ভাবনা: নয়শো আঠারো ……………………………………………………… এক। একটা সত্যি কথা বলবে? তুমি এতগুলি বছর ধরে থেকে গেছ কেন আমার সাথে? অন্য কোথাও চলে যাওনি কেন? চাইলেই তো চলে যেতে পারতে। কী? পারতে না? আসলে কী জানো, সম্পর্ক একটা জালের মতো। মানুষ এতে একবার জড়িয়ে গেলে মাছের মতো আষ্টেপৃষ্ঠে আরও গভীরভাবে আটকে যায়। সময় যত গড়ায়, জাল তত বিস্তৃত হয়, বাঁধনও তত শক্ত হয়ে যায়। একসময় জাল খুলে ফেললেও আর বাঁধনমুক্তি হয় না। পোষা বেড়ালের মতো পায়ে পায়ে, গায়ে গায়ে পিঠ ঘষার মতো লেপটে লেপটে থাকে। কখনও কথার মায়ায়, কখনও কণ্ঠের মায়ায়, কখনোবা স্নেহের মায়ায় সম্পর্ক জালের মতো গভীর থেকে আরও গভীর হয়। একসময় সম্পর্ক ভাঙার প্রয়োজন আর পড়ে না, আদতে ভাঙা যায়ও না। পোষা কুকুর-বেড়াল কখনও তাড়িয়ে দেওয়া যায় না। সম্পর্কও তেমন হয়ে যায়, লাত্থি মারলেও পায়ের কাছে পা জড়িয়ে চুপ করে গর্গর করতে করতে পায়ের কাছেই ঘুমিয়ে পড়ে। সে জানে, ঘুম ভেঙে উঠে দেখবে, সে পায়ে নয়, কোলে। কিছু জিনিস খুব মায়া মায়া, তাই না? এই যেমন ধরো, তোমার প্রতি আমার, কিংবা আমার প্রতি তোমার, অথবা প্রতিদিন চা খাওয়ার কফির কাপটার প্রতি আমাদের, অথবা প্রতিদিন বাজানো কলিংবেলটার প্রতিও কী অদ্ভুত মায়া লাগে, তাই না? মানুষ প্রেমে নয়, প্রয়োজনে নয়, ভালোবাসায়ও নয়, কেবলই মায়ায় আটকে থাকে। দুই। A man's mistress should not try to replace his wife. If she tries to replace, she is replaced. তিন। Stop being emotional. Sometimes love dies. Accept it. চার। একটা মেয়ের যদি, বেশি কিছু নয়, শুধু আর্থিক স্বাধীনতাটুকু থাকে, তাহলে তার এইসব শব্দের কাছে বার বার ফিরে না গেলেও চলে: অপমান, প্রতারণা, করুণা, নির্যাতন, হীনমন্যতা, পরাধীনতা ইত্যাদি। অবশ্য এক্ষেত্রে সবার আগে দুইটি মহাফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: ভালোবাসা ও আবেগ। খিচুড়ি রান্না করতে যেমনি ডাল আর চাল লাগে, ঠিক তেমনি যন্ত্রণা রান্না করতে ভালোবাসা আর আবেগ লাগে। মানসিক কষ্টের সবচাইতে কাছের বন্ধু এই দু-জনই। আমি কীভাবে তাকে ভুলে যাব? এতদিন পর কীভাবে এখান থেকে বেরিয়ে যাব? ও নাহয় এরকম, কিন্তু আমি তো এরকম না। আমি কীভাবে এমন একটা কাজ করব? সে কীভাবে আমার সঙ্গে এরকম করতে পারল? কীভাবে? কীভাবে? কীভাবে? এখানে আমার কী দোষ? আমি এর শেষ দেখেই ছাড়ব! এই ধরনের হাজারো প্রশ্নের উত্তর একটাই: যা আপনাকে ভালো রাখছে না, তা ধরে রাখলে আপনার পক্ষে ভালো থাকা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এবং কোনও ভুল অবলম্বনকে ছেড়ে দেবার একমাত্র রাস্তা: আর্থিক স্বাধীনতা। ভালোবাসার কিংবা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে লাথি-গুঁতা খেয়ে কোনোমতে মরতে মরতে সংসার করা গেলেও সুস্থভাবে নিঃশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকা যায় না। ভালোভাবে বাঁচতে স্বামীর ভালোবাসার চাইতে আর্থিক স্বাধীনতা জরুরি। বিপদে পড়লে সেখান থেকে মুক্তি পেতে ভালোবাসা নয়, টাকা লাগে। পাঁচ। মানুষ কখনও কখনও একদমই চুপ হয়ে যায়, যখন সে অনুভব করে, তার কথার কোনও দাম নেই। যদি আপনি এমন কোনও ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিটি হন, তবে জেনে রাখুন, আপনি মানুষটা সত্যিই খুব খারাপ। ছয়। এ জীবনে সবচাইতে সুন্দর ঘটনাটি হচ্ছে, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া, যাকে ছাড়া আপনি বাঁচতেই পারেন না। এ জীবনে সবচাইতে কষ্টের অধ্যায়টি হচ্ছে, সেই মানুষটাকে ছাড়া বাঁচতে বাধ্য হওয়া। প্রথমটি কারও কারও জীবনে ঘটে। প্রথমটি যাদের জীবনে ঘটে, তাদের প্রায় সবার জীবনেই দ্বিতীয়টি ঘটে। সাত। The word "No" is not absolute. It changes to "Yes" depending not on the situation, but on the relationship. To hear "Yes", you must have a reason. আট। I'm special to you. It's not important. You're not special to me. It's important. নয়। Justice is serene. ...Yes, you deserve it. Period. দশ। I exist only to come right back to you, only more beautifully. What a loser---me! একটা ভার্চুয়াল ভালোবাসাও ঈশ্বর আমার কপালে রাখেন নাই! আজ আমি গরিব বলে... তুমি আমাকে কাছে আসতে দাও না। আমাকে এত রোমান্টিক বানিয়ে ছেড়ে দিলে তুমি! জীবন যেভাবে আসবে আমার কাছে, আমি সেভাবেই গ্রহণ করব এখন। তুমি যদি আমাকে হঠাৎ একদিন ভালোবাসো, তাহলে জিজ্ঞেস করব না ভুল করেও... এতদিন ভালোবাসোনি কেন? যেদিন যা পাই, তা-ই কুড়িয়ে নিয়ে নেব, তবু ফিরে আসো; আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না আমি। কাকে তুলে দেব আমার এই অনুভূতিগুলো? এত এত পবিত্র এরা, আর কেউই এর যোগ্য না। ঘুম না হলে, তোমার কোল লাগবে আমার। আলসেমি লাগলে, তোমার বুক লাগবে আমার। কিচ্ছু দুনিয়াদারি করতে মন না চাইলে, তোমার কোলে উঠে বসে বসে পপকর্ন খাওয়া লাগবে আমার। তোমাকেও মাঝেমধ্যে একটু মুখে পুরে দেব পপকর্ন। তুমি কপালে একটু পর পর চুমু খাবে আমার, আর আমি চুপ করে বসে বসে পপকর্ন খাব যতক্ষণ না আমার আমিকে আমি ফিরে পাচ্ছি। নিজেকে ফিরে পেতে একটা মানুষ লাগে, জানো? আমরা আমাদের পিতা ও গুরু নিজে বেছে নিতে পারি না। পিতাই নয় শুধু, আমাদের গুরুও সৃষ্টিকর্তা ঠিক করে রাখেন। আমরা পিতার প্রতি ঋণী বলেই পিতাকে কষ্ট দিই। ঠিক একইভাবে, আমরা গুরুর প্রতি ঋণী বলেই গুরুকে কষ্ট দিই। জন্ম ও শিক্ষা যাঁদের কারণে, মানুষ তাঁদেরই সবচাইতে বেশি কষ্ট দেয়। ভাবনা: নয়শো উনিশ ……………………………………………………… এক। Do you know, why I come back again and again only to you? With you, I don’t feel alone. It’s all about how we experience through the events happening outside. If I feel alone with someone in marriage? It won't serve the purpose. If I don't feel successful within? All the top positions at different offices won't be enough. Being free means we must figure out what we really are, what feels right exactly for us, right? I also cherish the fact that you can take my strong urge to express the philosophies. Higher thinking, that I download from the Cosmos. I needed this helplessness, I didn’t believe in destiny before. I do now. I trust in God's timing now. A dose of fatalism was absolutely missing in my thoughts. I always knew I had control over my life. I don’t. We don't choose. Wow! We never know before it happens. Jay Shetty chose to be a monk and took himself dedicated to the monastery, shaved his head and used to wear robes, but then his guru told him that he would serve better if he went out in the materialistic world, and spread the words of spirituality. He came out and met his wife. Marriage is actually meant to bring our spouses closer to God. You know that? And what if I never meet my spouse? The point is to have faith in God that it is best for me and not to suffer. Because, I actually don't suffer for my losses now. Suddenly, I feel I am actually lucky and all my wishes are actually coming true. I wouldn’t have fared well if I had seen myself stuck here for the next thirty years. For me, BCS was a journey, not a destination. I needed to believe in God and maybe this is the time God is speaking to me. I need you, to keep living inside. And I know now that you too are a godsend to me. দুই। Every now and then, I feel like 'This is how I end!' Then I wake up...with a coffee...'I can either accept this or I can get to work.' No matter what happens, promise me, if I die proving myself now, going abroad, or anything happens to me, you would write for me after I die and tell the world, tell my friends here, tell my family that I never stopped fighting to make it happen. তিন। কিছুক্ষণ আগের কথা। এক দাদা মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ করতে বাসায় এসেছেন। দেখা করতে গেলাম। মা আমাকে দেখে দাদার আগেই বরের বৃত্তান্ত দিয়ে দিল। অনেক ভালো ছেলে, অনেক ভালো ছেলে পেয়েছে তোর দাদা। ছেলেদের দুইটা বাড়ি আছে, তিনটা স্বর্ণের দোকান আছে। বাড়িভাড়া পায়, আরও কী কী নাকি দোকান আছে! ও আচ্ছা, ইন্ডিয়াতেও বাড়ি আছে একটা। অনেক ভালো ঘরে ওর বিয়ে হচ্ছে। ভালো ছেলের সংজ্ঞা দেখুন। বোঝার চেষ্টা করুন। উপরের বর্ণনায় ছেলেটি আদৌ আছে? যা আছে, তার পুরোটাই ওর ঘর, ওর পারিবারিক বিত্ত। মা এমন ছিল না, এমন হয়ে গেছে। কখন হয়েছে, আমি খেয়াল করিনি। এমনও হতে পারে, ওই দাদার সামনে দাদার মনের কথাগুলি মা নিজেই বলে দিল। যেটাই হোক, মা কথা বলার সময় দাদার চোখেমুখে সুখ ও তৃপ্তি ঝলমল করছিল। কিচ্ছু করার নেই। বিয়ের বাজার এরকমই। বিসিএস ক্যাডার হবার পর ছেলেটার রেট এখানে এমনি এমনি বেড়ে যায় না। যে সমাজে মানুষের সঙ্গে মানুষের যতটা, ততোধিক বিয়ে হয় বিত্তের সঙ্গে মানুষের, অবস্থানের সঙ্গে মানুষের, পরিবারের সঙ্গে মানুষের, সেখানে এরকম কিছু দৃশ্য দেখতে আপনি পাবেনই! সত্যিই কিচ্ছু করার নেই। যদি ধনীঘরের পুত্র না হোন, তবে নিজেকে তৈরি করুন। বিত্তশালী পরিবারের ছেলেরা আজন্মই তৈরি। এমন সৌভাগ্য নিয়ে যদি না জন্মান, তবে, আবারও বলছি, নিজেকে তৈরি করুন। চার। একটা খেলা হয়ে যাক। আজ ও কাল তো ছুটি। আসুন, বইয়ের সঙ্গে একটু সময় কাটাই। খুব ছোটো শরীরের কিন্তু বড়ো অনুভবের তিনটা উপন্যাসের নাম বলছি: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সুদূর ঝর্নার জলে (এর পরের বই 'ছবির দেশে, কবিতার দেশে'। এই বই যতটা বই, ততোধিক স্বপ্ন।) সমরেশ মজুমদারের মনের মতো মন বুদ্ধদেব গুহর হলুদ বসন্ত কবিতার এই বইটা খুব নিবিড়ভাবে ছোঁয়া যায়: পূর্ণেন্দু পত্রীর কথোপকথন; পড়তে পারেন, দুই দিন ভালো কাটবে। আপনিও দু-একটা বই রিকমেন্ড করুন না বন্ধুদের জন্য! পাঁচ। মেয়ে বলল, একটা সেলফি তুলি? ইচ্ছে হলো...বলি, তোমার মাস্কটা একটু খুলি? ইদানীং সুন্দরী মাস্কদের সঙ্গে সেলফি তুলতে হয়। ছয়। মূর্খ বেয়াদব সকল কালেই ছিল, আছে, থাকবে। তবে আমাদের সময়ে, মূর্খ বেয়াদবদের গিয়ে দাঁড়াবার মতো কোনও জায়গা ছিল না, আর এখন ফেইসবুক আছে। ঘরে চাল নেই, মাথায় ঘিলু নেই, তবু নেটিজেনদের সমাজে একটা স্ট্যাটাস আছে। পার্থক্যটা এখানেই। সাত। You cannot claim what you do not pay for. You can only request. If refused, you can request again like a beggar keeping in mind that a beggar must not shout whatever happens. আট। একটা টেক্সটের রিপ্লাই দিতে মাত্র পাঁচসেকেন্ড লাগে। একটা টেক্সট পাঠাতে মাত্র পাঁচসেকেন্ড লাগে। যার ইচ্ছে থাকে, সে কখনও ব্যস্ততা দেখায় না। যে ব্যস্ত থাকে, সে কখনও ইচ্ছে দেখায় না। কাউকে ভালোবাসা নয়, বরং সঠিক মানুষকে সঠিক সময়ে সঠিক রাস্তায় ভালোবাসা জরুরি। ছ্যাঁচড়ামি আর ভালোবাসা এক জিনিস নয়। বুঝতে শেখো, বোঝার চর্চা করো। বাই দ্য ওয়ে, ওর যা পাবার দরকার ছিল, তা পেয়ে যাবার পর তোমাকে সে সময় দেবে কোন দরকারে? নয়। He flirted. She farted. They parted. দশ। : Will you marry me? : I've a husband. : But I want to marry you, not your husband. এগারো। হে ভগবান, তুমি আমার স্বামীর ভুঁড়িটা আরও বাড়িয়ে দাও, মাথার চুল আরও কমিয়ে দাও। মানুষটার ভুঁড়ি বাড়ুক, টাক পড়ুক; মানুষটার দিকে এক আমি বাদে আর কোনও মেয়ে যেন না তাকায়। ভাবনা: নয়শো বিশ ……………………………………………………… এক। When your boyfriend says, 'Trust me, I never sleep with anyone else.', trust him. Why on earth should he waste time sleeping with another girl? Who wants to sleep when not sleeping pays? দুই। Pain is the price of free sex. তিন। When you have sex for money, you will earn. When you have sex for pleasure, you will enjoy. When you have sex for love, you will suffer. চার। People usually do not care about the things you are enjoying that they cannot enjoy. So stop marketing your good feelings. It rather bothers people. পাঁচ। যার সাফল্যের পেছনে আপনার অবদান সবচাইতে বেশি, আপনার সাফল্যে যখন সে-ই সবচাইতে বেশি দুঃখ পায়, তখন তার চাইতে কষ্টের আর কিছু নেই। ছয়। জানি, আমার অনেক দোষ আছে। তবু আমাকে ছেড়ে চলে যেয়ো না, পাশে থেকো। তুমি পাশে থাকলে আমি সব পেরে যাই। সাত। সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবার সবচাইতে সহজ রাস্তাটি হলো, ধর্মীয় ও সামাজিক কপটতার আশ্রয় নেওয়া। কাউকে অসাধারণ ভেবে তার সামনে অকপট হতে গেলে প্রায়ই হতাশ হবেন। বাঙালি কেবলই ভাত খেয়ে বাঁচে না, ভণ্ডামি খেয়েও বাঁচে। আট। নির্বোধের সঙ্গে প্রেম করে ছ্যাঁকা খাওয়ার চাইতে জ্ঞানীর সঙ্গে প্রেম করে ছ্যাঁকা খাওয়া অনেক ভালো। নয়। পুণ্য করার সুখ পাবার জন্য কাউকেই লাগে না, কিন্তু পাপ করার সুখ পাবার জন্য একজন বিশ্বস্ত বন্ধুকে লাগে। তাই ভালো ভালো কথাবার্তা বলার জন্য কেউ নক দিলে খুব বিরক্ত লাগে। ভালো বন্ধু খুঁজি, যার সঙ্গে ধর্মালয়েও যাওয়া যাবে, অধর্মালয়েও যাওয়া যাবে; আজাইরা লোকের সঙ্গে সময় দিতে ক্লান্ত লাগে। দশ। বাস্তবতার মুখোমুখি হবার চাইতে বরং কল্পনার সমুদ্রে ডুবে থাকা অনেক সহজ। হ্যাঁ, আমরা এটাই করি। আমরা ভবিষ্যতের সুখের জন্য পরিশ্রম না করে বর্তমানের সুখটাকেই উপভোগ করি। ঠিক এরকম করেই বাঁচে যারা, কেবল ওরাই আমাদের সঙ্গে এমন দিবাস্বপ্নে ভাসবে। বাকিরা ঠিকই বুঝে নেবে, সামনে-থাকা সুযোগগুলির একটাও আমরা কাজে লাগাচ্ছি না, এবং সুযোগ কাজে লাগায় না যারা, তারা সারাক্ষণই মনে মনে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকে। যদিও পৃথিবীর দিকে তাকালেই আমাদের মনে হয়, আহা, যদি জীবনটাকে আরও একটু উপভোগ করতে পারতাম! এই উপভোগটা করতে চাইলে নিজেকে সবার আগে ইঁদুরদৌড় থেকে বের করে আনতে হবে, যা আমরা শেষমেশ আর করতে পারি না। এভাবে মনের বিরুদ্ধে বাঁচতে গিয়ে একসময় অন্যদের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখলে আমাদের ভীষণ অসহ্য লাগে। এ থেকে মুক্তির উপায় কী? সামনে যে কাজ আছে, তা ঠিকঠাকভাবে করে ফেলে কীভাবে? আসলে এটা একটা অভ্যাসের ব্যাপার। বাস্তবতা নিয়ে প্রায়ই উদ্বিগ্ন হয়ে থাকলে জীবনীশক্তি ক্রমশ কমতে থাকে। এরকম নার্ভাস হয়ে এদিক-ওদিক ছোটার চাইতে ধীরস্থির হয়ে চোখের সামনে থাকা কাজগুলো গুছিয়ে করে ফেলা ভালো। কল্পনার জগতে দিনের পর দিন থেকে যেতে যেতে মানুষ একদিন লক্ষ্যহীন হয়ে পড়ে। মানুষ সহজ কাজে ডুবে থাকতে থাকতে ভুল করে জরুরি কাজ ফেলে রাখে। কাজ জমতে জমতে যখন পাহাড় হয়ে যায়, তখন মানুষ স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হয়ে পড়ে। তাই যখনই আমরা দেখি, পার্থিব কোনও লক্ষ্য আমাদের চলার পথে এসে পড়ে, তখন সেখান থেকে পালিয়ে না গিয়ে প্রতিদিনের জীবনযাপনের সঙ্গে বাড়তি কিছু কাজ যোগ করে নেওয়াই ভালো। দৌড়োনোর সময় বিশ্রাম নিলে বিশ্রামের সময় দৌড়োনোর সুযোগটুকুও পাওয়া যায় না। তাই সেইসব স্বপ্ন নিয়েই কাজ করতে হবে সবার আগে, যেগুলিকে বাস্তবে রূপ দেওয়া সহজ। বর্তমানকে উপভোগ করার সময়ই ভবিষ্যতকে মাথায় রেখে দিলে ভালো হয়। কল্পনা ভালো, যদি তা বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয়। স্বপ্নযাত্রায় যখন আপনি আছেন, তখন যদি কারও সঙ্গে সময় কাটাতে হয়, তবে এমন কাউকেই বেছে নেওয়া উচিত, যার স্বপ্ন আপনার স্বপ্নের মতোই। বাজে লোকের সঙ্গ আনন্দ দিতে পারে, কিন্তু কখনোই প্রতিষ্ঠা দিতে পারে না। এগারো। : গোপাল, ওরা কারা, যারা মজা বোঝে না? : মহারাজ, ওরা তারাই, যাদের গালে কষে চড় মারার পর 'ভাই, গালে মশা বসেছিল।' বললে দিব্যি বিশ্বাস করে ফেলে! বারো। আপনাকে অনেক ভালোবাসি। এখন আমাকে বলুন, এখন থেকে কীভাবে পড়লে চাকরি পাবো। ...এটাই যদি হয় আপনার ধান্দাবাজি-মার্কা ভালোবাসার নমুনা, তবে ব্রেকআপের পর অমন ভ্যা ভ্যা করে কাঁদেন কেন? নিজে যা করেন কিংবা প্রশ্রয় যা দেন, সেটা তো স্রেফ ধান্দা, ওটাকে ভালোবাসা নামে ডাকেন কেন? তেরো। ভালো মানসিকতার মানুষ হয়ে ওঠার প্রথম ধাপই হচ্ছে, বাজে মানসিকতার মানুষের আঘাতকে নীরবে মেনে নেবার জন্য প্রস্তুত হওয়া। চৌদ্দ। মানুষ যে কেন মানুষকে ভালোবাসে, আর কেন যে প্রেম করে, কে জানে! এটা যে কী একটা বিপদ! এর চাইতে বড়ো বিপদ কি আর আছে?! পনেরো। শুরুতেই কারও কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে বোসো না; ন্যূনতম পরিচয়ের পর অবস্থা বুঝে চেয়ো। এ জগতে কেবল ভিখিরিরই সাহায্য পেতে একটুও পরিচিত হতে হয় না। লোকে কেবল ভিখিরিকেই সাহায্য করে বিনা কারণে। ওরকম করলে সাহায্য পাবার বদলে খেতাব পাবে একজন বিরক্তিকর বেআক্কেল মানুষ হিসেবে। হ্যাঁ, এর ব্যতিক্রমও আছে। ভাগ্য ভালো হলে সেই ব্যতিক্রম মানুষের সঙ্গে তোমার দেখা হয়ে যেতেও পারে। তবে তুমি এমন কাউকে জোর করতে পারো না কিংবা এমন কারও প্রতি প্রত্যাশা রাখতে পারো না সেই ব্যতিক্রম মানুষটি হতে, যে তোমাকে চেনেই না। সাহায্য চাইতে হয় না, পরিচয় বা সম্পর্ক বা কারণ থাকলে ওটা এমনিতেই পাওয়া যায়। ষোলো। এখন বিনে পয়সায় ফেইসবুক চালানো যায়। এখন বিনে পয়সায় যে কারুরই ওয়ালে গিয়ে 'আপনার কাছ থেকে এটা এটা প্রত্যাশা করি না।' কিংবা 'আপনার কাছ থেকে ওটা ওটা প্রত্যাশা করি।' লিখে ফেলা যায়। এখন বিনে পয়সায় মাইন্ডও করা যায়। এখন পেটে ভাত থাকুক না থাকুক, বিনে পয়সায় স্ট্যাটাস ধরে রাখা যায়। এখন বিনে পয়সায় রিলেশনের নানান জাহাজে ঘুরে বেড়ানো যায়। বিজ্ঞান সত্যিই এগিয়েছে! সতেরো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই... বেকার ছেলেরা প্রেমিক হিসেবে যতটা ভালো, স্বামী হিসেবে ততোধিক বাজে। প্রতিষ্ঠিত ছেলেরা স্বামী হিসেবে যতটা ভালো, প্রেমিক হিসেবে ততোধিক বাজে। প্রেম করতে আবেগ ও অবসর লাগে, সংসার করতে দায়িত্ববোধ ও ব্যস্ততা লাগে। হ্যাঁ, এরকমই হতে বেশি দেখেছি। ভাবনা: নয়শো একুশ ……………………………………………………… এক। যাঁরা বলছেন, বিসিএস ক্যাডার হবার পর লোকে অন্যের গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করে, তাই বিসিএস ক্যাডাররা খারাপ, তাঁদের বলি... অন্যের গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করে না কিংবা করতে হয় না, এমন মানুষ আপনি কয়জন দেখেছেন? মানুষ হয়ে জন্মেছেন যখন, তখন বিয়ে করলে তো অন্যের গার্লফ্রেন্ডকেই বিয়ে করতে হবে। বাস্তবতা তা-ই বলে। (এখানে কোনও সমস্যা তো দেখি না যদি তার একান্ত ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিয়ো প্রাক্তনের কাছে না থাকে।) আপনি নিজেও এটাই করবেন। এমনকী জীবনে যদি এক বিয়ে বাদে বলার মতো আর কিছু করতে না-ও পারেন, তবুও করবেন। ওয়েট অ্যান্ড সি। দুই। ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় যাঁরা বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি জানাই অভিনন্দন। আপনাদের মধ্যে যাঁরা বিভিন্ন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন, তাঁদের প্রতি জানাই সমবেদনা। প্রথম হওয়াটা বাড়তি কোনও অর্থ বহন না করলেও কিছু অনর্থ নিশ্চয়ই বহন করে। সবার মঙ্গল হোক। তিন। মিথ্যা কথায় কাজ হইলে সত্য কথার প্রয়োজন কী? এরই নাম ভালোবাসা...এরই নাম প্রেম...লা লা লা... চার। যা আমি অনুভব করি না, তা-ও আমাকে জোর করে অনুভব করাতে চাইবে। যা আমার চেতনায় নেই, তা নিয়েও আমাকে কথা বলতে হবে, কথা সহ্য করতে হবে মার না খেয়ে বাঁচতে চাইলে। যা আমি বিশ্বাসই করি না, তা-ও আমাকে বিশ্বাস করার অভিনয় করে যেতে হবে ঝামেলা এড়াতে। আমরা একধরনের চাপিয়ে দেবার কালচারে বাস করছি। কীরকম ব্যাপারটা? তুই অমুক চেতনা ধারণ করিস না মানে? ফাজলামো পেয়েছিস? তুই এভাবে চলছিস না কেন? ওভাবে বলছিস না কেন? তোর তো অমুকভাবেই অনুভব করা উচিত! আমি তো এটাই বুঝি, এটাই মানি। তুই আবার ওসব কী বলিস রে? তুই কি তবে মানুষ নোস? বাঁচতে হলে এভাবেই বাঁচতে হবে। তোর বাঁচাটা তো ভুল বাঁচা। হয় আমার রাস্তায় বাঁচ, নয় মর! যে মগজ এভাবে ভাবতে শেখায় না, ওটাও আবার মগজ নাকি? কী কাজে লাগে ওটা? ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দে! হ্যাঁ, আমরাই মানুষ। আমাদের মতের যারা, তারাই কেবল মানুষ। আমাদের পথের বাইরে সবই বিপথ! একটাই দল থাকবে, তা হচ্ছে: আমাদের দল! বাকিরা সবাই নিপাত যাক! আমরা দলে ভারী, অতএব বলেও ভারী! আমরাই খাই, বাকিরা তো চিবায়! ভালোভাবে বাঁচতে চাইলে আমাদের পথেই হাঁটতে হবে। নইলে পা ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো করে দেবো! ভাবুন তো! চেতনার এমন স্টান্টবাজি আর কোথাও দেখেছেন কখনও? অন্য কেউ কীভাবে ভাববে, কীভাবে আলোড়িত হবে, এসবও আমরা ঠিক করে দিতে চাই! এমনকী আমরা যতটা বুঝি কিংবা যতদূর আমাদের দৌড়, তার বাইরেও যে অনেক কিছু থাকতে পারে, এই সহজ কথাটি মাথায় ঢোকাতে আমরা নারাজ। আমরা হয় মানতে দেখি, নয় মারতে থাকি। বোধের এমন কাঠবেকারত্ব! চৈতন্যের এতটা প্রতিবন্ধিত্ব! ভাবা যায়! পাঁচ। নিজের ছেলেকে সহজেই চড় মারা যায়, কিন্তু অন্যের ছেলেকে সামান্য বকাটুক দিতেও অনেক সংকোচ হয়। অবশ্য, আমি এমন কাউকে কাউকে দেখেছি, যারা সন্তান জন্মদানে অক্ষম হলেও লোকের ছেলেপেলে দেখলেই খ্যাঁক খ্যাঁক করে ওঠে। আপনি যদি লেখেন, তবে দেখবেন, না পড়েই এবং না বুঝেই আপনার লেখা নিয়ে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছে বিশেষ কিছু লোক। ওরা লিখতেও পারে না, পড়তেও পারে না, শুধুই আজেবাজে কথা বলতে পারে। ভাবে সপ্তমী, কর্মে শূন্য! অন্যের সৃষ্টি দেখামাত্রই ওদের যা-কিছু আছে, তা নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর দেখলেই বোঝা যায়, ওদের সম্বল বলতে ওই মগজবিহীন নরমুণ্ডটুকুই! ধর্ম পালন না করলে স্বর্গে যাওয়া যায় না, শুনেছি। কিন্তু লোকের পেছনে লেগে না থাকলে স্বর্গ মিস হয়ে যায়, এমন কিছু কখনও শুনিনি। তবু কিছু লোক রীতিমতো ধর্ম পালন করার মতো করে অন্যের পেছনে লেগে থাকে। লজ্জা, কাণ্ডজ্ঞান, আত্মসম্মানবোধ এসবের কিছুই ওদের নেই। যা আছে, তা হচ্ছে, লোকের পেছনে লেগে থেকে নষ্ট করার মতো অফুরন্ত সময়। যখনই দেখবেন, কেউ সৃষ্টি নিয়ে কথা না বলে স্রষ্টা নিয়ে বকবক করছে, তখনই বুঝে নেবেন, বেচারা কেবল মূর্খই নয়, তদুপরি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। পাঠকেরা লেখা নিয়ে বলে, অপদার্থরা লেখক নিয়ে বকে। ছয়। Reading people is much more important than reading books. And, it's not that easy. Even an idiot can read a book, but reading people needs some wisdom. সাত। সুখী হবার খুব কাজের একটা রাস্তা: কখনোই কাউকে ঈর্ষা কোরো না। একমুহূর্তের জন্যও না। ঈর্ষা করে কী হয়? যা তোমার নয়, তা তো তোমার নয়ই! আর যা তোমার, তা তোমার কাছে আসবে। অপেক্ষায় থাকো, ওটা পাবার জন্য চেষ্টা করো। আমি তো দেখেছি, যার কপালে যা থাকে, তা অনেকসময় চেষ্টা না করলেও চলে আসে। তবু চেষ্টা করতে হয়। নিজেকে সান্ত্বনা দেবার রাস্তা কখনোই বন্ধ করে দিয়ো না। যদি আসে তো ভালো, আর না এলেও মেনে নাও। মানুষ যা চায়, তা কি পায়? তাই বলে কি অন্য কাউকে তা পেতে দেখলে দুঃখ পেতে হবে? এতে কি তা পাওয়া হয়ে যাবে? না, তা তো হবে না। বরং নিজের মনের কষ্ট বাড়তে থাকবে। নিজের শক্তি বাড়াও। ক্রমাগত চেষ্টায় ও চর্চায় এটা করা যায়। যে যত শক্তিশালী, তার ঈর্ষা তত কম। এ জগতে কেবল দুর্বলদেরই ঈর্ষা করে করে বাঁচতে হয়। আহা, কী অসহায়! কী একটা কষ্টের জীবন! দুর্বলেরা যেখানে ঈর্ষান্বিত হয়, সবলেরা সেখানে অনুপ্রাণিত হয়। একজন যা পায়নি বলে কাঁদে, আরেকজন তা পেয়েছে বলে কাঁদে। প্রাপ্তি কিংবা অপ্রাপ্তির সাথে অশ্রুর কোনও সম্পর্কই নেই। ভেবে দেখো, যা তোমার কান্না থামাবার গ্যারান্টি দিতে পারে না, তার জন্য ঈর্ষান্বিত হবার চেয়ে বোকামি আর হয়? মানুষ যা চায়, তা না পেলেও, যা তার দরকার, তা আগে-পরে ঠিকই পেয়ে যায়। ভাবনা: নয়শো বাইশ ……………………………………………………… এক। জীবনের প্রথম আইফোন এবং দ্বিতীয় বিবাহ পুরুষকে ধৈর্যশীল করে। দুই। : সে কখনও কখনও ব্লক তুলে নেয়। তার মানে কি সে কখনও কখনও আমায় ভালোবাসে? : স্টুপিড কোথাকার! কুত্তার সামনে হাড্ডি ঝুলিয়ে রেখে কুত্তাকে নাচাতে দেখিসনি কখনও? : ভাই, এভাবে বলবেন না। আমার মন বলে, আমি কুত্তা না, আমি মানুষ। তিন। মাথায় যা আসে তা-ই বলে ফেলতে ফেলতে আমরা ক্রমশ ভাবতে ভুলে যাচ্ছি। আমরা হিরো হতে চাই, অথচ কাকে বলে হিরো, তা-ই বোঝার চেষ্টা করি না। নায়ক ও নায়কের নায়কত্ব, দুই-ই থাকে ফেইসবুকের বাইরে। সবার আগে এটা বোঝা দরকার। চার। যত বেশি লোকে তোমার পেছনে লাগে, ততই খুশি হয়ে ওঠো! ভেবে দেখো, তুমি কতজনের চেয়ে এগিয়ে! লোকে কেবল তার পেছনেই লাগে, যার চেয়ে সে পিছিয়ে, এবং যার মতো হবার স্বপ্ন সে দেখে। তবে একই সঙ্গে নিজেকে বলো, লোকে তোমার পেছনে লেগে আছে, কেননা ওরা ভাবছে, ওরা চেষ্টা করলে তোমাকে ছুঁতে পারবে। ওরা এলন মাস্কের পেছনে লাগছে না, যদিও ভদ্রলোকের ব্যবহার বাঙালির চেতনাদণ্ডের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং খুব একটা সুবিধার কিছু নয়। ছোটোবেলায় পড়েছি, অহংকার পতনের মূল, যা ধুয়ে ধুয়ে এখনও খাচ্ছি। অথচ আমাদের সাদামাটা গলদে-ভরা বোধের বিচারে একজন অহংকারী এলন মাস্কের "আকাশচুম্বী পতন" প্রতিদিনই দেখছি। যারা ওঁকে দেখে আর বলে, ভুলে যাবেন না, এলন সাহেব, অহংকার পতনের মূল; তাদের দেখে এলন মাস্ক বলেন, বলো বলো, আরও বলো, লাগছে মন্দ নয়! অবশ্য ওরকম ফাতরামার্কা পাবলিকের জাজমেন্টে কান দেবার মতো অত সময়ই-বা কোথায় তাঁর! বোধ বদলান, পৃথিবী বদলে যাবে। আচ্ছা, কেন ওরা এলন মাস্কের পেছনে লাগে না? খুব সহজ। তেলাপোকা সিংহের পেছনে লেগেও-বা কী করবে! অবশ্য, এলন মাস্ককে চেনেই-বা ক-জন সংগ্রামী জনতা? হ্যাঁ, নিজেকে আরও ধাক্কা মারো, ওদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাও; এতটাই বাইরে, যাতে তোমার কাছাকাছি যাবার স্বপ্ন দেখার আস্পর্ধাও ওদের না হয়। রাজনীতি না করলে পাবলিকের কাছে কখনও নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যা দিতে নেই। ব্যাখ্যা দেবার মানেই নিজেকে ওদের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। ক্রমাগত চেষ্টায় পাবলিকের কাছে ব্যাখ্যাতীত হয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। পাঁচ। নিজের আনন্দের জন্য বাঁচো। যদি অন্য কারও আনন্দের জন্য বাঁচো, তবে দেখবে, তোমার আনন্দ ধ্বংস করার জন্য সে-ই সবার আগে উঠেপড়ে লেগেছে। প্রাণী হিসেবে মানুষ অকৃতজ্ঞ ও অবিবেচক। ছয়। পাবলিক কেবলই ধান্দায় থাকে। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুতো কিনতে গেছি। সানমার ওশান সিটি'তে। তো অপরিচিত একজন আমার কাছে এসে অনেক গদগদ হয়ে বললেন, দাদা, আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি। আপনার সব ভিডিয়ো আমি দেখি। আপনার সব লেখা আমি পড়ি। আপনি আমার আইডল। ইত্যাদি ইত্যাদি। অনুভূতিহীন অবয়বে ওঁর কথাগুলি শুনছিলাম। আমি এসবের মানে জানি। এসব অর্থহীন কথা আমাকে আর স্পর্শ করে না। বরং বিরক্ত হচ্ছিলাম এই ভেবে যে, শপিং থামিয়ে এই উটকো লোকের ভ্যাজর ভ্যাজর শুনতে হচ্ছে ভদ্রতার খাতিরে। উনি ওসব করলেও আমার কিছু এসে যায় না, না করলেও আমার কিছু এসে যায় না। যা উনি করেন নিজের প্রয়োজনে, তা নিয়ে এত কথা বলার কিছু নাই। যা-ই হোক, এরপর বেরোলো আসল কথা! দাদা, আমি এবার বিসিএস পরীক্ষা দিলাম। খুব একটা বেশি ভালো হয়নি। সামনের বার আবার দিব। আমি আর্টসের স্টুডেন্ট। অঙ্কে খুব দুর্বল। ইংরেজিতে মোটামুটি। আমার খুব ইচ্ছা, আপনার মতো "প্রশাসন" ক্যাডার হব। আপনি আমাকে কমপ্লিট একটা গাইডলাইন দেন। আর হ্যাঁ, কী কী গাইড কিনতে হবে, সেটাও একটু বলবেন, দাদা। মাই ফুট! হলি কাউ! ইদ উপলক্ষ্যে আমি মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছি গাইডলাইন দেবার জন্য! শপিং করতে বেরিয়েছি, এখানেও মাস্টারি করতে হবে বিভিন্ন সময়ে তথাকথিত গাইডলাইন দেবার অপরাধে। তা-ও একজন সম্পূর্ণ অপরিচিত উটকো লোককে! আমার আর কাজ নাই! বিনীতভাবে বলেছি, ভাই, এখন তো শপিং করছি, এসব নিয়ে কথা বলার মুড নাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল। এটা বলার পর ওই লোকের ভিন্ন চেহারা দেখলাম। খুবই বিরক্ত হয়ে আর একটিও কথা না বলে অন্য দিকে চলে গেলেন। লোকটার চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট, যেন "প্রাপ্য অধিকার" থেকে এইমাত্র বঞ্চিত হলেন!! হ্যাঁ, এটাই পাবলিকের আসল চেহারা। হ্যাঁ, এটাই পাবলিকের আসল ভালোবাসা। ধান্দায় ভালোবাসে, ধান্দায় কাছে আসে। সব ঠিক আছে। সব মানলাম। তাই বলে যে লোকটা আমাকে চেনেই না, তার কাছে গিয়েও এরকম ধান্দাবাজি করা যায় কি? ন্যূনতম পরিচয় তো লাগে, তাই না? তার উপর যখন সে অন্য একটা কাজে ব্যস্ত, তখন গিয়ে তাকে বিরক্ত করা যায়? জানার ইচ্ছা থাকার চাইতে কমনসেন্স থাকাটা বেশি জরুরি। আপনার আমাকে দরকার, কিন্তু আপনাকে সময় দেবার কোনও দরকার আমার আছে কি? আপনি যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, তাতে অপরিচিত কারও কী এসে যায়? সময় চাইবার জিনিস নয়, অর্জন করার জিনিস---অন্তত ব্যস্ত লোকের কাছ থেকে সময় চাইলে, তা আদায় করে নেবার কৌশল জানতে হয়। আমরা অন্যের অর্থ উপার্জন করতে শিখেছি, অন্যের সময় উপার্জন করতে আজও শিখিনি। অর্থের মতো সময়ও উপার্জন করার জিনিস। অবশ্য এই সহজ কথাগুলি বেআক্কেলদের কানে ঢুকলেও মাথায় ঢোকে না। ভাবনা: নয়শো তেইশ ……………………………………………………… এক। আমিও মাঝরাস্তায় আপনাকে একা ফেলে রেখে চলে যেতে পারতাম। চাকরি কিংবা ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে আমি কোথাও চলে যাইনি। আমি আপনার মতন বাজে না; আমি পুরুষ না, আমি মানুষ। দুই। কিংবদন্তি শিল্পী কিশোর কুমার। তাঁর বড়ো ছেলে অমিত কুমার, ছোটো ছেলে সুমিত কুমার। এই দুই জন দুই মায়ের সন্তান, রুমা গুহঠাকুরতার এবং লীনা চন্দাভারকরের। অমিতের সাথে সুমিতের অনেক ভালো সম্পর্ক। ছোটো ভাইকে তিনি অনেক আদর করেন, যত্ন করে রাখেন। কিশোর কুমার মারা যাবার পর আর কেউ না হলেও অমিত কুমার যে ছোটো ভাইকে দেখে রাখবেন, সুমিতের মায়ের মনে এই বিশ্বাসটুকু ছিল। কিশোর কুমারের মৃত্যুর পর সুমিত একদিন স্কুল থেকে ফিরে এসে মাকে বলেন, 'মা, আমি আর স্কুলে যাব না।' সন্তানের মুখে এমন কথা শুনে মা একটু অবাকই হলেন। এর কারণটা জানতে চাইলেন। সুমিত বলল, 'মা, ক্লাসে দাদা আর তোমাকে নিয়ে বন্ধুরা বাজে কথা বলে।' সুমিতের মা সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে গেলেন এবং জানতে চাইলেন, এইরকম কথাবার্তা কে ছড়ায়! তিনি টিচারদের কাছে পুরো ঘটনা জানালেন। পরে দেখা গেল, স্টুডেন্টরা নয়, বরং সেই ক্লাসের একজন টিচারই এই সমস্ত বাজেকথা ছড়িয়েছে। সুমিতের মা সঙ্গে সঙ্গে সুমিতকে স্কুল থেকে নিয়ে এসে বললেন, তোমাকে আর স্কুলে যেতে হবে না। বাসায় টিচার রেখে দেবো, তুমি বাসাতেই পড়বে। বাসায় টিচারের কাছে সম্ভবত তিন মাস সুমিত পড়েছিল। হঠাৎ একদিন এক মহিলা এলেন এবং এসে সুমিতের মায়ের কাছে মাফ চাইতে লাগলেন। সুমিতের মা জানতে চাইলেন, আপনি কে? মাফ চাইছেন কেন? মহিলা উত্তর দিলেন, আসলে আমিই সেই মানুষটা, যে আপনার আর অমিতের নামে বাজে এবং মিথ্যা কথা স্কুলে ছড়িয়েছে। কিছু দিন আগে এর শাস্তিটা আমি পেয়েছি, আমার ছেলে অ্যাকসিডেন্টে মারা গেছে। আমি আমার কৃতকর্মের ফল পেয়ে গেছি। এখন বুঝতে পারছি, কারও সাথে অন্যায় করলে তার বিচার আগে বা পরে নিজের ঘাড়েই আসে। সেই মহিলাকে সুমিতের মা ক্ষমা করে দিয়েছিলেন যদিও, তবু তাতে কী-ইবা লাভ হয়েছে? ছেলেকে তো আর তিনি ফিরে পাননি! আসলে প্রতিটি মানুষকেই তার কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হয়...দু-দিন আগে বা পরে। তিন। ভালোবাসার চাইতে মধুর ধান্দা আর কী আছে?! মানুষ ধান্দায় ভালোবাসে। ধান্দা ফুরোলে কেটে পড়ে। আর শুরুতেই ধান্দা হাসিল না হবার আলামত পেলে চরম দুর্ব্যবহার করে। : আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি। আপনি আমার এই এই কাজ করে দিন। আপনি আমার জন্য এই এই কাজ করুন। : হে হে হা হা হো হো...বলো বলো, আরও বলো, লাগছে মন্দ নয়... আসুন, বাঁচার জন্য ভালোবাসা না খুঁজে থাকার জন্য ভালো বাসা খুঁজি। ভালো বাসায় আলো আছে, বাতাস আছে...আর ভালোবাসায় আছে শুধুই অন্ধকার... শুধুই দীর্ঘশ্বাস... চার। ফিরে এসো, অনুবাদ! sobo bekal.tome ajka taka amar dada.ame apnaka r apne kora dakvo na,ame akon taka apnaka tome kora dakvo.tek asa? dada,tome jano na,ame tomaka kotota balobase,janla tomar kedne ta hart atak hoto r coka pane asa jato.tome kale amaka ensalt koro nahola bolok kora daw.ame noton id kule ar tome bolok kora daw.kan koro amon,dada?kan?ame kan dora bolse,r bul korbo na.tomar kan na,amar kan dora bolse.amar opurad ta to ontutu bolo? tome bolasela ame nake takla basai leke,tay tome bogo na.ame boglam na,tome tu dada,amar balobasar manos.tomar kasa monar bab pokas korta parae amar kasa boro kota,sata ja basai e hok.jak,ame takla basa babohar bad dease,sodo tomar jonno.akon taka ame kate banlataye kota bolbo.tome r amaka bul bogo na,tome r dora dora tako na.amr boka bata kora tome bol bogla,tome kota na bolla amar gome asa na,tume asa pasay na takla sutpotane hoi.doya kora kota bolo,bolok deo na dada. ame akta kubeta lekase tumar junnu,dada— dada tome kota bolo, bolok deu na r, tomaka sara amar basa takar ke dorkar? sakke takok akas-batas,sakke takok tara, doneata kaw nae r dada tome sara. ame morla jola jap dabo gea,sakke takba pokor, tume bolba oega dako mora galo kokor. tome dua korla ame hotaw pare kube, sobar samna bulbo 'dada logga palam kube.' dada,amr ai kubeta nea akta boy lakbo.nam dabo 'pokora kokor nasa'.ame jane amar kubeta bast salar hoba.amar sae kunpedans asa.tome e bolo,tek bolse na?tome sobaeka amar boy priodar kora rakta bolo,noela to ura pora mes korba,kugei paba na. পাঁচ। তুমি কত সুইট, দাদা...কত তুমি কিউট, কিন্তু কেন কইরা রাখো নোটিফিকেশন মিউট? তোমায় জানো এতই বেশি ভয় করি যে আমি, তাই তো তুমি বকা দিলে দরদরাইয়া ঘামি। চা বানাইতে শিখেছে আমার ফাঁকিবাজ এই দাদা, গরম পানিতে ছাইড়া দেয় দুইটা টিব্যাগ আর আদা। একটা কথা বলে শোনো কেটে পড়ি, দাদা... কেউ কি কখনও বলেছে, তুমি যে আস্ত একটা গাধা!? ছয়। কাউকেই ভালোবাসতে না পারার চাইতে অনেক অনেক ভালো কাউকে ভালোবাসতে পারা। কাউকেই ভালোবাসতে পারে না যে, তার চেয়ে দুর্ভাগা আর কে আছে! সাত। মানুষ মাত্রই বদলায়। সময়ের প্রয়োজনে, মানসিকতার পরিবর্তনে। অমানুষ কখনও বদলায় না। অমানুষ সবসময় অমানুষই থাকে। না, অমানুষ কখনও পুরোপুরি বদলায় না। যদি আরও ধরা খেতে চাও, তবে অমানুষের সঙ্গে থেকে যাও। আট। ভালো মানুষ কেউই চায় না, সবাই শুধুই কাজের মানুষ চায়। নয়। কারও সাথে নিজের এবং নিজের পরিবারের গালগল্প করার আগে নিশ্চিত হয়ে নাও, সে আদৌ তোমার এসব গালগল্প শুনতে চায় কি না। বেশিরভাগ মানুষই এই সামান্য কমনসেন্সটার অভাবে লোকের কাছে খুবই বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। দশ। সবলতার চাইতে সফলতা জরুরি। ভাবনা: নয়শো চব্বিশ ……………………………………………………… এক। এই ছবি অনেক গল্প বলে। এই যে এই হাতটি, এই হাত হয়তো কারও মুখে দু-মুঠো ভাত তুলে দিত। হয়তো এই হাতটিই কারও মাথার ছাদ ছিল। হয়তো পরম মমতায় কেউ একজন এই হাতের আঙুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখত। হয়তো এই হাতটি শক্ত করে আরেকটি বার ধরে রাখবে বলে কেউ একজন অধীর হয়ে গতকালও অপেক্ষা করেছে। হয়তো এই হাতটিই কারও কাছে ভীষণ রকমের প্রিয়। হয়তো এই হাতের আঙুলে আঙুল পেঁচিয়ে আগামী বর্ষায় ভেজার কথা ছিল কারুর, নয়তো সামনের কোনও জোৎস্নাশোভিত সন্ধেয় খালিপায়ে সবুজ ঘাসের মাঠে হেঁটে হেঁটে বহুদূর যাবার কথা দেওয়া ছিল কাউকে। এমনও হতে পারে, এই হাতটিই দূরের কোনও এক বাজার থেকে একজোড়া চুড়ি কিনে এনে গেল ইদে মায়ের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছিল, মা, সামনের ইদে তোমায় পাহাড় দেখাতে নিয়ে যাব। আচ্ছা, যে মা প্রতিটি সন্ধেয় খোকা বাড়ি ফিরবে বলে দরজায় বসে থাকে, সে মা কি আজকেও এই হাতটির অপেক্ষায় থাকবে? এর কোনও উত্তর নেই। জীবন এমনই এক প্রশ্ন, যার কোনও উত্তর হয় না। দুই। আমরা দুই ধরনের পোস্ট খুবই নিষ্ঠার সাথে অন্যকে ফরোয়ার্ড করি: যে পোস্টে কারও সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খারাপ মেসেজ থাকে। যে পোস্ট দশজনকে ফরোয়ার্ড না করলে কীসব অমঙ্গল হয়। এবং, এই কাজটা করে আমরা তরতর করে জাতে উঠে যাই। তাই এই মহৎ কাজে আমরা সবাই বেশ সিরিয়াস! তিন। জীবনে মাঝে মাঝে এমন বিপদের মুহূর্ত আসে, যখন আপনার পাশে দাঁড়ানো দূরে থাক, আপনার পক্ষে দুটো ভালো কথা বলার মানুষও আপনি কোথাও খুঁজে পাবেন না। বিপদ কেটে গেলে শুভাকাঙ্ক্ষীর অভাব হয় না। তখন খুব হাসি পায়। ভুল মানুষের মিষ্টিকথা বড্ড বিষাক্ত জিনিস। আমার জীবনে যখন চরম বিপর্যয় নেমে এসেছিল, যখন আমার পক্ষে কথা বললে জনপ্রিয়তা হারানোর…এমনকী বিপন্ন হবারও ভয় ছিল, যখন আমার সম্পর্কে কল্পনাপ্রসূত কথাবার্তা ছড়ানোই ছিল জনপ্রিয়তা বাড়ানোর অব্যর্থ উপায়, যখন অসহায় সুশান্ত পালের মুখের উপর দুটো লাথি মেরে দেওয়া ছিল সকলের পবিত্র দায়িত্ব, ঠিক তখন যে দু-একজন মানুষ কোনও স্বার্থ ছাড়াই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এবং আমার পক্ষে কিছু সত্য কথা সাহস করে বলেছিলেন অজনপ্রিয় ও বিপন্ন হবার আশংকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, তাঁদের মধ্যে একজন শ্রদ্ধেয় বাদল সৈয়দ স্যার। স্যারের অনেক পরিচয় আছে। তিনি একই সঙ্গে সুলেখক এবং সুবক্তা। জীবনের সহজ পাঠ নিতে চাইলে বাদল সৈয়দ স্যারের লেখা পড়তেই হবে, তাঁর স্পিচ শুনতেই হবে। আপনারা অনেকেই তাঁকে চেনেন মানবতার কর্মী হিসেবে, দুঃখী মানুষের বন্ধু হিসেবে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসেবে। তাঁর আরেকটি পরিচয় দিই। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যে কয়েকজন আইকনিক অফিসার আছেন, তাঁদের মধ্যে একজন বাদল সৈয়দ স্যার। আপনারা নিজেকে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী দাবি করেন। আপনারা জানেনই না, আপনাদের প্রকৃত চেহারা আমার চেনা আছে। বাদল সৈয়দ স্যার আমাকে কতটা স্নেহ করেন, আমাকে কতটা শুভকামনায় রাখেন, সে প্রসঙ্গে না গিয়েও তাঁর আরেকটি দিক নিয়ে বলতে পারি। চাকরিজীবনের শুরুতে হাতেগোনা যে কয়েকজন সিনিয়র অফিসার সিভিল সার্ভিসে চলার পথ নিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সস্নেহ প্রশ্রয়ের ছায়ায় আমাকে রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম। আমার দুঃসময়ে যাঁরা পাশে ছিলেন, তাঁদের আমি প্রাণের খুব কাছে রাখি…কৃতজ্ঞতায়, ভালোবাসায়, শ্রদ্ধায়, আবেগে…আমৃত্যু রাখব। সুদিনের অসংখ্য বন্ধুর দেওয়া ফুল আমি পায়ের তলায়ও রাখি না; দুর্দিনের দু-একজন বন্ধুর দেওয়া কাঁটাও আমি অসীম মায়ায় মাথায় করে রাখি। ঠিক এমনই একজন পরম বন্ধু এবং গুরুর সান্নিধ্যে আজকের দিনটা উদ্যাপন করতে পেরে অনেক আনন্দ পেয়েছি। সঙ্গে ছিল স্যারের আরেকজন সুযোগ্য শিষ্য, আমার অকৃত্রিম শুভাকাঙ্ক্ষী ছোটো ভাই আয়ান। চোখ বুজে বিশ্বাস করি ও ভালোবাসি যে দু-একজন ছোটো ভাইকে, ওদের মধ্যে আয়ান অন্যতম। নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করার ক্ষেত্রে আমি, স্যার, আয়ান একই মানসিকতা ধারণ করি। আজকের আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে যে চমৎকার মানুষের উপস্থিতিতে, তিনি আমাদের শ্রদ্ধেয় ভাবি, স্যারের সহধর্মিণী। সেই শুরু থেকেই তিনি আমাকে ছোটো ভাইয়ের স্থানে রাখেন, অনেক স্নেহ করেন। স্যারের সহযাত্রী হয়ে ভাবিও মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বহুবছর ধরে। স্যারের কিংবা ভাবির কাছে যৌক্তিক সাহায্য চাইতে গিয়ে কেউ খালিহাতে ফিরে এসেছে, এমন ঘটনা আজ পর্যন্ত কখনও ঘটেনি। এই পৃথিবীর সকল ভালো মানুষ ভালো থাকুক। চার। ৩ জুন ২০১২ ৩ জুন ২০২২ চাকরির দশ বছর হয়ে গেল। নোবডি থেকে সামবডি হবার দশ বছর হয়ে গেল। পাত্তা পাবার দিনের দশ বছর হয়ে গেল। সময় সব কিছু ঠিক করে দেয়। আজ এগারোতে পা। অথচ মনে হচ্ছে, এই সেদিনই তো! চলতে গিয়ে অনেক বার পড়ে গেছি। বন্ধুদের, শুভাকাঙ্ক্ষীদের এবং সহকর্মীদের সহযোগিতায় আবারও দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছি। আজকের দিনে তাঁদের প্রতি অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা, যাঁরা আমাকে প্রার্থনায় রাখেন, ভালোবাসায় রাখেন, প্রশ্রয়ে রাখেন। আপনারা আছেন বলেই এই একজীবনে সত্যিই অনেক পাওয়া হলো! প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ, পথ এখনও অনেক বাকি। দেখা হবে ব্যস্ততার ফাঁকে, অবসরের মাঝে। বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও পরিজন নিয়ে সবাই ভালো থাকবেন সবসময়। সময় করে অফিসে আসবেন। প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে কখনও ফোন করবেন। ইচ্ছে হলে আপনার অফিসের ঠিকানা দেবেন, বেড়াতে আসব; গল্পে-আড্ডায় আরাম করে চা খাওয়া যাবে। ছোট্ট জীবনে এইটুকুও যে অনেক পাওয়া! বাংলাদেশের জয় হোক। পাঁচ। : What's your biggest strength? : I can love madly. : What's your biggest weakness? : I do love madly. ছয়। প্রশ্ন: আপনার কাছে, আসলে জীবন মানে কী? জীবনের উদ্দেশ্যটা কী আপনার কাছে? আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যটা কী হওয়া উচিত? উত্তর: এই যে আমি এই মুহূর্তে তোমাদের সাথে কথা বলছি, সবার সাথে কথা বলছি---এটাই হচ্ছে জীবন। কাল কী হবে, পরশু কী হবে, এসব নিয়ে আমি ভাবি না। বহুদিন, বহুবছর ধরে ভাবি না। অনেক ভেবেও আমি কোনও কূলকিনারা পাইনি, তাই ভাবি না। বরং যা যা ভেবেছি, তার উলটোটা হয়েছে। যার ফলে আমার তেমন ক্যারিয়ার প্ল্যান বা লাইফ প্ল্যান এগুলো নেই। আর জীবনের উদ্দেশ্য কী? জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভালোভাবে বাঁচা। পৃথিবীর কোনও মানুষের ক্ষতি না করে নিজে ভালোভাবে বাঁচা। এবং কিছু মানুষকে ভালোভাবে বাঁচতে সাহায্য করা। আমি বার বার করে বলছি, এটাই হচ্ছে জীবনের উদ্দেশ্য। লিভ অ্যান্ড লেট লিভ, অর্থাৎ বাঁচো এবং বাঁচতে দাও, এটাই হচ্ছে জীবনের উদ্দেশ্য, আর কোনও কিছু নয়। সাত। দুঃসময়ে যে ছেড়ে চলে যায়, সে কখনও আপনজন হতে পারে না। দুঃসময়ে যে মানুষটা পাশে থাকে না, সে যদি নিজের ভাইও হয়, সে বড়োজোর ভাই হতে পারে, কিন্তু আপনজন কিছুতেই নয়। কেবল রক্তের সম্পর্কই সব কিছু নয়। আপনজন হচ্ছে সেই মানুষটা, কোনও অবস্থাতেই যে আপনাকে ছেড়ে যাবে না। সেটা দুঃসময়ে হোক কিংবা সুসময়ে হোক, সেটা যা-ই হোক না কেন, সে আপনাকে কখনোই ছাড়বে না। হ্যাঁ, সেই মানুষটাই হচ্ছে আপনজন। যে মানুষ আপনাকে দুঃসময়ে ছেড়ে যায়, সে মানুষটা আপনার আত্মীয় না, আপনার পরিবারের মানুষও না, বন্ধুও না, শুভাকাঙ্ক্ষীও না; সে মানুষটা প্রকৃতপক্ষে আপনার কেউই না। বরং সে মানুষটা আপনার একটা উপকার করে। কীরকম উপকার? যখন আপনার দুঃসময় কেটে যাবে, তখন আপনি মাথায় রাখবেন, দুঃসময়ে যারা আপনাকে ছেড়ে গিয়েছিল, তাদের সঙ্গে, আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন পর্যন্ত কোনও ধরনের যোগাযোগ রাখার তেমন কোনও দরকার নেই। তাদেরকে মনে জায়গা দেবার কোনও দরকার নেই। তাদেরকে বাসায় আসতে বলার কোনও দরকার নেই। তাদেরকে সময় দেবার কোনও দরকার নেই। তাদের কোনও কথা কিংবা কোনও আচরণকে মাথায় রাখার কোনও দরকার নেই। তাদের কোনও সিদ্ধান্ত, তাদের কোনও কথা, আচরণ ইত্যাদিকে গ্রহণ করার কিংবা বর্জন করার কোনও দরকার নেই। তাদেরকে জীবনে পাত্তা দেবারই কোনও দরকার নেই। অর্থাৎ দুঃসময়ে যারা ছেড়ে যায়, তারা যদি নিজের ভাইও হয় কিংবা বোনও হয়, সবচাইতে কাছের মানুষও হয়, তাদের চেহারাটা আপনার চেনা হয়ে গেল। তাদেরকে সারাজীবনের জন্য আপনি বয়কট করতে পারেন অনায়াসেই। তাদের জন্য আপনি যা যা সময় খরচ করতেন, সে সময়গুলোকে আপনি বাঁচিয়ে ফেলুন। তাদের জন্য যে সময়টা আপনি খরচ করতেন, সে সময়ে ঘুমানোও ভালো, সে সময় টিভি দেখাও ভালো, সে সময় বসে থাকাও ভালো, সে সময় অন্য যে-কোনও কাজ করা ভালো, কিন্তু তাদের জন্য সময় দেওয়া ভালো না। যে মানুষ দুঃসময়ে পাশে থাকে না, যে মানুষ দুঃসময়ে ভালো কিছু করে না, সেই মানুষটা আপনার লাইফের জন্য জরুরি কেউ না। এটা মাথায় রাখুন, তাহলে আপনার জন্যই ভালো হবে। আট। আমি সরাসরি কথা বলতে ও শুনতে পছন্দ করি। আমার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অপরিচিত কেউ কথা বললে সে আমার কাছ থেকে অপ্রীতিকর জবাব পায়। সবাইকে সব জায়গায় রাখা যায় না। আমার চারিদিকে একটা দেয়াল আছে। যদি আমি আপনাকে না চিনি, তবে আপনি এই দেয়ালের ওদিকে আছেন। আমি মানুষের উপর অনেক দিন ধরেই বিরক্ত। উটকো লোকের ভ্যাজর ভ্যাজর শুনতে বিরক্ত লাগে। আমাকে ভীষণ ব্যস্ত থাকতে হয়। আমি স্বার্থপর নই, ক্লান্ত। আপনি আমাকে চেনেন না। তাই আমাকে নিয়ে মন্তব্য করবেন না। আমার কী করা উচিত বা অনুচিত, সে বিষয়ে আপনার মতামত আমাকে খুব বিরক্ত করে। আমার ভুল কাজের জন্য সাফার তো আপনি করবেন না, আমি করব। এমনকী আপনি আমার সাফারিং কমাতেও পারবেন না। তাই এসব নিয়ে আপনার মতামত আমার কাছে হাস্যকর। আপনার সমস্ত জ্ঞান নিয়ে আপনি দূরে থাকুন। আমাকে যারা চেনে, তারা জানে, আমি কেমন। যাকে আমি চিনি না, আমি বিশ্বাস করি না যে সে আমাকে চেনে। সে বড়োজোর আমার সম্পর্কে অনুমান করতে পারে। অনুমাননির্ভর কথাবার্তা যারা বলে, ওরা একদমই ফালতু লোক। আবারও মনে করিয়ে দিই, আপনি দেয়ালের ওদিকটায় আছেন। এদিকের খোঁজ আপনি জানেন না। জানতে আমি আপনাকে দেবোও না। এর কারণ, আগেও বলেছি, আমি মানুষের উপর বিরক্ত। নিজেকে বিরক্তির মধ্যে রাখতে আমার ভালো লাগে না। আমি এরকমই। কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমার কোনও আগ্রহ নেই। কে কী করে না করে, এসব নিয়ে আমি কখনোই ভাবি না। অন্যের কাছ থেকেও একই রকমের আচরণ আমি আশা করি। মানুষকে সময় দিলে মানুষ বিরক্ত ও আহত করে। তাই আমার ব্যক্তিগত বলয়কে আমি খুব ছোটো করে ফেলেছি। আমাকে স্বার্থপর মনে হচ্ছে? নিজেকে বিরক্তিকর লোকজনের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা যদি স্বার্থপরতা হয়, তবে আমি স্বার্থপরই। বাই দ্য ওয়ে, আপনি আমাকে স্বার্থপর বলছেন, কেননা আপনার নিজের স্বার্থ উদ্ধার করার কাজে আপনি আমাকে ব্যবহার করতে পারছেন না। এখন আপনিই বলুন, স্বার্থপরটা আসলে কে? সময় খুব দামি জিনিস, যাকে-তাকে দেবার জিনিস নয়। বাঁচতে গেলে দেয়াল লাগে।