বিশ্বাস ভাঙা

আপনার সবচেয়ে বড়ো বড়ো ক্ষতি কারা করে, জানেন? আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষগুলোই। আমাদের বড়ো বড়ো বিশ্বাস ভাঙে কারা, জানেন? যাদের আমরা সবচেয়ে গভীরভাবে বিশ্বাস করি, তারাই।

আপনার সবচেয়ে গোপন কথাটি সেই ফাঁস করতে পারবে, যে বিশ্বস্ত মানুষটিকে গড়গড় করে বলে দিয়েছিলেন মনের সব কথা।

আপনার পিঠে খুব জোরে চাকুর আঘাতটা সেই করতে পারবে, যাকে বুকে টেনে জড়িয়ে রেখেছেন।

যাদের কখনও বিশ্বাসই করিনি, তারা বিশ্বাস ভাঙার প্রশ্নই আসে না। এ কারণেই, যাকে আমরা বিশ্বাস করি না, সে-ই আমাদের জন্য সবচাইতে নিরাপদ ব্যক্তি।

যাদের হাতে পরমযত্নে বিশ্বাসের কাচ তুলে দিই, খুব আগ্রহভরে তারাই সেই বিশ্বাসকে কাচের টুকরোর মতো টুংটাং করে ভেঙে দেবার সুযোগ রাখে। মানুষ বড়ো আজব প্রাণী। ভাঙার সুযোগ পেলে সে আপনার পাঁজরের হাড্ডিটাও ভেঙে দিয়ে শুনতে চাইবে ভাঙার শব্দ শুনতে কেমন হয়!

পৃথিবীতে যে কয়েকটা নিদারুণ দৈন্য আছে, তার মধ্যে একটি হলো, কে আপন আর কে পর, তা চিনতে না পারাটা। আমরা যখনই আপন-পর চিনতে পারি, তার আগেই আমাদের সর্বোচ্চ ক্ষতিটা হয়ে যায়।

কখনো-সখনো রক্তের সম্পর্কের মানুষও শত্রুর চেয়ে ভয়ংকর হয়, আবার কখনোবা বাইরের কেউও রক্তের সম্পর্কের চেয়েও ঢের আপন হয়।

ঘরের ইঁদুর বেড়া কাটে যেমনি, ঠিক তেমনি ঘরের মানুষগুলোই আমাদের সুখ, বিশ্বাস, শান্তি সব এক এক করে কুচি কুচি করে কাটে, আবার কেবলই পরিচিত কোনও মানুষ এসে হৃদয়ের ভাঙা টুকরোগুলোকে এক এক করে জোড়া লাগায়।

হ্যাঁ, পার্থক্যটা এখানেই। শুধু রক্তের সম্পর্কের কিংবা আত্মীয় হলেই আপন হয় না, আপন হতে আত্মা লাগে। আপন হতে কেবল আপনই হতে হয়।