থেকে যায় না-মানুষ

একদিন আপনি বুঝে যাবেন, দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই আপনার কেউ হয় না।
একদিন জেনে যাবেন, যাদের পেছনে বছরের পর বছর কষ্ট করে গেছেন, দিনের পর দিন স্যাক্রিফাইস করে গেছেন, তাদের বেশিরভাগই আপনার জন্য ছিটেফোঁটাও স্যাক্রিফাইস করার মানুষ নয়।

দুনিয়ায় এক আপনি নিজে ছাড়া বাকিদের মধ্যে খুব কমই আপনার আপনজন হয়।

দেখবেন, যাদের জন্য প্রচণ্ড রোদে-বৃষ্টিতে-ঝড়ে নিজের মাথার ছাতাটাও দিয়ে দিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই সুযোগ পেলে আপনার অবলম্বনের শেষ খুঁটিটাও কেড়ে নেবে। যাদের জন্য নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই দেখবেন জীবনের কোনো-একটা পর্যায় গিয়ে আপনার চোখের জলের কারণ হবে।

মানুষই এ পৃথিবীর সবচেয়ে হিংস্র ও ভয়ানক প্রাণী। যে-প্রাণীগুলোকে আমরা হিংস্র বলে সারাজীবন জেনে এসেছি, এই যেমন হায়েনা, বাঘ, সিংহ, এমনকি কুকুরও কখনও স্বজাতির ক্ষতি করে না। একমাত্র মানুষই স্বজাতি, এমনকি নিজের উপকারীর‌ও ক্ষতি করতে দ্বিতীয় বার ভাবে না। মানুষ হয়ে বাঁচতে চাইলে মানুষ চিনতে হয় সবার আগে।

এই যে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর কিছু মানুষের জন্য নিজের সব সুখ বিসর্জন দিয়ে চলেছেন, আপনার বিপদে ওরা কখনো পাশে দাঁড়ায় কি? আপনার মন খারাপ হলে ওদের আদৌ কিছু এসে যায় কি? ওদের মনের মতো করে না চললে আপনার খেয়ে আপনারই পরেও ওদের কাছে আশ্রয় মেলে কি?

মানুষ না পেলে বরং কুকুর, বেড়াল পালুন। আপনার মাথার ওপর ছাদ না থাকলেও, সহজেই চলে যাবার মতো অট্টালিকা চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও…রোদে-বৃষ্টিতে, ধুলোবালিতেও মাথা গুঁজে ওরা আপনার সঙ্গে থেকে যাবে। মানুষ চলে যায়, থেকে যায় কেবলই না-মানুষ।