বেঁচে থাকার দায়ে

১. একটু জড়িয়ে ধরলেই যেসব সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারত খুব সহজে, লোকে তা না করে প্রিয় মানুষটার সাথে সেসব সমস্যা নিয়ে তর্ক করতেই থাকে।

২. যেদিন তুমি এ জীবনে এলে, সেদিন থেকে প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করি, ঈশ্বর আমার সমস্ত শরীরে সারাক্ষণই আশীর্বাদ হয়ে আছেন। তোমার ভালোবাসাই আমার সকল প্রার্থনার একমাত্র সুর।

৩. আমি জানি, আমার পথ আমার জীবনের চেয়েও অনেক দীর্ঘ। আমাকে নিজের চেষ্টার প্রতি আরও সৎ হতে হবে।

৪. লড়াই ও হতাশার ঠিক মাঝের বিন্দুটির নাম‌ই আত্মোপলব্ধি। সেখানে পৌঁছতে না পারলে জীবনের প্রায় পুরোটাই যাপন করা বাকি থেকে যায়।

৫. যার সংস্পর্শে মানুষ পূর্ণতা থেকে দূরে সরতে থাকে, সে-ই একাকিত্বের মূল কারিগর।

৬. মানুষের ভিড় ভালো লাগে না। মানুষের ভিড়ে অমানুষ থাকে। একা থাকতে ভালো লাগে এবং যার সাথে থাকলে অভিনয় করে নিজেকে লুকোতে হয় না, তার সাথে থাকতে ভালো লাগে। মানুষের প্রতি অবিশ্বাসকে বিরক্তিতে পরিণত করতে আমি চাই না। জীবন নিয়ে আমি এমনিতেই যথেষ্ট বিরক্ত, নতুন বিরক্তির আর কী দরকার?

৭. কিছু কবর মাটির, কিছু কবর অশ্রুর।

৮. পাশাপাশি বসে থেকেও দু-জনের কেউ কিছু বলতে পারতাম না। মনে হতো, অন্তত ওই সময়টাতে আমরা সুখী। তার সব কিছুই আমি জানি, আমার সব কিছুই সে জানে। সে-ই আমি, আমিই সে। তাহলে আমাদের বলার‌ই-বা আর কী থাকে তখন?

৯. আমাকে যা বাঁচিয়ে রাখে, তা তোমার ধর্মের চেয়ে অনেক অনেক বড়ো।

১০. সুন্দরী মেয়েদের রূপের মোহ থেকে কখনো নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে বাধ্য হলে আমি বোধ হয় সেদিন পাগল হয়ে যাব। রূপে ডুবতে না পারলে আয়ুর কী দরকার?

১১. আমি যা করতে ভালোবাসি, আমার কাছে তা যৌনতা ও বন্ধুত্বের চাইতেও মূল্যবান। ভালোবাসার কাজ, যৌনতা, বন্ধুত্ব—এই তিন নিয়েই আমি।

১২. সবার মধ্যেই লুকোনো একটা পৃথিবী আছে। তবে সেই পৃথিবীকে জন্ম দিতে চাইলে অনেক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়, যা সবাই পারে না। তাই সবাই সহজ পথটিই বেছে নেয়: সেই পৃথিবীর ভ্রূণহত্যা করা। সবাই কি আর ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে?

১৩. তুমি চলে যেয়ো না। তুমি চলে গেলে কী হবে? আবার একা হয়ে সমুদ্রে বহুদূরে ভেসে যাব। কূলকিনারা খুঁজে না পেলে ডুবে মরব। আমার মৃত্যু কি তোমাকে অনেক কিছু পাইয়ে দেবে? না দেয় যদি, তবে কেন চলে যাচ্ছ আমাকে একা ফেলে? কেন জয়ী হতে চাইছ? তুমিই বলো, এর চাইতেও বেশি আর কতটা পরাজিত হতে পারতাম আমি?

১৪. মুক্ত হবার প্রথম ধাপ: নিজেকে সেই ছোটো গণ্ডির মধ্যে বন্দি করে রাখা, যেখানে সীমাবদ্ধ স্বপ্নপূরণের ল্যাবরেটরি।

১৫. আমাকে ভদ্রতা শেখাতে আসবেন না। আপনার সাথে অভদ্র আচরণ করার সময়ই আমার নেই।

১৬. আমি কেবলই আমার শান্তিটুকুকে রাখতে চাই। বাকি সব তুমি নিতে পারো। তবে নেবার আগে নিশ্চিত হয়ে নিয়ো, তুমি আদৌ ওসব বহন করতে পারবে কি না। অর্জন করার বা অধিকারে নেবার চাইতে বহন করতে পারা বেশি জরুরি। আমার শান্তি আমার কাছে তোমার ভালোবাসার চেয়ে দামি।

১৭. তুমি মরে যাচ্ছ…তুমি বাঁচতে চাও…এসব আকুতি কেন তাকে জানাচ্ছ, তুমি মরে গেলেও যার কিছুই এসে যায় না? মরে গেলে মরে যাও। তুমি মরে গেলে তোমাকে যারা ভালোবাসে, ওরা দুঃখ পাবে; বাকিরা তোমার আবেগ নিয়ে গল্প করবে, গল্প শুনবে এবং হাসাহাসি করবে বা বিরক্ত হবে।

১৮. বিচ্ছেদ সহ্য করা কঠিন হলেও অসম্ভব কোনো কাজ নয়। কাজটা ঠিকভাবে করতে পারলে মানুষ প্রশান্তির জগতে পৌঁছে যায়। প্রেম ও যৌনতার উপরে সেখানে স্থান করে নেয় মনের শান্তি। এই শান্তিই পরে শক্তি হয়ে মানুষকে দেবতুল্য করে দিতে পারে। এই জায়গায় পৌঁছোতে চাইলে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির পাশাপাশি সচেতন প্রচেষ্টার প্রয়োজন।

১৯. তোমাকে সব দিয়েও কিছুই দিতে পারিনি আজও। আমাকে বাঁচতে শিখিয়েছিলে তুমি, কিন্তু তোমাকে ছেড়ে বাঁচতে তো শেখাওনি। তুমিই বলে দাও, আমি কী করে বাঁচব এখন?

২০. ঈশ্বর সবাইকে শক্তি দেন না। শক্তি ধারণ করার যোগ্যতা অনুসারেই মানুষ ঈশ্বরের কাছ থেকে উপহার হিসেবে শক্তি পেয়ে থাকে।

২১. আমি ঘুমিয়ে থাকলে চলবে কী করে? বরং আমার পরিবার ঘুমিয়ে থাকুক। আমার পরিশ্রম ওদের ঘুমকে আরও সুন্দর করে দেবে।

২২. সমুদ্রের তীরে অনেক দুঃখী মানুষ লাফালাফি করে। পাহাড়ের ধারে বসে অনেক দুঃখী মানুষ বাঁশি বাজায়। ওদের দুঃখ চিনতে চাইলে সাগরের জলে জিভ রাখো, পাহাড়ের হাওয়ায় কান পাতো; চোখের প্রতারণায় নির্বোধ হয়ে থেকো না।

২৩. মুখটা ফিরিয়েই যদি নেবে, তবে আমার সাথে সম্পর্ক রেখেই ফিরিয়ে নিলে কেন?

২৪. জীবনে দুঃখই বেশি পেলাম, অথচ সুখের আশায় জন্মেছিলাম। বিদায় নেবার কথা ছিল বহু আগেই, শুধু লড়াই করতে জানি বলেই সহ্য করে টিকে র‌ইলাম। ঈশ্বর তাদেরকেই ভালোবাসেন, যারা তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করতে জানে।

২৫. জোর করে হলেও হাসি। পুরোপুরি ফ্যাকাশে হয়ে যাবার হাত থেকে আর কীই-বা বাঁচাতে পারে?