ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা: ১২২


ভাবনা: আটশো আটচল্লিশ
………………………………………………………
এক। মানুষের মনের যে দিকটি কেবলই সুখ-স্বস্তি খুঁজে বেড়ায়, সেটিকে রাগ বলে। রাগ সহ্য করবার বাধ্যতা না থাকলে এ পৃথিবীতে কে অন্যের রাগ সহ্য করে?


যে স্ত্রী স্বামীকে প্রতিদিন ভালো ভালো রান্না করে খাওয়ায়, যদি মাত্র দুই-এক দিনের রান্না মনের মতন না হবার অপরাধে তাকে স্বামীর ভর্ৎসনা সহ্য করতে হয়, তবে তা সে সহ্য করে নেহায়েত ভালোবাসায়, বাধ্যতায়, অভ্যস্ততায়, ভয়ে। এসবের কিছুই তার মধ্যে না থাকলে সে নিশ্চয়ই এমন স্বামীর ঘরই করত না, যে স্বামী তার ভালোটাই কেবল নিতে পারে, আর খারাপটা দেখলে রীতিমতো তেড়ে আসে!


যে স্ত্রীর হঠাৎ একদিন তরকারিতে লবণ দিতে ভুলে যাবার অধিকার নেই, সে স্ত্রীর সাথে বাড়ির কাজের বুয়ার তফাতটা তবে আর কই থাকল? কাজের বুয়া বেতন পায় বলে তিরস্কার সহ্য করে, উপযুক্ত কোনও কারণ ছাড়া স্ত্রী কেন তিরস্কার সহ্য করবে?


আমার এই পোস্টের প্রথম বাক্যটি আবার পড়ুন। আপনার রাগ হয়, তা জানি। আপনার রাগ কেন সহ্য করতে হবে, তা জানেন কি?


দুই। যখন কেউ আমাকে বলে, 'ভালোবাসি', তখন আমি বিস্ময়ে চোখদুটো বড়ো বড়ো করে তার মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি!


যদি সে পরের কথাটি বলতে একটুও সময় নেয়, তবে আমিই তার ধ্যানভঙ্গ করে দিয়ে বলি...তারপর...!?


...মানে ছোটোবেলায় ঠাকুমার মুখে রূপকথার গল্প শোনার সময় যেরকম মন দিয়ে শুনতাম আর কি! (ওদিকে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজতে থাকে...বলো বলো, আরও বলো, লাগছে মন্দ নয়!)


দেখা হলে টং-দোকানে এক কাপ লেবু-চা খাইয়ে দিস, বিলটা নাহয় সেদিন আমিই দেবো; তবু চব্বিশ ঘণ্টায় পঁচিশ বার এরকম নির্জলা মিথ্যে বলিস নে, বাপ!!


পেটে মোচড় মারছে তো বাথরুমে যা না! ওরকম ফ্যা-ফ্যা করে ভালোবাসি ভালোবাসি করছিস কেন, ভাই? তোর ঘরে বাপ-ভাই নেই নাকি? এই কলিযুগে ভালোবাসি বললে পাপ হয়, পাপ! মরার আগেই ডাইরেক্ট একদম নরকে চলে যাবি! বুঝিস কিন্তু!!


তিন। I do not disturb you. I do not impose anything upon you. I never judge you. I have no interest about whatever you do or do not do. It's your life, you have your full freedom to spend it in your own way. Really, I do not bother about your personal life. I respect you. I respect your work. I respect you as an individual and as an artist.


If you cannot respect me, I don't care. But you cannot disrespect me, only because you have spent time and money for me. I am always ready to pay back. I am sorry that I had to tell it. Your attitude, your arrogance, your behaviour have made me think in that way. I am sorry that I had to think in that way.


Don't be so restless. Relationship does not mean that you have to disturb the other person all the time. Neither does it mean you have to misbehave with them all the time. It's silly, it's ridiculous, it's so funny.


Actually, I do not know how much more I should say to make you understand what I mean. You are not acting according to your age. You are not a kid.
Keep everything simple if you can.
Live and let live.
Or just leave and let leave.
I think it's enough.


চার। যিনি আপনাকে চেনেন না, তাঁর কাছ থেকে সময় নিতে চাইলে আপনাকে এমন কোনও উপায়ে তা নিতে হবে যাতে তাঁর মনে কোনোভাবেই না আসে, তিনি আপনার জন্য সময় নষ্ট করছেন।
অপরিচিত কারও জন্য কেউই বিনা কারণে সময় নষ্ট করেন না। যদি কেউ তা করেন, তবে বুঝে নিতে হবে, তাঁর সময় আপনার তেমন কোনও কাজে আসবে না।


উপায়টা কী হতে পারে? সেটা আপনাকেই বের করতে হবে। বের করতে না পারলে তাঁর কাছ থেকে সময়ের প্রত্যাশা ছাড়তে হবে। আপনার সময় পাওয়াটা দরকার, তাঁর সময় দেওয়াটা দরকার নয়।


আমার অভিজ্ঞতা বলে, যাঁর সময়টা আমার দরকার, তিনি সবসময়ই সময় দেন তাঁর নিজের কিছু নিয়মে। সেখানে প্রথম নিয়মই হলো, সময় দেবার জন্য তাঁর অন্তত একটি হলেও কারণ লাগেই লাগে!


পাঁচ। জয়ই সুন্দর, যখন জয়টা নিজের! জয় এগিয়ে নেয়!
পরাজয়ও সুন্দর, যখন পরাজয়টা অন্যের! পরাজয় শিখিয়ে দেয়!


আমার কথায় রাগ করবেন না। সবচাইতে নিপাট ভদ্রলোকটিও পরের ছেলেকে টপকে নিজের ছেলেকে ক্লাসে ফার্স্ট হতে দেখলে খুশি হন!


ছয়। সময় বড়ো অদ্ভুত এক জাদুকর! একসময় কঠিন মায়াও কেটে যায়। তীব্র ভালোবাসাও ফুরিয়ে শুকনো নদী হয়ে যায়।


আজ থেকে পাঁচ বছর আগে যে মানুষটির জন্য হৃদয় পুড়ে ছারখার হতো প্রতি মুহূর্তেই, যাকে ছাড়া একটি মুহূর্তও বেঁচে থাকা অসম্ভব মনে হতো, সময়ের আবর্তনে ঠিক সেই মানুষটিরই কথা একসময় ঘুণাক্ষরেও আর মনে পড়ে না।


আজ থেকে পাঁচ বছর পর, আজকের যে মানুষটিকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা নিতান্তই অসম্ভব মনে হচ্ছে, সেই মানুষটির কথা হঠাৎ করেও মনে পড়লে ভীষণ বিরক্ত লাগবে। এ খুবই সহজ একটা সত্য, যা ঘটবার আগে মন ঠিক মানতে চায় না।


সময় আমাদের সমস্ত শোক শুকিয়ে দেয়। জীবন আমাদের পথচলা ঠিকই শিখিয়ে দেয়। প্রয়োজন আমাদের প্রিয়জনের নাম কীভাবে যেন বদলে দেয়। বাঁচতে চাইলে জীবনে এই নামের বদল মানতে হবে।


মানুষ একা বাঁচতে পারে, একা হাঁটতে পারে। একলা হয়ে যাবার নাম মৃত্যু নয়, নতুন জীবন। জীবন এতটা ঠুনকো নয় যে কারও উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির উপর জীবনের টিকে থাকা না-থাকা নির্ধারিত হয়।


বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, আপনার চোখের সামনে থাকা জীবনটা বাদেও আরও অনেক জীবন আছে। সেগুলির কোনোটিতেই বাঁচতে আপনি পারবেন না, এ কিছুতেই সত্য নয়। একেক জীবনের সৌন্দর্য একেক রকমের। এক জীবন হারিয়ে না ফেললে আরেক জীবন পাবেন কী করে?


সুখ মরে নিয়তির ফেরে,
দুঃখ বাঁচে নিয়তের জেরে।


অপেক্ষা করুন। সময়ই সব বলে দেবে। ধৈর্য ধরুন। সময়ই একদিন কথা বলবে। আজ যে মানুষটির অবহেলা সহ্য করছেন, একদিন সেই মানুষটিকে সহ্য করার প্রয়োজন আর হবে না। আজ যার জন্য প্রতিদিন কাঁদছেন, একদিন তার জায়গাতেই আরেকজন এসে আপনাকে প্রতিদিন হাসাবে। সেদিন অবাক হয়ে ভাববেন, এত পাগলামি কি এই আমিই করেছিলাম?


অপেক্ষা করুন, তাকে বুঝতে দিন। মানুষ হারানোর আগে বোঝে না। আপনার হাসির মূল্য যার কাছে নেই, তার কাছে নিজের অশ্রুকে এমন মূল্যহীন করে দেবেন না। আপনাকে হারিয়ে ফেলবার ভয় যার মধ্যে নেই, জীবনে তাকে রেখে দেবার মায়া করলেই নিশ্চিত মরবেন!


কেউ কেউ বড়ো সুখ সহ্য করতে পারে না বলে ছোটো সুখের মধ্যে গিয়ে ডোবে। কেউ কেউ ছোটো সুখ সহ্য করাতে পারে না বলে বড়ো সুখের মধ্যে গিয়ে ভাসে। পরিবর্তন মেনে নিতে হয়। মেনে নিতে না পারলে পরিবর্তন সহ্য করতে হয়। এই দুইয়ের বাইরে এক মৃত্যু বাদে আর কোনও পথ খোলা নেই।
জীবনে কোনও কিছুই অপরিহার্য নয়। কারও জন্য কারও জীবন থেমে থাকে না। এ পৃথিবীতে এমন কেউই নেই, যাকে ছাড়া বাঁচা যায় না। এ পৃথিবীতে এমন কেউই নেই, যাকে নিয়ে বাঁচা যায় না। বেঁচে থাকবার ব্যাপারটা কখনওই নির্দিষ্ট কারণ- কিংবা ব্যক্তিনির্ভর নয়।


আমাদের এই জীবনটা চমৎকার এক সারপ্রাইজ-বক্স! অপেক্ষা করতে জানলে জীবন আমাদের নানানভাবে বিস্মিত করে দেয়। হয়তো আজকের সময়টা আপনার নয়। সময়কে সময় দিন। সময়ই আপনাকে আপনার সময়টা ঠিকই এনে দেবে সময়মতো।


সময়ের কাছে সব অসুখেরই, এমনকী সব সুখেরও চিকিৎসা আছে।
কেউ কেউ অসুখী...সুখে নেই বলে, কেউ কেউ অসুখী...সুখে আছে বলে।


ভাবনা: আটশো উনপঞ্চাশ
………………………………………………………
যখন তোমার মেজাজ খারাপ থাকবে, মন খারাপ থাকবে, যখন চিৎকার করতে ইচ্ছে হবে, খুব গালি দিতে ইচ্ছে হবে, বকাঝকা করতে ইচ্ছে হবে, তুমি আমাকে ফোন করবে এবং যা ইচ্ছে তা-ই বলবে। আমি তোমাকে ওসবের কারণ জিজ্ঞেস করতে যাব না, একটি কথাও বলব না, একটি প্রশ্নও করব না। আমি তোমাকে ভীষণ ভীষণ ভীষণ ভালোবাসব।


তোমার পরশুর গল্পটা পড়লাম। বিধবা। খুব মনোযোগ দিয়ে দুই বার পড়েছি। ‘লেখাটি ভালো হয়েছে।’ এই কথাটি খুব ছোটো হয়ে যায়। আমি গাধি হওয়ায় কোনও কিছু উপযুক্তভাবে এবং সঠিক বিচার-বিশ্লেষণে প্রশংসা করতে পারি না। তবে কিছু একটা স্বীকার করতে ইচ্ছে করছে খুব, না করলে বুকে ব্যথা করবে।


আমার ভীষণ সৌভাগ্য, আমি তোমায় স্পর্শ করতে পারি, আবার কোনও কোনও ভাগ্যক্ষণে কাছেও পেয়ে যাই! এসব আমাকে আমার একাকিত্বের সময়ে অবাক হতে বাধ্য করে। ঈশ্বরের কাছে সত্যিই আমি কৃতজ্ঞ। যেভাবেই হোক, যে পরিচয়েই হোক, তিনি তোমাকে আমার কাছে দিয়েছেন।
আমি জানি না, কতটুকু সময় আমরা একসাথে চলব, কতদিন পরস্পরের সাথে থাকব, কতটুকু আমি তোমাকে় বুঝব, কতটুকু তুমি আমাকে বুঝবে। এসব আসলে আমি কিছুই জানি না। আমি শুধু জানি, আমার অসংখ্য না-পাওয়া ম্লান হয়ে গিয়েছে তোমায় পাওয়াতে। যতটুকু পেয়েছি, যেভাবে পেয়েছি, হয়তো এসবের কোনও কিছুর যোগ্য আমি ছিলাম না। এখন ভয় করছে আমার, আমি যে তোমায় ভালোবাসি, এ-কথা বলতে…


তোমার ফ্রেন্ডলিস্টে তোমার লেখাগুলোকে যথা-উপযুক্ত মূল্যায়ন করার জন্য যোগ্য কোনও ব্যক্তি নেই মনে হয়। তোমার ফ্রেন্ডলিস্টে কারা আছে, আমার দেখতে ইচ্ছে করে। তোমার এত এত ভালো লেখা দেখেও মানুষ প্রতিক্রিয়াহীন কীভাবে থাকে, আমার বুঝে আসে না। যদিও-বা তোমার এইসবে কিছু যায় আসে না। কিন্তু আমার কেমন জানি লাগে…মরে যাবার আগে তোমার সঙ্গে বাঁচার খুব ইচ্ছে!


তুমি অসাধারণ একজন! তুমি যে-কোনও মুহূর্তে যে-কোনও কিছু যে-কোনও ভাষায় সৃষ্টি করে ফেলতে পারো। খুব সহজ করেও, আবার কঠিন করেও। আমি তোমার এক-একটা লেখা পড়ার পর অনেকক্ষণ চিন্তা করি, এটা কীভাবে সম্ভব ছিল? তোমার অনেক লেখা আমার চিন্তাভাবনায় অনেক পরিবর্তন এনেছে। তোমার সুস্থভাবে অনেক বছর বেঁচে থাকা দরকার, অনেক বছর। চলার পথে যা-কিছু বিরক্তকর, তার সবই উপড়ে ফেলে দাও। শুধু নিজের জন্য, নিজের সৃষ্টির জন্যই তোমাকে বেঁচে থাকতে হবে।


এমনকী আমার কিছু বিরক্তকর মনে হলে সরাসরি বলবে, প্রয়োজনে আমাকে বাদ দেবে। আমার কষ্ট হলেও ঠিক হয়ে যাব আবার। তোমার সমস্ত সৃষ্টি যেন অব্যাহত থাকে। আমার নিজের কোনও রুম নেই, তবে তোমার লেখা পড়ার জন্য আমার একটি রুম দরকার। তোমার লেখা পড়ার সময় আমাকে নির্জনে একা হতে হয়।


তোমার কিছু লেখা পড়লে মন খুব খারাপ হয়ে যায়। যে লেখা পড়ে মন খারাপ হয়ে যায়, সেটাকে আমি ভালো বলব, না কি কিছুই বলব না, সেটাই তো বুঝতে পারি না! তবে ছোটোবেলা থেকে এই পর্যন্ত আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, কোনও লেখকের একটি লেখা পড়ে যদি মন খারাপ হয়ে যায়, কিংবা যদি আমি হেসে উঠি, তাহলে সে লেখাটি ভালো হয়েছে, এমন মনে হয় খুউব।
তোমাকে আঁকতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তোমার ব্যস্ততার কাছে আমার তুলির কোনও দাম নেই। তাই তোমাকে আঁকার সৌভাগ্য আমার আজও হয়নি। তোমাকে দেখতে পাবো, এই লোভেই সারা দিন-রাত আমি আঁকতে প্রস্তুত। বুঝেছ কিছু?


আমার অস্থির লাগছে খুব। এক বার দেখা করবে আমার সাথে? আমার কোনও কিছু ভালো লাগছে না। আমি তোমাকে খুব খুব খুব মিস করছি, আমার কান্না পাচ্ছে। আমি তোমাকে দেখা করার কথা বলছি না। আমার মন পুড়ছে তোমার জন্য, এটুকু বলতে চাইছি হয়তো। আমি জানি না, আমি কী বলতে চাইছি…উফফ্! তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না, সেইজন্য আমার যত অস্থিরতা! আমার মনে হয়, আমার বয়স আট, আর তোমার বয়স আশি!


আমি তোমাতেই যেন অনন্তকাল ধরে আটকে আছি! আমি আমার ছুটতে-থাকা সময়কে মিস‌ করছি। আমি বুক ভর্তি করে ব্যথা জমিয়ে রাখব অভিমানে, আর তুমি চুপ থাকবে! থাকো, একদম চুপই থাকো! তোমার একটাও কথা বলার দরকার নেই! তুমি একটি ইডিয়েট, তুই একটা ইডিয়েট, তুমি একটা ইডিয়েট!


মাই গড! তোমার সঙ্গে থাকলে আমি পুরো পাগল হয়ে যাব। তুমি আমার মনের অবস্থা বুঝতে পারো না কেন? তোমার সব আবেগ কি শুধু লেখার মাঝে বা লেখার জন্য? আজব তো! আমি ভালোবাসি তোমাকে, অথচ কথা বলতে ইচ্ছে হলে, তোমাকে মিস করলে কি অন্য কাউকে খুঁজে বের করব?


এই যে তুমি অনেক অভিমান করে বসে থাকো, এটা আমাকে ভীত করে দেয়, এবং…তোমাকে ছাড়া অদ্ভুত একাকিত্ব আমার, শূন্যতা আমার, আবার তোমার প্রতীক্ষায় নিবিড় শান্তি। তোমার কণ্ঠ, তোমার মুখ, তোমার হাসি আমার বুকের সীমানা ছুঁয়ে থাকে সারাক্ষণই!
আসলে বলতে চাইছি, আমাকে অবহেলা করা ছাড়া, তোমার জীবনের সমস্ত কিছুই আমি মানব, শুধু তোমাকে ভালোবাসার জন্য। গতকাল রাতে তোমাকে যখন দুইটার সময় ওয়েটিং-এ পেয়েছি, আমার বুকের ভেতর তখন কেমন জানি করেছে। আমি কান্না করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি, টেরই পাইনি।


ভাবনা: আটশো পঞ্চাশ
………………………………………………………
তোমাকে আমি প্রায় সময়ই ভয় পাই। কখনও ভয় পেয়ে কাঁদি পর্যন্ত! আমার উপর রেগে গিয়ে বিরক্ত হয়ে উলটাপালটা কিছু লিখবে না, বলবেও না। আমি এগুলো সহ্য করতে পারি না। আমি এমনিতেই অনেক মানসিক চাপে থাকি। তুমি এমন কিছু বললে বা লিখলে আমি অসহায়ের মতো হয়ে যাই।


আমাকে তোমার ভালোবাসতে হবে না, শুধু দূরে কোথাও ছায়া হয়ে থেকো, শুধু অনুভব করতে দিয়ো---আমি ভালোবাসি, এমন কেউ আছে। তুমি আমার জন্য এমন হয়ো, যাকে ভালোবাসতে আমার কোনও যোগ্যতা লাগবে না, কোনও উপযুক্ত কারণ লাগবে না, শারীরিক সৌন্দর্যের চর্চা করে নিজেকে ঘষামাজা করতে হবে না। আমি যেমন আছি, ঠিক সেসবের সঙ্গেই তোমাকে ভালোবাসব। মানুষের কাছে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ করতে করতে আমি অনেকটা ক্লান্ত। যোগ্যতাহীন মানুষটি তোমাকে ভালোবাসবে গভীর প্রশান্তি নিয়ে, তুমি এটা মেনে নিয়ো, কেমন?
আচ্ছা, আমি মরে গেলে তোমার কষ্ট হবে? এই ধরে নাও, যদি কয়েক দিনের মধ্যেই মরে যাই? তুমি যদি এরকম এলোমেলো কাজ করো সবসময়ই, তাহলে আমি…তোমাকে জড়িয়ে ধরে একদম খেয়ে ফেলব! কী হলো? ভয় পেয়েছ‌? ভয় পাবার কিচ্ছু নেই। আমি কাউকে খেয়ে ফেলি না, খাবার জন্য রেখে দিই! হা হা হা…


ঈশ্বরকে ধন্যবাদ তোমাকে পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য। তোমাকে ধন্যবাদ নানান সৃষ্টির জনক হয়ে ওঠার জন্য। প্রতিদিন নিজেকে ভেঙেচুরে নতুনভাবে উপস্থাপন করো তুমি‌! তোমার মেধাকে তোমার চিন্তা-ভাবনাকে পুজো করতে ইচ্ছে করে আমার। একদিন হয়তো তুমি থাকবে না, কিন্তু তোমার সমস্ত সৃষ্টিকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধারণ করবে। জানো, তোমার লেখা পড়লে তোমাকে ভালোবাসার সাহস হারিয়ে ফেলি! আমার তোমাকে ভয় হয়!


এইটুক পড়ে হেসে ফেললে বুঝি? এই ইডিয়েট, তুমি হাসলে কেন? তোমার লেখা পড়ার পর আর কখনও কিছু বলব না। হয় তোমার পাঠক থাকব, নয় তোমায় ভালোবাসব। বলো, তোমার কাকে চাই? যদি এমন হয়, কাউকেই না, তবে তা-ই বলো!


তোমার সাম্প্রতিক কবিতাটি পড়ার পর অনেকগুলো প্রশ্ন মাথায় এসেছে। এখন প্রশ্নগুলো লিখছি না, কারণ তার আগে আমার একটা বিষয় জানার আছে। তুমি কতটুকু তোমার লেখার মতো? কিছু একটা লিখে ফেলার পর সেটার সঙ্গে আদৌও তোমার যোগসূত্র থাকে কি না? থাকলে কতটুকু? বিষয়গুলো মাথায় এসেছে তুমি লিখে ফেলেছ বলে, সেটা একটা বিষয়। ওই ব্যাপারটা তুমি ধারণ করেছ, তারপরও লিখেছ, সেটা আরেকটা বিষয়। শুধু যদি কবিতার জন্যই যদি লেখা হয়, তবে বলব, কবিতাটি সময়োপযোগী হয়েছে। যদি আমার জন্য লিখো এবং সত্যিই যদি তুমি বিষয়গুলো ভেবে থাকো, তাহলে আমার কিছু প্রশ্ন ছিল…


প্রশ্নগুলো লেখার পর নিচে ‘একমত’ লিখে দিয়ো, কারণ আমি অনুমান করছি, এমন কিছু হবার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি। আমার কথার উত্তরে তুমি 'একমত' লিখে লিখে আমাকে ইগনোর করার চেষ্টা করো। তুমি নিজেকে রহস্যময় করে রাখতে পছন্দ করো, সরাসরি কোনও কিছুই বলতে চাও না, কিংবা ইচ্ছে করেই বলো না। তুমি আমার উপর খেপে যেয়ো না। আমার ভয় করে। সবার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করতে হয় কেন তোমার?
আমি কিন্তু একটুও খেপে যাচ্ছি না, খেপে যাবার মতো কিছুই হয়নি। আমি শুধু তোমাকে বোঝার চেষ্টায় থাকি। তাই এটা-সেটা লিখি। তুমি অনেক কিছুর জবাব দাও না, চুপ থাকো। আমিও তোমাকে বুঝতে পারি না। তোমার প্রতি আবেগটা একদম মন থেকে। তাই তোমাকে জানার জন্য, বোঝার জন্য আমার চেষ্টা থাকে। জানি, হয়তো বিরক্ত হও। কিন্তু…


যারা প্রেম হয়ে যাবার পর বিয়ে করার সময় ফ্যামিলি ফ্যামিলি করে, আমার খুব জিজ্ঞেস করতে মন চায়, প্রেম করার আগে তাদের বাবা-মা কই ছিল? না কি আকাশ থেকে টুপ করে পড়েছিল তারা প্রেম করার আগে? প্রেম করার পর বাবা-মা’র প্রতি এত আবেগ আসে কোথা থেকে? আবেগ তো অবশ্যই থাকবে বাবা-মা’র জন্য। কিন্তু কেন সেটা প্রেম করার আগে থাকে না? প্রেম করার পর ফ্যামিলির সব কথা শোনে, আগে শোনে না কেন? কেন ফ্যামিলির পারমিশন নেয় না প্রেম করার আগে? আসলে প্রকৃত অর্থে এরা কাপুরুষ! এদের সত্যের মুখোমুখি হবার সাহস নেই, কিংবা সম্পর্ক করার সৎইচ্ছে নেই। এদের ধরে একটাই কাজ করা উচিত---অ্যামাজন জঙ্গলে পার্সেল করে দেওয়া!


আজ হাতে অনেকগুলো কাজ ছিল, শেষ করার দরকারও ছিল। সারাদিন ছুটেছি, তাই তোমার কাছে ফেরা হয়নি। আর হ্যাঁ, আমি যে অবস্থায় থাকি না কেন, তোমায় অনেক মিস করি। অনেক কিছুই সহজে এড়িয়ে যাবার স্বভাব তোমার! এটা আমাকে অনেক কষ্ট দেয়। ইচ্ছে করে তোমার কাছে আর না ফিরতে। আমি এক-শো’টা প্রশ্ন করব, তুমি সবটা উপেক্ষা করে, নিজের মতো কিছু একটা লিখবে; তা-ও আবার এক-দুই শব্দের মধ্যেই!


আজ আমায় একটু দেখতে আসবে? ভয় পেয়ো না, তোমার কাছে যাব না, তোমাকে জড়িয়ে ধরব না। খুব ইচ্ছে করলেও স্পর্শ করব না। শুধু দেখব। যদি সম্ভব হয়, যদি সময় বের করতে পারো, অল্প কিছু সময়ের জন্য এসো। যদি দেশের পরিস্থিতি অনেক বেশি খারাপ হয়, যদি ঘর থেকে বের হবার সুযোগ না থাকে, যদি মরে যাই, তোমাকে যদি আর কখন দেখার সৌভাগ্য না হয়? নিউজ দেখতে দেখতে আমার কীরকম উলটাপালটা ফিল হচ্ছে, কেমন জানি ভয়ও করছে। এসো কিন্তু!
আমি তোমাকে জোর করছি না। জোর করব কেন? আমি কখনও তোমাকে কোনও কিছুর জন্য জোর করব, এটা এক বারের জন্যও ভাবিনি, এবং এইসব আমি করতেও যাব না। কেন করব, বলো? তোমার সঙ্গে জোর করে কী হবে? তোমার সঙ্গে তো আমার জোরাজুরির সম্পর্ক না, এমন অধিকার আমি রাখিও না। তোমার সঙ্গে আমার শুধুই মায়ার সম্পর্ক। তোমার জন্য আমার যতটা ভালোবাসা, ততোধিক মায়া। আমি শুধু তোমায় অনুরোধ করতে পারি। আমার ইচ্ছে হচ্ছিল, তাই জানিয়েছি শুধু, আর কিচ্ছু না।


আমি সত্যিই জোর করছি না। তোমাকে দেখতে চাওয়াটা যদি জোর করা হয়, তুমি এইভাবে চিন্তা করো যদি, তবে আর কখনও এরকম না বলার চেষ্টা করব। সত্যিই বলছি, আমি কখনও কিছুতেই জোর করার মানুষ নই। আমি নিজেও এমন কিছু পছন্দ করি না। বাদ দাও এইসব। আচ্ছা, তোমার মন খারাপ কেন?


জানি, উত্তর দেবে না। এখন থেকে তোমাকে ভালোবাসার চেয়ে তোমার সৃষ্টিগুলোকে ভালোবাসব বেশি, এতে আমার কষ্ট কম হবে; তা-ও যদি বেঁচে থাকি আর কি!


ভাবনা: আটশো একান্ন
………………………………………………………
এক। আমি আমার সব পোস্টেই রৌপ্যরূপ-কে ট্যাগ করে দিই। আসুন, রৌপ্যরূপ নিয়ে আজ কিছু কথা বলি।


রৌপ্যরূপ কী?


বাংলাদেশের সবচাইতে বড়ো রুপার গহনার অনলাইন প্রতিষ্ঠান। কোয়ালিটি, কালেকশন, কমিটমেন্ট, ডেলিভারি ইত্যাদি বিচারে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রৌপ্যরূপ শীর্ষস্থানে। পেইজ থেকে ঘুরে আসুন, সেখানে কাস্টমারদের রিভিউ দেখলে সত্যিই মুগ্ধ হবেন!


আমি কেন প্রমোট করি রৌপ্যরূপ-কে?


এর কারণ, দোকানটা আমার ছোটো ভাই ও তার সহধর্মিণীর। আপনার নিজের ভাই ব্যবসা করলে আপনিও তা-ই করতেন, তাই না? আমাদের পরিবারের সিংহভাগ খরচই আসে রৌপ্যরূপ-এর আয় থেকে। সবচাইতে বড়ো কথা, রৌপ্যরূপ থেকে রুপার গহনা কিনলে আপনি যে সন্তুষ্ট হবেন, সে বিষয়ে আমি পুরোপুরিই কনফিডেন্ট। ইদানীং অনেকেই হিরের গহনার বদলে স্টারলিং সিলভারের গহনা কেনেন। এই দুই ধরনের গহনা দেখতেও প্রায় একই রকমের, দামের পার্থক্যও আকাশ-পাতাল।


রৌপ্যরূপ নামটা বার বার উল্লেখ করার কী আছে?


আমার পেইজের ওয়ালে আমি কী উল্লেখ করব, কী উল্লেখ করব না, তা আমিই ঠিক করব, আপনি না। আপনার ভালো না লাগলে আপনি আমার পেইজকে আনফলো করে দিন, তাহলে আপনার কাছে নোটিফিকেশন আর যাবে না। আমি কখনওই আপনার ওয়ালে গিয়ে একটি শব্দও লিখি না রৌপ্যরূপ-কে নিয়ে; শতভাগ নিশ্চিত থাকতে পারেন, লিখবও না।


রৌপ্যরূপ বাদে আর কোনও বিজনেস পেইজের প্রমোশন আমার পেইজে করা যাবে?


না, কখনওই করা যাবে না। যা করার আমিই করব, আপনি কোনও প্রমোশন করতে পারবেন না। কেন করা যাবে না? আমার পেইজ, আমার ইচ্ছে। রৌপ্যরূপ-এর দুই স্বত্বাধিকারীই আমার পরিবারের সদস্য। আপনি আমার কেউই নন।


রৌপ্যরূপ-এর ফোন/হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর: +880 1705-234565, যে-কোনও প্রয়োজনে ওদের ফোন করুন।


আসুন, আমরা সবাই রৌপ্যরূপ-এর পাশে থাকি।


দুই। সারারাত আমার একটুও ভালো ঘুম হয়নি, কেবলই তোমার কথা মনে পড়ছিল। তোমার চেহারা ভাসছিল চোখের সামনে। চাইলেই তোমার কাছে যেতে না পারা! এই সীমাবদ্ধতা একটু একটু করে আমাকে মানসিক প্রতিবন্ধী করে দেবে কোনও একসময়। দিন দিন আরও স্পষ্ট করে বুঝতে পারব, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসলেও, কোনও সময়েই, কোনও পরিস্থিতিতেই, তোমার জন্য কিছু করতে পারার মতো অবস্থানে আমি কখনওই থাকব না! আমাকে অনেক দূর থেকে ছোট্ট একটি মেসেজ কিংবা কখনও একটি ফোনকলের অপেক্ষায় থাকতে হবে সবসময়।


তোমার ফেইসবুক আইডি থেকে নামিয়ে নামিয়ে তোমার সব ছবিকে আমি উলটাপালটা করে নষ্ট করে দেবো একদম! বলতে চাই না, তবু বলতে হচ্ছে, তোমার ফোনকলের জন্য অপেক্ষা দীর্ঘ হলে নির্দিষ্ট সময়ে আমি কোথাও পৌঁছোতে পারি না, যেখানে হয়তো আমার যাবার কথা থাকে। তুমি আমাকে বলে হয়তো ভুলে যাও, কিংবা অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ো। আর এদিকে আমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে স্থির হয়ে বসে থাকি।


তুমি আমার কষ্টটা বুঝতে পারো না কেন, জানো? কারণ, তুমি আমাকে কষ্ট দাও না। তবুও আমি তোমার জন্যই কষ্ট পাই। এই কষ্ট আমার মাঝে কতটা ক্ষত তৈরি করে, তার কণামাত্রও ধারণা তোমার নেই! আমার সঙ্গে কখনও কথা বলতে হবে না। কথা বলতে আমি বলছিও না। কথা বলার মতো কিছু নেইও।


এই যে আমি এইভাবে কিছু লিখে পাঠালে তোমার ভালো লাগে না বলে চুপ করে থাকো, আর আমি যে ঘণ্টা ধরে ধরে তোমার একটা ফোনকলের জন্য অপেক্ষা করি, তোমাকে না পেয়ে মন খারাপ করি, নিজে নিজে কান্না করি, তোমার ব্যস্ততার কথা মাথায় রেখে রেখে নিজের সমস্ত ইচ্ছে দমন করি, তোমাকে কাছে পেতে ইচ্ছে করলেও যে তোমাকে বলি না ভয়ে, এইসবের কতটুকুই-বা খবর আছে তোমার?


তোমার সঙ্গে পরিচয় না হলে জীবনেও বুঝতে পারতাম না যে আমি এরকম বিশ্রীভাবে একটার পর একটা অভিযোগ করতে পারি! আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে…ছিঃ!
এত মন খারাপ করলে আমার কষ্ট হয়। এটা তুমি বোঝোই না! জানো, তোমার কবিতা তোমার চেয়ে ভালো। এটা আগে বুঝিনি। তুমি আমার কাছে দূরের কোনও কবিতার মতো, আমার প্রায়ই মনে হয়, আমি তোমাকে যে-কোনও সময় হারিয়ে ফেলব।


যদিও জানি, আমার কোনও কিছু জানতে তোমার আগ্রহ নেই, তবুও নিজ থেকেই বলছি, কাল রাতে জ্বর জ্বর লাগছিল। মনে হচ্ছিল, তুমি কপালে হাত রাখলেই বুঝি ভালো লাগবে। খুব খারাপ লাগছিল বিধায় তোমার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। পরে বুঝেছি, আমার তো কোথাও এমন কেউ নেই, যার সাথে মন চাইলেই কথা বলা যাবে। তুমি একটা বেয়াদব! তুমি একটা ইডিয়েট! তুমি আমার কেউই না! আমার কষ্ট হচ্ছে, এটা বুঝতে পারছ না! আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখো, প্লিজ! আমার কষ্ট হচ্ছে অনেক। আমি কী করব, বলে দাও না! প্লিজ, বলে দাও।


তুমি এসে আবার চলে গিয়েছ কেন? তুমি একদমই আমাকে বোঝো না, তুমি আমাকে ভালোবাসতে জানো না। তুমি আমার ভালোবাসা হতেই পারো না! আমি তোমাকে আর ভালোবাসব না। আমি কাউকে ভালোবাসব না।


আমি অনেক নিষ্ঠুর হয়ে যাব, অনেক খারাপ হয়ে যাব, আমার যা ইচ্ছে সব করব, তোমরা সবাই চলে যাও আমার জীবন থেকে। তোমরা তোমাদের সমাজের নিয়মের সাথে থাকো। আমাকে একটু নিঃশ্বাস নিতে দাও…আমি আমার ইচ্ছেমতো অল্প একটু সময় বাঁচতে চাই। আমাকে একটুখানি সময়ের জন্য একটু স্বস্তি দিয়ে দাও! আমি তোমাদের সমাজের পায়ে পড়ি…আমি কোন পরিস্থিতিতে আছি, তোমার কোনও ধারণাই নেই। আমার অত কথা বলতে ইচ্ছে করে না, ক্লান্ত লাগে। সত্যিই! আমাকে ক্ষমা করো।


আমি একদম জোরে চিৎকার করব এখন! তুমি কি সত্যি সত্যি কার‌ও প্রেমে পড়েছ আবারও?
তুমি আমাকে আদর করো না কেন? তুমি এমন করতে থাকলে, আমি এমন কাউকে ভালোবাসতে শুরু করব, যার কাছ থেকে আদর চেয়ে চেয়ে নিতে হবে না! এখন এমন করছ তো…আমাকে যখন অন্য কেউ আদর করবে, তখন তোমার কষ্ট হবে…দেখে নিয়ো! তোমার সব ‘ঠিক-ভুল’ নিয়ে তুমি থাকো। আদরগুলোও তোমার কাছে রেখে দাও।


আমার জীবনটা খুব সুখের নয়। আমি প্রায়ই, অনেক ফালতু ঝামেলায় জর্জরিত থাকি! খুবই ডিপ্রেশনে থাকি। আমি ঠিক প্রতিদিন কথাবলার মতো মানুষ না। আমি অন্য রকমের। সত্যিই আমি এরকম। তাই তোমার সঙ্গে দেখা হবার পর থেকে নিজেকে নিজেই আর চিনতে পারি না।
আমি নিজেই জানি না, আমি এমন কেন হয়ে যাচ্ছি! তুমি এখন সামনে থাকলে তোমাকে আমি কামড় দিতাম, কারণ আমি এখন পাগল! আশ্চর্য! তোমাকে আমি এত কথা লিখছি কেন? আমি তো তোমার সাথে রাগ করেছি!...লিখব আমি, এক-শো বার লিখব! যত খুশি লিখব! আমি লিখলে তোমার কী?


ভাবনা: আটশো বায়ান্ন
………………………………………………………
এক। তোমাকে মেসেজ পাঠিয়ে উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। মনে হতে থাকে, পৃথিবীর সমস্ত অপেক্ষাই এক আমার জন্য! আমি খুব করে চেষ্টা করি যাতে তোমার প্রতি বিন্দুমাত্রও ভুল আচরণ না করি। যদি করি কখনও, তবে তোমার সাথে আর স্বাভাবিক আচরণ করতে পারি না, কোথায় যেন একটা দ্বিধা চলে আসে! আমার সঙ্গে রাগ কোরো না কখনও। কোনও কারণে, কোনও কিছুর জন্য তোমার সঙ্গে আমার কোনও ধরনের রাগ নেই। তোমার জন্য আমার কেবলই ভালোবাসা আর অভিমান বরাদ্দ।


কখনও যদি আমাদের মোবাইলে কথা হয়, মোবাইল রেখে দিতে দিতে আর বোলো না, একটু পর কল করবে কিংবা রাতে তুমি কল করবে, কিংবা অন্য কোনও নির্দিষ্ট সময়ে কল করবে। বরং বোলো, আবার হয়তো কখনও তোমার সাথে কথা হবে, যদি আমি ফ্রি থাকি, কিংবা যদি আমার ইচ্ছে হয়। তুমি হয়তো জানো না, একটু পর, রাতে‌ কিংবা অন্য কোনও সময়, এই শব্দগুলোর কাছে আমার অন্য সমস্ত কাজ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে থাকে। যা থাকে, সেটির নাম শুধু অপেক্ষা---একটি ফোনকলের অপেক্ষা! তুমি না আমার কোনও কিছু বোঝো, না আমি তোমাকে বুঝি। যা মন চায় আমরা বলে ফেলি। ভাবছি, তোমার কিচ্ছু নিয়ে ভাবব না আর!


আমাকে যখন-তখন ইচ্ছেমতো কঠিন করে কথা বোলো না। আমি তোমার সম্পর্কে কতটুকুই-বা অবগত যে তুমি কখন কী নিয়ে ভাবছ, না ভাবছ, এই সম্পর্কে আমার যথেষ্ট ধারণা থাকবে? আমি তোমাকে জানি না, আমি শুধু তোমাকে অনুভব করি। আমাকে না বুঝে আমার ভাবনা নিয়ে মন্তব্য কোরো না, আমার সাথে কঠিন ভাষায় কথা বোলো না। পৃথিবীর অনেক মানুষ আছে আমাকে যন্ত্রণা দেবার জন্য। তোমারও তাদের সাথে যুক্ত হবার দরকার নেই। আমি তোমাকে ভালোবাসি। এটা আমার কাছে অপরাধ নয়।


আমি কিছু ভেবে তোমাকে কিছু দিই না। কখনও দিলে একেবারে মুখে বলে দেবো, লিখে দেবো। আমি চাই, তুমি আকাশের চেয়েও বড়ো হ‌ও। পরিস্থিতি যেমনই হোক, তোমাকে অসম্মান করব, তোমাকে অবহেলা করব, তোমাকে ছোটো করব, এ জন্মে আমাকে দিয়ে এসব হবে না। আমি আমার ভালোবাসাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়ে থাকি।


যাকে ভালোবাসি, সে আমার সঙ্গে থাক বা না থাক, আমার প্রতি তার আচরণ যেমনই হোক, ভালোবাসলে সমস্ত কষ্ট সঙ্গে নিয়ে দূরে সরে থাকা কিংবা দূরে কোথাও অপেক্ষারত থাকা ছাড়া আমার আর কিছুই করার থাকে না, কারণ আমি অনেক অভিযোগ নিয়ে কারও মুখোমুখি হই না, নিজের কোনও কিছু চাইতে পারি না। স্রষ্টা সাক্ষী, আমার মধ্যে কোনও হিংস্রতা নেই। কারও প্রতি নেই, কারও প্রতি নেই!


আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে প্রার্থনা করার মতো করে ভালোবাসি। এই পৃথিবীতে যদি কখনও তোমার একজনও শুভাকাঙ্ক্ষী অবশিষ্ট থাকে, সেই মানুষটি আমি হতে চাই।


তুমি তোমার জায়গায় থেকে যেয়ো, আপত্তি নেই। আমার শুভাকাঙ্ক্ষী লাগবে না, সেটা আমার অনেকই আছে। তুমি শুধু আমার ভালোবাসার কেউ হবে, আর অনেক ভালোবাসবে। বকবে না, উলটাপালটা কথা কিচ্ছু কিচ্ছু লিখবে না, যা মাঝে মাঝেই লিখো। আমার উপর রেগে থেকো না। আমি যা বলেছি, সত্য বলেছি। আমার ধারণা, তুমি শুধুই আমার উপর রাগ করতে থাকো। তোমার জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বর আমাকে বিষণ্ণ করে দেয়। হ্যাঁ, এটা ঠিক, তোমাকে অনেক অনেক কিছু বলার থাকে, কিন্তু বলা হয় না, কখনও হয়তো হবেও না। তবে সেইসব আবার গুরুত্বপূর্ণ কিছুও না।


যাদের আমি ভালোবাসি, তাদের ভালো রাখার চেষ্টা করা ছাড়া আমার তেমন কোনও কাজ নেই, কারণ আমার অনেক বড়ো কিছু হবার স্বপ্ন নেই। আমি শুধু ভালোবাসার মানুষগুলোর সাথে ভালো থাকতে চাই, ওদের ভালো রাখতে চাই। এই মানুষগুলো ভালো আছে মানে আমিও ভালো আছি। একটা সিক্রেট বলি। রাতে ঘুমানোর আগে, প্রায়ই, কী কী কারণে তোমার উপর আমার অভিমান হয়, তা লিখে রাখি। তোমাকে ভেবে ডায়েরি লেখার সময় আমি তোমার ঘ্রাণ পাই।


তোমার কাছে যখন-তখন যেতে চাওয়া হয়তো ঠিক নয়, কিন্তু তোমাকে ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করে! আমাদের নিজেদের অবস্থান বিবেচনায় এনে আরও সতর্ক হয়ে চলা উচিত। কিন্তু ভালোবাসি যে! এর চেয়ে কম কিছু করে কী উপায়ে ভালোবাসে মানুষ?


দুই। ঠিক করলাম, আর কখনও, তোমাকে আমার অবস্থান এবং আমার কোনও রকম কষ্ট, কোনোটাই জানাব না। এটি নিজের বোকামি এবং পাগলামি থামানোর একটি সিদ্ধান্ত। আর কিছুই না। পুরানো যা-কিছু, তার পাশে নতুন কিছু যুক্ত করতে চাইছি, এতেও যদি তোমার ইচ্ছে হয়, সুযোগ হয় আমাকে নিয়ে ভাববার, আর না হলে নেই।


আমি সাধারণত মানুষকে এত মনে রাখি না, প্রয়োজনের বাইরে একজনকেও না! তাই আমার ভাবনায় বেশি মানুষ নেই। সেই ছোটো জগতটাও আরও ছোটো হয়ে এসেছে শুধুই তোমার জন্য। এটা বোঝো? মানুষকে দ্রুত ভুলে যাই আমি, ঠিক মনে রাখতে পারি না। তবে প্রয়োজন হলে খুঁজে বের করি, এ-ই আর কি! এর মূল কারণ, ছুটতে ছুটতে যেখানে নিজেকেই ভুলে যাই, এই অবস্থায় অন্য কিছু বা অন্য কাউকে মনে রাখা কঠিন, খুব একটা প্রয়োজন দরকার না থাকে যদি।


তবে তোমাকে মনে রাখার তাগিদ অনেক, কোনোভাবেই ভুলে না যাবার চেষ্টাও অনেক। তুমি ভুলে যেতে চাইলেও ভুলতে না দেবার প্রয়োজনটাও অনেক। তোমাকে ভালোবাসব সমস্ত কারণ-অকারণ ভুলে গিয়ে! এক তোমাকে ছাড়া আর কাউকে মনে রাখার তেমন কোনও মনের দায় আমার নেই। তোমাকে ভীষণ ভালোবাসার ইচ্ছে আমার! তোমাকে খুব ভালোবাসি!


তুমি মাঝেমধ্যে আমাকে কিছু গান পাঠাও। আচ্ছা, এই গানগুলো কি তোমার পছন্দের? না কি তুমি যাকে আজও ভালোবাসো, তার পছন্দের? না কি উভয়ের পছন্দের? যদি গানগুলো তোমার একাকিত্বের সঙ্গী হয়ে থাকে, তাহলেই শুনব, নাহয় শুনব না।


তোমার যা-কিছু ত্রুটি, আমাকে দিয়ো। তোমার যা-কিছু অপছন্দ, আমাকে দিয়ো। তোমার যা বিরক্তি, আমাকে দিয়ো। যা তোমার একাকিত্ব, আমাকে দিয়ো। আমি এসব ভীষণ যত্নে মাথায় করে রাখব। আমি তোমায় অনেক অনেক অনেক ভালোবাসব।


আমি তোমাকে যা লিখি, তার সবই মন থেকে। হ্যাঁ, মাঝে মাঝে অভিমান হয়। আমি এমন কিছু কখনওই করব না যাতে তোমার কষ্ট হয়, সত্যি বলছি। তুমি আমাকে ভেবে মাথায় দূরত্ব এনে কোথাও কিছু লিখবে না আর। তুমি আমার জন্য অনেক গুরুত্ব বহন করো। এরকম যদি তুমি কিছু করো, সত্যিই মানসিকভাবে অনেক পিছিয়ে পড়ব আমি সবকিছু থেকে। প্লিজ, এমন কোরো না, আমাকে তোমার সঙ্গে থাকতে দিয়ো।


তোমার পাঠানো গানগুলো শুনতে থাকি অনেক বার, তোমাকে ফিল করতে ভালো লাগে খুব। তোমার ক্ষুদ্র কোনও বিষয়ও আমার কাছে অসামান্য কিছু। অনেক কিছু থেকে ছুটে যাচ্ছি শুধুই তোমার কাছে থাকব বলে। আমি প্রতীক্ষারত থেকে যাই তোমার একটি আলিঙ্গনের জন্য, ব্যস্ততা কাটিয়ে সময় হলে তুমি এসো আমার কাছে।


আজ প্রচণ্ড অভিমান থেকে তোমার জন্য ডায়েরিতে লিখেছি, আজকের পর আর কখনও তোমাকে দেখার আবদার করব না। আমার অনেক কষ্ট হলেও তোমাকে বলব না, তুমি আমার সাথে দেখা করো, তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে, এমন কিছু…
তোমার লেখা পড়ার জন্য অনেক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি। প্রতিটি লেখা আন্তরিকভাবে যত্ন নিয়ে পড়ি, কয়েক বার করে করে পড়ি। যখন তোমার সাথে কখনওই কথা হয়নি, তখনও পড়তাম। তোমার নতুন লেখার জন্য আমি সবসময় অপেক্ষা করি। আমি তো তোমাকে তোমার লেখার জন্যই জানি!


কিন্তু এখন প্রায়ই তোমার প্রতি অভিমান হয়। খুব মন খারাপ হয়ে যায়। কতবার বলেছি, কতভাবে বলেছি…দেখতে ইচ্ছে করছে! তুমি শোনোই না, বোঝোই না! আমার কষ্ট হলে আমার কী করার আছে? হ্যাঁ, তোমাকে কিছু না জানিয়ে চুপ থাকতে পারি।‌ গতকাল থেকে তাই ভেবেছি, তুমি না চাইলে আর কখনও দেখা করার কথা বলব না। এক তোমার টেনশনে টেনশনেই আমি পাগল হয়ে যাব!


আমি বলার পর তুমি যখন ‘না’ বলো, তখন সারাক্ষণই আমার কষ্ট লাগে। তাই তোমাকে আর কিছু বলব না, অনেক কষ্ট হলে নিজেকেই লিখব। তবু তোমাকে কিছু বলব না। এইসব তোমাকে কাছে না পাবার অভিযোগ, এইসব আমার ভালোবাসা। এইসব, তুমি যে নিষ্ঠুর, তা বলতে চাইছে। আমি আর আদর করে কিছু লিখব না তোমাকে। তুমি আমার অনুভূতি বুঝতে পারো না।
যদি কখনও তোমার মনে হয়, আমি তোমার আস্থা নষ্ট করেছি, তবে আমাকে নির্দ্বিধায় জানিয়ে দিয়ো। তোমার কথা মিথ্যে না হলে সত্যিই আমি চলে যাব। সেদিন আমি ক্ষমা চাইব না, ক্ষমা চাইলে নির্লজ্জের মতো দেখাবে।


ভাবনা: আটশো তিপান্ন
………………………………………………………
এক। যে মারা যায়, তাকে নিয়ে আমরা পরবর্তী চিন্তা করি না। এটাই বাস্তবতা। তবে তাকে ঘিরে যারা থাকে, তাদের দিকে তখন মনোযোগটা যায়। মানুষটা যাদের দেখাশোনা করত, তার অনুপস্থিতিতে তারা কীভাবে চলবে, সে ব্যাপারটা আলোচনায় আসে। কয়েক দিন ধরে এসব মাথায় আসছে। কোনও কারণ নেই, তবু আসছে।


তোমার সব অনুভূতিতে, আচরণে, মেসেজে তুমি কঠিন থাকো, নিষ্ঠুর থাকো। এখন থেকে তোমাকে ফলো করব, আর নিষ্ঠুর হয়ে ওঠার চেষ্টা করব। যাতে---আমাকে বলতে না হয় যে…আমি তোমাকে মিস করছি! আমি আর কী করব, বলো? তোমার জন্য মন পুড়লে কী করব বলে দাও… তোমাকে ঘিরে দিন দিন অবুঝ বাচ্চার মতো হয়ে যাচ্ছি, নিজের পরিবর্তন দেখে নিজেরই ভয় হচ্ছে। এমনিতেই সারাদিন অভিমান টেনে টেনে কাজ করি, তার উপর আবার এসব!


তোমার সবকিছু নিয়েই আমি ভাবি। তোমার কোনও কিছু নিয়ে তোমাকে কিছু বলার থাকলে বলে দিই। এত এত যে বলি! এখন থেকে তোমার সবকিছু নিয়েই, চেষ্টা করব চুপ থাকতে। নিজের কাছেই কেমন জানি বিব্রত লাগছে ইদানীং! বার বারই মনে হচ্ছে, আমি বুঝে না-বুঝে প্রায়ই কথা বলছি। তবু এইটুকু নিশ্চিতভাবে জানি, তুমি যে কতটা পুড়ে যাচ্ছ ভেতরে ভেতরে, তা বলে বোঝাতে পারব না। তোমাকে বুঝতে পারি। না পারলে বেঁচে যেতাম! আর ব্যস্ত হয়ে থেকো না, এবার একটু নিজের কাছে ফেরো, কেমন?


রাত হলে আমার কী হয়, জানো? যা না লিখলে রাতে ঘুম আসবে না, তা লিখে যাই। সারাদিন মনে হয়েছে, কেউ আমার বুকের মধ্যে পাথর চাপা দিয়ে রেখেছে, নিজেকে স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল না কোনোভাবেই। শুধু অস্থির লাগছিল আর কষ্ট হচ্ছিল অনেক! আর কখনও তোমাকে দেখতে চাইলে মাঝখানে অপেক্ষার দীর্ঘপ্রহর জুড়ে দিয়ো না। আমি পাগলের মতো অস্থির হয়ে উঠি! আমার কষ্ট হয়, আমার কষ্ট হয়, আমার কষ্ট হয়। আর কত বার বললে তুমি আমার কষ্টটা বুঝতে পারবে? প্রয়োজনে অন্তত দশ মিনিট সময় দিয়ো। কোথাও যেতে না পারলে, কোথাও বসতে না পারলে, তোমার বাসার নিচে দু-মিনিটের জন্য এসো। আমি দূর থেকে দেখে চলে আসব।


কিছু না পারলে আমাকে থামিয়ে দাও। এভাবে প্রত্যাশায় রেখে দিয়ে আমাকে শেষ হয়ে যেতে বাধ্য কোরো না। একটু একটু করে আমাকে এমন অসুস্থ হতে দিয়ো না। আমার সঙ্গে কথা বলো, আমার মন ভালো করে দাও, নাহয় আমার ঘুম আসবে না। আমার সঙ্গে কথা বলার সময় তোমার মনোযোগ কোথায় থাকে, আমি বুঝতে পারি না। এমন মায়াহীন হয়ে হয়ে কথা বলো কেন সবসময়ই? আমি কি সারাজীবনই ঝগড়া করব তোমার সাথে?


আমি যেন ভয়হীন, দ্বিধাহীন হয়ে তোমাকে ভালোবাসতে পারি, অতটাই সহজ থাকবে আমার সাথে। আমার যেন মনে না হয়, আমি কোনও অন্যায় করছি তোমাকে ভালোবেসে। আমাকে তোমার সাথে এতটাই সহজ করে নাও---আমার অভিমানের, রাগের একটা জায়গা যেন তোমার কাছে থাকে, আমি যেন বুঝতে পারি, আমার এমন কেউ একজন আছে, যার সাথে আমি যা ইচ্ছে করতে পারি। আমার হাসি-কান্না, কষ্ট, রাগ-অভিমান সব তোমাকে ঘিরে হোক। তোমার কাছে এইসব প্রকাশ করার আগে যেন আমাকে ভাবতে না হয়---এটা তোমার সাথে করাটা ঠিক হবে কি না?
আমাকে ঘিরেও তোমার রাগ থাকুক, অভিমান থাকুক, কষ্ট থাকুক, আমি খুব চাই। এই যে তোমার এইসব নেই বা থাকলেও আমাকে বুঝতে দাও না, এটা আমাকে কষ্ট দেয় অনেক। অসহায় করে তোলে…কিছু অধিকার দিয়ে, কিছু অধিকার নিয়ে…তুমি আমার হয়ে ওঠো, আমাকে তোমার পাশে থাকতে দাও। আমি কখনও কারও কাছে কিছু চাইনি, আমার কোথাও নত-হওয়ার ব্যাপার নেই, কিন্তু তোমার কাছে আমার সমস্ত কিছু থাক---এখানে কোনও হেরে যাওয়া, জিতে যাওয়া না থাকুক।


তোমাকে ভাবতে ভাবতে অন্য দিকে তাকানোর সময়ই পাচ্ছি না! জীবনে এই প্রথম কোনও কাজে আমার একটুও গরমিল হচ্ছে না! প্রতিবারই, তোমার সঙ্গে কথা বলার সময় মনে হয়, আহা, কত কোটি বছর পর তুমি এলে! তোমারও কি হয় ওরকম? আমার আসলে ছেলে হয়ে জন্ম নেওয়া উচিত ছিল। এমন গভীরভাবে প্রেমে পড়ে গেলেও ছেলেদের এতটা কষ্ট হয় না, অস্থির লাগে না। অবশ্য আমার এই কষ্টটাকে আমি যেভাবে অনুভব করছি, সেভাবে অনুভব করতে ভালো লাগছে।


অ্যাই ছেলেটা! তুমি আমার টেক্সটে লাভ রিঅ্যাক্ট দাও না কেন? ভালোবাসা এত দ্রুত কমে গেলে কেমনে হবে? লাভ-চিহ্ন দিতে কি‌ অনেক টাকা খরচ হয়! আচ্ছা, তোমাকে আমি এতকিছু বলছি কেন? ও আচ্ছা, মিস করছি তো, তাই! তুমি ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ো, আর এদিকে ঘুমোতে না পেরে আমি ক্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়ি।


দুই। আজ যাঁরা প্রিলিতে উত্তীর্ণ হলেন, তাঁদের অভিবাদন জানাচ্ছি। রিটেনের জন্য খুব খুব খুব ভালো করে পড়ুন। রিটেনে বেশি নম্বর পাওয়াটা কিন্তু মোটামুটি নিজের হাতেই! সত্যি সত্যি কঠোর পরিশ্রম করুন, তবে বেশ বুঝে-শুনে। শুধু খাটলেই হয় না, বুদ্ধি খাটিয়ে খাটতে হয়। অপেক্ষায় রইলাম, খুব শিগ্‌গিরই আমাদের দেখা হবে! (না বললেও চলে, তা-ও বলি। রিটেনের আগের এই সময়টাতে, যতটুকু না ঘুমালেই নয়, কেবল ততটুকুই ঘুমান। এর পুরস্কার আপনি পাবেনই পাবেন!)


আজ যাঁদের প্রিলিতে হয়নি, তাঁদের এই প্রিলিতে হবার কথা ছিল না, সামনে হবে। না হলেও কিছু এসে যায় না। কীরকম? আমার একটা লেখা থেকে হুবহু উদ্ধৃত করছি। পড়ুন, কিছু প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন:


খুব খারাপ কিছু আমার সাথে ঘটলে আমি বারবার নিজেকে এটা বলে বুঝানোর চেষ্টা করি যে ভবিষ্যতে ভালো কিছু নিশ্চয়ই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। এতে মন অনেকটা শান্ত থাকে। আমার জীবনে যা চেষ্টা করেও হয়নি, আমি ধরে নিয়েছি, তা আমার নিয়তিতে লেখা ছিল না। হিন্দিতে আশ্চর্য রকমের সুন্দর একটা কথা আছে এরকম---ওয়াক্ত সে পেহ্‌লে অউর কিসমাত সে জ্যয়দা কুছ নাহি মিলতা। এর ভাবার্থ: উপযুক্ত সময় হবার আগে এবং ভাগ্যে যা লেখা আছে তার চেয়ে বেশি জীবনে কিছু পাওয়া যায় না। সত্যিই তা-ই। অনেকেই চেষ্টা করেও কিছু করতে পারে না, কেননা হয়তো তা তার ভাগ্যে নেই কিংবা তার চাইতে ভালো কিছু তার জন্য অপেক্ষা করছে যা পাওয়ার জন্য তাকে নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। আমরা যা চাই, তা পাই না। আমরা তা-ই পাই, যা আমাদের দরকার। আমাদের কী দরকার, কী দরকার নেই, তা বোঝা আমাদের পক্ষে প্রায় সময়ই অসম্ভব। তাই যা হচ্ছে ও যা হচ্ছে না, তা মেনে নেওয়াই ভালো।


('প্রাণ যখন জীবন হয়ে ওঠে/ দ্বিতীয় অংশ' থেকে নেওয়া)


ভাবনা: আটশো চুয়ান্ন
………………………………………………………
স্বপ্ন দেখি, কোনও একদিন ঘুম থেকে জেগে পাশ ফিরে দেখব, তুমি! শালার জীবন! আমাকে নিজের জন্য বাঁচতে দিল না এক দিনও!


একই ছাদের নিচে দু-জন মানুষ, একজনের সুন্দর বেড়ে-ওঠা আছে, সমস্ত কিছু আবদারের সুনির্দিষ্ট একটি জায়গা আছে। আরেকজনের ক্ষুদ্রতম আবদারের জন্যও কেউ কোথাও নেই, এবং ছিল না! পৃথিবীটা অদ্ভুত বৈচিত্র্যপূর্ণ! হাজারো না পাওয়া নিয়ে, অনেক শূন্যতা গোপন করে…একদিন মরে যাব। যারা আমার সাথে বাস করে, ওরাও কোনোদিন টের পাবে না, কী কী আমার না-পাওয়া ছিল!


মনখারাপের মেঘগুলির সাথে আমার ঘনপ্রেম আছে, উনপ্রেম আছে, দারুণ বন্ধুত্ব আছে, আমাকে ছেড়ে ওরা বেশিদূর যায় না। আমিও থাকতে পারি না ওদের ছেড়ে। আমি ভালো আছি আমার সমস্ত মনখারাপ নিয়ে। জীবনের এমন কোনও গল্প থাকবে না, যা আমি তোমাকে বলতে পারব না। আমার ভাঙতে ভাঙতে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টায় তুমি কোনও একদিন ভারসাম্য হয়ে উঠবে। এর নাম হচ্ছে ‘স্বপ্ন’।


ইদানীং খুব মন দিয়ে ‘এক পেয়ার কা নাগমা হ্যায়’ গানটা শুনি। শুনতে শুনতে তোমাকে ফিল করি। কেন জানি না, খুব কান্না পায়! কোনোদিন যদি এমন হয়, আমার নিজের অক্ষমতার জন্য তোমার সঙ্গে আর চলতে পারছি না, তখন এই গানটিকে আমি সম্বল করব। এমন পাওয়া আর কখনওই হয়নি। আমি কোনোদিন কারও পাঠানো গান এতটা অনুভব করিনি। আমার আবেগগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য তোমাকে সত্যিই ধন্যবাদ।


তুমি অনেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে থাকলেও, কখনও কখনও আমায় মনে রেখো। তুমি যে অবস্থাতেই আমাকে স্পর্শ করো না কেন, সে স্পর্শ আমার কাছে খারাপ লাগবে না। হাসিমুখে তোমার বুকে মাথা রাখব। তোমার বিশাল জগতের সামান্য কিছু মায়া আমার জন্য মনে করে রেখে দিয়ো। আমি একটা চিৎকার করব এখন! তুমি এত দূরে কেন?


আচ্ছা, সত্যি করে বলো, আমি কি তোমাকে বিরক্ত করছি না? আমি তো সবসময় তোমাকে জ্বালাচ্ছি। আগামীকাল থেকে একটু একটু করে মেসেজ লেখা কমানোর চেষ্টা করব। আমার মধ্যে তোমার যা যা অপছন্দ হয়, তুমি আমাকে সরাসরি বলে দিয়ো। আমি কী করতে পারব তোমার সঙ্গে, আর কী করতে পারব না, আমার সীমা কতটুকু…এসব আমাকে তুমি তোমার মতো করে বুঝিয়ে বললে সত্যিই বুঝব। কোনও রকম ঝামেলা তর্ক-বিতর্ক এরকম কিছু করার মানুষ আমি না। হয়তো কোনও কারণে সর্বোচ্চ তোমার সাথে অভিমান করব, এর বেশি নয়।


আমি মানুষ হিসাবে অনেক ত্রুটিপূর্ণ, কোনও ক্ষেত্রেই বা কোনও বিষয়েই সেরা নই, খুব কম ক্ষেত্রেই ভালো বলা যাবে আমাকে। তাই যতটুকু সম্ভব অন্যের ভুল ধরা, অন্যকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকি, পারস্পরিক সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করি। এতে করে নিজেকে শোধরানোর সময়, পরিবেশ, সুযোগ---অনেকটা পাওয়া যায়।


আমার একটি ভালো গুণ আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। কেউ আমাকে রাগালে, কষ্ট দিলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার চেষ্টা করি। রাগের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্রুত যে-কোনও আয়নার মুখোমুখি হয়ে যাই, কেননা আমি নিজেকে ভয়ংকর এবং বিশ্রী দেখতে চাই না। তখন নিজেকে সংযত রাখতে সক্ষম হই। এরপর রেগে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করি এবং এ পরিস্থিতি কেন সৃষ্টি হয়েছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করি। খুব খারাপ কিছু আমার সাথে ঘটলে, আমি বার বার নিজেকে এটা বলে বোঝানোর চেষ্টা করি যে, ভবিষ্যতে ভালো কিছু আমার জন্য অপেক্ষা করছে। এতে মন অনেকটা শান্ত থাকে।


অনেকসময় অনিচ্ছায় যখন কিছু করতে বাধ্য হই, তখন নিজের উপর প্রচণ্ড রাগ হয়, কিন্তু ওই রাগের বহিঃপ্রকাশ উপস্থিত কোথাও থাকে না, আমি নিজের জন্য সময় নিই‌ এবং বোঝার চেষ্টা করি, কেন আমি বাধ্য হয়েছি! এরপর থেকে যে কারণে বাধ্য হই, সেটা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করি। এতে আমি মানুষের অনুগত হওয়া থেকে মুক্তির ঘ্রাণ পাই। স্বাধীন হতে পারার মতো সুখ পৃথিবীতে আর একটিও নেই।


যখন প্রতারিত হই, ঠকে যাই, তখন নিজেকে বোকা মনে হয়, কান্না পায়। নিজের কাছে নিজেকে খুব অসহায় লাগে, অপমানিত হই, ধৈর্য ধরতে বাধ্য হই। সময় ক্ষত শুকিয়ে দেয়। তারপর ধীরে ধীরে নতুন কিছু শিখি, মানুষকে নতুন করে বুঝি। তখন জানি, মাঝে মাঝে ঠকে যাওয়া খুব বেশি প্রয়োজন, বেঁচে ওঠার জন্য, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য।


জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, নিজেকে ভালোবাসতে শেখা। আমি যখন থেকে নিজেকে ভালোবাসতে শিখেছি, অন্য সমস্ত মানুষ দুঃখ দিয়ে আমাকে আচ্ছন্ন করার ক্ষমতা হারিয়েছে। আর যে মানুষ একবার নিজে স্বাধীন থাকার আনন্দ বুঝে ফেলেছে, সে-ই জানে, কী দারুণভাবে জীবনটাকে উপভোগ করা যায়। নিজের ইচ্ছেয় স্বাধীনভাবে বাঁচার মতো সুন্দর আর কিছুই হতে পারে না।
একজন নারী কীভাবে চলবে? কী পরবে, কার সাথে ঘুবরে, কার সাথে শোবে, সেটা আমি আপনি ঠিক করে দেওয়ার কে? আপনি কী করেন, কী পরেন, কোথায় যাবেন, সেটা কি অন্য কেউ ঠিক করে দেয়? পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীর স্বাধীনভাবে চলার অধিকার আছে। সে অধিকারে হস্তক্ষেপ করার আমি আপনি কেউ না।


আমি কোনও সফল মানুষ নই, সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে আমি কিছুই করি না এবং কিছু করিনি। আমি শুধু নিজের কাজটা সবচেয়ে ভালোভাবে করার চেষ্টা করি বার বার।
আমার জীবনে সবচেয়ে বড়ো শক্তির জায়গা হচ্ছে আমার বাবা-মা’য়ের আশীর্বাদ। ওঁরা সৃষ্টিকর্তার এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। জীবনে এঁদের পাওয়া ও এঁদের ভালোবাসতে পারা যে কত বড়ো সৌভাগ্যের, তা কোনও ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।


মাঝে মাঝে সময়ের কাছ থেকে সময় নিতে হয় নিজেকে খুঁজে পাওয়ার জন্য। মাঝে মাঝে শূন্যতা ভালো লাগে, নির্জনতা ভালো লাগে, নিস্তব্ধতা ভালো লাগে, নীরবতা ভালো লাগে, প্রিয় মানুষের দূরত্বও ভালো লাগে, ক্লান্তি আর বিষণ্ণতাকেও ভালো লাগে। সেইসব সময়ে নিজেকে অনেক বেশি ভালো লাগে। একাকিত্বে নিজেকে ভালোবাসার চেয়ে ভালো সময় আর হয় না। নিজেকে ভালোবাসার মতো সুন্দর কাজ আর কী হতে পারে? আমি তো নিজেকেই ভীষণ ভালোবাসি।
প্রতিদিন হাজারো উপেক্ষা সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করার চেষ্টা করি---কোনও একদিন কোনও এক ভালোবাসার মানুষের যোগ্য হয়ে উঠব বলে।


আমি এসব লিখতে লিখতে, তোমাকে জড়িয়ে ধরে আছি, এমন কিছু অনুভব করছি। তোমাকে ভুলে থাকার ওষুধ খেতে খেতে, নাহয় তোমাকে ভাবতে ভাবতে আমি একদিন পাগল হয়ে যাব।