হে চট্টলা, মোর মহাসুষমার লীলানিকেতন—সুজলা-সুফলা ভূমি, শীর্ষে তোমার শ্যামল পাহাড়, বইছে সিন্ধু ও-চরণ চুমি!
শোভে কর্ণফুলী মুক্তোর মতন, যেন তব কণ্ঠের মালা, বন-প্রান্তর বিভূষিতা তুমি, সারাঅঙ্গে ঝরনাঢালা।
নবীন যুগের সবুজ প্রাণের লহ মা ভক্তিঅর্ঘ্য, তোমার ধুলায় করব রচনা প্রেমের অমর স্বর্গ।
তোমার অন্নে, অনিলে-সলিলে হয়েছে জীবন পুষ্ট, স্নিগ্ধ তোমার স্নেহ-পরশনে হয়েছে জীবন তুষ্ট।
শত জনমের সুকৃতিবলে তোমার অঙ্কে পেয়েছি জনম, তব শিক্ষার অমল মর্ম-আলোকে চিনেছি সত্যধরম।
তোমার কাননে বনে-উপবনে কত কুসুম বিচিত্র, তব অরণ্যে পশু ও পাখি—সকলেই নিত্য মিত্র।
তব মাঠেঘাটে ফলে কত ফল, ঝরায় সোনা শস্য, বিজন-গহন গুহায় আজও ঢাকা কত-কত রহস্য।
জন্মভূমি মা ওগো তুমি হিন্দু-মুসলিম জননী, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টধর্মীজনেরও তুমি মা ধাত্রী-ভরণী।
সবাকার পরে রয়েছে মা তব কল্যাণে-মাখা দৃষ্টি, সবার উপরে নির্ঝরে তব প্রেমের শীতল বৃষ্টি।
তোমার অঙ্কে পেয়েছে জন্ম কত গুরু-কবি-সাধু-সন্ত, কত আউলিয়া, বাউল-ফকির, কত তপস্বী…নেই অন্ত।
হে রম্যভূমি, জেগেছে তোমাতে সকল জাতির মিলনতীর্থ, তোমার মহিমা-সৌরভে আজ হোক সুরভিত নিখিলচিত্ত।
বিশ্বমৈত্রীভাবের রাগিনী বাজুক তোমার মর্মে, মানবচিত্ত হোক বিকশিত মানবতার মহান ধর্মে।
তোমার আকাশ, তোমার বাতাস ভরে উঠুক প্রীতির গন্ধে, জন-মন-প্রাণ উঠুক দুলে নব আলোকের উদার ছন্দে।