাকে অসুবিধেয় পড়ার রিস্কটা নিতে হবে? অসুবিধে না থাক, আপত্তিও তো থাকতে পারে। আমরা কি দূর থেকে কখনও জানতে পারি, কোন মানুষ কী নিয়ে বিরক্ত- বা বিব্রতবোধ করেন? আরেকটা ব্যাপার হলো, কখনও গায়ে পড়ে কারও সামনে গিয়ে বলতে যাবেন না, ‘ভাই রে, আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করি; অতএব, এখন আপনি এভাবে চলেন, ওভাবে চলেন!’ আপনি পছন্দ করেন কি করেন না, ওতে যদি তার কিছুই এসে না যায়, তবে আপনি ওসব ফালতু কথা বলতে যান কেন? আপনার কি সত্যি সত্যিই খেয়ে-দেয়ে কোনও কাজ নেই? না কি আক্কেল নেই? না কি সবই আছে, কিন্তু লজ্জা নেই? যাকে পছন্দ করেন, তাকে যে কারণে পছন্দ করেন, কেবল ওইটুকুই নিয়ে থাকুন। সে তো আর আপনার পছন্দের কমপ্লিট প্যাকেজ হওয়ার দায়িত্ব নিয়ে দুনিয়ায় ল্যান্ড করেনি! অপরিচিত কারও ব্যক্তিগত কোনও কিছু নিয়েই তাকে জিজ্ঞেস করা যায় না। আপনি তাকে পছন্দ করতে পারেন, তবুও করা যায় না। হয়তোবা ওই তথ্য অপরিচিত কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করলে আপনি কিছু মনে করতেন না, কিন্তু তিনি তো কিছু মনে করতেও পারেন। তিনি কী নিয়ে কিছু মনে করবেন, কী নিয়ে কিছু মনে করবেন না, সেটাও কি আপনি ঠিক করে দেবেন? যা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বললে আপনি ঝামেলায় পড়বেন না, তা নিয়ে টুঁ শব্দটিও উচ্চারণ করলে হয়তো তিনি ঝামেলায় পড়ে যাবেন। তখন কি আপনি তাঁকে সেই ঝামেলা থেকে উদ্ধার করতে আসবেন? তখন তো আপনাকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। কিংবা খুঁজে পাওয়া গেলেও, তাঁকে সে ঝামেলা থেকে উদ্ধার করার ক্ষমতাই হয়তো আপনার নেই! গর্দভের ভালোবাসা সহ্য করে বিপদে পড়ার চাইতে শেয়ালের ঘৃণা বুঝে নিয়ে সতর্ক থাকা অনেক ভালো। কাউকে অপছন্দ করলে তাকে এড়িয়ে চলুন। কাউকে ভালো না লাগলে তার দিকে তাকাবেন না। আপনি তার দিকে না তাকালে সে কিংবা আপনি কেউই পথে বসে যাবেন না। কাউকে পছন্দ করলে তার সবকিছুই আপনার পছন্দ হবে না। নিজের সবকিছু আপনাকে পছন্দ করালে যদি কেউ টাকা পায়, কিংবা কোনও উদ্দেশ্য সফল হয়, কিংবা সেখানে কোনও বাধ্যতা থাকে, তবে সে আপনার সামনে আপনার মনের মতো করে নাচতে পারে, অন্যথায় তার কাছ থেকে এটা আশা করে লাভ নেই। কারও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করাই যাবে না, যদি তিনি আপনাকে সেই অনুমতি না দেন কিংবা আপনাদের দু-জনের মধ্যে ব্যক্তিগত পরিচয় না থাকে। আপনি কাউকে অপছন্দ করলে সে ধ্বংস হয়ে যায় না। তাই আপনার অপছন্দের কথা তার কানের কাছে গিয়ে মাছির মতো ভনভন করে মার্কেটিং করার কিছু নেই। ফেইসবুকে যা দেখেন, তার প্রায় সবই মুখোশ। কাউকে ব্যক্তিগতভাবে না চিনলে তার আসল মুখটা দেখার সুযোগ আপনার না-ও হতে পারে। কখনওই, মুখোশ দেখে মুখ যাচাই করবেন না, মুখ দেখে মুখোশ অবিশ্বাস করবেন না। আপনার কথামতো চলে অমর হয়ে যাওয়ার চাইতে নিজের বুদ্ধিমতো চলে বেঁচে থাকাটা আমার জন্য বেশি জরুরি। এটা মাথায় রেখে আমার ওয়ালে আসবেন, মাথায় রাখতে না পারলে আসবেন না। অহংকার যদি হয় পতনের মূল, আর আমি যদি হই অহংকারী, তবে পতিত হলে আমি হব, আপনি হবেন না। এটা নিয়ে আপনার কান্নাকাটি করার কোনও দরকার নেই। যার কাছে আমি কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই, তার কথার জবাবে আমি কখনওই কৈফিয়ত দিই না, বরং খুবই বিরক্ত হই। যার-তার কাছে নিজেকে ব্যাখ্যা করার মানেই নিজেকে বিপন্ন ও দুঃখী করে তোলা। বেআক্কেল, বেশরম ও বেয়াদবের সামনে বিনয়, ভদ্রতা, আদব ইত্যাদি দেখালে বিপদে পড়তে হয়। ওরা এসব ডিজার্ভ করে না। আমি বহু বছর স্টুডেন্ট পড়িয়েছি। আমি খুব ভালো করেই জানি, বান্দর প্যান্ট-শার্ট পরলেও বান্দরের জন্য বেত লাগে। আপনাদের জন্য একটা সুখবর আছে! উপরের বিষয়গুলি বুঝতে চাইলে আপনাকে রকেট-সায়েন্টিস্ট হতে হবে না! এর জন্য যে সামান্য ঘিলু দরকার, তার পুরোটাই আপনার মাথায় আছে! ধন্যবাদ! ভাবনা: আটশো আটান্ন ……………………………………………………… এক। যার সামনে কাপড় খোলার কোনও দরকার নেই, তার সামনে কাপড় খুললে যেমনি বিপদের আশঙ্কা থাকে, ঠিক তেমনি যার সামনে মন খোলার কোনও দরকার নেই, তার সামনে মন খুললেও বিপদের আশঙ্কা থাকে। দেখেই ডিলিট করে দিব, কাউকে দেখাব না, আর শুনেই হজম করে নিব, কাউকেই বলব না---এই দুইয়ের মধ্যে তেমন কোনও পার্থক্য নেই। দুই। কিছু বই কিনলাম, দেখতে পারেন। রুপার গয়নার জন্য বাংলাদেশের সবচাইতে বড়ো ও বিশ্বস্ত অনলাইন দোকান রৌপ্যরূপ -কে ধন্যবাদ। গত কয়েক মাসে যা বই কিনেছি, তার সবই কিনেছি আমার ছোটো ভাই ও তার সহধর্মিণীর রুপার গয়নার অনলাইন দোকান রৌপ্যরূপ-এর সৌজন্যে। এমনকী এই যে আপনারা বিনা মূল্যে আমার ক্যারিয়ার আড্ডা উপভোগ করতে পারছেন, তার জন্য স্ট্রিমইয়ার্ড-কে যে টাকাটা দিতে হয়, তা-ও দিয়ে দেয় এই রৌপ্যরূপ-ই! এখন আপনারাই বলুন, আমার ভালোবাসার কাজগুলো করতে যে প্রতিষ্ঠানটি স্পনসর করে, আমি সেটিকে প্রমোট করব না তো কি আপনাদের কথায় নাচব? উল্লেখ্য, রৌপ্যরূপ নিয়ে নেগেটিভ কমেন্ট করলে কিংবা অহেতুক হা-হা রিঅ্যাক্ট দিলে এই পেইজ থেকে অতি যত্নসহকারে অবিলম্বে ব্লক করে দেওয়া হয়। আমার ওয়ালে এসে অহেতুক লাফালাফি করা নিষেধ। হাতে বেকার সময় থাকলে ও লাফাতে চাইলে অন্য কোথাও গিয়ে লাফান। বই কিনতে টাকা লাগে। ক্যারিয়ার আড্ডা করতেও টাকা লাগে। এসবের জন্য স্পনসর লাগে। চাঁদের আলো থেকে টাকা ঝরে না। আমার স্পনসরকে আমি আমার পেইজে (আপনার কোথাও নয়) মেনশন করি, যত খুশি করব। এটা আপনার সহ্য না হলে কষ্ট করে সহ্য করার কোনও দরকার নেই। সহ্য না করার জন্য সকল অপশনই খোলা আছে। ধন্যবাদ। তিন। মানুষ প্রশংসা করলেও আমার হাসি পায়, নিন্দা করলেও আমার হাসি পায়। আমাদের জীবনের জন্য কেউই অপরিহার্য নয় যেখানে, সেখানে অপ্রয়োজনীয় মানুষকে সহ্য করার তো প্রশ্নই ওঠে না! মায়া করলেই মারা খাবেন! চার। কোনও কিছু সৃষ্টি করতে একজন সৃষ্টিশীল মানুষের যে কষ্টটা হয়, সেটাকে লেবার-পেইনের সাথে তুলনা করা চলে। পার্থক্যটা হচ্ছে, লেবার-পেইনে শারীরিক যন্ত্রণা হয় এবং যে জন্মটা দিচ্ছে, সে চিৎকার করে বলতে পারে, ‘আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে!’ অন্যদিকে, কিছু সৃষ্টি করার যে অসীম মানসিক যন্ত্রণা, এই যেমন, এটা এখানে না, ওখানে বসালে ভালো হবে; এটা এরকম না হয়ে ওরকম হলে আরও ভালো দেখাবে; অমুক সিনটা বাদ দিই? না, থাক, ভালোই তো হয়েছে; আমি তো এর চেয়েও ভালো করতে পারি; কেন এত ভেবেও মাথায় কিছুই আসছে না; এতক্ষণ ধরে বসে আছি, অথচ ভালো কিছু আঁকতেই পারছি না…ভাবনার এইসব ক্রমাগত আঘাত ও অভিঘাত কোনোভাবেই সন্তান জন্ম দেওয়ার চেয়ে কম কষ্টের নয়। সৃষ্টিশীল মানুষ, ‘জন্ম দিতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে!’ এটা চিৎকার করে বলতে পারে না বিধায় এই কষ্টটা কারুর চোখেও পড়ে না। বরং সাধারণ কারুর সাথে শেয়ার করলেই সেই সৃষ্টিশীল মানুষটাকে উলটো শুনতে হয়, ‘এত নাটক কীসের, ভাই? কী একটা ছোট্ট কাজ, আমি চাইলে আরও ভালো পারব। তবে করব না। কাজ করে টাকা না পেলে তা করব কেন? এত সময় কোথায়? গাধা পেয়েছ আমাকে?’ আমি আমার লেখার নিচে এরকমও কমেন্ট পেয়েছি: ফাও ফাও এত টাইপ না করে নীলক্ষেতের মোড়ে একটা টাইপরাইটার নিয়ে বসে গেলেও তো অনেক কামাই করতে পারতেন। আমি অবশ্য এসবে অবাক হই না। যে যা বোঝে না, বোঝার চেষ্টাও করে না, যে যার দাম দেয় না, সে তা নিয়ে মন্তব্য করতে গেলে এরকম কিছুই তো বলবে, এটাই স্বাভাবিক। তার উপরে অক্ষমের চিরন্তন ক্রোধ ও ঈর্ষা তো আছেই! তবে ভালো হয়, যা আমরা বুঝি না কিংবা অর্ধেক বুঝি, তা নিয়ে যদি মন্তব্য না করি। সন্তান পৃথিবীতে আসে সঙ্গম নামের স্বর্গীয় শারীরিক সুখের মাধ্যমে। অপরদিকে সমস্ত সৃষ্টি পৃথিবীতে আসে প্রেরণা নামক অপার্থিব মানসিক তৃপ্তির মধ্য দিয়ে। রতিক্রিয়ার আনন্দ ও সৃষ্টির আনন্দ মোটামুটি একই পর্যায়ের স্বস্তি দেয়। এই দুইয়ের ক্লান্তিও মানুষকে অবসাদে ডোবায় না। কোনও সৃষ্টিশীল মানুষ তার সৃষ্টিকে মনের মতো করে সৃষ্টি করার পর একধরনের অনির্বচনীয় সুখ পায়। এখানে একটু অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলে রাখি, আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ সৃষ্টিশীল মানুষই মোটামুটি তিন ভাগে বিভক্ত। অবিবাহিত। সারাজীবন একাই কাটিয়ে দেয়, এমন মানুষ। বিয়ে করেই আরও বেশি আড়ালে সরে-যাওয়া মানুষ। সৃষ্টির যাত্রা ভীষণ একাকী একটা যাত্রা। তাই জীবনে সুখী হতে চাইলে সৃষ্টিশীল কাউকে বিয়ে না করাই ভালো। তো যা বলছিলাম! প্রতিদিনই হাজার হাজার সাধারণ মানুষ নিজের শরীর থেকে সন্তানের জন্ম দেয়। আর মগজ, অনুভূতি, ভাবনা, সংবেদনশীলতা, চোখ ও হাত দিয়ে সৃষ্টিশীল মানুষের সন্তান জন্ম হয়। মা-বাবা হওয়া আর সৃষ্টিশীল মানুষ হওয়া এক জিনিস নয় মোটেও। মা-বাবা তো যে কেউই চাইলে যে-কোনও সময়, যে-কোনও বয়সেই হতে পারে; তবে চাইলেই সৃষ্টিশীল হওয়া যায় না, এটা সত্যিই অসম্ভব! সৃষ্টিশীলতার জন্য ভালোবাসা ও সাধনা লাগে, ভেতরে সৃষ্টির রসদ থাকতে হয়। আমি বা আমার পেইজের কোনও অ্যাডমিন যাঁদের ব্লক করে দিই, কারণে, কখনওবা অকারণেই, তাঁদের প্রতি আমাদের কোনও রাগ নেই, তবে অভিমান ও বিরক্তি আছে। যখন কারও উপস্থিতি আপনার বিরক্তির কারণ হয় এবং আপনি যদি তাঁর উপস্থিতি সহ্য করতে বাধ্য না হন, কিংবা তাঁর উপস্থিতি অনুপস্থিতিতে আপনার কিছুই এসে না যায়, তখন আপনি কী করতেন? নিজেকেই প্রশ্ন করুন, উত্তর পেয়ে যাবেন। আমরা সবাই-ই তো যার যার কাজে ব্যস্ত, তাই না? গায়ে পড়ে কাউকে বিরক্ত যাঁরা করেন, তাঁদের কে পছন্দ করেন? আমরা অকারণেও ব্লক করে দিই, এই কথাটা আসলে ঠিক বলিনি। মাত্র দু-একজনকে আমরা কখনও কখনও ভুলে ব্লক করে দিই। ভুলও একটা কারণ, কোনও অকারণ নয়। সময়ের অভাবে আপনাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারি না বলে আমরা দুঃখিত। নইলে যে পরিমাণ ভুল ও অনুমানভিত্তিক তথ্য লিখে আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার ওয়ালে ও অন্যান্য জায়গায় ঘৃণা ছড়িয়ে যান, তাদের বিরুদ্ধে সকালে-বিকালে মামলা করা যায়। বাংলার মধ্যযুগের এক কবি মার্ক জুকারবার্গ যথার্থই উচ্চারণ করেছিলেন: 'সবার উপরে শান্তি সত্য, তাহার উপরে নাই।' আপনারা আমার ভালোবাসার মানুষ। ভালোবাসা হারিয়ে গেলেও বাঁচা যায়, কিন্তু শান্তি হারিয়ে গেলে বাঁচা খুব কঠিন। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, মস্তিষ্কের সামর্থ্য খুব অল্প। টুকটাক লিখতে পারি ও অল্পস্বল্প কথা বলতে পারি। আপনাদের সবাইকেই আমি ভালোবাসি। আমার ভালোবাসার তোয়াক্কা না করে যাঁরা আমার পেইজের ব্লকলিস্টে চলে গেছেন ও যাবেন, তাঁরা চাইলে আমার লেখাগুলি আমার ওয়েবসাইট থেকে পড়ে নিতে পারেন, আমার কথাগুলি আমার ইউটিউব চ্যানেল থেকে শুনে নিতে পারেন। আমার পোস্ট দেখার জন্য আমার পেইজ অপরিহার্য নয়। দু-একজন অবশ্য তোয়াক্কা করেও সেই লিস্টে চলে গেছেন। মনে কষ্ট রাখবেন না। আমি এই ভুলটা করেছি শুধুই শান্তির স্বার্থে। আমি জানি, ক্লাসের মাত্র ২টা ছেলেও পুরো ক্লাসের শান্তি, শৃঙ্খলা সবই বরবাদ করে দিতে পারে। ওরা দু-জন যখন ক্লাসটাকে মাথায় তুলে নাচে, বাকিরা তখন চুপচাপ তাকিয়ে থাকে। তখন ক্লাসের শান্তির স্বার্থে, মাস্টারমশাই ওই দু-জনকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার সময় ভুলে আরও দু-একজনকেও বের করে দেন। কাজটা ভুল, তবে ক্লাসটা ঠান্ডা থাকে। (আমার নিজের) বুকে হাত রেখে সবাইকে বলছি, বিশ্বাস করুন, আই লাভ ইউ! ভাবনা: আটশো উনষাট ……………………………………………………… এক। বিশ্বস্ত এই শরীরের দিকে তাকিয়ে আজ বিদায় বলি! আমরা দু-জন মিলে বহু বহুকাল হেঁটেছি পাশাপাশি। এ জীবনে, আমায় সঙ্গ দিয়েছে, আবার ছেড়েও গিয়েছে, এমন মানুষ তো অনেকই আছে। এই শরীরই কেবল থেকে গিয়েছে সব সয়েও। এ জীবনে শরীরের চেয়ে বড়ো প্রেমিকা আর কে-ইবা ছিল! আজ এই বন্ধুটিকেও ছেড়ে যাবার সময় এসেছে! এ সময় বড়ো অচেনা সময়, এমন সময় সত্যিই আমি আগে দেখিনি! আজ মনে হচ্ছে, খুব কম বয়সে, কত যে বয়স…মনেও তো নেই, যখন প্রেমে পড়েছি, যখন প্রেম বুঝিনি, যখন প্রেম করেছি, যখন বোকা বোকা প্রেম রাখত বাঁচিয়ে, যখন প্রেমকে বেঁধে অবিরতই জীবন খুঁজেছি, যখন প্রতিনিয়ত প্রেমের বেশি প্রতিশ্রুতিরই বাঁধ ভেঙেছে, যখন আত্মা আমার কেঁপেছে কেবলই প্রবল প্রেমে, যখন পাগলামিও সহজ হয়ে টেনেছে জীবন, তখনই শুধু হয়েছে এমন, প্রেমকে বলেছি, ছেড়ে যেয়ো না, যা হয় হোক, তবুও থেকো! প্রেমকে তখন যা বলেছি, শরীরকে আজ তা-ই বলছি! আমায় তখন প্রেম ছেড়েছে, আর আজ আমি ছাড়ছি শরীর। তফাত এটুকই! বিশ্বাস করো, চলে যাবার পর, পৃথিবীকে ভেবে কান্না পাবে না, শুধুই তোমায় ভেবে কান্না পাবে। দুই। করতে নিষেধ করে, না করলে আবার কথা শোনায়। বাথরুম পরিষ্কার করতে গেলে বলবে, বাথরুম পরিষ্কার করা লাগবে না। পরিষ্কার না করলে আবার বলবে, ছেলেকে বিয়ে করালাম, তা-ও আমাকেই এখনও বাথরুম পরিষ্কার করতে হয়! না খেলে বলে, বউ কিছু খায় না। খেলে বলে, আমরাই তো ধরে ধরে খাওয়াই। ছেলেকে বিয়ে করালাম, বউকে রান্না করে করেও খাওয়াতে হয়। অথচ সব রান্না যে বউই করে, সেটা পাড়ার কেউ জানে না। আগে ভাবতাম, মানুষটা বোধ হয় একদমই জলের মতন ঠান্ডা। এখন বুঝি, মানুষটা আগুনের চাইতেও গরম! আসলে বিয়ের আগে সবাইকেই চমৎকার লাগে! আর বিয়ের পরে অন্য সবাইকেই চমৎকার লাগে! মানুষ চেনা যায় দুই সময়ে: বিপদে পড়লে আর বিয়ে করলে। শ্বশুরবাড়ির সবাই বলে, বউয়ের কীসের এমন কাজ? রান্নাঘরে গিয়ে দেখি, স্তূপে স্তূপে এঁটো-বাসনের সাজ! তিন। এই রাতে... কারও কারও ১২ বছরেও প্রেম ভেঙে যাচ্ছে! কারও কারও ১২ মিনিটেই সংসার ভেঙে যাচ্ছে! রাত বাড়ে, দুঃখ বাড়ে... চার। ‘জাগরী’ পড়লাম আবারও। কে বলবে, এটি সতীনাথ ভাদুড়ীর প্রথম উপন্যাস! পুরো উপন্যাসে একজন নতুন লেখকের জড়তার চিহ্নমাত্রও নেই! এমন লেখা পড়লে লেখার সাহসটুকুও চলে যায়! ভাবছি, কেউ এসব কথা কীভাবে লেখেন? কষ্ট হয় না লিখতে? লেখকেরা জানেন না, পৃথিবীর সবাই শক্ত মানুষ নয়, কেউ কেউ এই পৃথিবীর জন্য একেবারেই অনুপযোগী? এরকম একটা ক্যারেকটার তো আমি অনেক চেয়েও তৈরি করতে পারিনি! আচ্ছা, ওঁদেরও কি এমন কান্না পায় লেখার সময়? আমার কান্না পায়, ভয় করে। যাঁদের কলম থেকে এসব বেরোয়, তাঁরা কষ্ট পান না? এই যে বিলু চরিত্রটা, তাকে তো আমি চিনিই না! আমি তবু কেন এত এত কাঁদলাম তার জন্য? সে আমার কে হয়? তার প্রতি আমার অমন টান কোত্থেকে এল? আচ্ছা, আমার এত খারাপ লাগে কেন? কেউ কেউ শুধু কাঁদতেই জন্মে। ওদের মধ্যে আমাকেই থাকতে হলো? আমি তো কাউকে বোঝাতে পারি না এসব! গল্প পড়ে যে আমি কাঁদি, ওসব তো শুধুই গল্প! কিন্তু বাস্তবে আমার যাদের জন্য খারাপ লাগে, যাদের আমি ভালোবাসি, যাদের কথা ভেবে মায়া হয় খুউব, তাদের তো মুখ ফুটে কিছুই বলতে পারি না। যা-কিছুই বলি, তার সবই এলোমেলো বলি। তাই ওরা আমাকে পাগল ভাবে, যদিও গুছিয়ে কথা বলতে আমিও পারি। প্রিয় কারও সামনে গিয়ে গুছিয়ে কথা বলতে কেন পারি না আমি? এ জীবনে কাউকে তো কিছু বোঝাতে পারলামই না, বরং কিছু মানুষ আমাকে ভুল বুঝেই গেল! বোঝানোর চেষ্টা করলে উলটো আরও বেশি ভুল বোঝে। আমি ক্লান্ত! বোঝাতে পারি না বলে এখন চুপ করেই থাকি। কী হবে চেষ্টা করে? অনেকই তো করলাম! লাভ কী হলো করেও? বলছি না, আমার বন্ধু লাগবে। কিন্তু আমার তো এত শত্রুও লাগবে না! আমাকে শত্রু বানিয়ে কী লাভ হয় ওদের? আমার চাইতে ঢের যোগ্য শত্রু তো ওরা একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবে! তবু আমাকেই কেন লাগবে ওদের? আমার কথাগুলো ভেতরে জমে থাকে, আমি কিছুই বলতে পারি না। কী এক সংকোচে কারও সামনেই মন খুলে কথা বলি না! কথা জমে জমে পাহাড় হয়। আমি আর আগের মতন কাঁদতেও পারি না। কাঁদতেও যে এতটা শক্তি লাগে, আগে কখনও বুঝিনি। ইদানীং আমার বুকে খুব ব্যথা করে। আমি ইমোশনালি খুব ব্যর্থ একজন মানুষ। বিধাতা আমাকে একসমুদ্র আবেগ দিয়ে পাঠিয়েছেন, কিন্তু এই আবেগের কানাকড়িও দাম দেওয়ার মানুষ এক জনকেও পাঠাননি। আমি কাউকে ধরে রাখতে পারি না, জোর পর্যন্ত করতে পারি না! আমি ঠিক দখল করতে শিখিনি আজও। আচ্ছা, জোর করে ধরে রাখতে হয় যাকে, সে কী করে ভালোবাসার মানুষ হয়? সব জায়গাতেই কিছু মানুষ থাকে, যাদের জন্য মনের ভেতর থেকে একটা কী যেন কাজ করে! কেমন যেন একটা অনুভূতি, ঠিক জাদুর মতন। ওরা দুঃখ পায় কি না ভেবে ভেবে কান্না করি। ওরা ভালো আছে ভাবতে ভালো লাগে। এর চেয়ে বেশি ব্যাখ্যা করতে পারব না। আমি তেমন করে বুঝিয়ে বলতে পারি না। আমি কারও সামনে কাঁদি না, শুধুই হাসি। তাই হয়তো সবাই আমাকে খুব শক্ত ভাবে, আর যার যার মতন করে চলে যায়। আমার কাছে কেউ থাকতে আসে না, শুধুই স্মৃতি জমা রাখতে আসে। আমি কাউকেই বলতে পারি না থাকতে। আমার সঙ্গে থাকার কথা কেউ ভাবেও না বোধ হয়, সবাই ছেড়ে চলে যায়। হয়তো, আমাকে দেখলেই ফেলে চলে যেতে ইচ্ছে করে। ওরা চলেও যায়, ভুলেও যায়। সবাই ভুলে যায়, শুধু আমিই ভুলতে পারি না। আমি ওদের কাউকেই ভুলি না। আমার খুব পরান পোড়ে। আমার সঙ্গে কেউ থাকে না, আমার কাছে কেউ থাকতে চায় না। আমি এমন একজন মানুষ, যার সঙ্গে থাকার কিছু নেই। ভাবনা: আটশো ষাট ……………………………………………………… এক। জাতি হিসেবে আমাদের কিউটনেসের কোনও শেষ নাই। আমরা সানিদিদির জীবনঘনিষ্ঠ শর্টফিল্ম দেখার সময় অবাক হয়ে ভাবি, দিদির হাজব্যান্ড কি এসব দেখে না? আমরা সুশান্তদাদার অশিক্ষামূলক লেখা ও স্পিচ দেখার সময় অবাক হয়ে ভাবি, দাদার ওয়াইফ কি এসব দেখে না? আমরা আসলে কী চাই? দিদির স্বামীকে? না কি দিদির সৃষ্টিকে? আমরা আসলে কী চাই? দাদার স্ত্রীকে? না কি দাদার সৃষ্টিকে? আরেকজনের স্বামী-স্ত্রী'কে নিয়ে এরকম টানাটানি যে করি, আমাদের কি পাপ হয় না? আমাদের কলিজায় কি একটুও ব্রেইন নাই? (ব্রেইন হার্টে থাকে, না কি কলিজায় থাকে, ঠিক মনে পড়ছে না; মেবি কলিজাতেই! আপনাদের কারও জানা থাকলে কাইন্ডলি একটু জানাবেন।) জসীম-আলমগীর-রাজ্জাক-ফারুক-মান্না যে সত্যি সত্যি ঠেলাগাড়ি ঠেলে ঠেলে বাড়ি-গাড়ি করেন নাই, সেটা বুঝতে হলে আমাদের আরও কত বড়ো হতে হবে!? দুই। বন্ধু কে? বন্ধু সে-ই, যার কাছে অকপটে স্বীকার করে ফেলা যায়: আসলে সে আমাকে বিরক্ত করেনি, শুধুই নক করেছিল গল্প করার জন্য। ওর চেহারা পছন্দ হয়নি বলেই নকটা পেয়ে ভীষণ বিরক্ত হয়েছি। তিন। দারিদ্র্যের কারণে বাথরুমের দরজায় ছিটকিনি ছিল না বলে যারা ছোটোবেলায় গোসল করার সময় গান করতে করতে বড়ো হয়েছে, তারাই বড়োবেলায় এসে পাবলিকের কাছে নিজের ইনবক্স মার্কেটিং করে করে গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়ে যায়। চার। Cheap minds, cheap ends. পাঁচ। আমার চোখভর্তি ঘুম, কিন্তু অনেক লেখা বাকি। সামনের মাসে শুনলাম পরীক্ষাও হবে। হাতের বাঁ-দিকে গোটা দশেক এলোমেলো বই, একটা কিপ্যাড-ফোন আর একটা স্মার্টফোন। আমাকে আজ সারাদিনে যা যা করতে হবে, সেগুলোর একটা লিস্ট চশমার নিচে চাপা দেওয়া, হাতের কাছেই। তার পাশে প্যাঁচানো ইয়ারফোন...নতুন কেনা ব্রাশ...চাবির রিং...চুলের লিভন... পায়ের পাতা সইসই একটা স্ট্যান্ডফ্যান। বিছানার একটা কোনায় আমার গেরুয়ারঙা কুর্তিটা, যেটা খুলে রাখলাম একটু আগেই। তার পাশে দলা পাকিয়ে আছে গায়ে জড়ানোর কাঁথাটা। গতরাতে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা ঘুমিয়েছি। রাতে বরাবরই আমার ঘুম কম হয়, কিন্তু তাই বলে এত কম! ভোর ছ-টা থেকে সাড়ে ন-টা অব্ধি। ছ-টায় চা খেতে খেতে একটা লাইভ-শো দেখছিলাম। ওই অবস্থাতেই ঘুমিয়ে গেছি। স্লিভলেস টিশার্ট আর পালাজ্জো পরে ছিলাম, খুলে নগ্ন হলাম। আমার সিঙ্গেল-খাট যে আস্ত মানচিত্রের সমান, তা আজই প্রথম খেয়াল করলাম! নতুন ভাড়াটের মতন খাটের এককোনায় পড়ে আছি। আমার টেবিলে কাঁচি, গ্লুকোজ... না, আর কলম চালাতে পারছি না, খুব ক্লান্ত লাগছে। ভরপেট খেয়ে শুয়েছি মাত্রই। আমার এখন গোসল করা দরকার, ঘুম দরকার, এবং মাথার এলোমেলো কথাগুলোকে সাজিয়ে ফেলা দরকার। তিনটে কাজই এই সময়ে সমানভাবে জরুরি। আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে...এর আগে এত ঘুম তো দেখিনি কখনও নিদ্রাহীন এ দু-চোখে! আমি কি তবে...!! আচ্ছা, আচ্ছা! শোনো, আমাকে জামাটা অন্তত পরতে দাও। উলঙ্গ লাশ দেখতে খুবই ভয়ানক লাগবে! প্লিজ, আমার কথা শোনো। আমি অন্য নারীদের মতন নই, তৈরি হতে আমার খুব কম সময় লাগে। দাঁড়াও...আমার জামাটা... ছয়। আজকাল সম্পর্কে বিশ্বাস নেই, বিশ্বাসে সম্পর্ক নেই। যখন দেখি, কেউ কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, তখন খুব অবাক হই। ওরা মুখে বলে, সম্পর্কে জড়াতে চাইছে, কিন্তু আদতে ওরা চায় প্রেম করতে। আরও স্পষ্ট করে বললে, কিছু চাহিদা পূরণ করতেই ওরা পরস্পরের কাছে আসতে চায়। ওরা এল, এরপর এল দ্বন্দ্ব-সংঘাত। যে প্রেমে একজন আরেকজনকে শান্তি দেয় না, কথার আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে, কঠিন ভাষা প্রয়োগ করে করে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়, সন্দেহের সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়, সেই প্রেম করার বা রাখার কোনও মানে দেখি না। হ্যাঁ, আমরা অনেকে বলতে পারি, ভবিষ্যতে তো ভালো কিছুও হতে পারে, তাই না? শুধু খারাপটাই কেন ভাবছি! একটু চুপ থেকে আশেপাশের অবস্থা, বর্তমান সময়ের সম্পর্কগুলো নিয়ে যদি একটু ভাবি বা ঘাঁটি, তাহলে অনেক উত্তর পেয়ে যাব। আমরা কখনও কাউকে সম্পূর্ণরূপে ভালোবাসতে পারি না। যদি বাসতাম, তবে একে অপরের দিকে এত অভিযোগের তীর ছুড়তাম না। ভালোবাসলে তো মানুষটার দোষ-গুণ নিয়েই বাসতে হয়। আমরা শুধুই সুন্দরের সঙ্গে প্রেম করতে শিখেছি, অসুন্দরকেও ভালোবাসতে আজও শিখিনি। নিজেই যেখানে নিজের মনকে পড়তে জানি না, বুঝতে জানি না, শান্ত রাখতেও জানি না, সেখানে অন্য কেউ অবিকল আমার মনের মতো হবে, এটা আশা করাটাও তো বোকামি! তাই দশ বার অন্যের দোষ ধরে ধরে অশান্তি সৃষ্টি করার চাইতে এক বার নিজের ভুলগুলো নিয়ে ভেবে শান্তিতে থাকা অনেক ভালো। তবে সম্পর্ক মানেই যে সবসময় তিক্ততা, তা-ও না। অনেকসময় দেখা যায়, দু-জনের একজন অনেক ধৈর্য রাখে বা পরিস্থিতিগুলি বুঝতে পারে ভালো। সেই সম্পর্কগুলো অনেক চমৎকার, এবং টিকেও। পৃথিবীর হাজার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলাপ করলে লাখ লাখ যুক্তি ও প্রতিযুক্তি বেরিয়ে আসবে। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জায়গায় ঠিক, এভাবে যদি ধরে নিই, তবে অন্যদের প্রতি আমাদের সম্মান বাড়বে। তবে তার আগে নিজেকে সম্মান করাটা জরুরি। আমরা যেদিন নিজেকে সঠিকভাবে বুঝতে পারব, সেদিনই অন্যকে কিছুটা হলেও বুঝতে পারব। নিজেকেই বুঝি না, অথচ অন্যকে বোঝার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি! জোর করে আর যা-ই হোক, সম্পর্ক হয় না। দোষ ধরে ধরে আর যা-ই হোক, কাউকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা যায় না। দু-জনের একজনও নিজের জেদের জায়গা থেকে সরে না এলে, জোর করে আর যা-ই হোক, সেই দু-জন একসঙ্গে থাকতে পারে না। ভাবনা: আটশো একষট্টি ……………………………………………………… এক। আমাদের সবারই নিজের একটা গল্প আছে। আমাদের নিজস্ব কিছু বিশ্বাস ও ভাবনা আছে। ওরা যেমন, আমরাও ঠিক তেমন। ওরা যেভাবে চলে, আমরাও ঠিক সেভাবেই চলি। ওরা যেরকম নয়, আমরাও সেরকম নই। ওদের মতো করে বাঁচতে বাঁচতে আমরা একসময় নিজেকে ওদের মতো করে গড়ে নিই। ওরা যা, আমরা মূলত তা-ই। কাউকে জানতে চাইলে আমরা তাকে বলি, তোমার জীবনের গল্পটা বলো। তুমি কী ভাবো, কী পছন্দ করো, কী অপছন্দ করো, সবই বলো। তুমি কোথা থেকে এসেছ, কোথায় এসেছ, দুই-ই বলো। আমি তোমার সম্পর্কে শুনতে চাই। এখন যদি সে সত্যিই অকপটে নিজের সম্পর্কে বলে, তবেই শুধু তাকে জানা যাবে। যা সে লুকোবে, তা নিয়ে কেবল অনুমান করা যাবে, কিন্তু জানা যাবে না। এক সে নিজে বাদে পৃথিবীর আর কেউ তাকে নিয়ে যা-ই বলুক না কেন, তার প্রায় পুরোটাই অনুমাননির্ভর। অনুমানে যা বলা হয়, তা প্রায়ই ভুল ও মনগড়া। যদি আমরা সত্যিই তাকে জানতে চাই, তবে তাকে বলতে দিতে হবে। সে যা-ই বলুক না কেন, তাকে থামিয়ে দেওয়া যাবে না, তাকে আমাদের মনের মতো করে বলতে বাধ্য করা যাবে না। সবচাইতে বড়ো কথা, তার সমস্ত কথার স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কথা বলে অমর হয়ে যাবার চাইতে চুপ থেকে বেঁচে থাকাটা বেশি জরুরি। আমরা প্রত্যেকেই একেকটা জীবনী, একেকটা গল্প। আমরা যা অনুভব করি ও করি না, যা বিশ্বাস করি ও করি না, যা অভিজ্ঞতায় দেখেছি ও দেখিনি, যা জানি ও জানি না, যা ভাবি ও ভাবি না, যা যা করি ও করি না, সেসব কিছুই আমাদের ভাঙে ও গড়ে। এই ভাঙা-গড়া জীবনব্যাপী চলতেই থাকে। শরীরের গঠন ও অন্যান্য চাহিদার কথা বিবেচনায় আনলে আমাদের মধ্যে পার্থক্য তেমন নেই বললেই চলে, কিন্তু আমাদের জীবনের গল্পই আমাদের ভিন্ন ভিন্ন মানুষে পরিণত করে। ভিন্ন মানুষ, ভিন্ন গল্প, ভিন্ন জীবন। সে অর্থে, এ পৃথিবীর সকলেই অনন্য। আমরা যেরকম, ঠিক সেরকম করে নিজেদের প্রকাশ করি যখন, কেবল তখনই আমরা আমাদের মতন। বাকি সময়গুলিতে আমরা অন্য কারও-না-কারও মতন। আমাদের সব কিছু হারিয়ে যেতে পারে, তবে আমাদের জীবনের গল্পগুলি কখনওই হারিয়ে যাবে না। আমরা জানাই বা না জানাই, বলি বা না বলি, দেখাই বা না দেখাই, গল্পগুলি থেকেই যাবে, ওদের অস্তিত্ব কখনও বিলীন হয়ে যাবে না। মানুষ বদলায়, কিন্তু সে যেখানে ছিল, সে জায়গাটা বা সে গল্পটা ঠিকই থেকে যায়। আমাদের গল্প যদি আমরাই ভুলে যাই কিংবা মনে আনতে না চাই, তবে আজকের দিনটা যখন একদিন গল্প হয়ে যাবে, তখনও কি তা আমরা বিস্মৃতিতেই রেখে দেবো? ব্যাপারটা যদি এরকমই হয়, তবে আমাদের এই যে যাপন, এই যে বেঁচে-থাকা, এই যে সুখ-দুঃখের পালাবদল, এই যে শব্দ-নৈঃশব্দ্য, এই যে সব কিছু, তার সবই কি মিথ্যে? আমাদের যা-কিছু আছে, ছিল ও থাকবে; আমরা যা-ই আছি, ছিলাম ও থাকব; তার কিছুই মিথ্যে নয়। লুকিয়ে রাখলেই নিজের কাছে অস্বীকার করা যায় না। আমাদের নিজের অজান্তেই আমাদের সব সত্য বেরিয়ে যায়। আমরা না চাইলেও আমাদের গল্প আমাদের কথা বলে। যা সত্য, তা প্রকাশ করা গেলেও সত্য, প্রকাশ করা না গেলেও সত্য। আসুন, এমনভাবে বাঁচি, যাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলটা অন্তত স্বস্তিতে আঁচড়াতে পারি! দুই। কিছু বিষয় আপনাদের জানা দরকার মনে হয়। আমার লেখা পড়ুন, মন ভালো থাকবে। ভালো না লাগলে পেইজটা আনফলো করে দিন। সিম্পল! আপনাকে বাসায় গিয়ে নিয়ে আসব না, তুলে আনতে বাসায় পুলিশ পাঠাব না, আমার পেইজটা ফলো করতে কখনওই বলব না। শান্তিতে থাকতে পারবেন। আজ পর্যন্ত এক জন মানুষকেও বলিনি এই পেইজটা ফলো করতে, উলটো প্রতিদিনই অনেককে ব্লক করি, এসব করেও এক মিলিয়ন পার করেছি; ফলোয়ার-সংখ্যা এক-শো'তে নেমে এলেও এমনই করব। আপনি এখান থেকে চলে গেলেন কি থেকে গেলেন, এটা আপনার প্রয়োজন বা ইচ্ছে। এতে আমার কিছুই এসে যায় না। এটা অহংকার নয়, শান্তিপ্রিয়তা। এই পেইজে কী আছে? কেবলই আমার লেখা, কেবলই আমার বক্তব্য। আর তো কিছু নেই! এ দিয়েই এখানকার যত কিছু! এর বাইরে কিছু চাইলে এখানে পাবেন না। আমি কারও কথা মাথায় রেখে লিখি না, লিখতে পারবও না। আপনার যা দরকার, তা এখানে না পেলে এখান থেকে চলে গেলে ভালো হয়। আমি আপনার চাহিদা মেটাতে লিখি না। মজার ব্যাপার, আপনাদের মন্তব্য পড়ে যা দেখেছি, আপনারা যা যা নিয়ে লেখা চান, সেগুলির উপর আমার অনেক অনেক লেখা আছে। বেশ দীর্ঘ সেসব লেখা, এবং খুবই কাজের। আগের বাক্যে 'খুবই কাজের' শব্দগুচ্ছ জেনে-বুঝে সচেতনভাবেই লিখেছি। তো আপনারা সেগুলি পড়বেন না, আপনারা খুব ব্যস্ত! আমি আপনাদের কাজের বুয়া, মাসে মাসে বেতন দেন, সব জোগাড় করে এনে দিতে হবে আমাকে! আপনারা প্রেমের পোস্টে গণিত খোঁজেন, গণিতের পোস্টে প্রেম খোঁজেন। কিউটের ডিব্বা একেকটা! অনুপ্রেরণামূলক লেখাই তো চান বেশিরভাগ মানুষ, তাই না? বাংলাদেশে, আমার জানামতে, এই টপিকে আমার চাইতে বেশি দূরে থাক, আমার ধারেকাছেও কেউ লেখেননি, বলেননি। তো সেগুলিই পড়ুন না! সেগুলিই শুনুন না! সবই তো ফ্রি, একপয়সাও তো লাগে না! বিরক্ত হলে আমার ওয়ালে আসবেন না। নোটিফিকেশন থেকে মুক্তি পেতে পেইজটা আনফলো করে দিন। অত কথা বলার তো কিছু নেই! কেন লিখছি? এত পোস্ট কেন? আমার কী হয়েছে? এত প্রেম কেন? আমি খেপেছি কেন? কে আমাকে দুঃখ দিয়েছে? সারাদিন কষ্টের পোস্ট কেন? আমার কি কাজ নেই? আমার স্ত্রী কি এসব দেখে না? আমার প্রাক্তনকে নিয়ে এখনও পড়ে আছি কেন? আমি তো বিবাহিত, তবুও...? আমার পেইজ/আইডি কি হ্যাকড হয়েছে? আমার অবস্থান থেকে আমি এরকম 'দায়িত্ব'হীনভাবে কীভাবে লিখছি? আমি এত ছ্যাবলামি-মার্কা লেইম পোস্ট কেন করি? আমি আবেগি পোস্ট দিয়ে আপনাদের বিষণ্ণ করে দিচ্ছি কেন? ছ্যাঁকা খেয়েছি কি না...ইত্যাদি ইত্যাদি! এ ধরনের কমেন্ট করে কী হয় আসলে? কী লাভ হয় আপনাদের এসব করে? আমি সত্যিই বুঝতে পারি না। আমার সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত পরিচয় আছে? মিশেছেন আমার সঙ্গে? আমি মিশেছি আপনার সঙ্গে? আমাকে ওরকম জাজ করেন কোন যুক্তিতে? নিজের দাম নিজেই কমাচ্ছেন। ভালো লাগে না? তো আমার দিকে তাকাবেন না, ব্যস্! আমার দিকে তাকাতে আমি কি আপনার কলার চেপেছি? না কি পায়ে ধরেছি? আনফলো, ব্লক এসব করতে পারেন না? কারও কাছ থেকে শিখে নিন, গুগল থেকে দেখে নিন। নিজে বাঁচুন, আমাকেও বাঁচান! হিসেব সহজ তো! আমাকে ভালোবাসেন, না সম্মান করেন, না আইডল মানেন, না মোটিভেশন নিতে এসেছেন, না বিসিএস পরামর্শের আশায় ফলো করছেন, না আপনাকে অমুক বা তমুক বলেছেন আমাকে ফলো করতে...ব্লা ব্লা ব্লা... আপনার এসব দিয়ে আমার কী, ভাই? অনর্থক এসব বলে বলে আমাকে বেঁধে ফেলার চেষ্টা করেন কেন? আমি কি আপনার পালা-মুরগি যে আপনার খুশিমতো ডিম পাড়তে আমি বাধ্য? আমি তো ভাই লিখি! আমার লেখায় আমাকে পাবেন কীভাবে? লেখকদের লেখায় ওঁরা থাকেন? কিংবা থাকলেও তা জিজ্ঞেস করা যায় ব্যক্তিগত পরিচয় না থাকলে? লক্ষ লক্ষ শব্দ লিখেছি এখন অবধি। এক 'ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা' সিরিজেই এখন অবধি আছে সাড়ে আট লক্ষের উপর শব্দ, অন্যগুলির কথা বাদই দিলাম! আপনারাই বলুন, সবগুলিতে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব? এটা কি সংবাদপত্রের পেইজ নাকি যে আপনি এরকম অথেনটিসিটি খুঁজে খুঁজে মরছেন? আবারও বলছি, আমার লেখা কেবলই লেখা। সেখানে আমি নেই, আপনিও নেই, তবে আমরা সবাই আছে। যদি আমি থাকি কোনোটাতে, তবে আমি নিজেই তা লিখে দেবো পোস্টে। লিখে না দিলে আমাকে জড়িয়ে, আমার পরিবারের কোনো সদস্য বা আমার রিজিককে, কিংবা আমার কোনো কিছুকেই জড়িয়ে, বিসিএস/সরকারি চাকরি ইত্যাদি শব্দ অহেতুক উল্লেখ করে একটাও মন্তব্য করবেন না। ওরকম মন্তব্য আপনার নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেয়। আর কত বার বলব এসব? আপনার কী লাভ হয় নিজেকে এরকম হালকা করে আমার চোখে? আপনাকে শ্রদ্ধা করি, জায়গাটা ধরে রাখুন না! বিরক্ত করলে শ্রদ্ধাটা আর থাকে? প্রতি পোস্টেই এসে এসে একই ধরনের কমেন্ট করে করে বিরক্ত করেন! আপনাকে ব্লক না করে কী করব? আমার জায়গায় আপনি হলে কী করতেন? সুস্থ থাকবেন।
Post Views: 772