নির্যাস: দুই



৫৬.
তোমার ঘরের আয়না দামি,
ওতে মুখ দেখলে মনটা তোমার ভালোই থাকে!
আমার ঘরের আয়না ভাঙা,
তবু এই আয়নাই প্রাণটা আমার ভালোই রাখে!
ডেকো না আমায় তোমার ঘরে
ওই আয়নায় দেখতে আলো!
আমার ঘরেও এসো না, বন্ধু,
এই আয়নাতেই আছি ভালো!


৫৭.
আমার সন্তানটি কানা-খোঁড়া?
তো? ওকে তো খাওয়াই-পরাই আমি!
তোমার তো ভাই সন্তানই নেই!
দেখি, তোমার আছে কী এমন দামি?


৫৮.
কারও কারও মাথা, চুপচাপ থাকলেই দারুণ হাসে!
নড়াচড়া করলেই বরং গোবরের কেমন গন্ধ আসে!


৫৯.
তোমার বাসায় আমার দাওয়াত? লাগবে না, ভাই;
যদি সেই দাওয়াত না করলে কবুল, ইজ্জতই যায়!


৬০.
তোমার রাস্তায় রাজারা হাঁটে, ওখানে হাঁটা নয় যে সোজা!
সবাই কি আর রাজা হতে চায়? আমি নাহয় হলাম প্রজা!


৬১.
তোমার মলম ভীষণ ভালো, ওটা তুমিই লাগাও!
আমার মলম নাহয় কালো, কেন এদিকে তাকাও?


৬২.
কেন আমায় এমন করছ বিচার নিজের মাপে?
স্বর্গ কি তোমার মিস হয়ে যাবে আমার পাপে?


৬৩.
নারীর মনে পরের শ্রী,
পুরুষের চোখে পরের স্ত্রী!
পরশ্রীকাতরতাই নারীর ধন,
পরস্ত্রীকাতরতায় পুরুষের মন!


৬৪.
মুখে তো সবাই বলে, সত্য চাই, সত্যই চাই!
সত্য বলেই দেখো, কেউ নাই, কোথাও নাই!


৬৫.
যাকে তুমি দিলে সুখ,
সে-ই তোমায় দিল দুখ।
যাকে তুমি দিলেই না কিছু,
কেন সুখ খুঁজছ তারই পিছু?


৬৬.
উঠতে বসতে, স্বর্গ কি নরক, যে টেনে আনেই মুখে,
তার সাথে, আর যা-ই হোক, থাকেই না কেউ সুখে!


৬৭.
সবাই তোমায় ধার্মিক জানে; ভাবে, তুমি দামি!
অধর্মই যে ধর্ম তোমার, তা জানি শুধুই আমি!


৬৮.
মিষ্টি কথায়,
ছোরা বসায়।
বাক্যে কটু,
দূরত্বে পটু।


৬৯.
ভুল কিছু থাকুক!
পা মাটিকে বুঝুক!


৭০.
উপকার ভুলে গেলেই কমে যায় পাপ,
ওরকম ভাবে যে, কৃতঘ্ন সে, যেন সাপ!


৭১.
বিপদ এলে, বন্ধু হলেই, হাতটা বাড়ায়!
বাকিরা সব, প্রার্থনাতে, ঠোঁটই নাড়ায়!


৭২.
সময়ের উপকার হয় যদিও ক্ষুদ্র তিলতুল্য,
ভালো লোকে ভাবে পরেও, তা-ই তালমূল্য!


৭৩.
ঋণে থেকেও গড়ে বিত্ত,
নির্লজ্জের অমনই চিত্ত!


৭৪.
বিপদে পড়ে নেয় ধার,
বিপদ গেলে কে কার?


৭৫.
কথা বলে না, মুখ দেখে না, আরও কত কী!
স্বার্থ হাসিলে রাগ কি অভিমান, পালায় ঠিকই!


৭৬.
যে তোমার দশ ভালোতেও নীরব থাকে,
আর তেড়ে আসে তীব্র বেগে, একটাও খারাপ পেলে,
অমন লোক বন্ধু নয় গো, নিন্দুকই সে,
তুমি বড্ড থাকবে ভালো, সে জীবন থেকেই গেলে!