মিথ্যা সান্ত্বনা

এ জগতে যে কয়েকটা ডাহা মিথ্যা সান্ত্বনা আছে, সেগুলির মধ্যে একটা হলো: একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।

আসলে ঠিক হবার সেই একদিনটা যেদিন আসে, সেদিন থেকে নতুন আরেকটা বেঠিক শুরু হয়ে যায়। আমরা আবারও দিন গুনতে থাকি, নিজের মাথায় নিজেই হাত বুলিয়ে বলি: একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।

পুরোনো দুঃখগুলো খোলস পালটে পালটে নতুন চেহারা নিয়ে ফিরে ফিরে আসে।
পুরোনো যন্ত্রণাগুলোর চামড়া শুকিয়ে নতুন চামড়ায় নতুন করে ঘা জমতে শুরু করে।

একদিন চলে-যাওয়া মানুষটা ফিরে আসবে বলেও ফিরে আর আসে না, একবার হাসতে ভুলে-যাওয়া মানুষগুলো নতুন করে আর হাসে না, একবার ভেঙে-যাওয়া বিশ্বাসের টুকরাগুলো জোড়া লাগানো আর যায় না, গভীরভাবে পুড়ে-যাওয়া হৃদয়ের ক্ষতের দাগটা সেরে আর ওঠে না।

না, ভালোবেসে বিবাগী-হওয়া মানুষগুলোও নতুন করে ভালো আর বাসে না। একদিন সব ঠিক হয়ে যাবার কথা বলেও আসলে কোনোদিনই কোনোকিছু ঠিক আর হয় না। যা হারায়, তা হারিয়েই যায়।

একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে যাবে করে কত সূর্য ডুবে যায়, কত দিন গত হয়ে যায়, কত ফুল ফুটে ঝরেও যায়। একদিন সব কিছু ঠিক হয়ে যাবার দিনটাই শুধু আর আসে না।

এই দিনটা আসি আসি করে, করতেই থাকে, আর এদিকে একদিন আমরাই চলে যাই। একদিন সব ঠিক হয়ে যাবার দিনটা তবু ভুল করেও আসে না। আসেও যদি, তখন যার জন্য সব ঠিক করে নিতে চেয়েছিলাম, সেই মানুষটাই জীবন থেকে হারিয়ে যায়।

তাই বলছি, কিছুই ঠিক হয়ে যায় না, বরং নিজেকেই ঠিক করে নিতে হয়, বাস্তবতা মেনে নিয়ে নিজেকেই সত্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। মেনে ও মানিয়ে নিতে শিখে না নিলে কিছুই কখনও ঠিক হয়ে যায় না।