ভাবনার বনসাই: এক-শো দুই

১. আমরা পাশ দিয়ে হেঁটে যাই,
কৌতূহলী ফুলেরা তাকিয়ে থাকে।
আর এদিকে
আমরা তেষ্টায় ছটফট করতে থাকি...


২. গোধূলিতে যখন
চাঁদের বদলে মেঘ নামে,
তখনও
মন্দিরে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে।


৩. বসন্ত কি তবে চলেই যাবে?
পাখিদের কান্না, ফুলেদের বিলাপ...
বিবর্ণ চোখের অশ্রুকে
উপেক্ষা করেই?


৪. যে কাকতাড়ুয়া
রৌদ্র ও হাওয়াকে ভয় দেখায়,
পাখিদের সে ভয় না দেখালেও-বা
কী এসে যায়!?


৫. কী এক দুঃসহ সুখ!
সবচাইতে সুন্দর ফুলটিও...ঝরে পড়ে।
সবচাইতে ভালো মানুষটিও...মরে যায়।
কোনও সুখেরই অমরত্ব নেই।


৬. প্রজাপতি-ফুল-সাগর-পাহাড়
দেখতে চাইলে
আমার কবিতার দিকে নয়,
ওদের দিকেই তাকাও।


৭. কেউ একটু জল ধার দেবে?
প্রভাতের প্রথম আলোর মতন
শুভ্র এক মানুষী
আমার পুরো নদীকেই চুরি করেছে!


৮. সারাশহরে সে আলো জ্বেলে দেয়;
এদিকে তার ঘরের কোণে
দিনের বেলাতেই সন্ধে নামে,
প্রতিদিনই মরে...ছোট্ট জোনাকি।


৯. কী এক বোকা কাকতাড়ুয়া!
মাথাটা উঁচু করে রাখে অহংকারে,
আর ওদিকে তার পায়ের কাছে
পাখিরা এসে শস্য চিবোয়!


১০. বৃষ্টি নামে।
রাস্তায় রাস্তায় চলে বন্ধুত্ব...
হাঁটাদের আর কথাদের।
ছাতাদের আর বর্ষাতিদের।


১১. একাকী নির্জন পথে
বন্ধু ছিল
শুধুই কিছু কাকতাড়ুয়া,
পাখিরাও নয়!


১২. প্রজাপতিরা,
হাওয়া সামলে ওড়ো!
হাওয়ায় হাওয়ায়
ডানার রঙের হন্তারক!


১৩. আহা, না চাইতেই
এমন একটা মানুষের ভালোবাসা!
এবার কি তবে মৃত্যু সমাগত?


১৪. মৌমাছির দল এসে
প্রজাপতির অভাব ঘোচাতে
রঙের পাত্রে মধু ঢেলে দেয়।


১৫. এত নীরবতা!
ঝিঁঝিঁরা কেমন সাবধানে চেঁচায়!
পাথরের গায়ে গায়ে
গত শতাব্দীর শিশিরবিন্দু!


১৬. কুয়াশা ভেদ করে
দূর থেকে একটি সাদা পাল
হ্রদের শরীরে ধীরে ধীরে
যৌবন সঞ্চরিত করে।


১৭. একটি সাদা রাজহাঁস
সাঁতরে সাঁতরে...তার
স্থিরনিশ্চল পালকগুলির
কাছ থেকে...বিদায় নিচ্ছে।


১৮. একটি হিমেল সন্ধের আশায়
পুরনো এক মন্দিরের কাছ থেকে
ঘণ্টাটি ধার করে এনেছি।


১৯. একবুক অহংকারে
এক-শো ফানুস ওড়াতে গিয়ে দেখি,
হাজার ফানুস উড়ছে আকাশে!


২০. গোধূলি গিলে নেয়...
দিনের সমস্ত পাপ,
সমাসন্ন রাতের পুণ্য,
মৃত ফুলের অভিশাপ।