সন্ধেতারার খাঁজে

যদি এমন একটা দিন এই জীবনে এসেই যায়,
যেদিনের পর থেকে বাকি জীবনের প্রতিটি দিনই
তোমার ওই অপাপবিদ্ধ মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে আমার ভোর শুরু হয়?
সেদিনটাতে আমার কেমন লাগবে, বলো তো?


আমার প্রতিটি প্রতীক্ষিত রাত আর সকালের সমাপ্তি,
দুই-ই যদি হয় তোমার মাঝে?
এমন একটা দিন যদি সত্যি সত্যিই আসে?
সেদিন বুঝি তুমি ভীষণ অবাক হবে?


যদি এসেই যায় এ জীবনে এমন একটা সন্ধে,
যেদিনের পর থেকে আমার প্রতিটি সন্ধে জুড়েই তুমি থাকবে পাশে?


আজ হঠাৎই মনে এসব আসছে কেন, জানো?
যেদিন প্রথম তুমি মুখের উপর দিয়েছিলে বলে…
হবে না কখনও অতশত! অযথা চেয়ো না তো, কোনও লাভ নেই!
…সেদিনের পর থেকে ভেতরটা কেমন জানি সত্যি মরেই গেল!


তারপর সেই আগেরই মতো সকাল ফুরোয়, সন্ধে নামে কাজের শেষে,
কিন্তু কোথায় যেন নিজেকে হারাই অবিরতই…
যেন সেই ফেলে-আসা এক সন্ধেয় ঠায় আটকেই গেছি আমি!


হয়তো তুমি আজও বোঝোইনি, পার্থক্যটা সত্যিই কখন ঘটে গেল!
বিশ্বাস করো, আমি ভালোই বুঝতে পারি, সেই সন্ধেতারার খাঁজে
আমার সেই দুঃখগুলোকেও আমি ঠিকই লুকিয়ে এসেছি।


আজ মন বলছে হঠাৎই, অবেলাতেই তো এসেছিলে তুমি,
ছিলে কেবলই অনাকাঙ্ক্ষিত এক অতিথি!
অথচ দেখো, এসে অবেলায়...রয়ে গেছো আজও কত বেলা করেও!


কত দিন গেল, তবুও সেই লুপ্ত আগুন এড়াতে আর পারছিই-বা কই!
খুব উঁচু পাঁচিলের লোহার খাঁচায় আটকে রেখেও আর কই পেরেছি বাঁধতে নিজেকে!


সেজন্যই বলছি শোনো, কে-ইবা জানে ভবিতব্য?
ভাবছি যা-কিছু, হলে যদি হয়, হতেও তো পারে!
কে জানে কী আছে সামনে লেখা…
তোমার আমার, আমাদের ছোট্ট একটা সংসার…হতেও তো পারে!


যদি হয়েই যায় অমন কিছু,
সত্যি আমি সেদিন হব এই পৃথিবীর সবচে সুখী!
আমার যত ভার, তার সবটাই সামলে নেবে তোমার প্রশস্ত দুকাঁধ!


মিঠেকড়া ভালোবাসাতে আমার পুরোটা সুখই তোমার নামে লিখে দেবো,
বিনিময়ে বুক ভরে নিয়েই নেবো তোমার শানবাঁধানো দুঃখ যত!
বিনা কুণ্ঠায় বলে ফেলব,---মুঠোয় ভরে গ্রহণ করো সবটুকু সুখ,
শুধু দুঃখটুকুই আমার থাকুক!