পরিণতি নয়, পূর্ণতা/শেষ অংশ

জনাব বইমানব, সিদ্ধার্থ মুখার্জির দ্য এম্পেরর অব অল ম্যালাডিজ বইটা পড়েছেন? অনুবাদও বেরিয়েছে। পড়ে দেখতে পারেন, ভাল লাগবে। অনেক আগে ওরিয়ানা ফালাচ্চির ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরি পড়তে বলেছিলাম। পড়েননি, না? আচ্ছা, কেউ যদি তোমাকে আমার কথা জিজ্ঞেস করে, আমাকে চিনো কি না, আমার সাথে কথা হয় কি না, এসব, তুমি কি বলবে, ওই মেয়েটা আমাকে ইনবক্সে টেক্সট করে-করে বিরক্ত করে ফেলে, আমি রিপ্লাই দিই না, তবুও টেক্সট করে, কল করে, ভালোবাসি-ভালোবাসি করে?…….. বলবে না, কেমন? আমাকে ছোট না করে ওটার উত্তর এড়িয়ে গেলেও তো হয়! সব উত্তরই ঠিক-ঠিক দিতে হয় না, কিছু-কিছু উত্তর ভুল দিতে হয় কিংবা এড়িয়ে যেতে হয়। এটাই নিয়ম। তুমি যেহেতু কিছুই বল না, সেহেতু আমি ধরে নিতে পারি, তুমি আমার কথাটা রাখবে। মৌনতাই তো সম্মতির লক্ষণ। আমি জানি, আমার কথা মনে করার কিংবা কারও সাথে আমাকে নিয়ে বলার ইচ্ছে কিংবা সময়ই তোমার নেই। তবুও বলে রাখলাম আরকি! আর কখনও-কখনও একেবারে উধাও হয়ে যাও কেন? তুমি কি হাওয়ামানব নাকি? কিছু মানুষ কখনও বোঝেই না, তাদের একটা পোস্টের জন্য কত মানুষ অপেক্ষা করে। সে স্ট্যাটাস দিলেই তা দেখে মানুষ বুঝে নেয়, সে কোথায় আছে, কেমন আছে, সব কিছু কেমন চলছে………..এছাড়া তো আর কোনও উপায়ও নেই জানার, তাই না? ওই মানুষটা বোঝেই না, সে ফেসবুকে না থাকলে কারও-কারও কাছে এই ফেইসবুকটা অর্থহীন মনে হয়, দিনের মধ্যে কয়েকশবার ফেইসবুকে ঢোকে শুধু সে কেমন আছে তা দেখার জন্য। মানুষটা বোঝেই না নিজের অজান্তেই কারও-কারও সারাটাদিনই এলোমেলো করে দেয় সে………এই যে! একটা কথা। তুমিও প্রোফাইল পিকে বাংলাদেশ অ্যাড করে দাও। আমার কোনও কথাই তো শোনো না। এই কথাটা রেখো, কেমন? জানি, অন্যায় আবদার…..তবুও। নিজের জন্য বলছি না, তোমার জন্যই বলছি। ওটা করলে সবার কাছে তোমার গ্রহণযোগ্যতা আরও একটু বেড়ে যাবে। সকালে ঘুম ভাঙতেই প্রিয় মানুষের টেক্সট পাওয়াটা সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতিগুলোর একটা। টেক্সট তো আর দেবে না, ফেসবুকে প্রতিদিন অন্তত ঢুঁ মেরো, কিছু না কিছু পোস্ট কোরো, আমার জন্য হলেও! আমার একটা দিনকে সুন্দর করে দিলে তো আর তোমার কোনও ক্ষতি হয়ে যাবে না!

তোমার পোস্টটা দেখলাম। অনেকগুলি কথা এতো বেশি মিলে গেছে আমার সাথে, পড়তে গিয়ে বারবার চমকে উঠছিলাম, ভাবতে ইচ্ছে করছিল, আমাকে ভেবেই লিখেছ! আমি অবশ্য ‘বেলাশেষে’ দেখিনি। তাই বুঝতে পারছি না, ওই মুভির ইফেক্ট পড়েছে কিনা তোমার লেখায়। যা-ই হোক, তুমি মেয়েদের খুব ভালো বোঝ। এটা ভাল…তোমার বউ সুখী হবে। ওর জন্য বুকভরা হিংসা আর মনভরা শুভ কামনা। ভাল কথা, গতকাল রাতে তোমার ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ দেখলাম। অসাধারণ মুভি! ‘দ্য পিয়ানিস্ট’ দেখার রেশটা ওটার কাছে কিছুটা ম্লান হয়ে গেছে! তোমাকে ধন্যবাদ। আচ্ছা, যদি বলি, একটা গান সিলেক্ট কর, যেটা আমাকে ডেডিকেট করবে, সেটা কোনটা হবে? কর না একটা! আমি নাহয় তোমার তেমন কেউ নই, কিন্তু তুমি তো আমার অনেক কিছু! কী? করবে না? আচ্ছা, আমি কষ্ট পেলাম না। আমিই আমাকে ডেডিকেট করলাম। বঁধুয়া নিদ নাহি আঁখিপাতে। তুমিও শুনে নিয়ো, কেমন? কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের নয়, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায় আর স্বাগতালক্ষ্মী দাসগুপ্তের কণ্ঠে। তোমাকে আরও একটা গান ডেডিকেট করছি। একা মোর গানের তরী। শ্রাবণীর কণ্ঠে শুনো। আমাকে জানাতে হবে না, কেমন লাগল। আমি জানি, তোমার ভাল লাগবে। তুমি আমাকে চিন না, আমি তোমাকে চিনি। মজার না? আর আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না, শুধু তুমি ভাল থেকো। সত্যি বলছি, তোমাকে ভাল থাকতে দেখলেই আমি ভাল থাকি। মাঝেমাঝে বিশ্বাস করতে ভাল লাগে, তুমিও ভালোবাসো। পরক্ষণেই মনে হয়, ভালোবাসার মানুষকে এতো কষ্ট দেওয়া যায়? তার কান্না দেখেও এতোটা নির্লিপ্ত থাকা যায়? এতো বেশি অবহেলা করা যায়? এমন কাজ করা যায়, যেটা শুনলে হয়তো সে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে? এক সাথে অনেককে ভালোবাসা যায়? একই কথা একই সময়ে দুইজনকে বলা যায়? একইভাবে চোখের মণি নাচিয়ে দুইজনের সাথে সময় কাটানো যায়? ……..উত্তর দিতে পারবে প্রতিটি প্রশ্নের? আমি জগতের আর কারও ভালোবাসার সাথে তুলনায় যাবো না, তবে আমার ঈশ্বর জানেন, এইভাবে কখনও কাউকে ভালোবাসিনি। এতোটা ছোটও কারও কাছে হইনি…….নিজের উপরেই রাগ হয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এমন একজনকে ভালোবাসি, যার কোনটা সত্যি আর কোনটা ছলনা সেটাই বুঝি না। ভালোবাসা এমন হয় নাকি? ভালোবাসা-ভালোবাসা করে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি, আর তার কোনও খোঁজই নেই! ভালোবাসতে পারে না, ভালোবাসাতে পারে! ঢং! লাগ যা গালে, সোচ না সাকে, আগার তুম সাথ হো, ম্যয় রাহু ইয়া না রাহু……..এই চারটা গান তোমার জন্য। আর কোনওদিনই টেক্সট করবো না। (এইবার একদম সত্যি-সত্যি!) ভাল থেকো। আর আমি? জানি, তুমি সেটা ভাবোও না। তবুও বলছি। কোনও একদিন সত্যি-সত্যি ভাল থাকব। কত দিন ভাল থাকি না! সবাইকে ভাল থাকতে দেখলে আমারও ইচ্ছে করে, আমিও সবার মতো ভাল থাকি। একদিন খুব ব্যস্ত হয়ে যাবো। কাউকে মনে করার সময়ই থাকবে না আমার। আমিও কারও জন্য সময় বের করে নিতে ভুলে যাবো। আসি। অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি।

বলেছিলাম, আর টেক্সট করবো না। কথাটা রাখতে পারছি না। আই অ্যাম নট সরি। কারণ, দোষটা আমার না, তোমার। তুমি নিজেই চাচ্ছ, আমি তোমাকে বিরক্ত করি। ওই পোস্টের মানে কী? এতোগুলি প্রশ্ন কেন? আমি তো কখনওই তোমার কাছ থেকে প্রশ্ন চাইনি, সবসময়ই উত্তর চেয়েছি। উত্তর দিতে পারলে দেবে, দিতে না পারলে কিছুই বলবে না। তোমাকে তো আর কেউ বাধ্য করছে না উত্তর দিতে! প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন কেন? প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন মানেই হল, প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া। তোমার প্রশ্নগুলি আবারও আমার ভেতরটা নাড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাই আবারও ছুটে এলাম। আমি কী করবো? আমি তো আর তুমি নই। আমি আমিই। আমি তোমার কথাগুলিকে নিয়ে ভাবতে থাকি, ভেবে কিছু বের করতে না পারলে আমার ঘুম হয় না। দিনের পর দিন নির্ঘুম রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছ কখনও? হলে, রাত নিয়ে একটাও ভাল কথা মাথায় আসত না। আচ্ছা বলতো, তুমি আমাকে হেল্প না করলে আমি তোমাকে ভুলে থাকব কীকরে? তুমি না চাইলে তোমাকে ভুলে যাওয়াটা আমার জন্য পুরোপুরিই অসম্ভব! কী? হেল্প করবে না আমায়? হেল্প না করলে কিন্তু আমি মনে-মনে একটুখানি খুশিও হয়ে উঠবো! তুমি কি তা-ই চাও? একটা পরামর্শ দিই? সত্যি-সত্যি যেদিন কাউকে ভালোবাসবে, এতোটাই যে, ওকে সারাজীবনই পাশে রেখে দেয়ার কথা ভাববে, মানে তাকে বউ বানাবে বলে ঠিক করে ফেলবে, তার কাছে অন্তত নিজেকে লুকিয়ো না। ইগো বড় খারাপ জিনিস, ভালোবাসাকে ধ্বংস করে দেয়। অন্তত ওই একটা মানুষের কাছে হেরে গিয়েই দেখ, হারার মধ্যে যে আশ্চর্য সুখ, জয়ের মাঝেও সেই সুখ নেই। তোমাকে পরাজিত হওয়ার অগ্রিম অভিনন্দন! শিষ্য হয়ে গুরুকে পরামর্শ দেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। একটা কথা অনেক দিন ধরে বলবো-বলবো ভাবছি……কী এক সংকোচে আর বলা হয়ে ওঠে না। তুমি তোমার লেখায় অনেক বারই লিখেছ, যাকে সত্যি-সত্যি ভালোবাসো, তাকে ভালোবাসি বলতে সারাজীবন লেগে যায়। জিভ আড়ষ্ট হয়ে আসে, তবুও কোনওভাবেই বলা হয় না…..এই ধরনের কথা যতবারই তোমার লেখায় পড়ি, খুব অপমানিত হই। মনে হয়, আমি ভালোবাসি-ভালোবাসি করি বলে, আমাকেই শোনাচ্ছ ওসব। আমি সত্যিই এতো সস্তা টাইপের মেয়ে না। অরণ্য ছাড়া অন্য যে কেউ…..যে কেউ হয়ে যদি একবার সামনে আসতে পারতে, তবে বুঝতে……..সেই প্রথমদিন থেকেই তোমায় ভালোবাসি। যতবারই এটা ভাবি, ততবারই মনে হয়, তুমি খুব করে বকে দিয়ে সোজাসুজি চোখের দিকে তাকিয়ে বলছ, “এই মেয়ে! শোনো! প্রথম দিন থেকেই কাউকে ভালোবাসা যায় না। ওটা ভালোবাসা নয়, মোহ। তুমি ভুল ভাবছ। তুমি ভালোবাসো না, ভালোবাসো বলে ভাবছ!” তবুও নিজের হৃদয়কে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়। প্রথম দিনের মুগ্ধতা এতোদিনেও একটুও ফিকে হয়নি এক মুহূর্তের জন্যও। প্রতিটি মুহূর্তেই তোমাকে নতুন-নতুন করে আবিষ্কার করি, প্রেমে পড়ি। তবে কি এটা ভালোবাসা নয়? তুমিই বল! দেখ, শুধু ভালোবাসি বলে….নইলে সে কবেই……! ভালোবাসলে বিশ্বাস করতে হয়…..ভালোবাসলে অন্ধ হতে হয়….ভালোবাসলে কষ্ট পেতে হয়…….ভালোবাসলে শুধুই ভালোবেসে যেতে হয়! ধ্যত্ মেয়েমানুষ! না খেয়েও থাকতে পারে, কিন্তু ভালোবাসা ছাড়া থাকতে পারে না!

যখন দেখি, তোমার কাছে আমার একটা প্রশ্নেরও উত্তর নেই, তখন কেন জানি না, খুব অসহায় লাগে, কেমন যেন শূন্য-শূন্য লাগে, নিজেকে খুব ক্ষুদ্র মনে হয়…….বড় মামা কেন এমন মেয়ের নাম রেখেছিলেন পূর্ণা, যাকে সারাটা জীবনই শূন্য হয়ে কাটাতে হচ্ছে?……..তুমি ভাল থেকো। আমার অনেক কথায় হয়ত কষ্ট পেয়েছ। পারলে ক্ষমা করে দিয়ো। তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য একটা কথাও বলিনি।……. মাঝেমাঝে অবচেতন মনে চলে আসে, আহা! যদি আমার মতন করে সেও জ্বালাত আমায়! আমাকে তুমি কখনওই জ্বালাতে পারোনি, পারবেও না। আমি অতোটা সৌভাগ্যবতী না। কিছু শেষকথা দিয়ে শেষ করি…..শেষ শুভকামনা: সবচেয়ে সুন্দর লাভস্টোরিটা তোমার হোক, সবচেয়ে মিষ্টি মেয়েটা, সবচেয়ে সুন্দর মনের মেয়েটা তোমার বউ হোক, সবচেয়ে সুন্দর দাম্পত্যজীবন তোমার হোক, ঠিক যেমনটি তুমি স্বপ্ন দেখ……সেরা হয়ে থাক সবসময়, প্রতিটি ক্ষেত্রেই…..সবার ভালোবাসার মানুষ হয়ে থাক, ভালোবাসার মাঝে থাক……ভালমানুষ হয়ে থাক……স্বপ্নের রাজপুত্র হয়ে থাক…..সবচেয়ে সুখী মানুষটি হয়ে থাক……তুমি ভাল থাক, আমি যেমনই থাকি……..শেষকথাটি ‘বিদায়’ বলতে ইচ্ছে করছে না, ‘ভালোবাসি’ বলতে ইচ্ছে করছে…..ভালোবাসি!

তোমার চোখ ভীষণ সুন্দর, মণিটা কীরকম যেন রহস্যময় ঢঙে নাচে। কথাটি তো আগেও শুনেছ, না? তুমি আমার সব পেয়ে গেছো! এভাবে করে আর কেউই কোনওদিনই পাবে না। আমার সমস্ত অস্তিত্বজুড়ে শুধুই তোমার আনাগোনা। আমি একটা মুহূর্তের জন্যও তোমাকে ভুলে থাকতে পারি না। কোনও কাজে মন দিতে পারি না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই নিয়ে বসে থাকি, পড়া হয় না। ক্লাসের মাঝখানেই হঠাৎ তোমার কথা মনে এসে পড়ে, আমি আর ক্লাসে মন বসাতে পারি না। নামাজ পড়তে গেলে ভুল হয়ে যায় প্রতি ওয়াক্তেই। জানি, তুমি এই শহরে নেই, তবুও রাস্তায় বের হলেই তোমাকে খুঁজতে থাকি। যখনই ঢাকায় আস, আমার পুরোটা সময় খুব অস্থিরতায় কাটে, মনে হতে থাকে, এই বুঝি তুমি সামনে এসে পড়বে! (তুমি ঢাকায় আর এসো নাতো!) ফোনের দিকে অনর্থক তাকিয়ে থাকি, মনে হতে থাকে, তোমার ফোন আসবে। বলবে, “দেখা কর।” আমি কী বলবো তখন? উত্তর খুঁজতে থাকি। বাইরে গেলে রিকশা, গাড়ি যা-ই যাক না কেন পাশ দিয়ে, ওখানের মানুষগুলির মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। মনে হতে থাকে, এই বুঝি তুমি আমাকে ক্রস করে চলে যাবে, আমি দেখব না। তোমার কথা ভাবতে-ভাবতে ঘুমিয়ে যাই, আবার জেগে উঠি তোমার কথা ভাবতে-ভাবতে। তোমার মুখটা আমার চোখের সামনে থেকে সরে না কখনওই। তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে কত কথা বলে যাই। তুমি যদি শুনতে সেসব, ভীষণ লজ্জা পেয়ে যেতাম! তুমিও নানান অদ্ভুত গল্প বলে যাও। আমি চোখ বন্ধ করে তোমার বুকে মাথা রেখে চুপ হয়ে শুনতে থাকি। আমার চুলের, ঘাড়ের, কানের পেছনের, চোখের ঘ্রাণে তুমি বুঁদ হয়ে থাক ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আমি তোমার শরীরের গন্ধ পাই ঘুমের মধ্যেও, তোমার স্পর্শ কল্পনা করলে এলোমেলো হয়ে যাই। সারাদিনই যে কতবার ফেসবুকে ঢুকি তুমি আছ কি না জানতে, কী করছ দেখতে! একটু পরপর মেসেঞ্জার চেক করতে থাকি। কখনও-কখনও অন্য কাউকে তুমি ভেবে হ্যালো দিয়ে লজ্জায় পড়ে যাই। তুমি যে যে রঙের পোশাক পড়ে ছবি তুল, দোকানে গেলে সেরকম পোশাক খুঁজে বের করে ছুঁয়ে-ছুঁয়ে দেখি। তোমার পুরনো সব লেখা আমি অন্তত ৩বার পড়ে ফেলেছি। তোমার পছন্দ-করা গানগুলিই আমার প্রিয় গান হয়ে গেছে। প্রায়ই অনুভব করতে পারি, আমি সত্যি-সত্যি পাগল হয়ে যাচ্ছি! কারও সাথে কথা বলতে ভাল লাগে না, বলিও না। রুদ্র আমাকে অনেকদিন ধরেই আর চিনতে পারে না। তুমিই এখন আমার জীবনে সবচাইতে বড় সত্য। কতবার চেষ্টা করেছি, ভুলে যেতে! পারিনি। আরও বেশি করে মনে পড়ে যায়। আমার পৃথিবীতে এখন আমার চাইতে বড় সত্য তুমি। আমার মধ্যে আমি থাকি না থাকি, তুমি থাকোই! প্রতিদিন নিজেকে কথা দিই কঠিন-কঠিন সব শপথ করে, আর নয়! ওকে ভুলে যাবো। টেক্সট লেখার জন্য আমার আঙুল কিবোর্ড অবধি যাবে না আর কোনওদিনই! কিন্তু একটা সময় পর সব প্রতিজ্ঞা কাঁচের চুড়ির চাইতেও সহজে ভেঙে যায়। আমি আবার এলোমেলো হয়ে পড়ি। আর পারি না নিজের উপর নিয়ন্ত্রণটা ধরে রাখতে। বুকের ভেতর থেকে আমার নাম ধরে তুমি আমায় ডাকতে থাক। সে ডাক উপেক্ষা করার শক্তি আমার নেই। তোমাকে রাতে মেসেঞ্জারে দেখলে আমার ইচ্ছে করে তখুনিই পাখির মতো উড়ে তোমার ঘরে চলে যেতে, তোমাকে বাবুদের মতো আদর করে বুঝিয়ে-শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে। তোমাকে সকালে অফিসে যেতে হবে ঠিক সময়ে, সময়মত ঘুমিয়ে না পড়লে কম ঘুমিয়ে হলেও অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছতে হবে। তোমার স্বপ্নে চলে আসতে ইচ্ছে করে। এসে তোমাকে নিবিড় ভালোবাসা আর মমতায় ভরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। তোমাকে মনখারাপ করে থাকতে দেবো না, তোমাকে অসুস্থ হতে দেবো না। এসব আমার ইচ্ছে। তুমি তো অতো কমেন্টের রিপ্লাই কর না, কিছু-কিছু কমেন্টের কর। আমি আগে থেকেই অনুমান করতে পারি, কোন কমেন্টটা তোমার চোখে পড়লে তুমি কিছু একটা লিখবেই! কী লিখবে, সেটাও প্রায়ই মাথা খাটিয়ে বের করে ফেলি। মজার ব্যাপার হল, আমার প্রেডিকশন মিলেও যায়। আমি তোমাকে খোলা বাংলা বইয়ের মতো পড়তে পারি, অরণ্য। আর কেউ অমন করে পারবে না। তোমার বউও না। আমি তো বিয়ে করবোই না, কারও বউ হবো না। তুমি করে ফেলবে, আমি জানি। তোমাকে যে পাবে, সে কোনওদিনই আমার দশভাগের একভাগও তোমাকে বুঝতে পারবে না। এখানেই আমার জিত! আমি সারাজীবনই তোমাকে ভালোবেসে যাবো, তুমি জানবে না কোনওদিনই। আমি তোমাকে লুকিয়ে-লুকিয়ে আদর করবো, তুমি দেখবে না। আমি তোমাকে আড়াল থেকে দেখবো, তুমি ধরে ফেলতে পারবে না। আমি তোমার জন্য নিভৃতেই প্রার্থনা করে যাবো, কেউ ওটা ভাবতেও পারবে না কখনও। আমার অসীম শুভকামনাতেই তুমি জীবনের বাকি পথটা চলবে, তুমি ওটা বুঝতেই পারবে না। ………… খুব রাগ হয় তোমার উপর! ভালোবাসি তো, তাই। তুমি নাহয় বাস না, আমি তো বাসি! পচা লোক আমার ইয়া লম্বা-লম্বা টেক্সটগুলি শুধু দেখে-দেখে চুপিচুপি চলে যায়। যেদিকে বৃষ্টি, সবসময় সেদিকে ছাতাটা না ধরলে, মানুষের কী এমন হয়? হোক না ভেজা—মাঝেমাঝে বৃষ্টিতে! এতো স্বার্থপর হয়ে কী লাভ এই নশ্বর পৃথিবীতে? জীবনে বাস্তবতাকে বুঝতে পারা এবং না-পারা, দুইই যন্ত্রণার।

ভালোবাসো না কেন? প্রশ্নটা প্রেমিক অরণ্যকে করাই যায়, নাকি? তোমার মেজাজমর্জির খোঁজ দিয়ো তো মাঝেমাঝে! এই অনুরোধটা তো আনপ্রেডিক্টিবল অরণ্যকে করাই যায়, নাকি? কত নিয়ম বানাও নিজের মতো করে, কত নিয়ম ভাঙো নিজের মতো করে। মানি না তোমার ব্যস্ততা! আমার উত্তর চাই, উত্তর! বুঝলে? এখন থেকে আমাকেও মিসকরা শিখতে শুরু করে দাও। একা-একা মিস করতে-করতে আমি এখন ক্লান্ত! আর পারছি না গুরু! সেই কবে থেকে শুরু! রিপ্লাই দাও, রিপ্লাই দেয়া প্র্যাকটিস করো। কেন দেবে? যে কারণে বারবার তোমাকে টেক্সট করবো না শপথ নিয়েও করে ফেলি, সেই একই কারণে। কারণটা নেই? না থাকলে নিজের মধ্যে তৈরি কর। দেয়াল না থাকলে কি লোকে খোলামাঠে থাকে? দেয়াল তুলে ঘর বাঁধে না? ভাবছি, একটাই সন্ধ্যা। অথচ তোমার সন্ধ্যা তোমার মতো, আমারটা আমার মতো। দুটোই আলাদা, আবার একই! মজার না? গোঁয়ার তুমি কখনও দুটো সন্ধ্যাকে এক হতে দেবে না। হুহ্! যত্তোসব ঢং! এই শোনো! মনখারাপ হলে কেন মনখারাপ, আমাকে বলতে হবে। মনভাল হলে কেন মনভাল, সেটাও বলতে হবে। আমাকে সব বলতে হবে। একদম সব! মনে থাকবে, গোল্ডফিশ? মেয়েদের সব টেক্সটের রিপ্লাই দাও কেন? অনেক মেয়েই তোমাকে অন্যদের কাছে ছোট করতে টেক্সট করে, অন্যদেরকে চ্যাটহিস্ট্রি দেখায়, তোমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টায় মেতে ওঠে। আমার বুঝি খারাপ লাগে না? রুদ্রও ২টা মেয়ের নামে আইডি খুলে তোমার সাথে গল্প করে। তুমি বুঝতে পারো না, কারণ কয়েকজন মিউচ্যুয়াল ফ্রেন্ডও আছে ওগুলিতে। তুমি নাহয় ব্যস্ত, কিন্তু সব ছেলেই তো আর ব্যস্ত না। কারও-কারও হাতে ফালতু কাজ করার মতো অফুরন্ত অবসর। ওরা এসব কথা খুব দ্রুতই ছড়িয়ে দেয়। তুমি কাউকে রিফিউজ করলে, আর ও অমনি ক্ষেপে গিয়ে ওর বান্ধবীকে দিয়ে তোমাকে ট্র্যাপে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করছে। কেউ তোমাকে রিফিউজ করল, আর সে খুশিতে সে ব্যাপারটা রীতিমতো মাইকিং করে সবাইকে জানিয়ে দিল! কোনও ছেলে তোমার প্রতি ঈর্ষান্বিত, সাথে-সাথেই ও সব কাজ বাদ দিয়ে তোমার ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লেগে গেল। আরেক ছেলের গার্লফ্রেন্ড তোমার ফ্যান, হয়তো তুমি মেয়েটাকে চিনই না, কিন্তু সেই ছেলেটা ধরে নিল, ওর গার্লফ্রেন্ড যে তোমার কথা ভাবে, সেই দোষ তোমার, আর অমনিই তোমাকে হেয় করার চেষ্টায় সারাক্ষণই নানান প্ল্যান করতে লাগল! কেউ-কেউ কোনও কারণ ছাড়াই বেকার সময় কাটানোর বেটার কোনও অপশন না পেয়ে তোমার পেছনে কুকুরের মতো ঘুরঘুর করে আর তোমার খুঁতগুলি বের করার ধান্দায় থাকে। বলতে পারো, ওরা জীবনে কিছু করতে পারবে না। তুমি বোঝোই না, ওরা জীবনে কিছু করতে চায়ও না! কারও-কারও জীবন কাটে করে, কারও-কারও জীবন কাটে দেখে। যারা করতে পারে, তারা করে; যারা পারে না, তারা দেখে, হিংসায় জ্বলে, আজেবাজে কাজ করে নিজেদেরকে আরও নিচে নামিয়ে ফেলে! ওই নামাতেই ওদের যত সুখ! এতো বোঝো, আর এসব বোঝো না? আর কক্ষনো করবে না ওরকম! মনে থাকবে তো? বেশি রেগে গেছো এসব শুনে? একটু হাসো না! একটু হাসলে কী হয়? হাসলে তোমাকে ভাল দেখায় তো! মাঝেমাঝে ভাবি, মানুষের এতো-এতো রূপের মধ্যে কোন রূপটা সত্য?

‘শয়নযান’ পড়েছি তো! ভাল লেগেছে। ফোন করে থ্যাংকস বলতে চাই। কলটা রিসিভ করবে? ‘শবনম’ পড়ছি। ইদানিং কী হয় জানো, খুব রোম্যান্টিক কিছু পড়লেও চোখ দিয়ে পানি চলে আসে, আর কষ্টের কথা পড়লে তো আসেই! চোখের পানি টপটপ পড়তে থাকে। খুব অল্পতেই পড়ে। অশ্রু এতো সস্তা হতে হয়, বলো! যার চোখের পানি যত সস্তা, সে তত সস্তা। কী করি বলতো? আমি এরকম হয়ে যাওয়ার কথা ছিল না। জীবনটা এমন না হলেও তো পারত! ভালই তো ছিলাম, নিজের মতো ছিলাম, পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সবাই যখন নিজের দুঃখের কথা বলতো, তখন আমার মনে হতো, আমার কোনও দুঃখ নেই, আমি কত সুখী! শুধু আমার না, আমার চারপাশের মানুষগুলিরও মনে হতো, আমি খুব সুখী। সত্যিই ভাল ছিলাম। কেন তুমি এলে? এসে সবকিছু এলোমেলো করে দিলে! তুমি আমার স্বপ্নে ছিলে, কল্পনায় ছিলে আগের জন্মেও। কত খুঁজেছি তোমায়! অনেক দিন ধরে, অনেক বছর ধরে। কই, তখন তো আসোনি! আর আসবেই বা কেন? তুমি না স্বপ্নের রাজপুত্র? স্বপ্নের রাজপুত্রদের স্বপ্নেই থাকতে হয়। এটাও জানো না? কেন স্বপ্ন পেরিয়ে বাস্তবে এসে আমাকে এমন বিপদে ফেলে দিলে? এলেই যদি, এতোটা কাছে কেন এলে? আমি নাহয় দূর থেকেই তোমাকে ভালোবেসে যেতাম! ভাবতাম, এই তো সেই, যে আমার স্বপ্নে বাস করে। অতোটুকুই তো ভাল ছিল! আর কিছুই তো চাইনি আমি, বিশ্বাস কর, এখনও চাই না। যা কিছু পাওয়া যায় না, কেন তা কিছু হারানোর ব্যথায় কাঁদতে হয়? বলতে পারো? আমার ভাবতেও খুব কষ্ট হয়। সব কিছুই খুব গোছানো ছিল, সব কিছুই এখন এলোমেলো হয়ে গেছে! সারাটা দিন, সারাটা রাত। আমার কাছে সব রং, সব গন্ধ, সব স্বাদ, একই রকমের লাগে। এ কী হল? পাগলের প্রলাপ মনে হচ্ছে? একদিন যদি সত্যি শোনো, আমি পাগল হয়ে গেছি, সেদিন কেমন লাগবে তোমার? সবচেয়ে বড় সমস্যাটা কী জানো? তোমার মুখটা চোখের সামনে থেকে সরেই না। চোখ বন্ধ করলে তুমি, খুললেও তুমি। বইয়ের পাতায় তুমি, গানের সুরে তুমি, গল্পের মধ্যে তুমি, কবিতার ছন্দে তুমি, আমার ছায়ায় তুমি, জানালার বাইরেও তুমি………… সব জায়গায় শুধুই তুমি! তুমিময় এই জগতটার বয়স ওই বৃদ্ধ অশ্বত্থগাছের চেয়েও বেশি। আমি এর নেশা আর মায়া থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসতে পারছি না কিছুতেই। খুব চেষ্টা করি, বিশ্বাস করো! তবুও পারি না। তুমি ভাল থেকো। হাসলে তোমাকে সুন্দর লাগে, লজ্জা পেলেও সুন্দর লাগে, দুষ্টুমি করলেও সুন্দর লাগে, তোমার দিকে শুধুই তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। এইতো সেদিনই মনে হচ্ছিল, আর কিছু নয়, স্রেফ তোমার দিকে তাকিয়ে থেকেও জীবনটা কাটিয়ে দেয়া যায়! খুব খুব খুব ভাল থেকো। জানি, ভাববে না, তবুও মন চাইছে বলতে, পূর্ণার জন্য ভেবো না। তুমি ভাল থেকো, সেও ভালথাকার ব্যবস্থা একটা করে নেবে। আমাকে ভেবে কেঁদো না কখনওই, আমি তোমাকে ভালোবাসি—কাঁদাতে নয়, হাসাতে। এই জানো, তুমি বিপদে পড়ে যাবে, নয়তো সব ছেড়েছুঁড়ে একেবারে তোমার কাছে চলে আসতাম। সত্যি বলছি! আচ্ছা, তুমি তো অনেক ভালমানুষ! তুমি কি একটু তোমার ঈশ্বরকে বলবে, কোনওভাবে আমাদের মিলটা করিয়ে দিতে? আমি অনেক বলে দেখেছি, আমার কথা শোনে না। ঈশ্বরের ওপর আমার অনেক রাগ। আমার কিছু ভাল লাগে না। আগে খুব ভাল ছিলাম, খুব খুব খুব ভাল! তোমার জন্য আমার মায়া লাগে, কান্না পায়। তুমি আমার হৃদয়বাড়িতে ঢোকো দিনে অন্তত লক্ষবার, কিন্তু তোমার ওই বাড়িতে আমাকে একটিবারের জন্যও ঢুকতে দাও কি? আমি কাকে এসব বলছি? আমার কেউ নেই। আমার কেউ থাকলে তো মাঝেমধ্যে হলেও আমার খোঁজ নিত! ভুলেও নেয় নাতো! তোমাকে ‘তুমি’ বলে আমি দূরত্বটা কমিয়ে দিয়েছি একতরফাই। যাকে যেমন করে ডাকা উচিত, তাকে তেমন করে ডাকলে/ ভাবলে অহেতুক কষ্ট পেতে হয় না। ‘আপনি’ থেকে ‘তুমি’তে যাওয়ার রাস্তাটা ওয়ানওয়ে রোডের মতো, উল্টো রাস্তায় চলা ভীষণ কষ্টের কাজ! কমিয়েছি তো কমিয়েছিই! আর বাড়াবো না। দেখি কী হয়! বিরক্ত হচ্ছ? যাক! হোক বিরক্তি হয়ে, তবুও তো কোনও একটাভাবে হলেও পূর্ণা তোমার মনে থাকে! কোনও একদিন সময় করে একটা বিশাল স্বপ্নে আমাকে দেখবে? একবারের জন্য হলেও? প্লিজ?

আমার কী মনে হয়, জানো? দুটো সময়ে একটা ছেলের একটা মেয়ের প্রতি ভালোবাসা এবং মায়া জেগে ওঠে। এক। যখনই মেয়েটি ওর সামনে যায়। দুই। যখনই মেয়েটি ওর কাছ থেকে দূরে সরে যেতে চায়। এর মাঝের সময়টিতে মেয়েটির কোনও অস্তিত্বই থাকে না ছেলেটির জীবনে। আমি কোনটা করবো? কেন কারও-কারও মধ্যে ভালোবাসা জাগে না, জাগাতে হয়? এই! ওরকম রাগ-রাগ কভার পিক দিলে কেন? একই জায়গায় বসা হাসি-হাসি ছবিও আছে তো! আর মোটা হয়ো না, আরও মোটা হলে দেখতে পচা লাগবে। ছবি তোলার সময় ওরকম ঝুঁকে থেকো না। গতকালকের অ্যালবামের ২৩ নম্বর ছবিতে বামহাতের উল্টো পিঠ দিয়ে দাঁতগুলি ওরকম বিশ্রীভাবে ঢেকে ফেলার বুদ্ধি কে দিয়েছে? ফটোগ্রাফার? ওকে বলে দিয়ো, ও যাতে তোমার ছবি আর কোনওদিন না তোলে। বৃষ্টি হচ্ছে। আম কুড়াবে? ভিজবে আমার সাথে? ভেজার সময় ‘আজ হৃদয়ে ভালোবেসে, লিখে দিলে নাম তুমি এসে’ গানটা করবে। কী, করবে না? তুমি কি জানো, প্রতীক্ষা করতে কেমন লাগে? এমনকিছুর জন্য প্রতীক্ষা, যা কোনওদিন আসবেই না? এমন কারও ভাবনায় মনটা ভরে ফেলা, যার আমাকে মনেই থাকে না? ‘সাত পাকে বাঁধা’ দেখেছ না? সুচিত্রার শেষ স্বগতোক্তিটা মাথায় খুব বাজছে: “সাত পাকে বাঁধনের চেয়ে প্রতীক্ষার এ বাঁধন কম কীসে?” তোমায় আমি এ প্রতীক্ষার বাঁধনে সারাজীবনের জন্য বেঁধে নিলাম। তোমাকে যদি বানর, ফাজিল, হনুমান, গাধা, পাগল, ছাগল, হাঁস, মুর্গি, বেড়াল, ইঁদুর, কাঠবেড়ালের ছানা, শেয়াল, ভাল্লুক, মশা, টিকটিকি, মাকড়শাসহ আরও অনেক বিশ্রী-বিশ্রী নামে ডাকি, তুমি কি রেগে যাবে? গেলে যাও! আমার কী? হুহ্! বেশি-বেশি টকটক আম খাবে, ভিটামিন সি আছে, স্মরণশক্তি ভাল হবে, মানুষকে ভুলে যাবে না। চাইলে কচি-কচি আমপাতাও চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারো। আমার সারাটা সকাল, মেঘলা দুপুর, বৃষ্টি, তোমাকে দিলাম! শ্রীকান্তকে একটু চেঞ্জ করে গাইলে উনি কি কষ্ট পাবেন? এই! তুমি কোনওদিনও সত্যি-সত্যি দূরে চলে যেয়ো না, কেমন? না বুঝিয়ে দিলে আমি কিছুই বুঝি না। যদি কোনওদিন ভালোবাসো, মনে-মনে ভালোবেসো না, বলে দিয়ো, ‘ভালোবাসি’। আমি মনের কথা ধরে ফেলা ছেড়ে দিয়েছি। যারই মনের কথা ধরে ফেলি, সেই কষ্ট দেয়। অতএব, ওটা বাদ! উফ! মশা কামড়াচ্ছে! শালার মশা! রক্ত বোঝো, প্রেম বোঝো না! কখনও-কখনও মানুষ খুব অসহায় হয়ে যায়। কেন, সেটা সে নিজেই জানে না। চোখের পানি শ্রাবণের ধারার মতো নামে। এই মশার কামড় খেয়ে ঝাপসা চোখে তোমাকে লিখছি। তুমি বুঝবে না, ভালোবাসা কত কায়দা করে সীমাহীন কষ্টও করিয়ে নেয়! মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও মানুষ বিষের পেয়ালা হাতে নিয়ে ভাবে, একটু চেখে দেখিই না কী হয়! কষ্ট ভুলতে ঘুমিয়ে পড়তে পারলে ভাল হতো। হায়! ওটাও তো পারি না! ঘুমিয়ে পড়াটাও যে ভীষণ কষ্টের কাজ, এটা আগে বিশ্বাস করতে পারতাম না। এখন পারি। ‘বিদায়’ বলে দিলে কি কষ্ট কমে যায়? নাকি, আরও বাড়তে থাকে? আচ্ছা, বিদায় বন্ধু! ভাল থেকো। ভুলে যেয়ো আমাকে। চলে যাচ্ছি। জানি, এখন তুমি ভাবছ, কেন যাচ্ছ? আমি যাচ্ছি, কারণ, আমি এমনই। কিছু কথা কাউকে বলা যায় না, কিছু ব্যথা কাউকে দেখানো যায় না, কিছু অনুযোগ কাউকে করা যায় না, শুধু বুকের মধ্যে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। কিছু কষ্ট লুকিয়ে রেখে দিতে হয়, ওরা যে সুখের চেয়েও দামি! কারও জন্য যেটা ক্ষণিকের মায়া, অন্য কারও জন্য হয়তো সেটাই জীবন, এটাই অনেকে বোঝে না। জীবনের সমীকরণটা কখনও-কখনও খুব বেশি কঠিন হয়ে যায়। এই এক আমি কতগুলি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছি, বিরক্ত করছি। অরণ্য, রুদ্র, পূর্ণা। আরও কাউকে-কাউকে, যাদেরকে আমার দুর্ব্যবহার সহ্য করতে হয় কোনও কারণ ছাড়াই। আচ্ছা, তুমি কি আমাকে ভাল বাসোই না? খুব জানতে ইচ্ছে করে! ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকলে কি অন্য কারও কথা ভেবে কষ্ট পাওয়া যায়? কিন্তু আমি তো পাচ্ছি! এর মানে কি এতোগুলি বছর ধরে আমি আসলে ওকে ভালোবাসছি না? তবে এই রিলেশনটা কী আসলে? কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া/ তোমার চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া/ চরণে ধরিয়া তব কহিব প্রকাশি/ গোপনে তোমারে, সখা, কত ভালোবাসি। আমি আসলে কাকে ভালোবাসি? আর নয়! অনেক হয়েছে! তুমি ভাল থেকো। আর মোটা হয়ো না। নিজের প্রতি যত্ন নিও। খাওয়াদাওয়া করো ঠিকমতো। তাড়াতাড়ি একটা বিয়ে করে ফেলো বেশি বাছাবাছি না করে। যে তোমাকে ভালোবাসবে, সে তোমার মনের মত করে নিজেকে গড়ে নেবে। তোমার বউ দেখতে খুব ইচ্ছে করে। দেখে ঠিক কতটা কষ্ট পাবো, তা ভাবতেও ভয়ে গা শীতল হয়ে যাচ্ছে, তাও দেখতে ইচ্ছে করে। অদ্ভুত ইচ্ছে, তাই না? আর বিরক্ত করব না তোমাকে। খুব ভালো থেকো। তোমার হাসি এক মুহূর্তে আমার কান্না থামিয়ে দিতে পারে, মন ভাল করে দিতে পারে, তাই ভাল থেকো, ভালোবাসা।

কিছু না। এমনিতেই আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। তোমার কথা মাথায় হাতুড়ির মতো নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করেই যাবে, করেই যাবে, আর আমি চুপ করে সহ্য করে যাবো, এই গুণটা আমার নেই। আমাদের সম্পর্কটা হচ্ছে ছোটোগল্পের মতো, শেষ হইয়াও হইলো না শেষ টাইপের। শোনো, একটা ভয়ংকর তথ্য দিই তোমাকে। আমি এই পর্যন্ত যতগুলি রিলেশন দেখেছি এই টাইপের, তার কোনওটাই শেষ হয়-হয় করেও শেষ হয় না, শেষ পর্যন্ত টিকে যায়। তুমি চাও আর না চাও, আমাদের সম্পর্কটা টিকে যাবে। তুমি কি বুঝতে পারছ, ওরকম কিছু হলে সেটা আমাদের দুজনের জন্যই কতটা খারাপ হবে? তোমার জন্য খারাপ হবে এই কারণে যে, আমি মোটেই ভাল প্রেমিকা নই। চুপচাপ, অতি শান্ত। মানুষের সাথে মিশি কম। ফ্রেন্ডলিষ্টে একটা ছেলে ফ্রেন্ডও নেই (ভাই, রুদ্র এবং শিক্ষকরা ছাড়া)। খুব বেশি দরকার না হলে কোনও ছেলের সাথে কথা বলি না। কীভাবে-কীভাবে যে তোমার সাথে এতোকিছু হয়ে গেলো, ভাবলে নিজেই অবাক হই। আমার মতো মেয়ের বয়ফ্রেন্ডের সাথে এতো বড় প্রতারণা করার কথা না। তাই, আমার সাথে কথা বলে তুমি শান্তিতে থাকতে পারবে না। মজাও পাবে না, কারণ আমি তো আর তোমার সাথে অন্য দশটা মেয়ের মতো প্রেম করতে পারব না। …………. আমার হালকা সন্দেহ হচ্ছে, তুমি আমার টেক্সটগুলি স্প্যামে ফেলে রাখছ!………..এই সম্পর্কটা টিকে গেলে আমার জন্য কী খারাপ হবে, বলি। এভাবে সারাদিন তোমার কথা ভাবতে থাকলে আমি সত্যি-সত্যি পাগল হয়ে যাবো। প্রায়ই ঘুমও হচ্ছে না রাতে। আর পড়ালেখার তো যাচ্ছেতাই অবস্থা। তোমার সাথে দেখা হওয়ার আগে যেখানে ৮-১০ ঘন্টা পড়তাম, সেখানে এখন ২-৩ ঘন্টাও পড়া হয় না। আমি মাস্টার্স বাদ দিয়েছি এই ক্যারিয়ারের পড়াশোনা করার জন্য। এখন যদি এই অবস্থা হয় তাহলে বাসায় জবাব দেয়ার মত কিছু থাকবে না। বুঝতেই পারছ, কী অবস্থা! আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, রুদ্রের তো কোনও দোষ নেই। ও আমাকে ভালোবাসে বলেই ওকে এতো শাস্তি পেতে হচ্ছে। আর ও তো এতোকিছু জানে না। ও জানে, তোমার প্রতি আমার একধরনের মোহ কাজ করে, ভালোবাসার ব্যাপারটা ও জানে না। তাই ও আমার এমন আচরণের কারণ বুঝতেও পারছে না, মেনেও নিতে পারছেনা। বলো, আমি কী করবো? আমি হয়তো আর কখনওই তোমাকে ভুলতে পারব না, অন্য কাউকে ভালোবাসতেও পারব না, ভালথাকাও হবে না আমার আর। তবুও, এইভাবে দুইজনের সাথে কথা বলা, দুইজনের কথা ভাবা, দুইজনকে আমার স্বপ্নে স্থান দেয়া, এসব আমার সাথে যায় না। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, তুমি কেন আমাকে ভালোবাসবে, এটার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ আমি সত্যিই খুঁজে পাই না। আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি, অনেক বেশি ভালোবাসি। কিন্তু, কী করব, বলো? তুমি যদি সত্যিই সিরিয়াস হও’ও, আমরা কেউই তো ধর্ম চেঞ্জ করব না। তাহলে কী করব, বলো? ফ্রেন্ড থাকব? সেটা থাকা যেতো, যদি কিছু জিনিস না হতো। আর শুধুই টাইমপাসের জন্য বা মজা পাওয়ার জন্য রিলেশন—এই ধরনের রিলেশনকে আমি ঘৃণা করি, সত্যি বলছি। আমার সব কিছু বললাম। এবার তুমি সমাধান দাও। তুমি না আমার গুরু?

আমার যদি ভুল না হয়, তাহলে তোমার পোস্টটাই রিপ্লাই ছিল। আচ্ছা, ভাল থেকো…… আর একটা কথা, প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখো, এক লাইন হলেও, যাতে আমি বুঝতে পারি, তুমি ভাল আছো। প্লিজ-প্লিজ, কাজটা কোরো। নাহয় খুব অস্থির লাগে। ভালোবাসি যে! লোকে বলে, মেয়েরা রহস্যময়ী। যারা বলে, তাদের ধরে তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া উচিত, তাহলে কথাটা বদলে ফেলবে। তুমি শক্ত করে ধরেও রাখতে চাও না, আবার ছেড়েও দিতে চাও না। আলোছায়ার খেলা সবসময়ই কি ভাল্লাগে? ………. অনেক দিন ধরে দুটো কথা জিজ্ঞেস করবো ভাবছিলাম, উত্তর দেবে না বলে জানতে চাইনি। আর তো কথা হবেনা! এখন বলি। তোমার সেই মাথাব্যথাটা কি এখনও আছে? ব্যাকপেইন? ডাক্তার দেখিয়েছিলে? না দেখালে তাড়াতাড়ি দেখিয়ে ফেলো। অবহেলা কোরো না। নিজের যত্ন তো নিজেকেই করতে হবে, তাই না? আর কখনও পেইন উঠলে আমি নিজ দায়িত্বে গিয়ে তোমার মাথা আর পিঠ, দুটোই ভেঙে দিয়ে আসবো। মনে থাকে যেন! তোমার মা-বাবা ভাল আছেন? উনাদের কাছে যেও মাঝেমধ্যে সময় করে। তোমার নাহয় অনেকেই আছে, উনাদের যে কেউ নেই। যেও, কেমন? তোমাদের ফ্যামিলিটা আমার খুব ভাল লাগে। সবাইকে ভাল লাগে। ভাল থেকো সবাই। তোমাদের ফ্যামিলিকে আমাকে সারাজীবনই ‘তোমাদের ফ্যামিলি’ বলতে হবে। ‘তোমাদের’ থেকে ‘আমাদের’-এ আসাটা কত কঠিন! দুর্ভাগ্য! অনেক বেশি কথা বলছি? বিরক্ত? আর বলব নাতো! তোমাকে নিয়ে সারাদিন ভাবি। তাই অনেক কথা জমে থাকে। আজকে একটু সহ্য কর। আমি যেদিন তোমাকে এভাবে করে ভাবা বন্ধ করে দিতে পারব, সেদিন তোমার সাথে দেখা করবো, তোমার পা ছুঁয়ে সালাম করবো। দেবে তো করতে? নাকি, চিনতেই পারবে না, ভুলে যাবে? আমাকে ভোলা কিন্তু এতো সহজ না! যা-ই হোক, দেখা করো, বেশি সময় নেবো না। মিষ্টি দেখে একটা মেয়েকে বিয়ে করো, ঠিক আছে? হাসিখুশি থেকো সবসময়, খুব ভালো থেকো। হঠাৎ কখনও রাস্তায় দেখা হয়ে গেলে না চেনার ভান করো না। ওটা নিয়ে সারাদিন ভাববো, উত্তর পাবো না, মনখারাপ হবে, কষ্ট পাবো। একটা মুচকি হাসি দিলেই চলবে ……… ভালোবাসি ……….. অ্যাত্তোগুলি!!!

খারাপ লোক একটা!

আগের টেক্সটটা ডিলিট করে দিও, শেষ টেক্সট হিসেবে ওটা দেখতে ভাল লাগছে না। তুমি খারাপ না, তুমি ভাল। শেষকথাটা হওয়া উচিত ‘ভালোবাসি’, তাই না? ভালোবাসি। ডিলিট করেছো তো? এই নাও, আম খাও, শেষ আম। এগুলি রেখে দিও। বড় হলে খেও আর আমার কথা ভেবো। আমগুলি টেক্সট ডিলিট করার জন্য ঘুষ। ‘ঘুষ’ ভাল শোনাচ্ছে না। আচ্ছা যাও, পুরস্কার। অনেক দিন আগে তুমি না বলেছিলে একদিন আমাকে খুব বকা দেবে, এতোটাই বেশি যে আমি ভ্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যা করে কেঁদে ফেলব? দাও তো ওইরকম একটা বকা! ভুলে গেছো, কবে বলেছিলে? ভুলে যাওনি, আমি জানি। আমি তোমাকে খুব বুঝি। সেটা তুমি জানো না। ডাক্তার দেখিয়েছিলে? তাড়াতাড়ি যাও ডাক্তারের কাছে। নইলে ঘুষি মেরে কয়েকটা দাঁত নাড়িয়ে দেবো একদম! তখন ডাক্তার আরেকটা যোগ হবে। পৃথিবীতে সবচাইতে পচা ডাক্তার হচ্ছে দাঁতের ডাক্তার। চোয়ালটাকে হাঁ করিয়ে রেখে যখন ট্রিটমেন্ট করে, তখন ডাক্তারের হাতে কামড় দিতে ইচ্ছে করে। আমার অনেকদিনের শখ, এক দাঁতের ডাক্তারকে কামড়ে দেবো। একদিন ঠিক-ঠিক দেবো। এরপর তোমাকে ফোন করে জানাবো। মজা হবে না? ডাক্তারের কাছে যেয়ো। না গেলে তোমাকেও কামড়ে দেবো!

ব্যস্ত অরণ্য, পচা অরণ্য …………আমার অ্যাত্তোগুলি রাগ নিও। অ্যাত্তো ব্যস্ত থাকতে হবে কেন সবসময়ই? সপ্তাহে দুদিন ছুটি পাও, সেই দুইদিন একটু রেস্ট নেয়া যায় না? ঘরে একটা বউ নেই বলে কি শুয়েবসে একটা দিনও কাটিয়ে দেয়া যায় না? বউ না থাক, প্রেম-প্রেম খেলার একটা প্রেমিকা তো আছে, মাঝেমধ্যে তার কথাও তো ভাবা যায়! তুমি নাহয় ভালোবাসো না, কিন্তু সে তো বাসে! কী হয়, একটুখানি উইকএন্ড-প্রেম করলে? আমার কী মনে হয় জানো, আমি যখন দূরে সরে যাই, তখন তোমার খারাপ লাগতে থাকে। কাছে আসলে আর কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আচ্ছা, তুমি আমার কল রিসিভ কর না কেন? আমি কথা বলতে চাচ্ছি না, কিন্তু মাঝেমধ্যে এটা ভেবে অবাক হই, সত্যিই যদি ভালোবাসো, তবে কথা বলতে এতো অনীহা কিসের? ভালোবাসো, এটা মাঝেমধ্যে মেনে নিই, কারণ, তুমি সবসময় বল তুমি হিপোক্রেসি পছন্দ কর না। তাই, ধরে নিতে ইচ্ছে করে, তুমিও এমনকিছু কর না। আমাকে সহ্য করতে না পারলে কত আগেই তো আমাকে ব্লক করে দিতে! দাওনি তো! কিছু-কিছু মানুষ আছে, যাদের কাছ থেকে সহনশীলতা পাওয়াটাও ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে কম কিছু নয়। রুদ্র তোমাকে নিয়ে রীতিমত গবেষণা করে ফেলেছে। আমার মনে হয় না, তোমাকে নিয়ে এতো গবেষণা কোন ছেলে করেছে কখনও, অন্তত তোমার অন্ধকার দিকগুলি নিয়ে! আমি ওকে বুদ্ধি দিয়েছি, তোমার অন্ধকার দিকগুলি নিয়ে নেক্সট বইমেলায় একটা বই বের করতে। ভালোই চলবে কিন্তু, মাঝখান থেকে ওর পকেটেও কিছু পয়সা ঢুকবে, কেউ-কেউ ওকে লেখক ভেবে অটোগ্রাফের জন্যও ছুটে আসতে পারে! আচ্ছা, যে কেউ আমার কথা জিজ্ঞেস করলেই তুমি ঢালাওভাবে আমার সব দোষ দিয়ে দাও, তাই না? দিতে পারো, আমার কোনও সমস্যা নেই। আমরা দুজনই যদি দুজনকে ভালোবাসিও, তবু পার্থক্যটা কোথায় জানো, তুমি আমার উপর সব দায়ভার দিয়ে নিজে ভাল থাকো, আর আমি তোমার সবটুকু দোষ লুকিয়ে রাখি নিজে অনেকটুকু খারাপ হয়ে হলেও। জানি, এই লেখাটা পড়ে তোমার মেজাজ খারাপ হবে। হোক!! তোমাকে রাগাতে ইচ্ছে করছে। তুমি রেগে গেলেই আমার শান্তি। তোমারই সবসময় শান্তি হতে হবে কেন? তোমারও একটুখানি অশান্তি হোক। ওম্ অশান্তি ওম্! তোমার সাথে প্রেম করার খারাপ দিক কী জানো, এই টাইপ একটা ব্যাপার ঘটে: “নিজেকে দুরারোগ্য ব্যাধিগ্রস্ত মনে হবে যেনো তুমি শতাব্দীর পর শতাব্দী/ শুয়ে আছো হাসপাতালে। পরমুহূর্তেই মনে হবে/ মানুষের ইতিহাসে একমাত্র তুমিই সুস্থ, অন্যরা ভীষণ অসুস্থ।” কিন্তু সমস্যা হলো, এই সুস্থ মনে হওয়ার সময়টা খুব অল্প। ভাল কথা, হুমায়ূন আজাদের ওই কবিতাটা পড়েছো তো, না? এই কবিতাটা পড়ে কেউ যদি কবিতার শরীরকে অনুভব করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই তোমার সাথে প্রেম করতে হবে! প্রতিটি লাইন এতোটা কীভাবে মিলে যায় তোমার সাথে! তাই, তোমার সাথে প্রেম করা খুব কষ্টের, তুমি খুব সুন্দর করে কষ্ট দিতে পারো, অবহেলা করতে পারো, ভুলে থেকে মনে রাখার ভান করতে পারো, সব টেনশন আরেক জনের মাথায় চাপিয়ে দিয়ে দিব্যি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারো! আমার কী মনে হয় জানো, তুমি কখনওই খুব সুন্দর একটা প্রেম করতে পারবে না। এমন প্রেমে তুমি পড়বে না, যে প্রেমে কোনও কষ্ট নেই, অশান্তি নেই, কোনও ‘কিন্তু’ নেই, শুধুই একরাশ ভাললাগা আছে। যেখানে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ ভাবা যায়। ভালোবাসার মানুষটার চোখেই পৃথিবীর সব সুখ খুঁজে পাওয়া যায়। মনে হয়, সে পাশে থাকলে অন্য সব কিছু তুচ্ছ, অনুভূতিটা একটু সময়ের জন্য না, সবসময়ের জন্য। প্রার্থনা করি, এমন একটা প্রেম তোমার বউয়ের সাথে করো! আমি নাহয় পেলাম না, তবু কেউ না কেউ তোমার ভালোবাসাটুকু পাক! এর মানে, এ নয়, ওকে আমি আমার ঈর্ষা থেকে মুক্তি দিয়ে দিলাম। ও তোমার ভালোবাসা পাবে, আর আমার ঈর্ষাটুকু সহ্য করতে পারবে না, তা কীকরে হয়? ভাল থেকো, হে রহস্যমানব!

আমার পক্ষে দুজন মানুষকে একসাথে ভালোবাসাটা সম্ভব হচ্ছে না আর। একজনকে ছেড়ে দিতেই হবে। কাকে ছাড়ব? যে আমাকে চায়, তাকে? নাকি, আমি যাকে চাই, তাকে? আমি স্বার্থপর তো, তাই প্রথমটিকেই বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। যার ভালোবাসায় ডুবে থাকলে এক শাস্তি ছাড়া আর কিছুই পাবো না, তাকেই ভালোবেসে যাবো, ঠিক করে ফেললাম। পূর্ণতাহীন ভালোবাসার চাইতে পরিণতিহীন ভালোবাসাও ঢের ভাল। সারাজীবনই এক অপূর্ণ পরিণত ভালোবাসায় বাঁচার চাইতে মুহূর্তেই পূর্ণ অপরিণত ভালোবাসায় মরাও যে স্বস্তির! আমি অনেকবার আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছি। নিজেকে জিজ্ঞেস করেছি, পূর্ণা আসলে কী চায়? ওর ভালোবাসার পূর্ণতা? নাকি, ওর ভালোবাসার পরিণতি? মন বারবারই রায় দিয়েছে পূর্ণতায়ই। কী আর করা! খুব সুন্দর করে মিষ্টি হেসে রুদ্রকে ‘বিদায়’ বলে দিয়েছি। ও কাঁদতেও পারছিল না, কারণ ও ভাবছিল, ওটা আমার একটা খেলা! আমি মজা করছি ওর সাথে। এখুনিই আবার হেসে বলে ফেলবো, “এতো ভয় পেলে চলে, বোকা ছেলে? আমি আছি তো!” কিন্তু না! ওর কল্পনাকেও হার মানিয়ে ওর সাথে সকল বন্ধন ছিন্ন করে আমি চলে এসেছি। ওর বিশ্বাস ভেঙে চলছিলাম প্রতিটি মুহূর্তেই। তোমাকে তো আর ছাড়তে পারছি না। কী আর করবো? ওকেই ছেড়ে দিলাম! মজার ব্যাপার কী জানো, আমি রুদ্রের কাছ থেকে পালিয়ে কার কাছে এসেছি, সেটা আমি নিজেই জানি না। নিজের কাছেই? নাকি, অন্য এক প্রহেলিকার খোঁজে? জীবন বড় নির্দয়। পালিয়েও পালানো যায় না! ভাবছ, কত খারাপ আমি! তাই না? “এখন শত্রুর জন্য যদি অভিশাপ দিতে হয়/ কিছু, আমি আর/ বলি না যে তোর কুষ্ঠ হোক, তুই মরে যা,/ তুই মর।/ এখন বড় স্বচ্ছন্দে এই বলে অভিশাপ দিয়ে/ দিই —তুই প্রেমে পড়।” তসলিমা নাসরিনের এই লাইনগুলি উনার নয়, আমার, আমার জীবনের।

অপ্রিয় মহাব্যস্ত অরণ্য, তোমার সাথে প্রতিদিন একবার-একবার রাগ করি। (জানি, তাতে তোমার কিছু এসে যায় না।) ভাবি, এটাই লাস্ট, ও তো আর টেক্সট করে না, আমিও করবো না। (এখনও ভাবছি!) নিজের কাছে দেয়া কথাটা কখনওই রাখতে পারি না। পরদিন আবার তোমাকে মিস করতে থাকি। (মিস করার অর্থ একটা জায়গায় দেখেছিলাম, অদ্ভুত তুমিহীনতায় ভুগছি; ভাল লেগেছে কথাটা।) তুমিহীনতায় ভুগতে-ভুগতে মনটা খারাপ হয়ে যায়, তবুও ভুলে থাকার চেষ্টা করি। তারপর একটা পর্যায়ে অস্থির লাগা শুরু হয়। তখন আর কোন কাজ করতে পারি না, পড়ায় মন দিতে পারি না, গান শুনতেও ভাল লাগে না, গল্প করতেও ভাল লাগে না, খেতেও ভাল লাগে না, ঘুরতেও ভাল লাগে না। অস্থিরতা যখন চরম পর্যায়ে চলে যায়, তখন তোমাকে টেক্সট করে ফেলি। ভাবি, এটাই লাস্ট! যথারীতি নো রিপ্লাই। ওই চক্রটা শুরু হয় আবার! আমি এই চক্রের নাম দিয়েছি, ভালোবাসার দুষ্টচক্র। ভালোবাসার শাস্তি হচ্ছে, তোমাকে ভালোবাসার দুষ্টচক্রের মধ্যে দিয়ে যেতেই হবে। শোনো চড়ুই, সেদিন পড়লাম, যাদের নাম এ দিয়ে শুরু, তারা বউকে মনভোলানো কথা বলার মহাপ্রতিভাসম্পন্ন হয়। আর কিছু হোক না হোক, তুমি এই কারণে হলেও সুখী হবে! কতজনকে তো কতরকম বুদ্ধি দাও। তোমাকে ভুলে থাকার কিছু বুদ্ধি দিও তো আমাকে! তোমাকে ভালোবেসে আমি মহাবোকা হয়ে গেছি! এখন আমার মাথায় তোমাকে ভালোবাসার বুদ্ধি ছাড়া আর কোনও বুদ্ধি আসে না।

আমাদের বাসায় একটা কদম ফুলের গাছ আছে। রুদ্রকে যেদিন ব্যথা দিয়ে চলে এসেছিলাম, সেদিন ওটাতে একটামাত্র কলি ছিল। আজ দেখলাম, ১টা থেকে ১৩টা কলি হয়ে গেছে, তবুও ওর কথা একটুও মনে পড়ে না। খুব নিষ্ঠুর তুমি! সাথে আমিও। নিষ্ঠুর মানুষের নিষ্ঠুর প্রেমিকা! মিলেছে তো!

এই শামুক মানব, হঠাৎ-হঠাৎ খোলসের ভেতর থেকে মুখটা বের করে আবার লুকিয়ে ফেলো। ওইটুকু সময়ের চাহনি যে কোথাও ঝড় তুলতে পারে, সে খবর রাখো না! ঝড় তুলে দিয়ে আবারও মুখ লুকিয়ে খোলসের ভেতর থেকে ঝড়ের গর্জন শুনতে খুব ভাল লাগে, না? আমাকে তোমার মতো শামুক হওয়া শিখিয়ে দিয়ো তো! অনন্তকাল ধরে দুজন মুখোমুখি বসে একটুখানি মুখ বের করে একটু কথা বলে আবার লুকিয়ে পড়ব! তখন আর কষ্ট হবে না!

আমি যদি বাবুই হই, তুমি তাহলে চড়ুই! বাবুই-চড়ুই! ফুড়ুৎফাড়ুৎ! ভাল হবে না?

চড়ুই, তুমি কি জানো তোমার হাসির শব্দটা খুব সুন্দর? একটু বেশিই সুন্দর! একেবারে বুকের ভেতরে গিয়ে লাগে! চিনচিনে একটা ব্যথা শুরু হয়! আচ্ছা, তুমি কি বলতে পারো, তোমার হাসির শব্দে কেন আমার কষ্ট হয়! এজন্যই কি বলে, বাজিল বুকে সুখের মত ব্যথা! চড়ুই, আমাকে তোমার মনে পড়ে না, তাই না? চড়ুই, তুই খুব খারাপ! তোকে আমি তাড়িয়ে দেবো!

অশুভ সকাল, ব্যস্ত চড়ুই! তোমার জন্য অ্যাত্তোগুলা রোদ আর গরম!

তোমার উপর রাগ করে থাকতে পারি না কেন? তোমার মুখটাকে দেখলেই সরল মনে হয় কেন? তোমাকে ছাড়া স্বপ্ন দেখতে পারি না কেন? পৃথিবীর সবচাইতে বিশ্বস্ত সম্পর্কের চাইতেও তোমার জন্য ভালোবাসাটাকে বড় মনে হয় কেন? তোমার কথা মাথায় এলে আমার চোখ হাসতে থাকে কেন? তোমার সব অপরাধকে অবলীলায় ক্ষমা করে দিতে ইচ্ছে করে কেন? কিছু খেতে গেলেই তোমার কথা মনে হয় কেন? তোমাকে পাইইনি, অথচ তোমাকে হারিয়ে ফেলবো ভেবে এলোমেলো হয়ে যাই কেন?

একদিন সময় করে উত্তরগুলি দিয়ো। প্রতীক্ষায় রইলাম।