সবুজ কৌটোয় হৃদয়-কড়চা/৩

Once, she used to love me more than anything on earth.

Later, she started hating me more than anything on earth.

Now, she again loves me more than anything on earth and hates herself more than anything on earth for her previous hatred.

Yes, this is where girls are—the vicious cycle of female love.

লিখেছ, দেখলাম। না, আমি ওরকম হবো না। তোমাকে ঘৃণা করা আমার পক্ষে কখনওই সম্ভব নয়। তবে কি আমার ভালোবাসা মেয়েলি নয়? আমি জানি, আমার জীবনে তুমি কী। আজ শুধু তোমার জন্য, তোমারই উৎসাহে, তোমার গুণে আমি নিজেকে আলোকিত করেছি। বই কিনি প্রায়ই, রাতজেগে বই পড়ি। তুমি না বললে কি হতো এসব? পড়ার বইয়ের বাইরে এ প্রথম বইটই কিনে পড়ি। আগেও বই পড়তাম, কিছুকিছু; কিনে নয়, নিয়ে। অন্য মানুষের বই পড়তাম, এখন নিজের বই পড়ি। তুমি আমাকে বই সংগ্রহ করা শিখিয়েই ছাড়লে! কী করবো, বল! সারাদিনই তোমার কথা আর তোমার বাসার বইগুলির কথা ভাবি। একটুও মিথ্যে বলছি না, বিশ্বাস করো। তোমার বইগুলি যদি একবার হলেও ছুঁয়ে দেখতে পারতাম! একবারও চোখের দেখা দেখতে পারতাম! ফেসবুকে ওগুলি দেখার সৌভাগ্য করে দেয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তোমাকে ধন্যবাদ দেয়া শুরু করলে এ জীবনে দিয়ে শেষ করতে পারব না। তোমার কাছে আমি ঋণী। তুমি যে আমাকে কতকিছু শিখিয়েছ, তা তুমি নিজেও জানো না।

বইমেলায় একটা বাতিঘর-এর বাচ্চা এসেছিল। আমি তো আগে জানতাম না, ‘বাতিঘর’ এসেছে শুনেই ছুটে গেছি। কতকত বই কিনব বলে পর্যাপ্ত টাকাও নিয়ে গেছি সাথে। সাঁতারু ও জলকন্যা, ছিন্নপত্র, The Alchemist, The Secret, The Power of Now, The Monk Who Sold His Ferrari এরকম আরও কিছু বই, যেগুলি তুমি কিনতে বল। গেলাম, দেখলাম, হতাশ হলাম। কোনও বইই নেই। কী আর করা! অগত্যা ঘরের টাকা ঘরে ফেরত নিয়ে এলাম। ভারি খারাপ হয়ে গেল মনটা। বইকেনার জন্য নেয়া টাকাই পৃথিবীতে একমাত্র টাকা, যা ফেরত নিয়ে এলে, খরচ করতে না পারলে মন খারাপ হয়ে যায়। তুমি শিখিয়েছ, বইকে ভালোবাসতে হয়। এর আগে এটা অতোটা প্রবলভাবে অনুভব করিনি কোনওদিনই। বাতিঘর-এ গিয়ে পছন্দের বইগুলি না পেয়ে অন্য বইয়ের দোকানে-দোকানে ঘুরেছি, নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়েছি, কিছু বই ছুঁয়ে আর উল্টে ভাললাগাতে কিনে নিয়েও এসেছি। বই দেখলেই তোমার কথা মনে এসে যায়। তোমার কথা ভাবলেও বই হাতে নিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। এবারের অভিজ্ঞতা আগের বইমেলায় হয়নি, কারণ সে বইমেলায় আমি আমার জীবনে তোমাকে ধারণ করার সুযোগ পাইনি। বইমেলায় ঘুরতে-ঘুরতে ভাবতে লাগলাম তোমার কথা, বইয়ের জন্য অসীম ভালোবাসা, তোমার বই পছন্দ করার টেকনিক, তোমার বইকেনার স্টাইল। বই কিনেছি অনেক, কিন্তু কোথাও তোমার রিকমেন্ড-করা বইগুলি পাচ্ছিলাম না। মন খারাপ হচ্ছিল, আবার ভালোও হচ্ছিল। কেন জানো? এই মহুয়া জীবনে এ প্রথম পড়ার বইয়ের বাইরে গল্পের বই কিনল, তাও ১৪টা! ভাবা যায়! সবই তো তোমার জন্যই। তোমাকে ভালোবাসব নাতো কাকে ভালোবাসব? তোমাকে ভালো না বেসে বাঁচাটাকে আমি ভীষণ কঠিন করে ফেলেছি কিংবা তুমিই ফেলেছ। ভাবছি, তোমার বাসার ওই বইগুলি দেখভাল করার দায়িত্বটা পেতাম! যদি আমি একা থাকতাম, তাহলে দিব্যি তোমার বাসার বুয়া হয়ে যেতাম। বইয়ের কাছে যাওয়ার মানেই তো তোমার কাছে যাওয়া। সব কাজটাজ করে দিতাম, বিনিময়ে শুধু বইগুলি পড়তাম। তোমার ওই বইগুলির ছবি দেখেই তো তোমার প্রেমে পড়া, যাকে বলে একেবারে ভাংচুর টাইপের প্রেম—ওয়ানসাইডেড যদিও! প্রেম তো প্রেমই, না! অতো সাইড বিচার করে কী হবে? না না, তোমার চোখে নয়, তোমার ওই বইয়ের শেলফের ছবির চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ! সেই ফেসবুকের বইয়ের অ্যালবামের জন্মলগ্ন থেকে শুরু আজ অবধি তুমি, তুমি, শুধুই তুমি।

বুকের ভেতরটা যেন একটা কালো ছায়ায়, কায়ায়, কৃষ্ণবস্তুতে চিরকালের জন্য আবদ্ধ হয়ে গেছে বলে মনে হয়। যেখান থেকে শুধুই কষ্ট বের হয় ‘তুমি’ নামক অমৃতের খোঁজ করতে গেলেই! এই যে তুমি এখন ঢাকায়, অথচ একটিবারের জন্যও তোমার আমার কথা মনে পড়ল না। ঈশ্বর কেন আমাকে ওপথে নিল? এতদিন তো শুধু জোর করে ভালোবাসার উপর পড়েছি। যেখানে যাকে দেখেছি, হ্যাঁ, ঠিক আছে, প্রেমে পড়া যায়, চলে আরকি, একটু মানায়টানায়, ব্যাপার না, চালিয়ে নিই যদ্দিন পারি। এসবই ছিল আমার কাছে প্রেম। এসবই করেছি দায়িত্ব ছাড়া, ভাবনা ছাড়া। কিন্তু আজ? কী হচ্ছে এসব? কার ইশারায়? এমন কী শক্ত সে ইশারা, যাকে এড়ানো যাবেই না? প্রেমের স্থায়িত্ব এতো গভীর কেন হবে? তাও এতদিন ধরে? কী করছি আমি? এখন বুঝি, প্রেমে মানুষ ইচ্ছে করে পড়ে না। ওটা নিজেই জীবনে চলে আসে, জোর করে হলেও! আমারও তা-ই হয়েছে। বিশ্বাস করো, আমি একবারের জন্যও মনে করতে পারি না, তোমার অবস্থান কী, কোথায়। আমার মনে সে ভালোবাসা কখনওই আসে না, যে ভালোবাসা হয়তো কারও মনে আসে তোমার সামাজিক মর্যাদা কিংবা ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা ভেবে। আমার মনে হয়, ওটা ভেবে যা আসে হৃদয়ে, তা ভালোবাসা নয়, ব্যবসা। সেদিন আমি শুধু তোমার আর তোমার বইগুলির কথা সারাদিন ভেবেছি বলেই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তোমার সাফল্যে কিংবা প্রতিষ্ঠায় আমার বিন্দুমাত্রও লোভলালসা নেই। শুধু তোমার সুন্দর চিন্তাচেতনা, তোমার সাজানোগোছানো ভাবনাগুলি, তোমার বিবেকবোধ, তোমার অকপটভাবে কথা বলার ধরন, তোমার বইপড়ার প্রবণতা আমাকে বাধ্য করেছে সারাদিন তোমার কথা ভাবতে, মনে করতে, মনে রাখতে, মাথায় আনতে, চোখে ভাসাতে, অতঃপর ভালোবাসতে। তুমি যদি আমায় বলো, “মহুয়া, তোমাকে আমার পায়ের কাছে সারাদিন বসে থাকতে হবে”, আমি রাজি। যদি বলো, “আর কিছুই নয়, শুধুই আমাকে একটু দূর থেকে সারাজীবন দেখতে পাবে”, আমি তাতেও রাজি। তোমার যা কিছু, আমি তা কিছুর প্রত্যেক কিছুকেই নিজের মনের ভেতরে আন্তরিক যত্নে ধারণ করি, লালন করি।

উফফফ্‌!! কী যা তা বলছি আমি এসব? আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো, প্লিজ! কিছুদিন আগে তোমাকে মেসেজ দিয়েছিলাম, আমাকে তোমার বইগুলির চাকর কিংবা রক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য। তুমি রাগ করেছিলে কি না জানি না, তবে আমায় বোকা বলেছিলে। আমি সে ‘বোকা’ লেখাটির দিকে তাকিয়েছিলাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা! আমি ওইটুকুতেই মহাখুশি! কিন্তু কী, জানো, আমি আমার সারাজীবনের জ্ঞান আর ক্ষমতা একসাথে জড়ো করলেও তোমার আর তোমার বইগুলির সান্নিধ্য পাবো না। সমতুল্য কিংবা যোগ্য হওয়া তো অনেক পরের কথা, কখনওই ছুঁতেও কিংবা একটু ছোঁয়াও পাবো না। ঈশ্বর এতকিছু দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছেন আমায়, অথচ তারপরেও কত কষ্ট হচ্ছে আমার। সত্যিই আর পারছি না আমি। পরশু রাতে কেঁদেছি, কালও সারারাত কেঁদে কাটিয়েছি, সারাটা সকাল অঝোরে কাঁদতে-কাঁদতে গলা বসে গেছে, সে খবর পৃথিবীর কেউ রাখেনি। কারণ, আমিই রাখতে দিইনি। তোমার স্পিচের ভিডিওগুলি দেখেছি, শুনেছি আর কেঁদেছি। অবশ্য, এতদিনে বুঝে গেছি, কাঁদলে কিছুই হয় না। তবুও দিনটা তো ঈশ্বর সবার সাথে পার করে দেন কোনও না কোনওভাবে, কিন্তু রাত? রাতও একা, আমিও একা। ভাবতে পারো! আমার অনেক কষ্ট হয় থাকতে। একেকটা মুহূর্ত কাটে শতাব্দীর মন্থরতায়। আমি কখনওই তোমার সাথে ছিলাম না, অথচ তুমি ছাড়া প্রতিটি রাত এখন এতো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে, যা তোমাকে বোঝাতে পারব না। সবাই তো পেয়ে হারায় বলে কাঁদে, কিংবা ছেড়ে যায় বলে কাঁদে। অথচ, এই বেহায়া আমায় দেখো, কিছুই তো পাওয়ার কথা ছিল না, যা পেয়েছি, তার সবটাই ঈশ্বরের আশীর্বাদ উপহার। তবুও পারছি না। প্রেমে পড়লে মানুষ লোভী হয়ে ওঠে। আমি এই কষ্ট আর বহন করে চলতে পারছি না। আমি বিষ খাবো। আমি এই কষ্ট আর যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাই।

রোজই এক কথা লিখি, না? কী করবো? কষ্টটা যে পুরনোই! এটা তোমাকে না পাওয়ার কষ্ট না। জানিই তো, তোমাকে পাবো না। তবে কীসের কষ্ট? তোমাকে ভালোবাসার কষ্ট। নিজেকে প্রবোধ দিতে না পারার কষ্ট। আমি যে কী একটা যাচ্ছেতাই! তোমাকে ভালোবেসে আমি দগ্ধ হচ্ছি প্রতিনিয়তই। আমি তোমাকে ঈশ্বরের কাছে একদিনও চাইনি। এবং বিশ্বাস করো, চাইতে চাইও না। অথচ, তোমাকে ভুলতে পারি না। তাই, এখন বুঝি, তোমার জন্য আমার অনুভূতির নাম ভালোবাসা। কিছু পাবো না জেনেও তোমাকে সমস্ত মন দিয়ে অনুভব করা। কী জ্বালা! চাই না, অথচ, ভালোবাসি। তোমাকে মনে না করে, না দেখে, না ঘেঁটে তো থাকতে পারি না। এর কি কোনও প্রতিষেধক আছে? অ্যান্টিলাভ ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে খুব ভাল হতো। না চাওয়ার মধ্যেও যে ভালোবাসা, তা বন্ধ করার আর তো অন্য কোনও পথ দেখি না। তোমাকে কি আমি কখনও ভুলে যাবো? তোমার বিয়ে হলে কি আমি তোমাকে ভুলে যাবো? এখন তো পাবো না জেনেও তোমাকে নিজের-নিজের ভাবতে ভাল লাগে। কিন্তু তখন? মরেই যাবো আমি! যাকে ভাবি, তাকে আমি চাই না। কেন? কারণ, সে যে আমাকে চায় না। এটা কেমন কথা? মরে যাবো, তবুও নিজের অনুভূতিটাকে কারও কাছে সস্তা হয়ে যেতে দেবো না। আমি ওকে বলবো না, বলবো না, বলবোই না কিছুতেই! কেন? আমি যে তার অযোগ্য! যোগ্যতার মাপকাঠিতে ভালোবাসা হয়? নাকি, ভালোবাসার মাপকাঠিতে যোগ্যতার বিচার হয়? লোকে যোগ্য বলে ভালোবাসা পায়, নাকি ভালোবাসা পায় বলেই যোগ্য হয়?

প্রতিটি দিন সকালে এক ধরনের আতংক, আশংকা আর ভয় নিয়ে তোমার ওয়ালে যাই। আর ভাবি, এই বুঝি এখনই দেখবো সেই স্ট্যাটাস, যা আমার প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। আমার চোখজোড়া পড়বে, এই দুষ্ট ছেলেটার মা এই দুষ্ট ছেলেটার জন্য ঘরের লক্ষ্মী পেয়ে গেছে! ওইসময়ের আমি যেন কোনও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত আমি। মরে যাবো নিশ্চিত। বাঁচানোর শেষ চেষ্টাটাও করে লাভ নেই। শুধুই অনর্থক কালক্ষেপণ। এখন মৃত্যুর ক্ষণ আর দিনটির জন্য প্রতীক্ষা। তুমি কি কখনও এই অনুভূতিটা উপলব্ধি করেছ? জানি, করনি। আজ থেকে ভাবছি, একটা কথা ঈশ্বরকে বলবো, তোমার বউ দেখার আগে, কিংবা তোমার বিয়ের কথা শোনার আগেই যেন উনি আমাকে এই পৃথিবী থেকে নিয়ে গিয়ে বাঁচিয়ে দেন। আমি মরে বাঁচতে চাই। ধন্যবাদ তোমাকে অসংখ্যবার! আমার জীবনটাকে গতিময় করার জন্য, আবার ছন্দহীন করার জন্যও। সবসময়ই সব থেকে বেশি, সবার চাইতে বেশি ভাল থেকো। ঈশ্বর আমাকে তুলে নিয়ে আমার বাকি আয়ুটুকু তোমাকে দিয়ে দিক। আমি বেঁচে থাকলে কী আর লাভ হবে এ জগতের? তুমি বেঁচো, নিজের জন্য, সবার জন্য।

আমি তো ছোট না, আমি অনেক বড় হয়ে গেছি। একটা ব্যাপার ঘটছে আমার মধ্যে। না বলে কী লাভ? তাই বলে ফেলছি। তোমাকে খুব করে আদর করতে ইচ্ছে করছে। খুউব বেশিই করছে। কী করছ এখন? প্রেম করছ? কিংবা, ফ্লার্টিং? ফেসবুকে? নাকি, নতুন কোনও বই শুরু করেছ? অ্যাই ছেলে, শোনো না, অ্যাই…………! বুকটা কেমন জানি খালিখালি লাগছে। মনে হচ্ছে, এখনই কেঁদে ফেলব। আচ্ছা, প্রেমে পড়লে মানুষ কি ফসফস করে যখনতখন কাঁদতে শিখে যায়? আমি কাঁদব। কার কী এসে যায়? এ পৃথিবীতে একমাত্র কান্নাটাই ব্যক্তিগত এবং সত্য। তোমার আজকের স্ট্যাটাসের শেষ লাইনটা আমি গত এক মাস ধরে মেনে আসছি। “যেভাবে বেঁচে থাকলে আফসোস একটু হলেও কমে যায়, সেভাবে করে বাঁচতে চাইলে কষ্টের চাইতে অমূল্য ধন আর নেই।” আফসোস তো থাকেই, তবে তোমাকে নিয়ে বেঁচে সেটা একটু করে কমিয়ে এনেছি। আর অমূল্য ধনটা ঠিকই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। কষ্ট গো কষ্ট! তোমার জন্য কষ্ট। তোমাকে না পাওয়ার কষ্ট নয়, তোমাকে ভালোবাসার কষ্ট। কেন যে তোমাকে ভালোবাসতে গিয়েছিলাম! মেয়েরা এমনই! সুখে থাকতে পারে না, ভালোবেসে কষ্ট পায়, তবুও ভালোবাসে। বিশ্বাস করো, আমার একদমই ইচ্ছে ছিল না তোমাকে ভালোবাসবার। তবু যে কেন তোমার কথাই সারাদিন ভাবতাম! তখন তো তোমাকে ভাবতে ভাল লাগত, বুঝিনি তখন, ভালোবাসা ওরকম করেই জন্মে যায়। তোমার স্ট্যাটাসগুলি মাথায় ঘুরঘুর করতো সারাদিনই। আর তোমার বইগুলি দেখার পর তো পুরোই শেষ আমি! মনের মধ্যে শুধু একটা কথাই ঘুরেফিরে মাথায় বাড়ি মারত ঢংঢং করে। কী কথা? তোমাকে দেখতাম আর ভাবতাম, এই ছেলেকে ভালোবাসব নাতো কাকে ভালোবাসব? আমি স্বপ্নের রাজকুমার চাইনি কখনওই। কী চেয়েছি, তাও জানি না। ভাবতাম, ঈশ্বর যা দেবেন, তাতেই খুশি থাকব। তুমি কেন এলে মাথায়? কেন ওভাবে করে সারাদিনই ঘুরে বেড়াতে মাথায়? কেন তোমাকেই ঘুরতে হবে আমার ভাবনায় সারাক্ষণ? কী আশ্চর্য! প্রত্যেকটা স্ট্যাটাসেই কোন এক মানসীর কথা বল! দেখলেই গা জ্বলে যায়! আচ্ছা, আর কারও কথা বলো না কেন ভুল করেও? ধুর্! আমি কী যে সব বকে যাচ্ছি! কেন বকছি এরকম করে? তুমি কি শুনবে আমার কথা? কোনওদিনই না! আচ্ছা, এই ডায়রিটা আমি কী করবো? কেন লিখে যাচ্ছি মনে যা আসছে, তা-ই? লেখা শেষ হয়ে গেলে কি পুড়িয়ে ফেলবো? লেখা কি শেষ হবে আদৌ কখনও? এসব ছন্দহীন লক্ষ্মীছাড়া লেখাগুলিই বা আমি কেন লিখছি? আসলে কি আমি তোমার সাথে কথা বলে চলেছি এই ডায়রিতে? তুমি আছ, আর আমি। এ নিয়েই কি এমন লিখে বাঁচা? আমি রোজই এমনি করে সারাদিন কথা বলতে থাকি। তোমাকে বুকের মধ্যে রাখি আর কথা বলি। একটা কথাও তুমি শুনতে পাও না, কেউই পায় না। শুধু ঈশ্বর শুনতে পান। আর আমার এই পরম কাগজবন্ধু সেসব কথা যত্নে বুকে ধারণ করে চলে। এ ডায়রির তুমি হচ্ছ আমার তুমি। এ তুমি বড় আপন, বড় ভালোবাসে আমায়। যে কথাটি আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়েও বলতে পারব না, সে কথাও এখানে লুকিয়ে রাখি পরম আদরে।

“একেবারে অপরিচিত কাউকে বিয়ে করে ফেল।” হ্যাঁ, তুমি ঠিকই লিখেছিলে। এবং তুমি এ কথা বলার অনেক আগেই আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। কোনও চিন্তাই আমাকে আটকে রাখতে পারেনি। আমি কোনওভাবেই নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। দূরে রাখতে পারিনি নিজেকে তোমার কাছ থেকে। আমার জীবনের বটম-লাইনটা কী, জানো? আমি যে ভালোবাসায় প্রত্যাখ্যাত হবো, এর নিশ্চয়তা স্বয়ং ঈশ্বরও দিয়ে দিয়েছেন, তুমি তো বটেই, সেকথা জেনেও আমি তোমাকে ভালোবাসি। মনে আছে সেইদিনের কথা? ধানমন্ডি লেকের ধারে বসে তুমি কোনও কারণ ছাড়াই অকপটে বলেছিলে, “সরি, আর যা-ই করি, তোমাকে বিয়ে করতে পারব না।” আর আমিও সাথেসাথে ঠাস করে বলে ফেলেছিলাম, “আমিও আপনাকে বিয়ে করছি না।” এরপর দুজনই চুপ। আমার খুব কষ্ট হয়েছিল ওইদিন। ভাগ্যিস, তুমি শুধু তোমার লেখার নায়িকাদের চোখ পড়তে পারো, আর কারও না। পারলে, সেদিন আমার চোখ তোমাকে সত্যিটা বলে দিত। অবশ্য, তুমি আমার দিকে আদৌ তাকাও কিনা, আমি ঠিক করে জানি না। আমার বারবারই মনে হচ্ছিল, এখানে কেন এলাম আমি? খুবই বাজে একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে বাসায় ফিরে এসেছিলাম। বলতে ইচ্ছে করছে, তোমাকে favour করেছিলাম সেদিন। সমস্ত হীনমন্যতাকে এক করে সেদিন বিদায় নিয়েছিলাম তোমার কাছ থেকে। তোমার ভুলেও মনে পড়ে কি সেকথা? আচ্ছা, মনে পড়বেই বা কেন? মনে পড়া তো অনেক পরের কথা, আদৌ মনে আছে কি না, সেটাই তো সন্দেহ। তবু দেখ, কী বেহায়া আমি! আবারও ছুটে গেছি তোমার ডাকে। এবং, আবারও যাবো। বারবার যাবো। তুমি যতদিন ডাকবে ততদিনই যাবো। তুমি তো ডাকতেও ভুলে যাও! যাও গিয়ে! মনে রেখে কী হবে? মনে রাখার তো কথাও না। মনে রেখো, “কাউকে খুব বেশি পাত্তা দিয়েদিয়ে পাত্তা পেতে অভ্যস্ত করে ফেলার পর হঠাৎ করেই আর পাত্তা না দিলে তার অনেক বেশি গায়ে লাগে। সবসময়ই, অবহেলা শুরুতেই মধুর।” তোমার কথা, তোমাকেই ফিরিয়ে দিলাম।

জানো, আমার সেই মানসীগুলোকে বা সেই মানসীকে ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করে, যাদের কিংবা যার জন্য তোমার স্ট্যাটাসগুলি হাহাকারে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে কখনও-কখনও। আমি পড়ি, আর ভাবি, কী আশ্চর্য! এই মানুষটিকে ভালো না বেসে থাকা যায়, কিংবা ছেড়ে চলে যাওয়া যায় কীকরে? পরমুহূর্তেই ভাবি, এটাই বুঝি নিয়ম। যাকে ভালোবাসি, সে একদমই বোঝে না। আর যাকে ভালোবাসি না, তার যন্ত্রণায় টেকা দায়। অবশ্য, তোমাকে যন্ত্রণায় ফেলার কোনও ইচ্ছেই আমার নেই। কারণ, আমি জানি, আমরা যাদেরকে পছন্দ করি না, বা পছন্দ করার কোনও কারণই নেই, এবং যাদের কথা মাথাতেই আসে না, তারা যদি প্রপোজ করে বসে, কিংবা টানা বিরক্ত করতেই থাকে, কী পরিমাণ অসহ্য লাগে এবং মেজাজ চড়ে যায়। আমি নিজেই এর ভুক্তভোগী। ফিরিয়েছি যত, ফিরছি ততধিক! ভেবো না, তোমাকে বেহায়ার মতো ভালোবাসি মানে এই, মহুয়াকে ভালোবাসা যায় না, এটা সবাইই মনে করে। আমি ওরকম করলে তুমি খুব বিরক্ত হবে, হয়তো ফোনটাও রিসিভ করা বন্ধ করে দেবে। আমি সেটা চাই না, তাই আমি তোমাকে একদমই বিরক্ত করতে চাই না। দূরেই থাক, অসুবিধে নেই, তবুও ভাল থাক। এবং আমাকে আরও পাগল কর, করতেই থাক, করেই যাও—আমি শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

আমি তোমার জন্য মরে যাবো, তুমি বিয়ে করে সুখে থাকবে। মরে গিয়ে অনেক বড় ভূত হবো, রাতের বেলায় এসে তোমাকে আর তোমার বউকে ভয় দেখাবো। একটা কাজ করবে, প্লিজ? আমাকে গলাটিপে মেরে ফেলো না! আমার তোমার হাতে মরার খুব শখ। অনেক ভালোবাসি তোমায়। এতোটা প্রচণ্ডভাবে ভালোবেসে ফেলবো, ভাবতেও পারিনি কোনওদিনই। এতো বেশি ভালো কখনওই কাউকে বাসতে পারিনি, পারবও না। আমি তোমাকে খুব বুঝি…..সেটা তুমি জানো না। আচ্ছা, এখনও কি অনেক লিখলে ব্যাকপেইন শুরু হয়? মাথাব্যথা? ডাক্তার দেখাও না কেন? তোমার সাথে প্রতিদিন একবার একবার রাগ করি। জানি, তাতে তোমার কিছু এসে যায় না। ভাবি, এটাই লাস্ট, আর লিখব না ওর কথা ভেবে। (এখনও ভাবছি।) নিজের কাছে দেওয়া কথাটা রাখতে পারি না। পরদিন আবার তোমাকে মিস করতে থাকি। ওরকম করতে-করতে মনটা খারাপ হয়ে যায়, এরপর ভুলে থাকার চেষ্টা করি। তারপর একটা পর্যায়ে অস্থির লাগা শুরু হয়। তখন আর কোনও কাজ করতে পারি না, পড়ায় মন দিতে পারি না, গান শুনতেও ভাল লাগেনা, গল্প করতেও ভাল লাগে না। অস্থিরতা যখন চরম পর্যায়ে চলে যায়, তখন তোমাকে নিয়ে লিখতে বসে পড়ি। কখনও-কখনও, তোমাকে টেক্সটও করে ফেলি। ভাবি, এটাই লাস্ট! যথারীতি নো রিপ্লাই। ঐ চক্রটা শুরু হয় আবার! শোনো চড়ুই, সেদিন একটা জায়গায় পড়েছি, যাদের নাম A দিয়ে শুরু তারা বউকে মনভোলানো কথাবলার মহাপ্রতিভাসম্পন্ন হয়। আর কিছু না হোক, তুমি এই কারণে হলেও সুখী হবে! কতজনকে তো কতরকম টিপস্ দাও। তোমাকে ভুলে থাকার কিছু টিপস্ দিয়ো তো আমাকে! তুমি খারাপ, খুব খারাপ! ভুল বললাম। তুমি ভাল, খুব খুব খুব ভাল। ইসস! এমন কিছু করতে পারতাম যে, তুমি আমাকে চাইলেও আর কোনওদিনই ভুলে যেতে পারবে না! আচ্ছা, আমার চেয়ে বেশি তোমাকে কি কখনও কেউ ভালোবেসেছে, কিংবা বাসবে? আমি কি কখনও বলেছি, তোমার বউকে ঈর্ষা করব? তোমার বউকে ঈর্ষা করব না আমি। তাকেও ভালোবাসব! সত্যি বলছি। যে তোমাকে ভালোবাসবে, যত্ন করবে, ভাল রাখবে, তুমি যাকে ভালোবাসবে, তাকে তো ভালোবাসতেই হবে, তাই না? তবে, কষ্ট পাবো। তুমি যখন দুজনের ছবি দেবে, ওকে নিয়ে লিখবে, তখন খুব কষ্ট হবে। সেই কষ্টের তীব্রতা কতটুকু হবে সেটা নিয়ে প্রায়ই ভাবি! তুমি ‘নীলিমায় ইন্দু’ এই মেয়েটার টেক্সটেরও রিপ্লাই দাও? একেও তোমার ভাল লাগে? এই মেয়েটা তোমাকে টেক্সট করবে বুঝেছিলাম, কিন্তু ভেবেছি তুমি অন্তত এই মেয়েটাকে রিপ্লাই দেবে না। ভাল! এখন ও সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে, ভাল তো, না! সবাই খুব ভাল ভাবুক না তোমায়। কেন তোমার নিন্দুকদের দুইটা কথা বলার সুযোগ করে দাও আর আমার মত বোকা মেয়েগুলোকে অন্যের কাছে ছোট হওয়ার সব ব্যবস্থা করে রাখ? ঐ মেয়েটাকে বলে দিয়ো, তোমার সাথে কথা হলে তোমার টাইমলাইনে এসে না বলতে, আর রাগ-অভিমানের আদান-প্রদান ইনবক্সেই করতে। সেটাই ভাল দেখায়! যদি ভাবো, অনধিকার চর্চা করছি, বলে দিয়ো! আর বলবো না এমন করে।…………..না, বলবো, একশবার বলবো। এই শোনো না, আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না! কেমন? তোমার উপর আমার যে কী রাগ হচ্ছে, সেটা যদি বুঝতে! আচ্ছা, তুমি এমন কেন? সেদিন রিপ্লাই দিতে না করলাম, দিলে না। কী হতো রিপ্লাই দিলে? আমার কথা না শুনলে কী হবে? আমি কি বকে দিতাম? “কিছু লোক নিজের যোগ্যতায় ওপরে ওঠে, কিছু লোক অন্যের অযোগ্যতায় ওপরে ওঠে।” এই কথাটা কেন লিখেছ? আমি বুঝিনি। আমাকে বুঝিয়ে দাও না!

আচ্ছা, তুমি কেন আমার সাথে এমন করো? আমাকে নিয়ে ঠিক কী কী ভাবো, একদিন সময় করে বলবে? যদি ভালোই বাস তবে এতো দূরেদূরে থাকো কেন? আমি কোথায় আছি, কী করছি, জানতে ইচ্ছে করে না? আমি তো সারাক্ষণই ভাবতে থাকি, তুমি কী করছো এখন। মনে হয়, একটু পরপর কল করে যদি জানতে পারতাম কী করছো, শুধু এটুকুই। এক মিনিট কথা বলতাম। তাতেই অন্তত পরের কয়েক ঘন্টা ভাল থাকতে পারতাম। তুমি কি বুঝতে পারছো, আমার পড়াশোনার কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে? তাতে কি তোমার কিছু এসে যায়? ভাল কথা, তুমি আমার কী কী টাইপের কথায়, আচরণে বিরক্ত হও, বলো তো! তোমাকে এখন সামনে পেলে কী করতাম, জানো? তোমাকে মারতে ইচ্ছে করছে! মারতাম! তারপর তোমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতাম কিছুক্ষণ। তারপর আদর করে দিতাম। তোমার বুকে মাথা রেখে বলতাম, যাদুসোনা, আমাকে এতো কষ্ট দিয়ো না, প্লিজ। আমি সহ্য করতে পারছি না। আমাকে ছেড়ে আর কোথাও যেতে দিতাম না। তুমি চাইলেও না। জোর করে ধরে রাখতাম। ছাড়তাম না! …….. এসব ভাবতে ভাল লাগল। ভেবে নিলাম আচ্ছামতো! তোমার কোনও সমস্যা? ভাবিস্ট একটা! এতো ইগো আর ভাব পেটের মধ্যে রেখে কী হবে? এজন্যই তো দিনদিন মোটা হচ্ছ! ইগোগুলো পেটের মধ্যে জমেজমে চর্বি হচ্ছে! আচ্ছা, এই প্রশ্নটার উত্তর দাও তো, কী নিয়ে এতো ব্যস্ত থাকো? অফিস থেকে আসার পর তো আর কোনও কাজ নেই, কী করো ঘুমানোর আগ পর্যন্ত? তুমি কি আমার উপর রেগে আছো কোনও কারণে? কোনও কিছু নিয়ে মন খারাপ? নাকি, কোনও ঝামেলায় আছো? বলবে না আমাকে, যাদু? কোনওকিছু নিয়ে কি অস্থিরতা কাজ করছে তোমার মধ্যে? হঠাৎ করে নিজেকে এতো গুটিয়ে নিলে কেন? তুমি রুবু আপুর দেয়া রিপ্লাইটা পড়েছো? ভাল হয়েছে না? এতো রাত পর্যন্ত জেগে আছো কেন? ঘুম আসছে না? ঘুম পাড়িয়ে দেবো বাবুটাকে? প্লিজ ঘুম হয়ে যাও চোখে, আমার মন খারাপের রাতে……. কারও নির্ঘুম রাতের কারণ হওয়া যতটা সহজ, ততটাই কঠিন কারও ঘুম হওয়া! এটা ভেবে দেখেছো কখনও? আচ্ছা অগ্নিভ, তুমি আমার ঘুম হতে পারবে কখনও? ঐ গানটা শুনেছো, তুমি আমার ঘুম, তবুও তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি না। মজার ব্যাপার কী জানো, তোমাকে নিয়ে এত ভাবি কিন্তু তোমাকে এখন পর্যন্ত মাত্র দুইদিন স্বপ্ন দেখেছি। অথচ, তোমাকে তো আমার প্রতিদিন স্বপ্ন দেখার কথা! কেন দেখি না, বলতে পারো? আচ্ছা, এক কাজ করতে পারো, তুমি রিপ্লাই দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দাও। আমি অনেক বললেও দেবে না। শেষ একটা টেক্সট করতে পারো, কেন দূরেই থাকতে চাও এটা জানিয়ে, যদি ইচ্ছে হয়! সত্যিসত্যি যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ো। আমার আর ভাল লাগছে না এসব। স্বাভাবিক জীবন চাই, সুস্থভাবে বাঁচতে চাই, রাতটা ঘুমিয়ে কাটাতে চাই, আবার সিরিয়াসলি পড়াশোনা করতে চাই। এটা খুব দরকার। একটু হেল্প করব? শুভরাত্রি, বাবু। তুমি কি জানো ঘুমালে তোমাকে সত্যিসত্যি বাবুবাবু লাগে? আদর করে দিতে ইচ্ছে হয়! ভালোবাসি!

চড়ুই, তুমি তো শুকিয়ে গেছো! ভাল লাগছে দেখতে। ছবিগুলো সুন্দর হয়েছে। শুভ সকাল। কী হয়েছে সকালসকাল বাবুটার? বাবুটা কি এখন থেকে ছবিতে কথা বলবে? ব্রেকফাস্ট করেছ? তোমার অফিস এতো এলোমেলো কেন? ওই তারগুলো গুছিয়ে রাখবে। একটা সেলফি আপলোড করেছি। দেখো না একটু! লাইক লাগবে না, শুধু দেখো। কী? দেখবে না? চেহারা খারাপ হলে তোমার দোষ। তোমার জন্যই তো সারারাত ঘুমাতে পারি না।………দুপুরে খাইনি, সকালেও না। তোমার অবশ্য ওতে কিছু এসে যায় না, জানি। একটা ভিডিও পাঠালাম তোমার হোয়াটসঅ্যাপে। এই ভিডিওটা আমি বানিয়েছিলাম আরও তিনমাস আগে। জানি, তুমি খুব বিরক্ত হবে ভিডিওটা দেখে। রাগও করবে। তবুও কেন পাঠালাম? জানি না। ভিডিওটা অর্ধেক গেছে। কোন একটা বিচিত্র কারণে বাকিটা পাঠানো যাচ্ছে না। এই ভিডিওটা দেখে যদি তোমার খুব মেজাজ খারাপ হয়, আমাকে বকে দিয়ো। মুখে যা আসে তা বলে বকো। আমার একটা বকা খাওয়ার সময় হয়েছে। এমনিএমনি তো আর দিচ্ছ না। এটা দেখে এরপর দিয়ো। আরেকটা কথা। সুন্দর হয়নি তোমার প্রোফাইল পিক। ন্যাচারাল ছবিই ভাল। তুমি তো এমনিই ফর্সা। আরও বেশি সাদা করে ফেললে ভাল লাগে না। Mr. Unpredictable, আপনি ভাল থাকবেন। ঢাকায় সাবধানে আসবেন। যাওয়ার সময়ও সাবধানে যাবেন! এই আসা-যাওয়ার মাঝে কিছু ভাল সময় কাটান। জীবনটা উপভোগ করুন। ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, নিরাপদে থাকবেন। এই এই এই………! আমাকে কিছু প্রেমময় কথা লিখে পাঠাবে? বানিয়ে-বানিয়ে লিখলেও চলবে। অ্যাই ছেলে, অ্যাই………! পাঠাও নাআআআআ!

সকাল থেকে একটা ছোট্ট চড়ুই রুমের সামনে বসে আছে। একটু অসুস্থ, উড়তে পারে না। পানি দিলাম, খাচ্ছে না। চড়ুই আর কী খেতে পারে, জানি না। জানলে ভাল হতো। খাইয়ে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে উড়িয়ে দিতাম। বলতাম, যা ভাই, তোর ইচ্ছেমতো আকাশে উড়ে বেড়া। কেন ভাই কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার মত বারবার সামনে এসে পড়িস? চড়ুইটাকে দেখে মায়াও লাগছে, কষ্টও লাগছে। একবার মনে হচ্ছে, আদর করে তুলে এনে রুমে রেখে দিই। আবার মনে হচ্ছে, চোখের আড়ালে দূরে কোথাও নিয়ে রেখে আসি। হায়রে, কষ্টের সময়ে উপহাস করতে কেউ ছাড়ে না। এমনকি বিধাতাও না! কেন? ওকে চড়ুইই হতে হবে কেন? অন্য কোনও পাখিও তো হতে পারতো। এই এলাকায় ২৪০টা বাসা থাকতে আমার বাসার সামনেই কেন? ভাল থেকো, চড়ুই। কাউকে ভাল থাকতে বলার মানে হলো, সে যেন সুস্থ থাকে, নিরাপদে থাকে, হাসিখুশি থাকে, সুখে থাকে, শান্তিতে থাকে। আরেকটা কথা। আমার ভিডিওটা দেখে একটু মেজাজখারাপ করবে, প্লিজ? সময় করে মেজাজখারাপ কোরো মনে করে, কেমন? ছোট্ট চড়ুই ভাল। আমাকে ছেড়ে চলে যায় না। বড় হলে চড়ুইয়ের ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। ভালোবাসার মানুষ বেড়ে যাবে। তখন আর আমাকে সময় দেবে না।

বেয়াড়া মনটাকে নিয়ে খুব ঝামেলায় আছি। তাকে বারবার বুঝিয়ে বলি, সে বোঝেও। একটু পর আবারও ভুলে যায়। আমার মন, আমার ভেতরে থাকে, কোথায় আমার কথামতো গুডবয় হয়ে চলবে, তা না, সে জায়গা দিয়ে বসে আছে যাকে আমি দূরে ঠেলতে চাই, তাকে। এসব কী? এক ঘন্টা যেতে না যেতেই সে ভাবতে শুরু করে অগ্নিভ কোথায় আছে, কী করছে, খেয়েছে কি না, গাড়িতে উঠল কি না, ও কি ঢাকায় চলে আসল, নাকি আসেইনি! ওকে বোঝাই, অগ্নিভকে নিয়ে চিন্তা করার মত আরও অনেক মানুষ আছে, তবু ও মানতে চায় না। যখন প্রুফ দেখাই, ও কষ্ট পায়, বলে ঠিক আছে, আর ভাবব না। আবার ভুলে যায়। ওকে নিয়ে আমি খুব হতাশ। কী করব বলো তো? তুমি একটু হেল্প করবে? একটা মহুয়া না থাকলে তো তোমার কিচ্ছু হবে না। একটু খারাপ লাগবে অবশ্য, তবে সেটা অন্য কেউ পুষিয়ে দেবে। হেল্প করো না! এত কিছু বলছি, তোমার রাগ হয় না? বকে দাও না প্লিজ! খুব করে বকে দিয়ে ব্লক করে দাও। খুব ভাল হয় আমার জন্য! কাছে টানতে বলছি না, দূরে সরিয়ে দিতে বলছি। এটা তো সহজ, তাই না? একটা কথা বলা হয়নি, আজ তোমাকে স্বপ্ন দেখেছি। তুমি ফোন দিয়েছো। অনেকক্ষণ কথা হলো। ভাল লাগছে। মনে হচ্ছে, সত্যিসত্যি বিকেলে কথা হয়েছে। মাঝেমধ্যে স্বপ্নে এলেই তো পারো! নাকি স্বপ্নে আসারও সময় পাও না! ইচ্ছেও হয় না! নির্লিপ্ত মানব। এটা ভাল! অবহেলা করতে থাকো! বকবক করতে-করতে একসময় থেমে যাবো! যদি কখনও আমি অনেকদূরে চলে যাই, আমাদের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন যদি কখনও আমাকে মনে পড়ে, মিস কর, তখন এই গানটা শোনো ‘আমায় যদি পড়ে মনে, কবিতায় কবিতায় মগ্ন থেকো…….’ পরে হয়ত ভুলে যাবো, তাই বলে রাখলাম। আচ্ছা, আমি তোমাকে ইনবক্সে যে গানগুলো শুনতে বলি, সেগুলো কি সব তুমি শোনো? এই যে নির্লিপ্ত মানব, এই প্রশ্নটার কি একটা ছোট্ট করে রিপ্লাই দেয়া যাবে? হুঁ, বা না? রাতে ঘুম ভেঙে গেলেই ফেইসবুকে ঢোকার অভ্যাসটা ছেড়ে দিয়ো, কেমন? শুভরাত্রি, চড়ুই।

ইদানিং কী হয় জানো, খুব সুন্দর কোনও ছবি দেখলে কষ্ট লেগে ওঠে। তোমার হাসির শব্দ শুনলে যেমন কষ্ট হয়, তেমন। আমার ছোটবোনকে বললাম, সে অবাক চোখে তাকালো। কেন কষ্ট হয়, বলো না? আমি অ্যাত্ত অ্যাত্ত প্রশ্ন করি, কোনওটারই উত্তর দাও না। একদিন তোমাকে সামনে বসিয়ে সব প্রশ্ন আবার করবো। তখন দেখবে, কত কষ্ট হবে সবগুলোর একসাথে উত্তর দিতে! তুমি বলেছিলে না, একদিন আমাকে নিয়ে ঘাসের উপর শুয়ে থাকবে? তোমার মনে আছে, তুমি কবে এই কথা বলেছো? আমাদের বাসার ওই পাশের মাঠে ঘাস আছে, শুতে পারবে। ওইখানে যাবে আমার সাথে? পাশের লেকের পানিতে পা ভিজিয়ে পাথরগুলোর উপর দুজন বসে থাকব। আর ছবি তুলব। তোমার সাথে তো আমার কোনও ছবি নেই। আর একদিন এখানে বসে দুজন সূর্যাস্ত দেখব…….তুমি আমার সাথে যাবে তো চড়ুই, তাই না? রাত নেমে গেল কতো নিচে, আমি তোমাকে সামনে রেখে বকেই যাচ্ছি। এত ঘুমাও কেন? দেখো না, আমি জেগে আছি! তোমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়ে তোমার শক্ত বকা খেতে ইচ্ছে করছে। মন এতো অস্থির কেন, কে জানে!

তুমি নির্ঘুম রাত, এলোমেলো দুপুর,

তুমি চোখের জল, কান্নার সুর…..

তুমি প্রিয় কবিতা, ভাললাগার গান

মনের মাঝে লুকিয়েরাখা কত অভিমান!

তুমি অধরা স্বপ্ন, জানি সত্যি হবে না কখনও, তবুও দেখতে ভাল লাগে,

তুমি প্রিয়মুখ, ঘুম ভাঙতেই চলে আসো, বলো, সুপ্রভাত! সবার আগে!

তুমি ভীষণ নির্লিপ্ততা, প্রিয় অবহেলা,

তুমি প্রিয় পাগলামি, জীবন নিয়ে জুয়াখেলা!

তুমি মিষ্টি যত ভাবনা, শুধু আনমনে ভেবে যাওয়া,

ক্লাসের ফাঁকে তোমায় নিয়ে হঠাৎ হবো হাওয়া!

তুমিই ধ্রুব, তুমি আমার সবচিন্তার শেষকথা,

তুমি প্রতিদিনের জমানো যত ছোটছোট ব্যথা।

তুমি ছোটোবেলা থেকে কল্পনায় আঁকা রাজপুত্র,

তুমি স্বপ্নে কর ফেরি জীবন রাঙানোর সূত্র।

তুমি বৈশাখী ঝড়, এলোমেলো কর সব

তুমি থমথমে মেঘলা বিকেল, ভীষণ নীরব……..

তুমি একফালি চাঁদ, ঝুউম বৃষ্টি,

মায়াজাগানো কথা যেন, নেশাধরানো দৃষ্টি!

প্রিয়মুহূর্ত তুমি, ভাললাগা এক স্মৃতি,

জীবনে চলার পথে ক্ষণিকের প্রিয় অতিথি…..

তুমি মুখে হাসিফোটানো টেক্সট—দুষ্টু আদরমাখা,

শুধু তোমার জন্যই ‘প্রতীক্ষা’কে বড় যত্নে রাখা……….

তুমি চার রাস্তার মোড়, হাতেরাখা হাত,

তুমি ভুলবোঝা, একাকি কষ্টের রাত!

তুমি দীর্ঘশ্বাস, হবে না কাটানো এক হয়ে হায় ধুলোবালি জীবন,

অভিমানে চলেযাওয়া, তবু ফিরেআসা বারেবারে, অস্থির মন!

তুমি প্রতিদিন রাস্তায় খুঁজেফেরা প্রিয় মুখটি,

তুমি প্রিয় মানুষ, হাতের ফানুস, প্রিয় নামটি।

তুমি বুকে কাঁপনধরানো হাসির শব্দ,

তুমি সুরেলা কন্ঠ, বারবার হই মুগ্ধ!

ভাললাগা, ভালোবাসার প্রতিশব্দ যে তুমি,

গভীর অরণ্য, প্রতি মুহূর্তে হারাই আমি!

এরপরও বলছি তুমি কখনই জানবে না, তুমি আমার কী ছিলে……এত রাতে ফেসবুকে ঢুকতে হয় না, প্রিয়!

পাগল একটা! শুভ সকাল, চড়ুই! আসো না কেন কাছে? এত দেরি হচ্ছে কেন তোমার? তাড়াতাড়ি আসো, এসে বৃষ্টিতে ভিজবে না? বৃষ্টি ধরে এলে ভিজবেটা কীসে? “কিছুকিছু দ্বিধা, ভয়, সংকোচ………..ঝেড়ে ফেলে দিতে হয়, যেমন করে বইয়ের পাতায় জমেওঠা ধুলো ঝেড়ে ফেল………দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই!!! এক ইগোই জীবনের সকল গতিপথ বদলে দিতে পারে। অমন করে দমিয়ে থামিয়ে আর অন্যকিছুই রাখতে পারে না। বুঝলে, মেয়ে??” হ্যাঁ বুঝেছি! তুমি বোঝো তো? নাকি, শুধু লিখেই বাহাদুর?

জানি, আবার আরেকটা অন্যায় করছি, তোমার লেখাটা দেখে কেন আমার চোখ জলে ভাসবে? পেছনে অনেক কথা……..অনেকগুলো কষ্টের ঘর তালা দেওয়া। না, দোষ তোমার না। দোষ যদি কিছু থাকে তো সবটাই আমার। এও জানি, হয়তো বিরক্তই হবে, তবু বলি, আমি সারা পৃথিবীর কাছ থেকে নিজেকে গোপন করতে পারি, শুধু তোমার কাছ থেকে নিজেকে লুকাতে পারি না। তুমি চাওনি ঠিকই, কিন্তু বাজে একটা অভ্যস্ততা আমিই বয়ে বেড়াচ্ছি। যে সময়টাতে তুমি নতুন সম্পর্কের সুতো বুনবেবুনবে করছ, আমি নিজেকে তখন নিয়ে যাচ্ছি কোথায়, হয়তো আমিও জানি না। এমনই হয়ে এসেছে। হয়তো আর কখনওই আমি তোমার সামনে আসবো না, আর সেজন্যই এত কিছু। তোমাকে আর ধাঁধার মধ্যে রাখতে চাই না। তোমাকে জানতে কত কিছুই তো করেছি। হয়তো উচিত ছিল না এমন করা। হয়তো যা লিখছি তা কিছুই বোঝাও যাচ্ছে না…… এলোমেলো, আমি নিজেও আসলে জানি না, এসব কী। শুধু বলব, যা করছি, যা করেছি, তার কিছুই উচিত হয়তো না। কিন্তু আমি নিজের কাছে নিজেই এক পরাজিত মানুষ, তাই তোমার কাছে শুধুই ক্ষমা চাইবো, আর কিছু না। আমি গুছিয়ে কিছুই বলতেও পারছি না, লিখতেও না; কারণ, চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে বারবার। এটা হয়ই, শুধু হঠাৎ-হঠাৎ অসহ্য লাগে। কেন, জানি না।

কতদিন জিজ্ঞেস করা হয় না, কেমন আছ। জানিই তো, ভাল আছ। আমাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে না, কেমন আছি? জানি, করে না। আচ্ছা, আমি মরে গেলে কি জানতে পারবে? না, পারবে না। কে জানাবে? মরার আগে যদি ইচ্ছে করে, তবে কি তোমাকে শেষবারের মতো দেখে মরতে পারব? ডাকলে আসবে তুমি? প্রায়ই ভাবি, এই যে বেঁচে আছি, কেন? তোমাকে ভালোবাসবো বলে? কেন? কেন? কেন? আমি আমার সমস্ত অনুভূতিতে তোমাকেই কেন রাখছি? কী অসম্ভব ভয়ংকর কষ্ট হয়, বোঝো তুমি? আমি শুধু তোমাকেই দেখি। বিশ্বাস করো, একটুও মিথ্যে বলছি না। আমি এখনও তোমাকে দেখতে পাচ্ছি। কেন একটুও চোখের আড়াল হও না তুমি? লোকে বলে, চোখের আড়াল মানেই মনের আড়াল। আমি ভাবি, লোকে কী বাজে কথা বলে! তুমি তো আমার চোখের আড়ালেই আছ। তাও কেমন করে মনের মধ্যে শক্ত হয়ে গেঁথে আছ! এতোটাই তীব্রভাবে! কেউ জানে না, কেউ দেখে না। এমনভাবে গেড়ে বসেছ যে আমি হাজার চেষ্টা করেও তোমাকে বের করতে পারছি না। আমাকে প্লিজ একটু স্বস্তি দাও। একটু শান্তি দাও আমায়। আমার নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়। ভালোবাসা কি অভ্যাস? নাহলে রোজই আমি কীসব পুষছি এগুলো? আমি একটিবারের জন্যও তোমাকে মন থেকে সরাতে পারি না। আর সারাদিনই শুধু তোমার প্রোফাইল আর ছবিতে বুঁদ হয়ে থাকি। এর শেষ কোথায়? এর কি শেষ হবেই না? আমাকে মেরে ফেলো, প্লিজ! আমার কিছুই ভাল লাগে না।

মাঝেমাঝে বই পড়ি আর ভাবি, শুধু বইই পড়তে থাকব, তাহলে আর তোমাকে মনে পড়বে না। কিন্তু কী যন্ত্রণা! বইয়ের মধ্যেও তোমাকে দেখি। এগুলো কী? বইপড়া বন্ধ করে তোমাকে একটু কিছুক্ষণ দেখে নিই, আবারও পড়ি। উফ!! এই যে এখনও নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। মাথাটা ভারি হয়ে গেছে। নিজে তো ঠিকই নাকডেকে ঘুমাচ্ছ। আর আমি তোমার জন্য অসহ্য যন্ত্রণায় পুড়ছি। আমি বাঁচতে চাই না, আমি মরতেও পারব না। তোমাকে ভুলতেও পারব না। আমি পারবটা কী, তবে? তোমাকে ভালোবাসাই উচিত না আমার! অথচ তোমাকে ভালোবাসাটাও বন্ধ করতে পারছি না। আমাকে একটা পথ বলে দাও না! বলো না, প্লিজ! আমার মাথায় হাতটা একটু রাখবে, সোনা? আমার বুকের মাঝখানটায় একটু হাত রাখো না! আমার এই বুকে যদি হাত রাখো, তবে তোমার সুন্দর হাতটা পুড়ে যাবে। সত্যিই পুড়ে যাবে। আমার কষ্টের উত্তাপ তুমি সহ্য করতে পারবে না। কাউকে বলতে পারি না, কেউ জানে না, কেউ দেখে না আমার এ কষ্ট। আমার এ কষ্টের কারণ যে তুমি, সেই তোমাকেও কিছু বলতে পারছি না। তোমাকে কিছু বলার তো প্রশ্নই আসে না, ওর চাইতে মরে যাওয়া সোজা। কষ্টের চাইতে কষ্ট দেখাতে না পারার কষ্ট অনেক-অনেক গুণ বেশি। আমি মরি না কেন? ভালোবাসি কেন তোমাকে? এসব প্রশ্নের উত্তর আমি কখনওই দিতে পারি না। ঠিক কী লিখলে আমার সমস্ত কষ্টকে এই কাগজের বুকে রেখে দিতে পারব, আমি তাও জানি না। শুধু জানি, খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। শুধুই তোমার জন্য, তোমার জন্য, তোমার জন্য। এতো কষ্ট থেকেও তো মানুষের মনে ক্ষোভ জন্মানোর কথা আর সে ক্ষোভ থেকে ঘৃণা। ঘৃণা করব তোমাকে? আমি তো একথা মাথায় আনলেও পাগল হয়ে যাবো! তার চাইতে বরং আমার এমনকিছু হয়ে যাক, যা মৃত্যুর চাইতেও বড়, বেশি যন্ত্রণা দেয়। এতো ভালোবাসা কেন তোমার জন্য পৃথিবীতে? ঈশ্বরের এতো আশীর্বাদ পেয়েছ যে সবাইই তোমার জন্য পাগল। তুমি কোনওদিনই জানতে পারবে না, তোমাকে যে কত মানুষ অসম্ভব রকমের ভালোবাসে! এদের সংখ্যা বাড়ানো যায় কীভাবে, সে বুদ্ধি কর বসেবসে? সুখের সাথে আর যা কিছুরই সম্পর্ক থাকুক না কেন, ফেসবুক ফলোয়ার, ফেসবুক ফ্রেন্ড, আর ভালোবাসার মানুষ বাড়ানোর কোনও সম্পর্কই নেই। তুমি দিনদিন বিখ্যাত হবে, আর ভীষণ দুঃখী হতে থাকবে। অ্যাই ছেলে, অ্যাই! তুমি কি জানো, প্রিয় মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা না পেলে যে কী কষ্ট হয়! না, জানো না। কিচ্ছুটি জানো না তুমি! লজ্জাও করে না তোমার? তোমার জন্য এতোএতো মানুষ কাঁদছে, আর তুমি পড়েপড়ে ঘুমাচ্ছ! বোঝো তুমি, কী যে কষ্ট হচ্ছে আমার!

তোমার কথা মাথা থেকে বের করতে পারি না। কেন? এই জিনিসটার নাম কী? ভালোবাসা? তোমাকে ভুলে থাকতে পারি না। সারাক্ষণই মাথায় থাক। এখানে কেন থাক? আর কোনও জায়গা নেই তোমার? ভালোবাসা কি একেই বলে? আমি শুধু তোমাকেই ভাবি নীরবে। শুধু তোমার কথাই চিন্তা করি, তোমার জন্য টেনশন করি। তোমার প্রোফাইলে যাই, তোমার ছবি দেখি আর সেভ করি। আমার সারাক্ষণের সঙ্গী শুধু তুমিই! তোমার আমার কনভেরসেশন পড়ি রোজ। রোজই একই নিয়মে আর রুটিনে ঢুকে গেছি আমি। এটাকে কী বলে, আমি জানি না। কী ব্যাখ্যা এর, তাও আমার জানা নেই। এসবের নাম যদি হয় ভালোবাসা, তবে তা-ই। ভালোবাসি আমি তোমাকে। আড়াল থেকেই চিরজীবন ভালোবেসে যাবো। অনেক কষ্ট হয়, তবুও। কারণ, সম্ভব নয়………এখান থেকে বের হয়ে যাওয়া কোনওমতেই সম্ভব নয়। ঈশ্বরকে বলি, আমি যেন এভাবেই চলে যাই পৃথিবী থেকে। আর বিশেষ একটা অপেক্ষা তো আছেই। তোমার বিয়ের জন্য অপেক্ষা। আচ্ছা, যদি তোমার আগেই আমার বিয়ের কথা ওঠে বাসায়? কী করব তখন আমি? কোথায় পালাবো? নেহায়েত দিদির কোনও বাচ্চা নেই বলে দিদি একদমই আমাকে বিয়ের জন্য চাপাচাপি করে না। কিন্তু দিদির একটা বাচ্চা হয়ে গেলেই আমার বিয়ের ধুম লাগিয়ে দেবে বাসায়। তবুও আমি মনেপ্রাণে চাই, দিদির একটা সন্তান হোক। দিদির বাচ্চাটা হলে আমি সবাইকে ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারতাম। শোনো না, আমাকে একটা বাবু দেবে? তোমার বাবাই, আমার বাবু, আমাদের বাবুইসোনা……..ওই বাবুটাকে আমি পৃথিবীতে এনে বাসার সব ভার দিদিকে দিয়ে ওকে নিয়ে দূরে চলে যাবো। অনেক, অনেক দূরে। ওর যা দায়ভার, সব আমি নেবো। যা কলংক, সব আমার হবে। কেউ কোনওদিনই কিছু জানতে পারবে না। এর জন্য যদি মরেও যেতে হয়, আমি মরে যাবো। কথা দিচ্ছি তোমায়, তোমার কোনও পিছুটান থাকবে না। আমাকে লোকে যা ইচ্ছে, ভাবুক। আমার কিছুই এসে যায় না। আমি তো চলেই যাবো পৃথিবী ছেড়ে। রেখে যাবো আমাদের সন্তানকে। ও বেড়ে উঠবে, আমি পৃথিবীর ওইপার থেকে দেখে দেখে শান্তি পাবো। আমি থাকলে যদি আমাদের সন্তানকে অপবাদ নিয়ে বাঁচতে হয়, আমি থাকব না। তোমার মতো হোক আমাদের সন্তান। বড় মানুষ হোক। মানুষের কল্যানে কাজ করবে ও। আমি এইটুকু শান্তি নিয়ে মরতে পারব, তোমার সন্তান আমার শরীরে ছিল। তোমার অংশটুকু আমি পেয়েছি, আমার মধ্যে ধারণ করতে পেরেছি। এসব অনেকবার ভেবেছি, আজ মন থেকে ডায়রি পর্যন্ত বেরিয়ে এল।

আমি কী করব? উফ! ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে! আর পারছি না আমি! কেন আমার মরণ হয় না? হে ঈশ্বর! হয় আমাকে মৃত্যু দাও, নয়তো আমার চেতনাশক্তি নিয়ে যাও। এই অস্বাভাবিক, অসুস্থ চিন্তাভাবনা থেকে আমাকে মুক্তি দাও। কী করলে একটু শান্তি পাবো? তুমি কি কখনওই আমার কাছে আসবে না? আমার হবে না? আমি জানি, হবে না, তবুও আমি কেন এসব লিখে যাচ্ছি, জানি না। তুমি যেদিন বিয়ে করে ফেলবে, সেদিন আমি কী করব? আমার খাপছাড়া, লাইনচ্যুত কথাগুলি কি তুমি শুনতে পাচ্ছ? আমি তোমাকে ডাকছি, মনের ভেতর থেকে সমস্ত চৈতন্য দিয়ে, অনুভূতির সবটুকু নিংড়ে তোমাকেই চাইছি। এই! এই! এই! শুনতে পাও না একটুও? আমাকে মেরে ফেলো না, প্লিজ! আমাকে যদি ঈশ্বর কোনও বর দিতে চাইতেন, তবে আমি ঈশ্বরকে বলতাম, আমি তোমার হাতে মরতে চাই। প্রার্থনা করতাম, “প্রভু, ওকে একটু বলো না আমার গলাটা টিপে আমাকে হত্যা করতে। এই ক্ষমতাটুকু ওকে দাও। ওকে অনেককিছুই দিয়েছ তুমি। আমার জন্য নাহয় ওকে একটু অপশক্তিই দিলে, যাতে ও নিজের হাতে ওর জীবনের এই যন্ত্রণাকে নিজের কাছে রেখে নিজের হাতেই মেরে ফেলতে পারে। ওর ওই হাতে মরার সুযোগটুকু দাও, প্রভু। ওকে একটু বলো না! সঙ্গে তো বাঁচতে দেবে না, ওকে পেতে দেবে না। আচ্ছা, না-ই বা দিলে! শুধু ওর হাতে মরতে দাও। ওকে শক্তি দাও, আদেশ কর, আমাকে মেরে ফেলার সকল যুক্তি আর বোধ ওর মধ্যে সঞ্চারিত করে দাও।” কিন্তু হায়! ঈশ্বরকে কখনও-কখনও বড়ই কৃপণ নিষ্ঠুর নির্লিপ্ত মনে হয়। তবুও ভাল আছি। ঈশ্বর ভাল রেখেছেন। অনেকঅনেক ধন্যবাদ তাঁকে। তোমাকে ভালোবাসার সুযোগ করে দিয়েছেন। তোমার কাছে শেখার সুযোগ পেয়েছি। অনেক অনেক অনেক লাকি আমি! আমি তোমাকে খুবখুব কাছে পেয়েছি। তোমাকে ছাড়া আর কিছুই চিন্তা করতে ভাল লাগে না আমার। আমি বোধহয় বড্ডো বেশিই ভালোবাসি তোমাকে। তোমাকে ভালোবাসতে-বাসতে কাঙাল হয়ে যাবো একদিন। আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। এই একটা ছোট্ট জীবনে তোমার ভালোবাসার মতন বড় অপরাধ করে বসে আছি!