জয়ী হবার আগে

 যদি জীবন থেকে মাত্র একটা জিনিসও শিখে থাকি, তা হলো, কখনও কখনও, সবচাইতে অন্ধকার সময়টিই আমাদের সবচাইতে উজ্জ্বল জায়গাটিতে নিয়ে যায়।
  
 আমি শিখেছি,
 সবচাইতে বিষাক্ত মানুষটি আমাদের সবচাইতে জরুরি শিক্ষাটা দিতে পারে;
 সবচাইতে কষ্টকর লড়াইগুলি আমাদের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে;
 এবং, বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার সবচাইতে হৃদয়বিদারক বিচ্ছেদটিও এ জীবনে খুব চমৎকার কিছু মানুষের জন্য জায়গা করে দিতে পারে।
  
 আমি আরও শিখেছি, যা দেখে এই মুহূর্তে অভিশাপ মনে হচ্ছে, একদিন তা-ই হতে পারে জীবনের সবচাইতে বড়ো আশীর্বাদ; এবং যখনই মনে হবে, আমার সামনের সকল রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, আসলে হয়তো ঠিক তখনই এটা বুঝে নিতে হয়: এখন আমাকে ভিন্ন রাস্তায় চলতে হবে, যদি গন্তব্যে পৌঁছোতে চাই।
  
 জীবন শিখিয়েছে, বেঁচে-থাকাটা যতই কঠিন হয়ে যাক না কেন, সবসময়ই কিছু-না-কিছু আশা থেকেই যায়। সেই আশার উপর ভর করে স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া যায়।
  
 আরও জেনেছি, আমরা নিজেদের যতই শক্তিহীন ভাবি না কেন, জীবনটাকে যতই ভয়ংকর মনে হোক না কেন, কিছুতেই হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। যারা লেগে থাকে, তারাই জীবনে ভালো কিছু করতে পারে। ছেড়ে দিলে সবই শেষ!
  
 আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, কাজ চালিয়ে যেতে হবে; কোনোভাবেই থেমে যাওয়া যাবে না, যত কষ্টই হোক। এমনকী যদি সব কিছুকে উদ্ভট-সৃষ্টিছাড়াও লাগে, নিজেকে যদি শক্তিশূন্য মনে হয়, তবু নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও পথ চলতে শুরু করতে হবে। থেমে যাওয়া যাবেই না, যে যা-ই বলুক না কেন!
  
 আমরা যেন মনে রাখি, এই মুহূর্তে যত লড়াই-ই করি না কেন, সামনে যত বাধাই আসুক না, এ সবই দূর হয়ে যাবে। লেগে থাকলে কোনও-না-কোনও রাস্তা বেরিয়ে যাবেই যাবে!
  
 বেঁচে এখনও আছিই যখন, জীবনে এতদূর এসেছিই যখন, বাকিটা পথও ঠিকই পেরোতে পারব। জয়ী হবার আগে পথিক হতে হয়!