উপেক্ষার শ্বেতপাথর


আমি এক কাপ কড়া দুঃখ পান করতে চাইলাম,
আর তুমি কিনা বানিয়ে আনলে কফি!


আমার মনের পুরোটা উঠোনজুড়ে তোমার লেখা প্রেমপত্রগুলো
দলা পাকিয়ে এখানে-সেখানে পড়ে আছে,
অথচ আমি কিনা পরিষ্কার করতে বসেছি পড়ার টেবিল!


তোমার ছোঁয়ায় আমার মনের সমস্ত রং মিলেমিশে একাকার হয়ে
রংধনু আঁকছিল, আর তুমি কিনা বলতে চাইছ,
এক সফেদই তোমার প্রিয়!?


স্বপ্নে, তোমার চোখের তলার কালিতে, উপমা বসিয়ে দিলেম যেই,
চোখ খুলতেই কিনা দেখি, তুমি নতুন চশমা নিলে আজই!


তোমার আঙুলের যে আলতা রবীন্দ্রসংগীতের সঙ্গে মিশে মিশে
আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিত,
সেই আলতার জায়গায় আজ বসে গেছে কিনা নেইলপলিশ!


আমি উড়ে যেতে চাইলাম,
আর তুমি কিনা বড়োসড়ো খাঁচা কিনে আনলে!


দুইবেলা নিয়ম করে উনুনের পাশে দাঁড়িয়ে
আমি ডাল-আলুভর্তা করতে শিখলাম,
আর এখন নাকি তোমার বিরিয়ানিই প্রিয়!


আমি যেদিন তোমার জন্য মৌনীসাধু হতে চাইলাম,
তুমি তার পরের দিনই আমায় তোমার সেই প্রিয় প্রাক্তনের কথা বললে,
যে নাকি ভীষণ সুন্দর করে কথা বলতে জানত!


আমাদের ভালোবাসাকে অতিসৌভাগ্যের ভেবে
আমি যে অহংকার লালন করতাম, শুনেছি,
তুমি নাকি বন্ধুদের কাছে সেটাকেই
আজীবনের দুর্ভাগ্যই বলে গেছ!


আমি তো অভিমানের ছন-খড় দিয়ে
ঘর বানাতে চেয়েছিলাম, অথচ তুমি
ঠিকই উপেক্ষার শ্বেতপাথরে দালান বানিয়ে দেখালে!