কৃতজ্ঞতা

এক জোড়া স্যান্ডেল চুরি গেছে।
চোর খোঁজা চলছে।
এ খোঁজায় কোনও ফাঁকি নেই।




সুখবর! সুখবর!
চোর ধরা পড়েছে!
মারো! মারো! গায়ের সব শক্তি জড়ো করে মারো!
শক্তি নেই যার, সে শক্তি ধার করো!
ভালো কাজে বাঙালির ঐক্যের শেষ নেই।




বেধড়ক মারধর। লাথি গুঁতা কিল চড় ঘুসি। কিচ্ছু বাদ পড়েনি। পাবলিক বড়ো সিনসিয়ার!
যে বেচারা দু-বেলা খেতে পায় না,
তার গায়েও আজ শক্তি বেশুমার!




চোরের গা বেয়ে দরদর রক্ত ঝরছে।
পাবলিকের গা বেয়ে দরদর ঘাম ঝরছে।
স্যান্ডেলের মালিক ভয়ে পালিয়েছে।
রক্তের স্রোত ঘামের দাম মিটিয়ে চলেছে।
আজ ওদের দায় নেই, তবু দায়িত্ব আছে।




চোরের জ্ঞান ফিরেছে।
ওরা এখন নেই।
চোরের টিশার্ট ছিঁড়ে গেছে।
পরনের আধখোলা জিনস অন্তর্বাসের সাক্ষ্য দিচ্ছে।
ছেঁড়া জিনস-টিশার্ট তাজা রক্তে একাকার।




কোনোমতে উঠে দাঁড়িয়ে
পকেটে-থাকা রক্তেভেজা সিগারেটটা ধরিয়ে
শিরদাঁড়া সোজা করে চোর হাঁটছে।
বহুদিন পর সে মাথা উঁচু করে হাঁটছে।
আজ সে অনেক খুশি।




যন্ত্রণায় বিদীর্ণ চোখেমুখে কৃতজ্ঞতার ছাপ সুস্পষ্ট।
সে ভাবছে, ওরা মানুষ খারাপ নয়;
চাইলেই তো ওরা তার সিগারেটটা মেরে দিতে পারত।
আচ্ছা, ওরা কি কেউই সিগারেট খায় না?
না কি এ জগতে সে-ই একমাত্র চোর?