নিঃসঙ্গ কবিতা

রাতের আকাশে কবিতা উড়ে যায়,
খুব চেষ্টা করেও ওদের আমি ছুঁয়ে দিতে পারি না।
কবিতা মানেই তো রহস্য!




ভোরের শিশির হয়ে ঘাসের গায়ে বিন্দু বিন্দু কণার মতন কবিতা লেগে থাকে;
দেখতে পারি, বুঝতে পারি, শুধু ধরতে পারি না।




কবিতার মা-বাবা নেই, সন্তানও নেই;
তবে কবিতার নামে বসবাস-করা একঝাঁক পাখি আছে।
কবিতার ঘরবাড়ি নেই, সংসার নেই, চালচুলো নেই, শুধুই ছোট্ট একটা সমুদ্র আর একটা আকাশ আছে।




কবিতার আত্মীয় নেই, বন্ধু নেই, পাহারাদার নেই।কবিতার শুধুই অজস্র প্রেমিকা আছে।




কবিতার টাকা থাকে না, সুখ কিংবা বাড়াবাড়ি রকমের বিলাসিতাও থাকে না।
কবিতার থাকে শুধু বুক-জ্বালা-করা দুঃখ আর অবিরাম অবহেলা সহ্য করে যাবার ক্ষমতা।




চিঠি লিখে পাঠানোর জন্য কবিতার কোন‌ও ঠিকানা নেই। এক ডাস্টবিনই কবিতার ঠাঁই।




দিনের আলোর সঙ্গে কবিতার তেমন কোনও সুসম্পর্ক নেই,
কিন্তু ঘুটঘুটে কালো রাত আর কবিতা যেন একে অপরের আত্মার আত্মীয়!




মানুষ কবিতা ভালোবাসে, অথচ কবিকে ঘৃণা করে,
কবিতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়, অথচ কবিকে তাচ্ছিল্য করে।




শহিদদের নিয়ে কত শত কবিতা লেখা হয়ে গেছে,
অথচ কবিতা লিখতে লিখতে কত কবি যে শহিদ হয়েছে, সে খবর আমাদের কাছে নেহায়েত অপ্রয়োজনীয়।




কবি আর কবিতা একসঙ্গে থাকলেও ওরা প্রেম করতে জানে না,
একখাটে থাকলেও কেউ কাউকে ভালোবাসতে পারে না।




কবি নিজের লেখাকে অন্য মানুষের চোখ দিয়ে দেখে। তার পরে সেটাকেই একসময় তার কাছে বাজে কবিতা মনে হয় এবং লেখাগুলোকে সে ছিঁড়ে কুটিকুটি করে ফেলে।
অথচ নিজের চোখ দিয়ে দেখলে নিজের লেখা একটা অক্ষরও ফেলে দেওয়া সম্ভব নয়।




কবিতার পাশে কেউ দাঁড়ায় না, এমনকি কবি নিজেও...না।