ভাবনার বনসাই: ছয়

 ১. ম্যহ্‌ফিলে আসবে বলে তোমরা সবাই কথা দিলে, অথচ গিয়ে দেখি, একজনও আসেনি। আজকাল কি কথা দেওয়াটাকেও তোমরা ঠাট্টা বানিয়ে ফেলেছ?
  
 ২. - কবি, সদ্য হৃদয় ভেঙেছে যার, তার চেহারা দেখতে কেমন, আপনি কি বলতে পারেন? আমি এরকম কাউকে কখনও দেখিনি। হৃদয় ভাঙলে মানুষ কী করে বাঁচে?
 - …………………
 - হাসছেন যে, কবি?
 - তুমি কী করে দেখতে পাবে? সেই চেহারা তো কেবলই আমার আয়নায় দেখা যায়!
  
 ৩. আমরা জীবনে বাঁচতে এটা পেতে চাই, ওটা পেতে চাই। অথচ, বেঁচে থাকবার জন্য জানতে হয় শুধুই ছেড়ে দিতে!
  
 ৪. তোমার চোখের জল সহ্য হয় না বলে মদ খাই, আবার আমি মদ খাই বলে তুমি চোখের জল ফেলো।
 বলো, তুমি আগে থামবে? না কি আমি?
  
 ৫. আমায় সোনা, রুপা, কুন্দনের গয়না গড়ে দিতে তুমি নিজেকে খাটিয়ে মারছ, অথচ এক তুমি ছাড়া যে কখনও আমার আর কোনও গয়না ছিল না, সেটুকু আমি মুখে বলতে পারলাম আর কই!
  
 ৬. আমার প্রেমিকা ভয় দেখিয়ে বলত, সে আমাকে ফেলে চলে যাবে। একদিন আমি সব ভয় ছুড়ে ফেলে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, 'যাও তবে!' আমার চাহনিতে ভয় পেয়ে সে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
  
 ৭. এত কথা জমে নোট হয়ে আছে বুকে, অথচ কথা ভাংতি করার মতন একটাও লোক নেই আমার!
  
 ৮. আমি যখন লিখছি, তখন তুমি চা খাচ্ছ। ইসস্‌, পুড়ল কি ঠোঁট?
 হ্যাঁ গো, পোড়ার যন্ত্রণাটা অমন করেই পোড়ায়!
  
 ৯. আমাকে ভালোবাসা দিয়ে দিয়ে তুমি এতটাই লোভী করে দিয়েছ যে, এক ভালোবাসা বাদে জাগতিক আর কোনও কিছুরই প্রতি আমার কোনও লোভ নেই।
  
 ১০. তোমার মুখটা একবার দেখাও!
 আমি যে বহুদিন ধরে লিখতে পারছি না!
  
 ১১. সূর্যে মত্ত চাঁদ আর চাঁদে মত্ত সূর্য,
 তুমি মত্ত আমাতে, কিন্তু আমি যে অধৈর্য!
  
 ১২. এমন গলার স্বর আর চোখের নুর যার,
 সে যে ভয় পাইয়ে রাখে, ভেঙে করে চুরমার!
  
 ১৩. চুলের ঘ্রাণের ছড়া লেখা কবিতার বিশাল খাতায়,
 ‘তুমি থেকে যেয়ো কবির চোখের পাতায় পাতায়।’
  
 ১৪. ওহে প্রেমিক, প্রেমিকা অভিমান করা ছেড়ে দিলে জেনে নিয়ো, তোমাদের মাঝে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
  
 ১৫. আমায় লুকিয়ে ফেলো তোমার পায়ের নূপুরে,
 আমি বিশ্রাম নিই স্বস্তি-পাওয়া দুপুরে।
  
 ১৬. দুঃখের কথাতেও কাঁদি আমি, সুখের কথাতেও কাঁদি,
 তোমাদের কি মনে হয় না যে এবার আমাকে মৃতঘোষণা করা উচিত?
  
 ১৭. লিখতে লিখতে কাঁদতে শিখে যাই . . . আমি তবে শায়ের নই তো!?
 ভালোবাসতে বাসতে হারিয়ে ফেলতে শিখে যাই, হায় . . . আমি আবার মানুষ নই তো!?
  
 ১৮. সাঁতার জানি না, তবুও জলে ভেসেছি,
 নিয়েছি জলের ঘ্রাণ, দাম মিটিয়েছি।
  
 ১৯. নিরানব্বই জন মানুষই তোমায় প্রতারিত করল,
 আর তুমি কেবল আমারই দেখা পেলে না! অমন চোখজোড়া তবে কোন কাজে লাগে?
  
 ২০. অবহেলার তাড়া খেয়ে শেষে ফিরে এসেছি।
 হায়, যদি জানতে, কতটা ভালোবেসেছি!