ওসব আবেগ-টাবেগ ঝাড়ো, নিজের দু-বাহু শক্তহাতে ধরো, পাথরের শরীর থেকে রক্ত ঝরাও, কিনারা এলে দিক বদলাও, পাথর ভাঙো আর রাস্তা গড়ো; চাঁদ দেখলেও থেমে যেয়ো না, প্রেমের সময় নয় গো এখন! জয় যদি না-ও আসে, তবু যেন মরতে না হয় অনুশোচনায়! খারাপ সময় সবারই আসে, আসবে তোমারও। তবুও তখন ধৈর্য রেখো; জানি, পুড়বে ভীষণ, খুব কান্না পাবে, নাহয় কেঁদেই নিয়ো পুড়তে পুড়তে! ফুলের পরাগও তো পোড়ে; পোড়ে বলেই অত সুন্দর আগুন জ্বলে, যখন ফুলটা ফোটে! পুড়তে থেকো, পোড়ার সুযোগই তো পায় না সবাই! খাঁটি হয় সে-ই কেবল, পুড়তে যে জানে! আজ যাদের কপাল দেখো, ওদের বাহুর দিকেও তাকিয়ে দেখো, ওখানে কত ক্ষতের দাগ রয়েছে, দেখেছ কি তা? আর তাকিয়ো ওদের চোখের দিকে। সেখানে অশ্রু জমে শুকিয়ে আছে, কান্নাগুলি লুকিয়ে গেছে, খেয়াল কোরো! ছুরিটা যদি মারতেই হয়, মেরো নিজের বুকেই! আত্মত্যাগের বীজ না বুনে আত্মপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে কে কবে! জেনে রেখো, হৃদয়ে ছুরির আঘাত ভালোবাসার সুখের চেয়েও অনেক দামি! ছেড়ে দিয়ো না; ছেড়ে দেয় যে, সে পায় না কখনও। নুয়ে যেয়ো না; পা-ই নেই যার, সে-ও তো হাঁটে! মরতে হলে মোরো এক বারই, প্রতিদিনই নয়! সামনে মৃত্যু এলেও বুক উঁচিয়ে মঞ্চে ওঠো! বাঁচতে যদি চাও, মরতে তুমি রাজি থেকো! শৃঙ্খলের হাত ধরেই মুক্তির স্বাদটা আসে, নিজেকে বেঁধে রাখো, ছোটার সময় এখনও দূরে! সাহস রেখো, হারাতে ওটা সবাই-ই পারে! যদি আঘাত আসে, যদি হোঁচট খেয়ে রক্ত বেরোয়, জেনো তবে, সঠিক পথের মানেই এমন! নিয়তির লাথি খাবেই তো সে, যার নিয়ত ভালো! যদি ওটুকও আঘাত না রোচে মুখে, কোন মুখে তবে বাঁচতে চাইছ বুক উঁচিয়ে? যা পাবার মতো, তা পেয়েছে কে কবে সহজ পথে? ক্ষতে মলম লাগাও, যাতে ক্ষত সেরে যায়, আর এগোতে পারো! চাও যদি আলো ছড়াতে নিজের ঘরে, তৈরি থেকো, হও পুড়ে অঙ্গার, হও ঘায়ে আহত! বিজয়ীর মুকুট পরার আগে, সৈনিকের মন তৈরি রেখো! জন্মানোই তো সব কিছু নয়, মৃত্যুর আগের পুরো সময়ই হিসেবে আনো! কোনও সুখ নয়, কোনও ধর্ম নয়, কোনও দর্শনও নয়; বিজ্ঞান, জ্ঞান, ধ্যান কিংবা বিত্তও নয়; জীবনের প্রথম- ও শেষকথা জীবন নিজেই! জীবনসুরা পান করে যে, তার জীবনসুর এমনিই বাজে!