কবিতার জন্মের অপেক্ষায়

একটা ঠিকঠাক দ্রোহমুখর কবিতা লেখার জন্য আমার চোখে ঘোর লেগে থাকে, আমি সৌন্দর্য খুঁজতে থাকি।
শুদ্ধতম সৌন্দর্যের দেখা না পেলে তো আর কবিতা লেখা যায় না!
অথচ সুন্দরের খোঁজে পথে নেমে অসুন্দরের খোঁজটাই পেয়েছি কেবল।




সবচেয়ে সুন্দর ফুলটা ফুটবে, সেই অপেক্ষায় খাতা-কলম নিয়ে সারাদিন বসে থাকি।
ফুলও ফোটে না, আমার কলম দিয়ে কবিতাও আর বেরোয় না।




আমি একটা মাত্র প্রেমের কবিতা লেখার জন্য ইতিহাস ঘেঁটে ঘেঁটে মরে যাচ্ছি। অথচ এই ইতিহাস‌ই আমাকে কবিতা লিখতে দিচ্ছে না।




ইতিহাস ভরা কেবল হার-জিতের গল্প, রাজ্যশাসনের পরিকল্পনা, মারামারি, কাটাকাটি। ওখানে কোথাও প্রেম নেই।




আমি কবিতা লেখার তৃষ্ণায় ইচ্ছে করেই ক্ষুধার্ত থেকে গেছি, ক্ষুধার স্বাদ নিয়ে খাঁটি কিছু লিখব বলে।
কিন্তু...না বাপু, আমি এত বড়ো সাধক হতে পারিনি যে, ক্ষুধা গিলে ফেলেও লিখতে পারব! এটা আমার কাজ নয়।




প্রকৃতিকে ভালোবেসে আমি চুঁয়ে চুঁয়ে বৃষ্টি পড়া দেখলাম, ভেজা মাটির ঘ্রাণ নিলাম, নদীর পাড়ে জোছনা দেখলাম। বুঝলাম‌ই না, এসব দেখে লেখার কী আছে!?




পরে আরও বুঝলাম, আমি তো আর জীবনানন্দ নই যে সাদামাটা প্রকৃতিকেও কবিতায় পুরে ফেলতে পারব!




একটাও কবিতা আমার আর ঠিকঠাক করে লেখা হলো না। একটা কবিতা লেখার জন্য জন্মের আগেও যেমন ছটফট করেছি, মৃত্যুর পরেও তেমন আফসোস করব। শুধুই একটা কবিতার জন্ম এ জন্মে দিয়ে যেতে আর পারব না।