দ্বিপাক্ষিক

তুই একটা মাগি। কোনও মাগির সাথে আমি সংসার করব না। তুই যত দ্রুত সম্ভব আমাকে ডিভোর্স দিবি, আমার মেয়েকে ভালোভাবে আমার কাছে বুঝিয়ে দিবি। আমি আমার মেয়েকে পরহেজগার বানাব, আমি আমার মেয়েকে নিজের মতো করে মানুষ করব। তোর সাথে থাকলে আমার মেয়েও বড় হয়ে তোর মতো ফষ্টিনষ্টি করে বেড়াবে। আমার মেয়েকে আমি তোর মতো মাগি বানাতে চাই না।


আফতাব, ভদ্র ভাষায় কথা বলো, বলে দিচ্ছি। আজ তিন দিন হলো, তুমি একই রকম আচরণ করে যাচ্ছ আমার সাথে। তুমি কি খুব বেশিই নোংরা কথা বলছ না আজকাল? আর বারে বারে আমার মেয়ে আমার মেয়ে, কাকে শোনাচ্ছ তুমি? দিঠি তোমার একার মেয়ে নয়, আমারও মেয়ে। দিঠির উপরে তোমার যতটা অধিকার আছে, একজন মা হিসেবে আমার তার চাইতে আরও অনেক বেশি অধিকার আছে। আমাকে শুধু শুধু নোংরা ভাষায় কথা বলে আহত কোরো না, আফতাব। আমি তোমাকে খুব ভালো চিনেছি এই দশ বছরে। আর তুমি আমার কাছে ডিভোর্স চাইবার কে! দিঠি না থাকলে, আমাদের মেয়ে না থাকলে আরও নয় বছর আগেই আমি তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিতাম, আফতাব। কেবল এই মেয়ের দিকে তাকিয়ে আমি তোমার শত শত নোংরা কথা, তোমার চড়থাপ্পড়, তোমার প্রতি রাতের নোংরামি, সব কিছু সহ্য করে যাচ্ছি।


নিজের বউকে তুমি তোমার বসের সাথে শুইয়েছ পর্যন্ত, আমাকে তুমি সব কিছু করতে বাধ্য করেছ, রীতিমতো গলায় ছুরি আটকে বাধ্য করেছ তুমি, আর সেই তুমিই কিনা আজকে আমাকে বেশ্যা বলছ, মাগি বলছ! বাহ্‌ কী সুন্দর বক্তব্য তোমার! আর কী বললে তুমি? তোমার মেয়েকে তুমি মানুষ করবে? সত্যি! পরহেজগারও বানাবে দেখছি! এই বিদেশের মাটিতে কী পরহেজগার বানাবে মেয়েকে তুমি? তোমার তো নিজেরই সাধ মেটে না। কাল রাতে কোথায় ছিলে তুমি? ডিউটিতে, না কি ফ্লোরার রুমে? আমি জানি না ভেবেছ? তোমার এতশত সন্দেহের কারণ, জোর করে আমার কাছে ডিভোর্স চাইবার কারণ, আমাকে সবার সামনে মিথ্যে বলে বলে আমাকে নষ্ট মেয়ে প্রমাণ করবার কারণ কিছুই কি আমি জানি না? আমি তো তোমার কাছে এসেছি মাত্র আঠারো মাস হলো, এরই মাঝে দম আটকে যাচ্ছে বুঝি? তাহলে এত বছর এই ভিনদেশের মাটিতে কী কী করেছ তুমি, সেটি বুঝতে আমাকে আলাদা করে বুদ্ধিমতী হতে হবে ভেবেছ? আমি জানতাম, তুমি আমাকে নিয়ে এমন রটনাই রটাবে, কিন্তু তারপরও আমি মেয়ের দিকে, মেয়ের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তোমার সব কথা শুনে গেছি, মেনে গেছি, কখনও ভুলেও কোনও কথা তুলিনি।


জাপানে আসার আগে মা বারে বারে ভেবে দেখতে বলেছিল, কিন্তু আমিই মাকে দোষ দিয়েছিলাম, আমিই শুনিনি মায়ের কথা, আমিই বলেছিলাম মাকে যে যা হবার হবে, তবুও তোমাকে ছেড়ে যাব না কখনও, বিয়ে যখন করেছি, তখন এখানেই থাকব, কী হয় দেখি, কে আমার সংসার ভাঙে দেখি। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে, আমি চরম ভুল করেছিলাম, আফতাব! নাহলে আমাকে সেই ভুলের মাশুল এভাবে গুনতে হতো না। তুমি আমাকে ভালোবাসোনি, আফতাব, তুমি কেবল তোমার অর্থকে ভালোবেসেছো, সেই অর্থের জন্য নিজের স্ত্রীকেও বসের হাতে তুলে দিতেও দ্বিধা করোনি তুমি। তোমার কি মনে হয়, আমি বুঝি না কেন তুমি তোমার বসের বাসায় আমাকে সেদিন রাতে ইচ্ছে করে ফেলে চলে গিয়েছিলে? তুমি সব কিছু সাজিয়ে পরে আমাকে দোষ দিয়েছ। ছিঃ আফতাব!


তোমার মায়ের মুখটা মনে পড়ে তোমার? মাকে পড়ে মনে? মা বেঁচে থাকলে আমার সাথে করতে পারতে এমন? কত না ভালোবেসেই মা আমকে তোমার বউ করে ঘরে তুলেছিলেন। প্রথম দিন থেকেই মা আমকে নিজের মেয়ে করে রেখেছিলেন। মাকে কখনও আমার শাশুড়ি-মা মনে হয়নি, নিজের মা-ই মনে হয়েছিল। আমার জীবনের অন্য এক অর্থ এনে দিয়েছিলেন মা আমাকে। নিজের মেয়ের মতো করে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়ে তোমার সমকক্ষ করে গড়ে তুলেছিলেন, অথচ সেই মাকে তুমি ভুলে গেলে! তোমার লজ্জা করে না, আফতাব? আমাকে জোর করে মাগি বানাচ্ছ, বেশ্যা বলছ! কাকে ঘরে তুলবে তুমি, আফতাব? কোন প্রতিমা ঘরে তুলবে তুমি এবার?


অত লক্ষ্মীর ভান করলেই যে লক্ষ্মী হওয়া যায় না, সে তুমি ভালো করেই জানো। তুমি যে বিয়ের আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছিলে, সে কথাও কি আমি বুঝিনি? প্রথম রাতেই আমি বুঝেছিলাম তোমার শরীর দেখে। কত বার শুয়েছিলে তার সাথে? বলতে লজ্জা করছে? মজা লেগেছিল খুব? আমিও কি জানতাম না ভেবেছ? দীর্ঘ আট বছরের সম্পর্ক ছিল তোমাদের। এই আট বছরে সে ছেলে তোমাকে না চুষে এমনি এমনি ছেড়ে দিয়েছে বলতে চাইছ? আর যদি সে ভালোই বাসত, তাহলে শেষপর্যন্ত তুলল না কেন ঘরের বউ করে? ও আচ্ছা, তার ডাক্তারির সম্মানে আঘাত লেগেছিল বুঝি, ভিন্ন প্রফেশনের একটা মেয়েকে ঘরে তুলতে? না কি খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল, এইজন্যে আর ভালোলাগেনি? অবশেষে উপায়ান্তর না পেয়ে ছেড়ে দিয়েছে, ঘটি তুলে অন্য নাম করে বিদেয় করেছে? তুমিই বলো না? আর আমি কী পেয়েছিলাম? এঁটো বাসনের কাঁটা! মাছটি খেয়ে গেল আরেকজন, আর আমি বসে বসে কাঁটা চুষেছি এতকাল, তাই তো?


আমার মা তো আর জানতেন না যে তুমি ঘাটের মড়া, জানলে মা কি আর অত লুতুপুতু করতেন? তা সে কেমন করতেন, আমার জানা আছে। এর মাঝে আর মাকে তুলো না। মায়ের জায়গায় মা ছিলেন, মা না বুঝে, না জেনে ভুল করে গেছেন, তাই বলে তো আর আমি কোনও ভুল করতে পারি না। তা ছাড়া মা তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন, এবারে নিজের জোগাড় নিজে করে খাও। তোমার মতো মাগি নিয়ে আমি আর চলতে পারব না। এতদিন বুঝিনি, তাই মেনে গেছি। এই যে এতগুলো বছর, এই যে সাতটি বছর দেশে একা পড়ে রইলি, কার সাথে শুয়েছিলিস? একলা কার মাথা খেয়েছিলিস? আর আমাকে কাঁচকলা দেখানো হচ্ছে? হুহ্‌, আর আমি কি তোর মতো ঘাটের মড়া ছিলাম? আমার মতো পুরুষমানুষ তুই পেতিস সারাজীবনের পুণ্যেও? আমি বাইরে বিদেশের মাটিতে পড়াশোনা করেছি, আমার অতীত বর্তমান সব কিছু এখানে। মা জোর করে চাপিয়ে না দিলে আমি দেশে কক্ষনো যেতামই তো না।


তোমার মতো একজন উচ্চশিক্ষিতের মুখে এত বাজে অশ্রাব্য ভাষা মানায় না, আফতাব। হ্যাঁ, আমার বিয়ের আগে আরেকটি সম্পর্ক ছিল, এটি খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। তা ছাড়া আমারই ভাগ্য খারাপ ছিল, যার ফলে আমাদের বিয়েটা শেষপর্যন্ত আর হয়নি। পরিবারের বাইরে সব কিছু করা যায় না, এটা তোমার অন্তত অজানা নয়! আমাদের বিয়েটা কি পরিবারের মতের বাইরে হয়েছে? আমি সাজনকে ভালোবাসতাম, সেই ভালোবাসা থেকেই সম্পর্ক গভীরে গিয়েছিল। আমরা দুজনের কেউই জানতাম না যে ওর পরিবার আমাকে মেনে নেবে না। তা ছাড়া ওর পরিবারের সবাই ডাক্তার, এর বাইরে, এই পেশার বাইরের মেয়ে ওরা তাদের ঘরের বউ করে তুলতে চায়নি। তাই আমাদের সমাপ্তি সুন্দর ছিল, আমাদের ভালোবাসা কোনও পরিণতি পায়নি। তাই বলে এত বছর পর, যখন আমাদের মেয়ের বয়স প্রায় ন’বছর হতে চলল, আজ এত বছর পর তুমি আজও এসব নিয়ে পড়ে আছ?


তুমি কি জানতে না তখন? তুমি কি না জেনেই আমাকে ঘরে তুলেছিলে? যদি না-ই পছন্দ ছিল, তবে মাকে সেদিন মুখের উপরে না করে দিতে পারোনি কেন? কোন কারণে, আফতাব? আর আমার প্রতি তোমার সন্দেহ কোথা থেকে শুরু, সে তুমি ভালো জানো। তুমি প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে ভিনদেশিদের নিয়ে মজা করেছ, আর আমাকে সব কিছু থেকে, তোমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করে গেছ। অথচ সেই তুমিই কিনা বলছ, আমি মাগি! আমাকে কেন আরও আগে আনোনি তোমার কাছে? আমাকে কেন দিনের পর দিন দেশে মায়ের কাছে ফেলে রেখেছিলে? কারণটা তোমার কাছে পরিষ্কার, আফতাব। কারণ তুমি তোমার বাবা-মাকে দেখাশোনার জন্যেই কেবল আমাকে বিয়ে করেছিলে, আমাকে স্ত্রীর অধিকার কোনও দিনই দাওনি তুমি। আজ বাবা-মা নেই, আজ আমিই তোমার বড়ো বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছি। আজ আমিই সব চাইতে বড় দোষী। আজ আমি বেশ্যা, আমি মাগি, সব কিছু। কই, এতকাল যখন দিনের পর দিন তোমার বাবা-মায়ের সেবা করে গেছি, তোমার অনুপস্থিতিতেই, একবারও কি জানতে চেয়েছ কখনও, আমার কেমন লাগে? আমার কিছু লাগবে কি না, আমার কোনও অসুবিধে হচ্ছে কি না? কিছু চেয়েছিলে জানতে?


মাসে একটা ফোন পর্যন্ত তুমি করতে না আমার কাছে। মাকে ফোন করে মায়ের সব খবরাখরব নিতে, মায়ের সামনেই দু-মিনিটের কথা সারতে। কেন আফতাব? স্বামী-স্ত্রীর আলাদা কোনও কথা কি থাকতে পারে না কখনও? আমাকে সেই সময়টুকু আজ পর্যন্ত কখনও দিয়েছ? কেবল টাকা পাঠিয়ে দায় সেরেছ তুমি। কখনও আমার শরীর কিংবা মন, কোনওটিরই খোঁজ রাখোনি, আমাকেও রাখতে দাওনি। কার সাথে শোব আমি? আমাকে এতটা নীচ আর কুৎসিত মনে হয়েছে তোমার! কই, আগে তো জানাওনি? না কি আগে জানালে নিজেই নিজের জালে ফেঁসে যেতে? আজকে আমাদের মেয়ে বড়ো হচ্ছে, ও সব বোঝে, ওর সামনে অন্তত ওর মাকে হেনস্তা কোরো না। আমার মেয়ে জানে আমি কী। আমার মেয়ে জানে তার মা কী। তুমি হয়তো আমার স্বামী, কিন্তু মায়ের প্রতি সন্তানের যে টান, সেই টান আমার মেয়ের তোমার প্রতি কখনও জন্মাবে না। কয়দিন ছিলে আমার মেয়েকে কাছে নিয়ে? কয়দিন মেয়েকে কোলে নিয়ে আদর করেছ, বলতে পারো? কয়দিন মেয়ের জন্যে ফোন করেছ? মেয়েরও যে তুমি কেবলই অর্থের বাবা ছিলে! বাবা কাকে বলে, জানো তুমি, আফতাব? ছিঃ! আমার ঘৃণা হয় তোমার সাথে কথা বলতে। এতটুকু মনুষ্যত্ববোধ তোমার মাঝে নেই যে তুমি তোমার সন্তানের মায়ের সাথে কথা বলছ।


শোনো আফতাব, আমার মেয়ে না থাকলে তোমার জীবন থেকে আরও অনেক আগেই সরে যেতাম আমি। অনেক সহ্য করে গেছি তোমার অমানুষিক সব আচরণ। কাউকে কিছু জানাইনি। শুধু আমার মা জানত, তুমি কী। এজন্যেই মা বারে বারে এই বিদেশের মাটিতে তোমার ভরসায় পা রাখতে দিতে সংশয়বোধ করছিল। আমিই মায়ের কথায় কান দিইনি। আমিই ভেবেছি, সব ঠিক হয়ে যাবে। কাছে থাকলে, সাথে থাকলে শুনেছি সব কিছু ঠিক হয়ে যায়। কই, আমার তো হলো না! জীবনটা আমার কাছে খুবই জঘন্য, জানো, আফতাব! আমি যাকে ভালোবেসে তাকে নিয়েই ঘর বাঁধতে চেয়েছিলাম, মনপ্রাণ উজাড় করে তাকে ভালোবেসেছিলাম, তাকেই সব কিছু মেনে নিজেকে সম্পূর্ণ তার কাছে সঁপে দিয়েছিলাম, কিন্তু জীবনের রূঢ় বাস্তবতায় সে ঘর আমার হলো না। যাকে চাইলাম আমি, হয়তো সে চাইল না আমাকে কিংবা পারল না চাইতে। আবার যখন বিয়ে করে স্বামীর ঘরে এলাম, সে-ঘরে সব আছে, শুধু স্বামীটিই আমার নেই। আমাকে সে বোঝেনি কখনও, আমাকেও যে বোঝার কিছু আছে, আমাকেও যে জানার কিছু আছে, বিয়ের দশ বছরেও সে সময়টা তার কখনও আসেনি আজ অবধি।


বিয়ের পর থেকে এই সংসারকেই নিজের করে নিয়েছি, নিজের আপন ঘর ভেবেছি, কখনও পিছু ফিরে তাকাইনি, ভেবেছি, আবার শুরু করব। কিন্তু কার সাথে করব? তুমি কি ছিলে কখনও, আমার হয়ে? তোমার স্ত্রীর জন্যে কতটা ছিলে তুমি, আফতাব? বিয়ের রাতেও কি আমার সাথে তোমার তেমন কথা হয়েছিল? আমাদের কোনও একান্ত কথা, মনে পড়ে? আমরা শুধু একসাথে শুয়েছি কয়েকটি রাত, কিন্তু কখনও এক হইনি। তুমি আমার হৃদয়কে কখনও স্পর্শ করোনি, যদিও শরীরকে খাটিয়েছ বেশ। মানুষের যে একটি হৃদয় থাকে, সে তোমার হয়তো ভিনদেশে থেকে জানা ছিল না। কী পোড়াকপাল আমার, দেখো! মেয়েদের কোনও জীবন আছে, আদৌ? বলতে পারো কোন জীবনটা মেয়েদের জীবন? মেয়েদের কোনও সখ থাকতে নেই, কথা বলার কোনও ভাষা থাকতে নেই। আছে কি? তুমিই বলো না একটু ভেবে, কী পেয়েছি আমি এই জীবনের কাছে? আজ শুধু ওই মেয়ের মুখটার দিকে তাকিয়েই পড়ে আছি, আফতাব। পড়ে আছি যেন মেয়ের একটা ভালো ভবিষ্যৎ হয়। আমি না বাঁচি, অন্তত আমার মেয়ে তো একটা সুন্দর, একটা কাঙ্ক্ষিত জীবনে বাঁচুক। আমার নাহয় চলেই যাবে। কিন্তু মেয়েকে যে আমাকেই দেখতে হবে।


এই ভিনদেশের মাটিতে বাবা ছাড়া, একজন পুরুষমানুষ ছাড়া খুব অসহায় ভেবেছি নিজেকে, কিন্তু আর বোধহয় সেই ভয়ের কোনও অবকাশ নেই। এর চেয়ে বরং আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়াই ভালো, আফতাব। মেয়েদের জীবন একলারই হয়, তা আমি বুঝেছি খুব দেরিতে, কিন্তু আমার মেয়েটি আগেভাগেই সেটি বুঝে নিতে শিখুক। আর যা-ই হোক, তাহলে সে আর হোঁচট খাবে না। আমি তোমাকে ডিভোর্সলেটার পাঠিয়ে দেবো। একতরফাভাবেই, তুমি শুধু রিসিভ করে নিয়ো। তোমার সম্পদের প্রতি আমার কোনও লোভ নেই, তার কিছুই আমি চাইব না। নিজের মেয়েকে নিজে মানুষ করার সামর্থ্যটুকু অন্তত আমার আছে। মেয়েকে দেখতে চাইলে এসো, কিন্তু কখনও ভুলেও নিজের কাছে রাখার চিন্তাও কোরো না। কেননা যে পুরুষ তার স্ত্রীকে যোগ্য সম্মান দিতে জানে না, সে পুরুষ আর যা-ই হোক, কখনও ভালো একজন বাবা হতে পারে না। মনে রেখো, দিঠিকে তুমি একদিনের জন্যেও নিজ দায়িত্বে নাওনি আজ পর্যন্ত। এই নয়টি বছর আমি একা, একহাতে ওকে মানুষ করেছি। তোমার রক্ত তার শরীরে বইছে জানি, কিন্তু সে কখনও তোমার কাছে থাকতে পারবে না, তুমিও এটি জেনে রেখো। রাখছি, ভালো থেকো।