অণুতে ব্যাপ্তি/এক

এক। বিরহ তার সাথে, কিংবা মিলন,
দুইয়ের মধ্যে ভালো বিরহযাপন।
প্রিয়তমার সাথে যদি হয়‌ই মিলন,
মুখ তার তার‌ই মাঝে হয় দরশন।
কিন্তু হলে তার সাথে বিরহযাপন,
সবখানেই তার মুখে মাতে ত্রিভুবন।

দুই। হে প্রিয়! একান্ত‌ই যদি যেতে হয় যেয়ো;
যাও, তবু যাই-যাই মুখে এত না গেয়ো।
বজ্রপাতে হয় না তো তেমন কোনো কষ্ট,
কিন্তু পতনের শব্দ করে সব শান্তিই নষ্ট!

তিন। দুইটি পর্বত বুকে নিয়েও যদি হ‌ও অবলা,
তুমিই বলো, বলিষ্ঠ তবে যায় কাকে বলা?
যে পর্বত ঐশ্বর্যে তার গোটা পৃথিবীই পালে,
অমন দুই বিত্ত যার, সে অবলা কোন চালে?

চার। শুয়োর এসে বলে, সিংহ! তুমি রাজা কীসের?
সাহস থাকে তো এসো, আজ যুদ্ধ হোক ঢের!
সিংহ বলে হেসে, বলেছ যা ভায়া...ভালোই!
যাও ফিরে, করো রাষ্ট্র...সিংহ করেছি জয়!
কত কাজ পড়ে আছে, কত যে ব্যস্ততা হাতে,
লাভ কী কালি লেপে, লড়ে শুয়োরের সাথে?

পাঁচ। ওগো প্রিয়! এ মিনতি আমি করি বারেবার,
থেকে যাও ওখানেই, এসো না কাছে আর!
এখানে বিষাদ সব‌ই, হায়, থাকা বড়ো দায়;
চাঁদের আলো...সে-ও দেখি শরীর পোড়ায়!

ছয়। মনে কি পড়ে বন্ধু আমায় তোমার?
তোমায় আমার কিন্তু মনে নেই আর!
মন তো থাকলেই তবে পড়ত তোমায় মনে,
এ মন যে নিয়েছ সাথে বিদায় নেবার ক্ষণে!

সাত। কিছু যদি না-ও করে, শুধু কাছে রয়,
তবু সে আনন্দে সব‌ই দুঃখ দূর হয়।
এ পৃথিবীতে যার প্রতি ভালোবাসা যার,
লিখে যায় কি বলা, সে যে কী ঐশ্বর্য তার!

আট। কে সাধু, কে খল, যায় কীভাবে চেনা?
একে পাপ পুণ্য হয়, অপরে বাড়ে দেনা।
লোনা জল নিয়েও মেঘ দেয় মিষ্টি জল,
দুধ পান করেও সাপ দেয় উগরে গরল!

নয়। চমৎকার সৃষ্টি কখনো হাতে যদি পায়,
বাজে লোক তাতে দোষ খুঁজেই বেড়ায়।
সৌম্য-সুন্দর দেহ পেয়ে যেমন,
মাছি তাতেও ক্ষত করে অন্বেষণ।