ছুটি পাবার লড়াই

আমি এলোমেলো করে অনেক দিন ঘুমাই না।
দরজায় খিল দিয়ে,
মোবাইল সাইলেন্ট করে,
ল্যাপটপ বন্ধ করে
আমি অনেক অনেক দিন হলো ঘুমাই না।




কীসের ভয় আমার? চোরের?
চোর কী নেয়, টাকা, স্বর্ণ আর আসবাব ছাড়া?
ওসব নিয়ে যাক, চোর এসে কিংবা যে-কেউ এসেই নিয়ে যাক।
আমার যা হারিয়েছে, তার খবর কেউ জানে না, জানতে আমি দেবোও না।
এত বিষ কী করে উগড়ে দিই?




আমার একটা ছুটি দরকার। একটা, দুটো, তিনটে...
অনেকগুলো জমানো ছুটি খরচা করে আমার পালিয়ে থাকা দরকার।
অনেক দুপুরের ভাতঘুম আমি যে ব্যাংকে জমা দিয়েছিলাম, সেখান থেকে সুদের হিসেবে কেউ আমায় একটা রাত্রির ঘুম অন্তত এনে দাও।
কথা দিচ্ছি, একটা রাত ঘুমোতে পারলে আমি সব বেচে দেবো, এমনকী নিজেকেও।




ভীষণ ক্লান্ত এ চোখ, তাকে আর জাগতে বোলো না,
সে তো ভাত চাইছে না, এসি চাইছে না, নিরাপত্তা চাইছে না; সে কেবল দু-মুঠো ঘুম চাইছে।
ক্লান্ত চোখজোড়া আজও স্বপ্ন দেখেছিল তন্দ্রায়,
দেখেছে মানুষের চোখের গভীরে লুকিয়ে থাকা সব কবিতা,
কিন্তু আজ সে নিজেই ক্লান্ত বলে অন্যের ক্লান্তি নিয়ে দু-কলম লিখতে পারছে না।




হে আমজনতা, এই ক্ষুদ্র মানুষটির অপরাধ তোমরা ক্ষমা করো।
মানুষটা ভেতরে ভেতরে কখন এতটা ঘুমকাতুরে, এত দুর্বল হয়ে পড়েছে, সে খবর তোমরা তাকে জানতে দাওনি।




ক্লান্তি ক্ষমা করো।
দু-মুঠো ঘুম,
একথাল ঘুম,
আঁজলা-ভরা ঘুম;
কিংবা
একটু-আধটু ঘুম;
যা-ই হোক,
তোমরা মানুষটার এই ছুটি পাবার লড়াইয়ে পাশে থাকো।




কথা দিচ্ছি, যদি কোনোভাবে এ যাত্রায় বেঁচে ফিরি, আমি গল্প হব।
আমি আর কবিতা হব না... খোদার কসম!