কবিতার মতো সত্য: ৯

১০৬. ভুল করছ!




আমার পোশাকে
এ আতরের ঘ্রাণ নয়,
এ আমার সমাধিস্তম্ভে
ধূপের সুবাস!




১০৭. এ জীবনে
তুমি আসার আগে
আমি একা ছিলাম,
পাশে কেউই ছিল না।




এ জীবনে
তুমি আসার পর
আমি আর একা নই,
পাশে একাকিত্ব আছে।




১০৮. বড়ো জায়গায়
ছোটোলোকি,
ছোটো জায়গায়
বড়োলোকি---
ছোটোলোক এমনই কি!?




১০৯. কারও সঙ্গে
বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে গেলে
তার যে গোপন কথাগুলি
সবাইকে বলে বেড়াতে,
বন্ধুত্ব নষ্ট হবার আগেই যখন
সেগুলি বলে বেড়াও,
তখনও কী করে আশা করো,
সে তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে?




১১০. আমার কথাগুলি কেউ কিনবে?




খরচ বেশি পড়বে না;
বানাতে যা লেগেছে,
তার চেয়ে কম দামেই
ছেড়ে দেবো!




কিনে নাও,
লাভ হবে।
আমার বানাতে যা লেগেছে,
তার চেয়ে বেশি দামেই
বেচতে পারবে!




১১১. কেউ মুখোশ পরে
মানুষ ঠকায়,
কেউবা মুখোশ পরে
মানুষ চেনে।




১১২. যুদ্ধ মানে
উপোসি হাঁড়ির রান্না,
যুদ্ধ মানে
এতিম শিশুর কান্না।




১১৩. দেরি করেই এসো!
অপেক্ষার রেশটাও
ফুরিয়ে গেলে
আর কীই-বা থাকে, বলো!




১১৪. কড়া ধোঁয়া,
কড়া চুম্বন,
কড়া জীবন।




১১৫. তোমার
সমস্ত পুরনো আলিঙ্গনকে
একসঙ্গে জড়ো করে
ফাঁস বানিয়ে
আজ
মরে বাঁচলাম।




১১৬. যাও, বৃষ্টি নয়,
রংধনুই দিলাম!
এবার খুশি তো?




তোমার চোখে রংধনু যা,
তা-ই আমার চোখের জল।




১১৭. গাছের সব পাতা
ঝরে যাবার
ঠিক আগে
শেষ পাতাটাও
ঝরিয়ে ফেলতে
গাছের কি
কান্না পায় না?




১১৮. সিঁড়ি দিয়ে
ওঠার সময়
সেই ছোটোবেলায়
ফিরে যাই।




সিঁড়ি দিয়ে
নামার সময়
এই বড়োবেলায়
ফিরে আসি।




১১৯. যার অসৎ হবার সুযোগ নেই,
তার মুখে সততার দাবি
চোখ বুজে বিশ্বাস করা যায় না,
কেননা সেটি পরীক্ষিত নয়।




১২০. চলতে পথে
দেয়াল এলেই বুঝি,
আছি ঠিক পথেই!




১২১. কেউ কেউ
বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়।




কেউবা
নিজেই
বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যায়।




যা দেখা যায়,
তারই শুধু সার্টিফিকেট হয়।
যা দেখাই যায় না,
তার আবার কীসের সার্টিফিকেট?




১২২. আজ
গুলি ছুড়ছ,
ছোড়ো!




হাওয়া একদিন বদলাবে।
সেদিন
এ বুলেটগুলি
ফেরত নিতে
বুকটা পেতো!




১২৩. হায়, এ আমি কী করলাম!




আজ
যে গল্পে
ইরেজার লাগবে,
তা লিখেছি
কলম দিয়ে,
আর
যে গল্পে
ইরেজার লাগবে না,
তা লিখেছি কিনা
পেনসিল দিয়ে!




১২৪. হাজার বছর ধরে
মেঘ ভেঙে যাচ্ছি।




ছাতাটা তুমি রাখো,
আমার লাগবে না।




১২৫. ইদানীং তোমাকে হাসতে দেখলে বুক কাঁপে!




১২৬. হাত ধুয়ে
আমায় ছোঁও।




ওই হাতে
আজও
খুনের ঘ্রাণ
লেগে আছে।




১২৭. যদি কেবলই
নিজের কারণে
মরতে পারো,
তুমি মহাভাগ্যবান!




১২৮. অহেতুক লোকের পেছনে লাগে যারা,
ওদের সঙ্গে মেশার চাইতে বরং
রাস্তার একটা কুকুরের সঙ্গে মেশো---
অনেক কিছু শিখতে পারবে।




১২৯. নিজের অবস্থানের চাইতে উঁচুতে থাকা
লোকজনকে যারা সহ্য করতে পারে না,
তাদের সঙ্গে যতই মিশবে,
উঁচু অবস্থানে যাবার যোগ্যতা
ততই হারাতে থাকবে।




১৩০. শুয়োরের সঙ্গে ঝগড়া করবে,
অথচ গায়ে নোংরা লাগাবে না,
তা কী করে হয়!?




শুয়োর দেখলেই কথা না বাড়িয়ে
খোঁয়াড়ে পোরো!




১৩১. ছাগলের সঙ্গে তর্কে যাবার
প্রথম যোগ্যতাই হলো,
কাঁঠালপাতা খাওয়া শিখতে হবে!




১৩২. দুই রূপকথার গল্পেই
পুরোটা জীবন শেষ:
তুমি,
আমি!




১৩৩. আলোটা নেভাও,
সুইয়ে সুতো পরাব।




ঘুম ঘুমে,
আঁধার জেগে।




১৩৪. সন্তান মানুষ করা কঠিন বলেই
মানুষ
পরের সন্তানকে আদর করে,
নিজের সন্তানকে মানুষও করে।




আর যাঁরা পরের সন্তানকেও মানুষ করেন,
সেই মহাত্মাদের নাম শিক্ষক।




১৩৫. যে পারে, সে করে দেখায়।
যে পারে না, সে বলে শোনায়।




১৩৬. আমার ভবিষ্যৎ বিক্রি হয়ে গেছে
বেশ চড়া দামে!
তুমি চাইলে
আমার অতীতটা কিনতে পারো
বিনা মূল্যেই!




আর বর্তমানটা?
যা নেই-ই,
তা কিনতে গেলে যে
আগে তাকে আনতে হয়!
কে নেবে অত দায়িত্ব!




১৩৭. জীবনের ভুলগুলি
বিস্মৃতিতে ফেলে রাখলে
সেগুলির উপর
ট্যাক্স দিতে হয়!




১৩৮. ছেলেরা সেই মেয়েটিকে কখনও ভুলতে পারে না,
যার সঙ্গে সে শুতে চেয়েও পারেনি।
মেয়েরা সেই ছেলেটিকে কখনও ভুলতে পারে না,
যার সঙ্গে সে প্রথম শুয়েছে।




১৩৯. সমুদ্রের মাঝখানে
নির্বাসিত হয়ে
স্মৃতির নিঃশ্বাস
নিয়ে নিয়েই
বেঁচে আছি।




তোমার ঘর,
আমার নির্বাসন।




তোমার পাপের সুখে
আমার পুণ্যের শাস্তি।




১৪০. আমার দিকে নয়,
আমার হাসির দিকে তাকাও;
সেখানে তোমার আকাঙ্ক্ষার ঘ্রাণ স্পষ্ট।




আমার হাসির দিকে নয়,
আমার দিকে তাকাও;
সেখানে আমার আকাঙ্ক্ষার ঘ্রাণ স্পষ্ট।