আর এসো না ফিরে

আমাদের আর একটি বার দেখা হবার প্রয়োজন ছিল,
আর একটি বার তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয় জেগে উঠলে আমি নিজেকে বোঝাতে পারতাম,
না, আমি তবে এখনও অনুভূতিশূন্য হয়ে যাইনি।




তোমার শেষ বারের মতন আমার হাতটা ছেড়ে দেওয়া দেখে আমি শিখতে পারতাম,
শেষেরও একটা শেষ আছে।




শেষদেখার দিন দু-জোড়া চোখ নিজেদের ঠিক কতটা সামলে রেখে চোখের জল সামলানোর অভিনয় করে,
সেই অভিনয়টুকু শেখার জন্য হলেও একটা শেষদেখার প্রয়োজন ছিল।




আমাদের শেষ সঙ্গমই হয়তো জন্ম দিয়ে যেত
এক বিরাট ইতিহাসের।




শেষদেখা হবার পর আমি বাড়ি গিয়ে আগের চেয়েও বেশি শান্ত হয়ে যাই, না কি এলোমেলো করে ফেলি সবকিছু,
সেটা দেখার জন্য হলেও একটা শেষদেখার প্রয়োজন ছিল।




তোমার ঠোঁটে হারিয়ে গিয়েই
আমি খুঁজে পেতাম চূড়ান্ত আমি'র সত্তাকে।




তোমার বিরহে পুড়ে পুড়েই
আমি দিনরাত ধরে লিখে যেতে পারতাম এক-একটা মহাকাব্য।




শেষদেখা হবার পর সেই রাতে হয়তো বাড়ি ফিরে লিখতে বসতাম কিছু-একটা।
সারারাত কেঁদেকেটে ভোরের আজানের সময় হয়তো চার লাইনের একটা কবিতা লিখে ঘুমোতে যেতাম।
সেই সাদামাটা চার লাইনের কবিতাই হয়তো বাংলা সাহিত্যকে বিচ্ছেদ নিয়ে লেখা সবচাইতে দামি চার লাইনের সন্ধান দিয়ে যেতে পারত।




আমি হেরে গিয়ে সুখে আছি ভীষণ,
ভাবছি তোমার সুখের কথা।




তুমিই জিতে গেলে শেষমেশ!
আমি খুউব খুশি, জানো?




ডানা-ঝাপটানো পাখির মতন তোমায় উড়িয়ে দিতে পেরে
যেন নিজেকেই মুক্ত করতে পেরেছি।




ভালো থেকো খুব।
এদিকে আর ফিরে এসো না।




ফুলের মতন কাঁটা-বিছানো পথে যেমন তোমার হাত ধরেছিলাম,
তেমনি কাঁটার মতন ফুলের রাস্তায় হোক তোমার যাতায়াত।
...এটুকুনই চাওয়া আমার।




আমার দিকে ফিরে এলে কিন্তু খুব খারাপ হবে!
আমার দিকটার রাস্তা এতটাই সংকীর্ণ যে,
তুমি এই পথে হাঁটবে ভাবতেই
আমার গায়ে কাঁটা দেয়!




একটা ছোট্ট জীবন নাহয় একা একাই কাটিয়ে দিলাম!
আমার কিচ্ছু হবে না, ভালোবাসি যে তোমায়...!