: কফিটা কেমন? : আমার তো চা পছন্দ। : এখানকার কফিটা খুব ভালো, তাই ভাবলাম, তোমাকে এখানেই আসতে বলি। : ভালো করেছ। : দময়ন্তী, তোমার কি আমাদের পুরোনো স্মৃতিগুলো মনে আছে? : মনে করার সময় পাই না; আর আমাকে দময়ন্তী বলবে না, ওই নামে এখন আর কেউ চেনে না আমাকে। তোমার কাছে লাইটার আছে? : আমি যাকে চিনি, সে তো দময়ন্তীই ছিল; এখন অন্য নামে ডাকব? : বেশ তো, ডেকো না। লাইটার দেবে না? : নাও...আচ্ছা, কবিতা লিখতে কি সিগ্রেট খেতেই হয়? না কি ওসব শুধুই ভণিতা? : একটু ভণিতা তো নিজের সাথে করতেই হয়, আকাশ! এ ছাড়া মানুষ বাঁচে না। তবে সিগ্রেট শালাটা না একটা জিনিস, মাইরি! শালা সব ভুলিয়ে রাখে। : কী এলোমেলো বকছ? : তুমি সিগ্রেট খাও না, আকাশ? : সেটাও ভুলে গেছ! : ওহ হো, সরি সরি! তুমি তো এলোমেলো টালমাটাল কোনও কবি নও, তুমি ডিসিপ্লিনড চাকরিজীবী মানুষ, বুঝবে না ওসব। তা এখন কোন গ্রেডে আছ? স্যার-টার ডাকা লাগবে না তো আবার? হা হা... : উফফফ্, রাবিশ! এসব বলতে ডেকেছি তোমায়? : আমি এসব বলতেই এসেছি কিন্তু। : দময়ন্তী, এসব ছাড়ো। জীবন গোছাও; তোমার বয়স কম, এখনও অনেক সময় আছে, তুমি পারবে। : পারছি যে না, তুমি কি সে ব্যাপারে শিওর? : এত এলোমেলো জীবনে বাঁচা যায়? : গোছানো বলতে কী বোঝাচ্ছ? চাকরি করা? না কি চাকরিজীবী কারুর গলায় দুগ্গা দুগ্গা বলে ঝুলে পড়া? : এত বাজেভাবে বলছ কেন? ঝুলে কেন পড়বে? সুন্দর বিয়ে-থা করে সংসার করবে। : আমাকে কেউ বিয়ে করবে না। : ওমা, কেন করবে না? : যে কারণে তুমি করোনি, সে কারণেই করবে না। : আমি তো একটা বিশেষ কারণে তোমাকে ধরে রাখতে পারিনি। আমি তো... : থামো! বিয়ে ভাঙার জন্য মেয়েদের হাতে বহু অজুহাত থাকে, কিন্তু পুরুষের অজুহাত থাকে মাত্র দু-তিনটে... তা-ও যদি প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করে আর কি! : আমি তোমাকে ভালোবাসি যে, দময়ন্তী! : আমার চেয়ে বেশি তো আর বাসো না! তুমি যখন জানিয়ে দিলে, আমায় বিয়ে করতে পারবে না, তখন প্রতারিত হয়ে মরতে গিয়েছিলাম। সুইসাইড নোট লিখতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, দু-রাত দু-দিন আমি অনবরত কেঁদেছি আর লিখেছি। অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, সেই দু-দিনে তোমাকে হারানোর শোক আর মৃত্যুচিন্তা দুটোই মাথা থেকে সরে গেছে। সেদিন যেন এক নতুন জন্ম পেলাম, নিজেকে খুঁজে পেলাম। আমি কলম ধরার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেই যে তখন থেকে কলম ধরলাম, আজও ধরেই আছি; হ্যাঁ, তবে সাথে নতুন এক প্রেমিক যোগ হয়েছে---সিগ্রেট। প্রতি বাজেটে এই সিগ্রেটের দাম বাড়া ছাড়া এর সাথে প্রেম করার আর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই আপাতত! হা হা হা…সিগ্রেটের দাম বাড়লে তা-ও মানা যায়, কিন্তু মানুষ যখন দাম বাড়ায়, মেনে নিতে পারি না। : আমি…দময়ন্তী?! আমি!? : বাদ দাও তো! আমি উঠব। : আমার দময়ন্তী আমাকে এভাবে ভুলে গেল? : ভুলিনি, জাস্ট আগের মতন পাগলামো করতে আর ইচ্ছে করে না। তুমি তো আমাকে বেশ মনে রেখেছ; একজন রাখলেই তো চলে, কী বলো? : আমি তোমার পাগলামোগুলো খুব এনজয় করতাম। : হুঁ, সেজন্যই তো করি না। তোমাকে আর কত প্লেজার দেবো? কম তো আর দিইনি...হা হা… : বিহ্যেভ ইয়োরসেলফ, এটা তোমার বাসা না। : তোমার ভাব দেখে তো মনে হচ্ছে তোমার বাসা। স্যার, আপনি রেস্টুরেন্টও কিনে ফেলেছেন! এত টাকা আপনার! : চুপ, একদম চুপ! আর একটা কথাও না। এক্ষুনি চলে যাও। আমি আর ডাকব না তোমাকে; ভুলে যাব, কোনোদিন দময়ন্তী নামের কেউ আমার জীবনে ছিল। : আরে, চলে যাব বলেই তো কবিতা লিখতে শিখেছি, নইলে তো থেকেই যেতাম...